< সতর্কতা- সকল সেমেটিক ধর্মের ( ইহুদী, খৃস্টান, ইসলাম) অতিমাত্রায় বিশ্বাসীদের পোস্টটি এড়িয়ে চলাই ভাল, নতুবা ঐতিহাসিক সত্য উল্লেখের জন্য কারো ধর্মানুভুতি আহত হলে লেখককে দায়ী করা যাবে না। >
তোপকাপি প্রাসাদের নাম জেনেছিলাম মহাবিশ্বের প্রায় অর্ধেক বস্তুর নাম যেভাবে প্রথম বার জেনেছিলাম সেই ভাবেই মানে সেবা প্রকাশনীর বইয়ের মাধ্যমে। বইটির নাম ছিল ভিনগ্রহের মানুষ, সেখানে মহাকাশের আগন্তকদের পৃথিবী ভ্রমণের নানা প্রমাণ দেখাতে গিয়ে টানা হয়েছিল পিরী রইসের ম্যাপের কথা, তুর্কিশ অ্যাডমিরাল পিরী রইসের কাছে ছিল অদ্ভুত এক ম্যাপ যেখানে উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল এমনকি বরফহীন অ্যান্টার্কটিকা মহাদেশের প্রান্তসীমার ছবি পর্যন্ত আঁকা ছিল যা সেই সময়ের মানুষের পক্ষে জানার কথা নয়, আর ছিল কিছু অদ্ভুতুড়ে প্রাণীর ছবিও। ম্যাপটি আছে ইস্তাম্বুলের তোপকাপি জাদুঘরে!
ম্যাপের ছবির উৎস
তোপকাপির সাথে সেই প্রথম পরিচয়, জানলাম মূলত অটোমান সুলতানদের প্রাসাদ ছিল সেটি, ৪০০ বছরেরও অধিক সময়। কোন এক ডিসেম্বরে আমরা দাঁড়ালাম সেই প্রাসাদ চত্বরে, সুরম্য অট্টালিকাটি এখনো আছে বসফরাসের আর মর্মর সাগরের পাড়ে, যেখান থেকে গোল্ডেন হর্ন দেখা যায়, বাতাসে থমকে যায় তোপকাপির বাগানে, হিমে বিষণ্ণ পাতা ঝরে পড়ার আগে মনে করে হয়ত হারেমে আগত ভিনদেশী নর্তকীর আকুতি ভরা চাহনি, গোলাপঝাড় ছুয়ে যায় সাঁঝের বাতাস, যেমনটা করে চলেছে গত ছয়শ বছর। চাঁদনী রাতে নিশ্চয়ই ফিনকি দেয়া জ্যোৎস্না প্লাবিত করে সফেদ গম্বুজগুলোকে, যা একসময় অলিন্দ দিয়ে ঢুঁকে রহস্যময় আঁকিবুঁকি সৃষ্টি করত বারান্দায়। বিশাল সব প্রাচীন মহীরুহেরা আছে কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে।
বিশাল মূল ফটক পার হয়ে চমৎকার বিস্তৃত উদ্যান, সবুজ গালিচায় ইতস্তত উড়ে বেড়াচ্ছে ঝরা পাতা, অদূরেই ২য় প্রবেশদ্বার, সেখানেই টিকেট কেটে ঢুকতে হবে ভিতরে, দাম বেশ চড়া ১০/১২ ইউরো, অদ্ভুত ভাবে এক টিকেটে সম্পূর্ণ প্রাসাদ দেখা যাবে না, হারেম দেখতে চাইলে আবার টিকেট কাটতে হবে ভিতরে, সেটারও দামও ১০/১২ ইউরো! কি আজব নিয়ম রে বাবা, এরাও জানে এতদূর এসে সুলতানের হারেম না দেখে ফেরত যাবে খুব কম লোকই, তাই ইচ্ছে মত দাম করিয়ে রেখেছে। এমনিতেই বিশাল লাইন দর্শনার্থীদের সকাল বেলাতেই।
দেখা গেল বিশাল প্রাসাদের একটি ক্ষুদে মডেল,
দারুণ সব কাজ করা ছাদ, মেঝে, খিলান, গম্বুজ সবদিকেই।
প্রথমেই এক ঘর যা কিনা সেমেটিক ধর্মের অনুসারীদের কাছে তীর্থ স্থানের মর্যাদা পেয়ে থেকে কারণ ধর্মগুলোর বেশ কয়েকজন নবীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র আছে, হজ করে আসা একাধিক আত্মীয়ের মুখে শুনেছিলাম আহ মক্কা- মদিনায় গেলাম কিন্তু শুনি রাসুলের ব্যবহার করা সিলমোহর, দাঁত, কেশগুচ্ছ, অস্ত্র ইত্যাদি ইত্যাদি সবই আছে ইস্তাবুলের সুলতানের প্রাসাদে! তারা দখল করে নিয়ে গেছে সব, দেখতে চাইলে সেখানেই যেতে হবে। সেই প্রাসাদের বিশেষ কক্ষের আলোআধারিতে শুরু হল আমাদের যাত্রা, প্রথমেই বিশেষ বিজ্ঞপ্তি- ইহা একটি পবিত্র কক্ষ, এখানে পবিত্র জিনিসপত্র সংরক্ষিত আছে, কেউ জোরে কথা বলে নিঃশব্দতা ভাঙবেন না! ঠিক টিমটিমে আলো নয়, কিন্তু ঝলমলেও নয়, কোন মতে আঁধার দূর করা হয়েছে হলদেটে আলো দিয়ে।
