বাচ্চা বেলায় যখন না বুঝেই কেবলমাত্র বিচিত্র আকিবুকি আঁকা কিছু ছবির মাধ্যমে প্রাচীন ও মধ্যযুগের সপ্তাশ্চর্যের নামগুলো আত্নস্থ করার অবিরাম প্রচেষ্টা চলেছে কচি মনের উপরে বেদম অত্যাচারের ষ্টীম রোলার চালিয়ে, তখন নিজের অজান্তে আর কিছুই না হোক মাথার ভিতরে গেথে গিয়ে ছিল সেই অনন্য স্থাপনার নামগুলো, আর কল্পনার শাখা-প্রশাখা ঘিরে ধরেছিল তার প্রতিটিকে, কেমন তাদের গঠন, কেমন আকার যা তাদের পরিণত করেছে বিশ্বের বিস্ময়ে।
মধ্যযুগের বিস্ময় সাতটির তালিকার শেষটি ছিল সেইন্ট সোফিয়ার মসজিদ, কেমন অবাক করা নাম ! সেইন্ট মানে তো সন্ত(সাধু) , খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসের সাথে জড়িত শব্দ, তাহলে মসজিদ এসে জুড়ল কিভাবে। আবার ধোয়াটে সে অঙ্কনে মনে হত বড় গম্বুজওয়ালা এক স্থাপত্য কে ঘিরে কতগুলো সুউচ্চ মিনার, তাহলে সেইন্ট এল কোথা থেকে!
প্রশ্নগুলোর উত্তর মেলে না, কিন্তু সময় বয়ে যায়, নিজেকে অবাক হয়ে আবিষ্কার করি পৃথিবীর পথে, ইতিহাসের খোজে, মধ্যযুগের সপ্তাশ্চর্যগুলো বিস্ময় উদ্রেককারী স্থাপনাগুলোর মূঢ় অবলোকনকারী হিসেবে, আগ্রার তাজমহল, রোমের কলোসিয়াম, পিসার হেলানো টাওয়ার, ইংল্যান্ডের স্টোনহেঞ্জ হয়ে সে তালিকা সর্বশেষ সংযোজন ঘুরে আসা রোম স্রামাজ্যের সাবেক রাজধানী ইস্তাম্বুলের প্রানকেন্দ্রে অবস্থিত সেইন্ট সোফিয়ার গির্জা বা মসজিদ, যা সমগ্র বিশ্বের কাছে পরিচিত হাগিয়া সোফিয়া বলে।
শীতের ইস্তাম্বুলের মজাই আলাদা, চারিদিকে বিভিন্ন সাগর ঘেরা,শহরের মাঝখান দিয়ে চলেগেছে ইতিহাসবিধৌত বসফরাস প্রণালী,কাজেই মাঝে মাঝে কাঁপন দেওয়া নোনা বাতাসের ঝলক অনুভব করলেও হাড়কাঁপানো শীতের আগমন ঘটেই না এই চির বসন্তের আস্তানায়। যদিও পত্রশূন্য রিক্ত গাছের সারি আর কুড়িহীন গোলাপঝাড়ের যত্রতত্র উপস্থিতি কেবল মনে করিয়ে দেয়- বসন্ত ঢের দূর, বন্ধু!
তখন ডিসেম্বরের পয়লা সপ্তাহ, বসফরাসের বুনো নোনা বাতাসকে সাথী করে এক মেঘলা দিনে সদলবলে আমরা চলেছি হাগিয়া সোফিয়া দর্শনে, আমরা তখন কোথায়? ইউরোপে? নাকি এশিয়ায়? তা তো জানি না, কেবল জানি সেই জলধারার দুই পাশে দুই মহাদেশ, সংযোগ রক্ষা করেছে দুই সেতু, যা দিয়ে কিনা এককালে খুব চলাচল করতেন মানসলোকের সেরা নায়ক আদি ও অকৃত্রিম মাসুদ রানা। থেকে থেকেই দেখা দিচ্ছে সুউচ্চ মিনার, যেন উঠে এসেছে প্রিয় লেখক ওরহান পামুকের স্মৃতিকথা ইস্তাম্বুল থেকে, তেমনই প্রাচীনতা এবং নির্জনতার ছোঁয়া। ইতিহাস গায়ে জড়িয়ে অতীত ও বর্তমানকে একই সাথে নিয়ে কনস্ট্যান্টিনোপল পরিণত হয় ইস্তাম্বুলে, ভূমধ্যসাগরের জলস্রোত অব্যাহত থাকে মর্মর সাগরের দিকে, কালের খেলায় রোমান সাম্র্যাজ্য একদিন হয়ে দাঁড়ায় বাইজেন্টাইন সাম্র্যাজ্যে, তারপর এলো অটোমান সাম্র্যাজ্যে, আরও পরে যা পরিণত হয় গণতান্ত্রিক তুরস্কে। কিন্ত থেকে যায় হাজার বছরের প্রাচীন জনপদের সুখ, দুঃখ, রঙ, উল্লাস। মুসাফিরের কাছে তিলোত্তমা নগরীর আবেদন থাকে চির অটুট।
এবড়ো থেবড়ো পাথরের রাস্তা পাড়ি দিয়ে যখন পিচ ঢালা চত্বরের ওপর পাশে ইস্তাবুলের প্রতীক নীল মসজিদের দেখা মিলল, তখনই বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ দিয়ে আবিস্কার করি আসলে আমরা দাড়িয়ে আছি হাগিয়া সোফিয়ার মূল ফটকের সামনে, চমকে দেবার জন্যই তুর্কিশ বন্ধুরা আগে থেকে বলে নি! দেখা গেল সেই লালচে পাথরের ভবনের বিশাল গম্বুজ, চার দিকের মিনার আর টিকেটের জন্য অপেক্ষারত বিশাল লাইন!
সেই ঝামেলাগুলো এড়িয়ে ঢোকা হল হাগিয়া সোফিয়ার চত্বরে, বিশ্বাস করা যায় কি যে সামনের নন্দিত স্থাপত্যটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ৩৬০ খ্রিষ্টাব্দে! যদিও সেই প্রাচীন উপাসনালয়ের কিছুই আর অবশিষ্ট নেই, একাধিকবার সেই ভিত্তির উপরেই রচিত হয়েছে নব নব ইতিহাস। হাগিয়া সোফিয়া মানে Holy Wisdom, এটি মূলত অর্থোডক্স গির্জা হিসেবেই মহাকালের বুকে যাত্রা শুরু করেছিল ৫৬২ সালে, দীর্ঘ কয়েক শতাব্দী সেই ভূমিকা পালনের পর ১২০৪ সালে এটিকে রূপান্তরিত করা হয় ক্যাথলিক গির্জাতে, কিন্তু তখন ভাগ্যদেবী সবার অলক্ষ্যে মুচকি হেসেছিলেন এর ভবিতব্য নিয়ে, মাত্র কয়েক দশক পরেই ১২৬১ সালে আবার উড়ল এখানে অর্থোডক্সদের নিশান, কিন্তু দুশ বছর পেরোবার আগেই এবার তুর্কিশরা ঘোড়ায় চড়ে হা রে রে রে রে রে করে তেড়ে এসে দখল করে নিল রোমানদের রাজধানী, পতন ঘটল বাইজেন্টিয়ান সাম্রাজ্যের, শুরু হল অটোমান শাসন। সেখানে হাগিয়া সোফিয়ার ভূমিকা ছিল রাজকীয় মসজিদের দায়িত্ব পালন করা, এর তুর্কিশ নামকরণ করা হল আয়াসোফিয়া, যা চলল ১৯৩১ পর্যন্ত, এরপর সারা বিশ্বকে অবাক করে মুস্তফা কামাল নামের এক তরুণ তুর্কি আধুনিকতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করে তুললেন সারা জাতিকে, পতন ঘটল অটোমানদের, সেই তরুণের কাজে উৎসাহ দেবার জন্য প্রবল উচ্ছাসে প্রিয় কবি কাজী নজরুল লিখলেন- কামাল, তুনে কামাল কিয়া ভাই! সেই মুস্তফা কামাল যাকে আজো সারা তুরস্ক চেনে আতাতুর্ক বা তুরস্কের পিতা নামে, পরিণত করলেন হাজিয়া সোফিয়াকে অসাধারণ এক জাদুঘরে, জনগণের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হল যেন জ্যান্ত ইতিহাসকে, কঠোর ভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল মুসলিম এবং খ্রিষ্টানদের উপরে সেই স্থাপনার ভিতরে উপাসনার উপরে, সারা বিশ্ব থেকে মানুষ আসা শুরু করল ইতিহাসের সাক্ষীকে দেখার জন্য, সেই দলে আজ আপনিও ভিড়েছেন আমাদের পাল্লায় পড়ে!
সুপ্রাচীন ভবনের বাহিরের কিছু প্রাচীন অংশ সবার আগে নজর কেড়ে নেয়, বিশেষ করে ধ্বংসপ্রাপ্ত জায়গাগুলো, যেখানে দেখা মিলল দেড় হাজার বছর আগের কিছু ভেড়ার! মানে পাথরের স্তম্ভে খোদাই করা ভেড়ার, জানা গেল মোট ভেড়া ছিল এক ডজন, যা খৃস্টান মতে যীশুর ১২ মুরিদের প্রতীক। এই প্রাচীন অংশটি ৫৩২ সালে এক বিশাল অগ্নিকান্ডে ভস্মীভূত হয়।
এর পরপরই সম্রাট ১ম জুসতিনিয়ান বিশাল মাস্টারপ্ল্যান করে নব উদ্যমে নির্মাণ কাজে হাত লাগান, সারা সাম্রাজ্য থেকে বাছাই করে আনা হয় সেরা নির্মাণ সামগ্রী- বিখ্যাত আর্তমিসের মন্দির থেকে আনা হল গ্রীক স্তম্ভ, মিশর থেকে পাথর, সিরিয়া থেকে হলদে শিলা, বসফরাস থেকে কালো পাথর- কিচ্ছু বাদ রয়ল না, সম্রাটের সাধ বলে কথা!