প্রথমেই আমাদের থ করে দিল প্রদর্শনী কক্ষের প্রথম বস্তুটিই। আড়াই ফুটের মত লম্বা একটা লাঠি, খুব সাধারণ দেখতে, হাতলের জায়গাটি একটু মোটা, হঠাৎ দেখলে মনে হতে পারে বাঁশের কঞ্চির তৈরি, এবং হাতলের জায়গাটিতে বাঁশের গাঁট! এমন লাঠি গ্রাম বাংলায় কয়েক লক্ষ চোখে পড়বে একটা ঘুরান দিলেই, কিন্তু আমাদের থ করে দিল এর নিচের লেখাটি- ইহা মোজেসের (মুসা) লাঠি! মানে যে লাঠি ফেলে মুসা সাপ করে দিত সেই লাঠি? নাকি বৃদ্ধ বয়সে যে লাঠি নিয়ে হাঁটত সেই লাঠি? লোহিত সাগর দিয়ে বনি ইসরাইলদের নিয়ে পার হবার সময় এই লাঠিই তো তার সাথে থাকবার কথা? ( এর কথাই না ছিল ইন্ডিয়ানা জোনসের রেইডার্স অফ দ্য লস্ট আর্ক চলচ্চিত্রে?) , আমাদের উত্তেজিত ফিসফিস শুনে জাদুঘরের এক কর্মকর্তা এগিয়ে এসে বলল- কি ব্যাপার? জানতে চাইলাম ( হাসি চাপার চেষ্টা করতে করতে)- এইটাই কি সেই লাঠি যাহাকে মোজেস ভূমিতে ফেললেই সাপ হয়ে যেত( প্রাচীন মিশরে এই জাদু খুবই প্রচলিত ছিল,লাঠির গায়ে সাপ পেঁচিয়ে খেলা দেখানো) ? সে তো প্রায় তিন হাজার বছর আগের কথা! চোখ-মুখ কুঁচকে সেই ব্যাটা বলল- আমাদের এখানে যা কিছু সংগ্রহে আছে সবই অত্যন্ত Authentic! লে বাবা( রাজশাহীর স্থানীয় হতবাক হবার ভঙ্গি), ছোট বেলা থেকে পাড়ার হুজুরের কাছে শুনে আসলাম জনাব মোজেস নাকি ৬০ হাত লম্বা ছিল এবং নয়শ বছর বেঁচে ছিল, তার এই ছোট্ট লাঠি! ( অবশ্য মানুষের পক্ষে ৬০ হাত হওয়া কখনোই সম্ভব না পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ এবং অন্যান্য বৈজ্ঞানিক কারণে, আর মানুষ ৩০০ বছর আগেও অনেক খাটো ছিল, কাজেই ৩০০০ বছর আগে তো বলার অপেক্ষাই রাখে না) আর ৯০০ বছর বাঁচা, হুম্ম রূপকথায় সবই সম্ভব।
ঠিক আছে, ইহুদী ধর্মের প্রধান নবী, যাকে নাকি ওল্ড টেস্টামেন্টের উপর সিনাই পর্বতে নেমে এসে মানুষে গলায় কথা বলে ১০টি আদেশে লিখে দিয়েছিল দুটো প্রস্তর খণ্ডে, সেমেটিক ৩ ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি মোজেস, যার উপর নাকি আসমানি কিতাব তাওরাত নাজিল হয়েছিল, তার সবচেয়ে বিখ্যাত মুজিযা বা অলৌকিক ক্ষমতা দেখাবার নিদর্শন সেই লাঠির দিকে শেষ চাহনি দিয়ে এগোলাম পরের দ্রষ্টব্যে। বেশ কিছু দ্রব্য আছে ঘরটিতে, একাধিক চেম্বারে, মূল কিছু জিনিসের বর্ণনা দিয়েই বেরিয়ে যাব সুলতানের সবুজ বাগিচায়। একটা তলোয়ার চোখে পড়ল, তার মালিক ছিল বিখ্যাত ইহুদী নবী, ইসরাইলীদের ত্রানকর্তা ডেভিড ( দাউদ), এই তলোয়ার দিয়েই কি সে বিশালদেহী