দশ হাজারের বেশী নির্মাণ শ্রমিক দিন রাত পরিশ্রম করে চোখ কপালে তোলা ব্যাসিলিকাটি বাস্তবে রূপ দিয়েই ফেলল মাত্র ৫ বছরের মধ্যে! এরপরে আস্তে আস্তে চলল নানা নকশা বসানো, মোজাইকের সুক্ষ কারুকার্য, চিত্রকর্ম ইত্যাদি ইত্যাদি, মাঝে ভুমিকম্পে বিশাল গম্বুজে ফাটল দেখা দিলেও পরে আবার দ্রুত মেরামত করা হয় বড় ধরনের ক্ষতির আগেই। অবশ্য এরপরেও বিশাল সব ক্ষতি করা হয়েছিল কিন্তু সেগুলোতে প্রাকৃতিক ছোঁয়া ছিলনা মোটেও, ছিল স্বঘোষিত বুদ্ধিমান কিন্তু আসলে মাথামোটা প্রাণী মানবজাতির লোভের ছোঁয়া। যথা সময়ে সেই কথা বলা হবে, চলুন ইতিহাস ছেড়ে বর্তমানে এসে ঢুঁকে পড়ি হাগিয়া সোফিয়ার ভিতরে।
বিশাল ফটক এড়িয়ে যখন মূল হলঘরে পৌঁছালাম সবাই ততক্ষণে মুগ্ধতায় মুখে ভাষা হারিয়ে গেছে, সারি সারি স্তম্ভ, বিশাল ছড়ানো জায়গা, টিমটিমে বাতি হলদে দেয়ালের উপর প্রতিফলিত হয়ে যেন ইতিহাসের ছোঁয়া আরও কয়েক প্রস্থ গাঢ় করে তুলেছে, পা টিপে টিপে চলছে সবাই, যেন জোরে শব্দ করলে ঘুম ভেঙ্গে যাবে হাজার বছরের নির্জনতার।
প্রায় আকাশ ছোঁয়া ছাদ, বিশাল গম্বুজের আকৃতি নিচ থেকে কিছুটা অনুমান করা যায়, সোনালী হলদে রঙে উজ্জল ছড়াছড়ি। হলঘরে মাঝে দাড়িয়ে চার দিকের চার কোণায় বেশ উঁচুতে অদ্ভুত দর্শন নকশা চোখে পড়ল, প্রমাণ আকৃতির, একসাথে মাঝে আবার মানুষে মুখ! বোঝা গেল সেগুলো গির্জাকালীন সময়ে আঁকা দেবদূতের ছবি, পরে ইসলাম অধিকৃত সময়ে দেবদূতদের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছিল পালকের ঝালর দিয়ে, একটা কিভাবে বাদ পড়ে গেল তার অবশ্য হদিস মিলল না! নাকি এটি আধুনিক প্রচেষ্টার ফসল?
হ্যাঁ, যে কথা বলাই হয় নি, জাদুঘরে রূপান্তরিত হবার পর থেকেই হাগিয়া সোফিয়া অভ্যন্তরে চলছে সেটাকে পুরনো আদিরূপে ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যপক ঘষামাজা, এমনিতে উপাসনালয়টি একটি রকম ছিল কিন্তু মুসলিম মসজিদের রূপান্তরের পরপরই সমস্ত ছবি বিশেষ করে মানুষের মুখমণ্ডল ঢেকে ফেলে হয় সিমেন্ট- সুরকির পুরু আস্তরের নিচে, অসাধারণ কিছু মোজাইকের কাজ হয়ত হারিয়েই গেছে চিরতরে এই কারণে, কিন্তু এখন স্থপতি গবেষকরা তিল তিল করে উপরের ৫০০ বছরের আবর্জনা হটিয়ে একাধিক জায়গায় বাহির করে এনেছেন আগের আলো ঝলমলে শিল্পরূপ।
বিশেষ করে ১২৬১ সালে তৈরি Deësis মোজাইক যা কিনা সমগ্র হাগিয়া সোফিয়ার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মোজাইকের কাজ বলে বিখ্যাত সেখানে কিছুটা টের পাওয়া গেল ধর্মীয় উম্মাদনায় শিল্পকলার ক্ষতি এবং বিজ্ঞানের সাহায্যে তার পুরনো রূপকে কিছুটা ফিরিয়ে আনার সাধু প্রচেষ্টা। যীশু, মেরি এবং সেন্ট জনের অস্তিত্বকে পুনরাবিষ্কারের চেষ্টা চলেছে পুরোদমে ।
এখানে আসলে মোজাইক কাজটি কেমন ছিল এবং বর্তমানে কতখানি পুনরাবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে তার দুটো তুলনামুলক ছবি দেওয়া হল ।
এছাড়া আছে ১১২২ সালে খোদাই করে কমনেনুস মোজাইক, যার কেন্দ্রে আছে শিশু যীশুকে কোলে নিয়ে মেরি, তার একপাশে সম্রাট ২য় কমেনিউস এবং অন্য পাশে সম্রাজ্ঞী আইরিন।
কি সুক্ষ কাজ, কি অপূর্ব ললিত কলা! চিত্ত বিনোদিত করার সাথে সাথে মনে করিয়ে দেয় সেই প্রাচীন কারিগরদের কুশলতার কথা।
সুবিশাল স্থাপত্যটি নানা চিত্র-বিচিত্র ভাগে বিভক্ত, কোন খানে ছিল সম্রাজ্ঞীর আসন, যেখানে মহিলারা অবস্থান করত,
কোথাও মোলাকাত হল বিখ্যাত মার্বেল ফটকের সাথে,
আবার ছিল অটোম্যান সুলতানের গ্রন্থাগার, যাক দেখে ভাল লাগল যে মানুষের প্রাচুর্যে পূর্ণ টোপকাপি প্রাসাদ ছিল, হারেমের রূপসীরা ছিল তার অন্তত একটা গ্রন্থাগারও ছিল, এর প্রায় সমসাময়িক বাংলার নবার সিরাজদ্দৌলার হারেম যে ছিল তাতে কোন সন্দেহ নেই, কিন্তু তার গ্রন্থপ্রীতির কোন হদিশ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায় নি!
উদ্বেলিত হয়ে উঠলাম প্রাচীন প্যাগানদের কিছু চিহ্ন দেখে, শয়তানের ত্রিশূল তো এসেছে সমুদ্রদেবতা পোসাইডনের কাছ থেকে, সেই সাথে এই অদ্ভুত প্রাণী! কি মানে এর! কোন রহস্য কি অগোচরে থেকে গেছে ঐতিহাসিকদের?
রক্তপাতের স্মৃতিময় মেঝে-
দোতলায় রেলিঙে হেলান দিয়ে জায়গাটি যেন আরো অনেক বিস্তৃত মনে হল, বেশ কিছু জায়গায় আরবি ক্যালিগ্রাফিতে ধর্মীয় বাণী খোদাই করা হয়েছে, সেই সাথে শোনা গেল হাগিয়া সোফিয়ার মূল কাঠামোর সাথে যে মিনারগুলি আছে সেগুলোও অটোমান শাসনামলে নির্মাণ করা হয়েছিল, পুরো ব্যবস্থাটিকে একটা ইসলামিক রূপ দেবার জন্য। সেই সাথে মূল ফটকের সাথেই স্থাপন করা হয়েছিল কারুকার্য খচিত ঝরনা, যাতে মুসল্লিরা অজু করতে পারে।
দোতলায় কিছু জায়গায় জানাল দিয়ে দূরের সাগর দেখা গেল, হয়ত হাজার বছর আগে এভাবেই কেউ জানালায় দাড়িয়ে অলস দুপুর গড়িয়ে বিকেল পার করতেন সাগর আর মেঘের খেলা দেখে।
সেই সাথে তালাবদ্ধ একটি দরজা, সেটি নাকি ছিল শত্রুর আক্রমণের মুখে পালাবার পথ!
এ এক অন্য ভুবন, যেখানে অবস্থানের সময়কার অনুভূতি লিপিবদ্ধ করা অসম্ভব একটা কাজ, এ যেন টাইম মেশিনে চেপে অতীতের দিকে ফিরে যাওয়া, ছুয়ে দেখা সেই প্রাচীন সময়কে। হতবিহ্বল আনন্দিত অবস্থায় একে একে বেরোলাম সবাই ঘণ্টা কয় পরে, পরের গন্তব্য নীল মসজিদ।
আমি স্বপ্ন দেখি সেই দিনের যে দিন বিশ্বের সমস্ত তথাকথিত পবিত্র স্থানগুলো এমনভাবে পরিণত হবে সর্বসাধারণের দেখার জাদুঘরে। আমরা ঘুরে ঘুরে দেখব গয়া,কাশী, মক্কা, মদিনা, জেরুজালেম, লাসা, সবকিছুই। আমাদের ইতিহাসের অংশ হিসাবে, কোন বিশেষ ধর্মমতের পবিত্র স্থান হিসেবে নয়।
(এই পোস্টটি প্রিয় মানুষ ব্লগার মহাস্থবির জাতকের জন্য। সারাজীবন বনের গাছ আর জীবজগৎ নিয়ে লেখাপড়া করা একজন মানুষ সাহিত্য নিয়ে কি করে এত চুলচেরা অসীম জ্ঞানের অধিকারী হতে পারে তা কিছুতেই আমার মাথায় আসে না। লোকমুখে শুনেছি তিনি শিক্ষক হিসেবে ব্যপক জনপ্রিয় ছিলেন এবং এককালে গায়ক হিসেবেও অনেক হৃদয়ে দোলা জাগাতে সক্ষম হয়েছিলেন। উনার সম্পর্কে খেয়াদি বলেছিলেন এমন সাহিত্যজ্ঞান সম্পূর্ণ মানুষ সাথে থাকলে গীতবিতান পর্যন্ত লেখা যায়- এখান থেকে আশা করছি পাঠকমণ্ডলী আঁচ পাবেন তার বইয়ের জগতে বিশাল দখলদারিত্বের। আবেগী মানুষ, প্রায়শই ছাত্র পড়ানোর পূর্ব অভিজ্ঞতা মাথার কোষে খেলে গেলে হুংকার দিয়ে একটু মেজাজও দেখান বটে ( কিন্তু আমার গুরুর গুরু শ্রী ভজহরি মুখুজ্যে ওরফে টেনি দা স্বয়ং বলেছেন গোঁফওয়ালা মানুষেরা একটু মেজাজি হয়, কাজেই এক্ষেত্রে উনাকে ছাড় দেওয়া যেতে পারে, একে শিক্ষক, তার উপর জাঁদরেল গোঁফওয়ালা!), বিশেষ করে বানান ভুল হলে হাঁচিয়ে ছাড়েন বকুনি দিয়ে। কিন্তু সবচেয়ে বিশ্রী যে কাজটা তিনি করেন তা হচ্ছে অঢেল প্রশংসা- না জেনে না শুনে যত্রতত্র বিশাল সব প্রশংসার শর নিক্ষেপ করে থাকেন- এই আমার মত অকাজের মহারাজাকেই আপন মনে করে কি লিখেছে দেখুন না ----
পৃথিবীতে মানুষ হয়ে জন্মায় সবাই, কিন্তু মানুষ হয়ে উঠতে সবাই পারে না। নিঃসন্দেহ আমি অন্তত জীবনযাপনের এই অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞানে। এরই মাঝে আচমকা একটা মানুষের ভেতর চিরকল্পিত, চিরবাঞ্ছিত সেই আসল মানুষের ঝকমকানি যখন চোখে পড়ে, চোখটা ঝলসে যায় আর জলও চলে আসে একই সাথে। মানুষের ঈর্ষাভাজন হওয়া খুব কঠিন কিছু নয়, এমনকি কঠিন নয় বিখ্যাত হওয়াটাও। "এই শতাব্দীতে সবাই সাত মিনিটের জন্যে বিখ্যাত।" কিন্তু, হৃদয়টা হিমালয়ের মতো উঁচু আর বিশাল করে মানুষের মতো মানুষ হওয়ার বজ্রকঠিন চ্যালেঞ্জ নেওয়াটা যারা নিতে পারেন, তাঁদের সাথে পরিচিত হওয়াটা জীবনের তাত্পর্য বাড়িয়ে দেয় অর্বুদনির্বুদগুণে।
আমি অমনটা নই, হতে পারি নি, পারবোও না। কিন্তু অক্ষমের ঈর্ষা নেই তাতে, আছে কৃতজ্ঞতার ঋণস্বীকার আর অকুণ্ঠ সপ্রশংসস্বীকৃতি। সামান্য পরিচয়ে, হে সত্যি মানুষ, আপনি আমায় কষ্টার্জিত অর্থব্যয়ে বাক্যাঘাত হেনেছেন সময়ব্যয়ে সুদূর পরবাস থেকে, সুহৃদের স্বদেশাগমন করেছেন বোঝাভারাক্রান্ত আমার প্রিয়তম উপহার গ্রন্থরাজিসমাগমে। আমার মতো অতিসাধারণ মানুষের জন্যে আপনার বিনিয়োগ দেখে বুঝতে পারি, আসলে আপনার প্রিয়তম পুস্তক, চলচ্চিত্র এবং ভ্রমণস্থান আসলে এবং শেষমেষ, মানুষই। মানুষের জন্যে আপনার অসীম মমতা আর প্রেম আমায় আপ্লুত করে, অভিভূত করে, এবং কিছু শিক্ষাও দেয় যা আমি হয়তো গ্রহণে অপারগ!