প্যালেস্টাইনি গোলিয়াথ কে হত্যা করেছিল ( অবশ্য অনেক গবেষকই মনে করেন গোলিয়াথ আসলে এসেছিল বিশাল কোন শহর থেকে, সেই বিশাল শহরের গোলিয়াথই মানুষের মুখে মুখে একসময় বিশালদেহী গোলিয়াথ দাড়িয়ে গেছে, সেই সাথে অবশ্যই আছে জয়ী ইহুদী নবী ডেভিডের মহিমাকে বড় করে দেখাবার প্রচেষ্টা , তাই মানুষের মুখে কাল ক্রমে দাড়িয়ে গেছে জয়ী ইসরাইলি কিশোর ডেভিড এবং পরাজিত দৈত্যাকার ফিলিস্তিনি গোলিয়াথ।
পরের কাঁচের শোকেসে দেখি একটা সাদা পাগড়ি, তার মালিক ছিল জ্যাকবের ছেলে জোসেফ( ইয়াকুবের ছেলে ইউসুফ)! আহাহা, এই সেই জোসেফ ( ইউসুফ) , শিশুকালে কত শুনেছি জুলেখা বিবির সাথে তার প্রেম কাহিনী, ক্রীতদাস হয়ে মিশরে তার আগমন ঘটলেও থেকে স্বপ্নের অর্থ বলে দেওয়ায় ক্ষমতার কারণে নাকি ফারাওয়ের আস্থাভাজন হয়ে ক্ষমতাশালী পদে অধিষ্ঠিত হয়েছিল সে । ( মনের ভিতরে গান ফেনিয়ে উঠল- প্রেম কইরাছে ইউসুফ নবী, তার প্রেমে জুলেখা বিবি গো! প্রেমের মরা জলে ডুবে না ।)
( ছবির উৎস)
অবশ্য একটি কথা আছে- সাদা কাপড় বেশ কয়েক বছর পরেই রাসায়নিক কারণে লালচে বর্ণ ধারন করে, সেখানে কয়েক হাজার বছর আগের জোসেফের পাগড়িটি অবিশ্বাস্য ধরনের শুভ্র! ইনারা কি মাঝে মাঝে আধুনিক ওয়াশিং মেশিনে প্রাচীন বস্ত্রখণ্ডটি ধৌত করেন? নাকি অলৌকিক কারণবশত এটা এমন সাদা ( অলৌকিক বলে কিছু নেই, যদি প্রমাণ থাকে তাহলে জনাব জেমস র্যান্ডির সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে অলৌকিকতার যথোপযুক্ত প্রমাণ দিয়ে ১ মিলিয়ন ডলার নিয়ে আসেন, এইযে এইখানেতার ঠিকানা)।
সেই পাগড়ির পাশেই রাখা একটা লোহার হাত, তার ভিতরে নাকি আছে খৃস্টানদের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি সেন্ট জনের হাত! যীশুর শিষ্যের দুই হাজার বছরের পুরনো শুকনো হাত এখানে কি করে আসল তার জবাব অবশ্য মিলল না। পাশে জনের কাছে থাকা কিছু প্রাচীন হাতে লেখা কাগজের( স্ক্রোল) দর্শনও মিলল, কি লেখা আছে তা অবশ্য জানা গেল না।
একটা পাত্রের দেখা মিলল যার মালিক ছিল খোদ আব্রাহাম ( ইব্রাহীম), সেই আব্রাহাম যাকে সেমেটিক তিন ধর্মেরই অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসেবে ধরা হয়, যার স্ত্রী সারার গর্ভের পুত্র ইসহাক এবং দাসী হাগারের ( হাজেরার) গর্ভের পুত্র ইসমাইল থেকে শুরু হয়েছে অনেক অনেক পুরাণকথার জন্ম এমনকি কোরবানির কাহিনীও, তার বংশ পরিচয় কিন্তু আজও আঁধারে ঢাকা, বলা হয় নোয়াহ-র ( নূহ) ১০ম বংশধর তেরাহ সন্তান ছিল আব্রাম, কালক্রমে তার নাম হয় দাঁড়ায় আব্রাহাম যার অর্থ অনেক জাতির পিতা, কারো মতে তার জন্ম আধুনিক ইরাকের উর নগরে, কারো মতে তুরস্কের সানলিউরফাতে , কিন্তু সেই আব্রাহামের পাত্র কি করে অটোমানদের হস্তগত হল তা নিয়ে অবশ্য ব্যাখ্যা নেই। সাধেই কি গুরুজনরা সারা জীবনে শুনিয়ে গেছে- বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর!