আপনি পরিচিতির তোয়াক্কা করেন নি, তাই নিরর্থক আপনার খ্যাতিকীর্তন, সে আপনার হস্তামলকতুল্য। শুধু এইটুকু জানান দিলাম যে আপনার ঋণশোধের নিষ্ফল চেষ্টা আমি করছি না এবং ভবিষ্যতে যদি কখনো আপনি বাংলাকে পরিচিত করেন দুনিয়ার দরবারে, হয়তো পৃথিবীর এককোণায় আপনার প্রবল শুভাকাঙ্ক্ষী কোন সুহৃদের চাইতে সুখী হতে পারবে আপনার পরিচিতমণ্ডলের খুব সীমিত সংখ্যক 'আত্মীয়'ই। )
মন্তব্য
ছবির সাথে ঘুরে এলাম হাজার বছর আগের পৃথিবীতে আর শেষের আপনার স্বপ্নের কথা ও লেখাটুকু পড়ে কিছুক্ষন চুপচাপ হয়ে বসে থাকলাম। কথাগোলো হৃদয়ে প্রোথিত হয়ে থাকলো।
সেই দিন যত কাছে হয় ততই মঙ্গল।
facebook
অনু'দা এবার সময় এসেছে সামনের বই মেলায় রঙীন মলাটে আপনার শ্বাসরুদ্ধরক ভ্রমনকাহিনীগুলো কাগজ সংস্করন বের করার, আমাদের বুকশেলফটিতে একটি অনন্য অলঙ্কার যোগ করতে উদগ্রীব হয়ে আছি।
এভাবে পড়ে বুক ভরে, কিন্তু মন ভরে না।
আর আমরা নাহয় ব্লগ থেকে মজাটি চেখে নিচ্ছি। কিন্তু বাংলাভাষী আরো লক্ষ-কোটি পাঠকের তো একটা দাবী থাকে এই ধরনের লেখাগুলোর উপর, নাকি?
খারাপ বলেন নাই কিন্তু, অনু'দা কি কন??
দেখা যাক--
facebook
আশা করছি, কাজ চলিতেছে।
অনেক দিন পর দেখলাম আপনাকে, কি ব্যাপার।
facebook
সহমত
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
তার মানে ক্রেতা আছে বলছেন?
facebook
facebook
ভাল লেগেছে।
facebook
অনুদা আপনের পায়ের তলায় এত সরিষা ক্যামনে? কই কই যান কি কি করেন আর আমরা জ্বইলা পুইড়া চোখ জুড়াই।

যাকগা, লেখায়
বসফরাসের উপর কিছু নাই? জিনিষটা দেখার খুবি ইচ্ছা।
আছে, আছে, সবই আছে সরিষা ছাড়া!
বসফরাস আসিতেছে===
facebook
-শহরবন্দী
facebook
ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ
facebook
আবারও সুপার ব্লগ!
(তবে তখনো শুধু আপ্নিই ঘুরে ঘুরে দেখবেন - আর আমি দেখব আপনার পোস্টে
)
তারপরও যদি জীবদ্দশায় হয়, মন্দ না, কি বলেন ?
facebook
আসলেই এটা হলে খুব ভাল হত। যেদিন পাসপোর্টটা প্রথম হাতে পেয়েছিলাম সেদিন লাল কালিতে লেখা দেখেছিলাম "এই পাসপোর্ট ইসরায়েল ব্যাতীত পৃথিবীর সকল দেশে ভ্যালিড", কি যে কষ্ট পেয়েছিলাম। আমার মা ইতিহাসের শিক্ষক, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস। ছোটবেলা থেকে আমাকে জেরুজালেম, তুর্কী, পার্সীয়া এইসব জায়গার গল্প শুনাতো, মার খুব ইচ্ছা এইসব জায়গায় ঘুরতে যাবে, আমারো। কিন্তু আব্রাহামীয় সবগুলো ধর্মের পূন্যস্থান জেরুজালেমে কখনো যেতে পারব না বাংলাদেশী হিসেবে এইটা চিন্তা করলেই কেমন জানি লাগে।
ঐতিহাসিক কারণেও অবশ্য ইসরায়েল যাওয়া উচিত, সেই সাথে পাখি পর্যবেক্ষণের জন্য তো সেটি স্বর্গবিশেষ।
facebook
বরাবরের মতই চমৎকার ভ্রমণ বর্ণনা ও ছবি
। 
আর শেষ অংশটুকু সে তারই মত যার জন্য তার আগমন
facebook
দারুণ বর্ণনা...
কী অসাধারণ কারুকাজ...