পরের চেম্বারগুলোতে ইসলামের জয়জয়কার, অটোমান সুলতানের কয়েক শতাব্দী ধরে মধ্যপ্রাচ্য দখল করে রাখায় এই জিনিসগুলো তারা নিয়ে এসেছে ইচ্ছা মত, মূলত ১৫১৭ সালে সুলতান সেলিম মিশর দখলের পর এইসব তার হস্তগত হয়। যদিও বলা হল খোদ সুলতান তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বছরে মাত্র একটি দিন, ১৫ রমযান, সেগুলো দেখতে পেত। এখানে আছে ইসলামের নবী মুহম্মদের ব্যবহৃত পোশাক, দুটি তরবারি, একটি ধনুক, একটি দাঁত, দাড়িগুচ্ছ, সিলমোহর, পায়ের ছাপ, রওজার মাটি এমন নানা জিনিসপত্রের সাথে একটি চিঠি, যা ইসলামের দাওয়াত দিয়ে লেখা হয়েছিল মিসরীয় শাসন কর্তা আল- মুকাউয়িসকে, সেখানে লেখা আছে-
মুকাউয়িস, মিশরের শাসনকর্তা,
[b]সঠিক পথধারীর উপরে শান্তি বর্ষিত হোক। আমি আপনাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিচ্ছি। যদি আপনি নিরাপত্তা চান, ইসলাম গ্রহণ করুন। ইসলাম গ্রহণ করলে নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ পুরস্কার দিবেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করলে আপনার সমগ্র জাতি যে ফলাফলের শিকার হবে, তার জন্য আপনি দায়ী হবেন।
জগতের সকল পার্থক্য রেখে একটি ব্যাপারে আমাদের একমত হতে হবে তা হচ্ছে এক আল্লাহ্ ছাড়া কারো উপাসনা করা যাবে না, এবং তার সাথে কাউকে তুলনা করাও যাবে না, অন্য কাউকে আমাদের ঈশ্বর হিসেবেও দাবী করা যাবে না।
আপনি যদি একে প্রত্যাখ্যানও করেন, জেনে রাখবেন, আমরা সবসময়ই এক আল্লাহ্কে বিশ্বাস করি[/b]
এর নিচের ইসলামের নবীর সীলমোহর,
পার্চমেন্টে লেখা চিঠিটি নানা হাত ঘুরে মিশরের আখমিমের খৃস্টান মনেস্ট্রিতে পৌছায়, সেখানের ব্রত পালনকারী এক ধার্মিক খৃস্টান বাইবেলে মধ্যে চিঠিটি রেখে দেয়। অনেক পরে একজন ফরাসী এটিকে পেয়ে সুলতান ১ম আবদুলমেসিদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে। সুলতান চিঠিটিকে সোনার ফ্রেমে বাঁধিয়ে ইসলামের অন্যান্য পবিত্র জিনিসের সাথে স্থান দেয়। ইসলামিক গবেষকরা ব্যপক গবেষণার পরে মতৈক্যে পৌঁছেছেন যে চিঠিটির মূল লেখক ইসলামের প্রথম খলিফা আবু-বকর। কিন্তু সিলমোহরটি ইসলামের নবীর সাক্ষর বহন করে।
এর উত্তরে আল মুকাওয়িস উত্তর পাঠাল-
আমি আপনার পত্র পড়েছি এবং সেই সম্পর্কে অবগত হয়েছি। আমি জানি পৃথিবীতে একজন নবীর আগমন এখনো বাকী ছিল, কিন্তু আমি ভেবেছিলাম তার জন্ম সিরিয়াতে হবে।
আমি আপনার দূতকে সন্মানের সাথে গ্রহণ করেছি। আপনার জন্য উপহার হিসেবে দুইজন দাসী পাঠাচ্ছি। এই দুই দাসী (Maiden) আমাদের সমাজের অতি উঁচু পরিবারের মেয়ে। সেই সাথে আমি আপনাকে কাপড় এবং চড়ার জন্য একটি দুলদুল ( ঘোড়া) পাঠাচ্ছি। ঈশ্বর আপনার সহায় হোন।