আরো কিছু স্থাপনা নিয়ে পরের পোস্ট আসিতেছে==
facebook
অণু দা ........ তোমার চোখে আমরা পুরো বিশ্ব দেখছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ তোমাকে।
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
শুভেচ্ছা সাথে থাকার জন্য। বইমেলায় দেখা হবে।
facebook
সুন্দর পোস্ট। ছবিগুলো ভাল লেগেছে।
***
Hagia = হায়া, হাগিয়া/হাজিয়া নয়।
হায়া সোফিয়াকে গির্জা না বলে বরং বাসিলিকা বলাই শ্রেয়। পশ্চিম রোমান ও বাইজান্টাইন বাসিলিকাগুলো মূলত একধরনের সার্বজনীন স্থাপনা। এটা আকাধারে বিচারকের (যারা আবার উচ্চমর্যাদার ধর্মযাজকও বটে, যেহেতু খোদার আইন = দেশের আইন) কার্যালয়, আদালত, আইনশাস্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। হায়া সোফিয়া ছিল বাইজান্টাইন সম্রাজ্য়ের সুপ্রিম বাসিলিকা (আদালত/আইন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) যেখানে বিচারকের আসনে সম্রাট নিজে (যিনি আবার সম্রাজ্য়ের সর্বোচ্চ ধর্মযাজক) বা তার প্রতিনিধি সভাপতিত্ব করতো। ইস্তানবুলে ঘোরাঘুরি করলে আরো কিছু রোমান ফৌজদারি বা দেওয়ানি বিশেষায়িত উচ্চ-বাসিলিকার দেখা পাবেন। বাইজান্টাইন 'রুম' (রাজ কাপুরের 'সর পে লাল টুপি' যে কারনে তুর্কি হইলনা) এর প্রদেশ বা 'বিলায়েত' ও জেলা বা 'জুন্দ' গুলোতেও এই আইন কাঠামো বিস্তৃ্ত ছিল, যেটা পরের আরব ও ওস্মানি সম্রাজ্য় এই কাঠামো মোটামুটি অপরিবর্তিত রাখে। সৌদি আরব ও ভ্য়াটিকানে আপনি এর রেশ খুঁজে পাবেন অনায়াসেই।
"পরে ইসলাম অধিকৃত সময়ে দেবদূতদের মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছিল পালকের ঝালর দিয়ে"
ইস্তাম্বুলের সিনে এছলাম আসার অনেক আগেই সেখানে আইকনোক্লাস্ট বা পুতুল/ছবি ভাঙার দু-দু বার করে জোয়ার এসেছিল। বাইজান্টাইন-নেস্টোরিয়ান-মনোফিজাইট দের পুরাতন মারফতি কাইজা বইলা কথা। কিছু দুষ্ট লোকে আবার এছ্লামি ছবি-বিতিষ্ণার গোড়ায় এই কাইজাকে দেখে। আস্তাগ্ফিরুল্লা।
***
"উদ্বেলিত হয়ে উঠলাম প্রাচীন প্যাগানদের কিছু চিহ্ন দেখে, শয়তানের ত্রিশূল তো এসেছে সমুদ্রদেবতা পোসাইডনের কাছ থেকে, সেই সাথে এই অদ্ভুত প্রাণী! কি মানে এর! কোন রহস্য কি অগোচরে থেকে গেছে ঐতিহাসিকদের? "
হায়া সোফিয়াকে উপাসনালয় না ভেবে যদি বাইজান্টাইন রাজকার্যালয় ভাবা যায়, তাহলেই কিন্তু আর ত্রিশুল-ডলফিন ইত্য়াদিতে প্য়াগানিজমের চাইতে বাইজান্টাইন সম্রাট ও তার আমলাদের ভূমধ্য় ও কৃ্ষ্ণ সাগরের সামরিক ও বানিজ্য়্কি কর্তৃ্ত্ব প্রকাশের বাসনা চোখে পড়তে আর অসুবিধা থাকেনা। পোস্টের ডলফিন-ত্রিশুলের নিচের ছবিতে তারার দুইপাশের অবয়ব কোনদিন দুইটা গোলকের মাথায় বসানো ক্রস ছিল, যেগুলোর মাথা যোগচিহ্ন ঘষে তুলে ফেলা হয়েছে।
***
আবারো বেশ সুন্দর ও তথ্য়বহুল পোস্টের জন্য় ধন্য়বাদ।
ধন্যবাদ, আসলেই হাগিয়া সোফিয়া, স্থানীয়রা হায়া সোফিয়া বলছিল,, এই হাগিয়া ব্যাতাকে এড়াতে যেয়েই হাজিয়া হয়ে গেছে, এর একটা সমাধান বাহির করতে হবে।
এমন কিছু ব্যাসিলিকা আরও দেখা হয়েছিল সেই সময়, কিন্তু সোফিয়ার আবেদনই আলাদা।
ধন্যবাদ তথ্যপূর্ণ মন্তব্যের জনা।
অ ট- বইটি পেয়েছিলেন কি? বাবা যখন ছোট।
facebook
কিতাব পেয়েছি। একান্ত বাধিত ও ধন্য়বাদ।
facebook
খুব ভাল লাগল।
এই ইতিহাস জানা ছিল না,এর জন্য এক্সট্রা ধন্যবাদ
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ঠিক লেখলাম তো, নাকি?
facebook
ঠিকাছে,
আপ্সুস... মানুষ খিলাফত উদ্ধারের জন্য জান দিয়া দেয়... কামালত উদ্ধারে না
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
facebook
কতো আশা নিয়ে ঢুকছিলাম। আগের পোস্টের আলোকে কিছুমিছুর দেখা পাবো বলে! সেই আশার গুঁড়ে পুরাই বালি। সাথে রাস্তা জ্যাম।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
পরের পোস্টে মুরব্বি, রতনের ঠ্যালায় কিছু দিতে যাওয়া ভেজাল, ছোকরা শুধু কাইজ্জ্যা করে পরের মুরগী নিয়া!
facebook
কিছুদিন আগে ইস্তাম্বুল শহরে ঘুরাঘুরির সুযোগ হয়েছিলো আমার, তপকাপি জাদুঘর, নীল মসজিদ এসব দেখতেই দিন পার হয়ে যায়, তাই আর আয়া সফিয়ায় প্রবেশ করা হয়নি। আপনার লেখা পড়ে মনে হচ্ছে বিশাল মিস করে ফেলেছি। মহানবী ও সাহাবীদের অনেক স্মৃতি চিহ্ন সমৃদ্ধ তপকাপি জাদুঘর নিয়ে লিখবেন আশা করি। এই অধমের তো অত ইতিহাস জানা নেই, নইলে আমিই বসে যেতাম লিখতে। কিন্তু মডু দের কাঁচিতে ঘ্যাচাং হবে এই ভয়ে লেখা হচ্ছেনা। আমি আবার পেসিমিস্ট রাশির জাতক কিনা
উতপাখির হৃদয়
লিখে ফেলেন,
তোপকাপি নিয়ে লিখব শীঘ্রই।
facebook
হায়া সফিয়ার পাশ দিয়ে এসেছিলাম ভেতরে যাওয়া হয়নি সময়ের অভাবে। ব্লু মস্ক আর তপকাপি দেখেই এ যাত্রা শেষ হয়েছে। আবার গেলে যাবো ভাবছি।
আবারও ভালো ব্লগ অনু দা ।
পরের বার হয়ে যাবে--
facebook
অসাধারণ আপনার বর্ণনা। বর্ণনার গুণেই মনে হচ্ছে যেতে হবে একদিন।
-- ঠুটা বাইগা
অবশ্যই যাবেন।
facebook
ধর্মীয় উন্মাদনার ফল হিসেবে ভারতের বেশ কিছু প্রাচীন স্থাপত্যকলাও একইভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যখন ঘুরতে যেতাম খারাপ লাগতো। বিভিন্ন ভাস্কর্যের মুখমন্ডলের অংশ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল প্রাচীন আমলে অধিগ্রহনের সময়গুলোতে। এখানেও দেখলাম একই অবস্থা!! দুঃখজনক।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
সেই, অনেক অঞ্চলেই আছে এমন।
facebook
আচ্ছা এই তাহলে হাজিয়া সোফিয়া! মুগ্ধ হলাম ছবি আর বর্ননায়।
বাকিগুলোতেও ঘুরে এলাম ফ্রি ফ্রি, 'রোমান হলিডে' নামটা দেখে চমকে গিয়েছিলাম, আমার খুবিই প্রিয় একটা মুভি!
একেক দিন পৃথিবীর একেক প্রান্তের পোষ্ট দেন যে, আপনি মানুষ না এরোপ্লেন!
..........
রংতুলি
পুরান প্যাঁচাল আর কি, যেদিন যেটা মনে পড়ে/
facebook
বেঁচে থাকলে এখানে অবশ্যই একবার যাব।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
অবশ্যই অবশ্যই
facebook
লেখা ও ছবিতে
।
আমি এতদিন জানতাম "হাগিয়া সোফিয়া" -- ভুল শুধরে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
-- রামগরুড়
না না, আমিই ভুল করেছি, "হাগিয়া সোফিয়া" ঠিক
facebook
ধন্যবাদ
-- রামগরুড়
facebook
দুর্দান্ত।
---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়
facebook
সাধু সাধু।
..................................................................
#Banshibir.
মানে কি
সাধু যে পীর, নাকি পীর যে সাধু, নাকি যে সাধু সেই পীর, নাকি যে পীর সে আধু সাধু!
facebook
সাধু সুফিয়ার মসজিদ নিয়া লিখলেন তাই কৈলাম সাধু সাধু। পীরজঙ্গী মাজার নিয়া লিখলে কৈতাম পীর পীর।
..................................................................
#Banshibir.
facebook
লেখা এবং ফটোগ্রাফী অসাধারন,
facebook
আমি আমার বাবার কাছে এই সোফিয়া মসজিদের অনেক গল্প শুনেছি। ছবি দেখে নয়ন সার্থক হলো অনু। লিখে যাও সঙ্গে অনেক অনেক ছবি দিয়ে। অজানাকে জানি, অদেখাকে দেখি। যত্ন নিয়ো নিজের, ভালো থেকো।
--------------------------------------------------------------------------------
ধন্যবাদ আপা, সামনের আড্ডায় আশা করি দেখা হবে।
facebook
facebook
facebook
লেখা আর ছবি ভালা পাইলাম। ঘোরাঘুরি চলুক।
চলবে---- ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা
facebook
হাগিয়া সোফিয়া
ইচ্ছে আসে সামনে বার টার্কিশ বিমানে দেশে যামু, যাওয়ার পথে ইস্তামবুলে ১ দিন থাকার।
ট্রানজিটে গেলে ভিসা আগে থেকে নিয়ে যেয়েন, নাহলে পোর্ট এন্ট্রিতে সমস্যা করে অনেক সময়।
facebook
ছোট থেকেই সপ্তাশ্চর্য আমাকে খুব টানে, তাই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এগুলো সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতাম। কিন্তু আপনার লেখাতে যেমন আছে, সেইন্ট সোফিয়ার মসজিদ নামটা আমার কাছে খুব খটমটে লাগত, মানে, মসজিদ আর সেইন্ট কি করে হয় এক সাথে। এর ইতিহাস নিয়ে পড়তে শুরু করেও খেই হারিয়ে ফেলতাম। এত উথান-পতন-পরিবর্তন আর কোন স্থাপনার উপর দিয়ে গেছে? যাহোক, আপনার লেখাটি সেই হারিয়ে যাওয়া আগ্রহ ফিরিয়ে আনল।
তার মানে, মুসলিম ও খ্রিষ্টান উভয়েই এক সাথে প্রার্থনা করতে পারত ঐ সময়ে?
আমার সিম্বলোজি নিয়ে জ্ঞান নেই, কিন্তু যীশুর মুরিদদের ভেড়ার মাধ্যমে প্রতিকায়িত হওয়াটা কেমন যেন লাগছে!
আর, অণু ভাই, অন্য মন্তব্য থেকে জানতে পারলাম, আপনার বইয়ের কাজ চলছে। আপনাকে আগাম অভিনন্দন। আর আপনার হাত থেকে বই সংগ্রহের প্রতীক্ষায় রইলাম ...............
একই সাথে না, কামাল পাশা বলেছিলেন কোন ধর্মের উপাসনায় চলবে না এর ভিতরে।
ভেড়া কিন্তু অনেক অনেক দিন ধরেই প্রফেটদের প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তারা নিজেরাও অনেকেই ভেড়ার রাখাল ছিল, আবার ইব্রাহীম তার ছেলের বদলে ভেড়া জবাই করার ঘটনাটাও বিশেষ গুরুত্ব বহন করে এই প্রতীকের পিছনে।
facebook
..................................................................
#Banshibir.
নজরুল ইসলামের কবিতা মনে পড়ছে--
facebook
কুন্টা?
..................................................................
#Banshibir.
সাম্যবাদী--
এই মাঠে হল মেষের রাখাল নবীরা খোদার মিতা
facebook
Orhan Pamuk এর বইটি পড়ে অবধি ইস্তাম্বুল এর প্রতি গভীর আগ্রহ। ছবিগুলো আর বর্ণনা দেখে সেই আগ্রহ ক্রমশঃ অবসেশান এ রূপ নিচ্ছে!
ইয়েঃ মূল লেখার চেয়েও 'মানপত্র' বেশি উপাদেয় লাগলো!
----------------------------------------------
We all have reason
for moving
I move
to keep things whole.
-Mark Strand
আমি অবসেসড, বইটি নিয়ে এবং শহরটি নিয়েও।
facebook
---------------------
আমার ফ্লিকার
কি হল!
facebook
আমার তার্কিশ বান্ধবীটিকে ভজাতে হবে দেখি বেড়াতে নিয়ে যায় কীনা!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
চাপা কম, ঐটা এতদিনে হলে হয়েই যেত হে ভ্রাত
facebook
মনে হচ্ছে মহাস্থবিরদা'কে এইবার চিনতে পেরেছি। উনার সহকর্মীও ছিলাম কিছুদিন। আর চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র-কেন্দ্রে কত ছবি যে দেখলাম একসাথে। কোন এক অজানা কারণে উনি সচলে সম্ভবত লগ-ইন করতে পারছেন না। আর ইস্তানবুল যাচ্ছি অনু'দা সপ্তাহ দুয়েক পরেই। তার আগেই একবার দেখে ফেললাম সোফিয়াকে। মিলিয়ে দেখব বাকিটুকু। ধন্যবাদ।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
যাবার আগে পিলিজ পিলিজ পামুকের ইস্তাম্বুল পড়ে নিয়েন।
facebook
মসজিদ স্থাপত্য সৌর্ন্দয্য আছে এটা সত্যি। কিন্তু "হাগিয়া ছুচিয়া" নামটা পড়ে কেমন যেন গন্ধ গন্ধ লাগে।
এই তো, জানি তো বাঙ্গালী হাগিয়া শব্দ দিলেই ভেজাল করবে, দিলাম হাজিয়া! তারপর চেঞ্জ করলাম, তারপরও এই দশা
facebook
এ বিষয়ে সামান্যই জানা ছিল। আপনার লেখা থেকে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই জানা হলো।
প্রফেটদের বিষয়ে ভেড়া বা মেষের উপমাটি রূপক। এখানে দেখুন,
যীশুই উত্তম মেযপালক,
এই উপমাটি যীশু তাহাদের বলিলেন; কিন্তু তিনি তাহাদের যে কি বলিলেন, তাহা তাহারা বুঝিলনা। (যোহন ১০: ৬)
"আমি উত্তম মেষপালক; উত্তম মেযপালক মেষদের জন্য আপন প্রাণ অর্পণ করে।" (যোহন ১০: ১১)
"আমি উত্তম মেষপালক, যাহারা আমার, তাহাদের আমি জানি, আর যাহারা আমার, তাহারা আমাকে জানে, যেমন পিতা আমাকে জানেন আর আমি পিতাকে জানি; এবং মেষদের জন্য আমি আমার প্রাণ অর্পণ করিতেছি।" (যোহন ১০ : ১৪-১৬)
সূত্র : 'ত্রাণকর্তা প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নূতন নিয়ম, পাকিস্তান বাইবেল সোসাইটি ঢাকা কতৃক ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত।
একটি হাদীসেও পড়েছিলাম, মুহাম্মদ বলছেন, তিনি নিজে মেষপালক ছিলেন এবং সকল প্রফেটগণও মেষপালক ছিলেন। (দুঃখিত, এই মুহূর্তে হাদীসের সূত্রটি স্মরণ করতে পারছিনা)।
সেমেটিক ধর্মগুলোর প্রায় সব প্রফেটই মেষপালক ছিল, এছাড়া সেই সময়ে চলবে কি করে ! ভারতবর্ষে হলে যেমন গরুর রাখাল হতেই হবে।
facebook
আপনার যে লেখাই পড়ি মনে হয় সেই যায়গায় না গেলে জীবনটাই বুঝি বৃথা ! এখন করি কি কন তো
আপনি যেখানে যেখানে গেছেন সেটা নিয়ে লেখা শুরু করেন, তাহলেই হবে! শুরু করেন লন্ডন দিয়ে।
facebook
লেখা এবং ছবি বরাবরের মতোই দারুন। নতুন করে বলার কিছু নেই।
আপনার হাগিয়া সোফিয়ার কথা শুনে আজ অনেকদিন পরে আমার একদা ঘনিষ্ঠ ডেনিশ বান্ধবী মুতিয়া কউডালের কথা মনে পড়ে গেলো।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
কারণ ?
facebook
নতুন মন্তব্য করুন