পরের চেম্বারে ইসলামের চার খলিফার অস্ত্রশস্ত্র, বিশেষ করে তরবারির সংগ্রহ। খোলাফায়ে রাশেদীনের শেষ খলিফার আলীর তরবারিখানা অন্যদের অস্ত্রের তুলনায় বেশ চওড়া মনে হল, সেখানে আরও ছিল বিবি ফাতিমার জায়নামাজ এবং একটি পোশাক। অস্ত্র ছাড়া সাম্রাজ্য বিস্তার তো আজ পর্যন্ত সম্ভব হয় নি, কাজেই ইতিহাস, সাম্রাজ্য আর অস্ত্রের শখ্য চোখে পড়ার মত বিশ্বের সবখানেই। চেম্বারে একজন মুফতি সারাদিন কোরান তিলাওয়াত করছে। শুনলাম প্রাচীন নিদর্শনগুলো রক্ষার জন্যই নাকি এমন টিমটিমে আলোর ব্যবস্থা (!), আর ছবি তোলা অবশ্যই নিষিদ্ধ!
এবার সদলবলে বেরিয়ে এলাম উদার আলোক মাঝে উম্মুক্ত বাতাসে, অনেক হয়েছে ঘুপচি ঘরের ভিতরে, এখন গটগট করে চললাম ১৪৫৯ সালে স্থাপিত প্রাসাদটির বারান্দা মাড়িয়ে। অটোমানদের ৬২৪ বছরের শাসনকালের মাঝে ৪০০ বছরই ( ১৪৬৫-১৮৫৬) এই প্রাসাদই ছিল একটি সাম্রাজ্যের কেন্দ্রবিন্দু। পরে ১৮৫৬ সালে সুলতান তার দরবার সরিয়ে নিয়ে যায় ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতি অনুযায়ী নির্মিত দোলমাবাঁচে প্রাসাদে, কিন্তু তারপরও রাজকীয় রত্নাগার, গ্রন্থাগারসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিভাগ এই প্রাসাদেই অবস্থিত ছিল। অবশেষে ১৯২১ সালে তরুণ তুর্কিরা মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে সুলতানদের অধ্যায় শেষ করে দিলে ১৯২৪ সাল থেকে তোপকাপিকে জাদুঘর ঘোষণা করে জনগণের দর্শনের জন্য উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
ইতিহাসবিদ, লেখক তপন রায়চৌধুরীর আত্মজীবনী বাঙ্গালনামাতে উল্লেখ আছে তোপকাপি প্রাসাদের রত্নরাজির কথা, লেখক সারা পৃথিবী ভ্রমণে করলেও এমন রত্নসম্ভার নাকি আরও কোথাও দেখেন নি, কথাটা যে কতখানি সত্য তা হীরা-চুনি-পান্নার ছটায় বুঝে গেলাম পরের কয়েকটা ঘরে ঢুঁকে, পায়রার ডিমের মত বড় বড় অপার্থিব সৌন্দর্যের অধিকারী পান্না ( টারজানের সর্বনাশা হীরে বইটির পান্নাও মনে হয় এত বড় ছিল না), আঙ্গুরের মত বড় বড় রক্তলাল রুবি, আর পলকাটা দুর্দান্ত সব হীরকখণ্ডের ছটায় চোখ খোলা মুশকিল মনে হল মাঝে মাঝে, এর মাঝে আবার বিশেষ ভাবে নজর কাড়ল ৮৬ ক্যারেটের Spoonmakers Diamond, বলা হয়ে থাকে সুলতানের সংগ্রহশালারও সবচেয়ে মূল্যবান রত্ন এই হীরেটিই।
উপরের ছবির উৎস
প্রচলিত গল্প মতে এক মৎস্যজীবী হীরেটি কুড়িয়ে পায় আবর্জনার মাঝে এবং এটাকে চকচকে কাঁচ মনে করেই পকেটে রেখে দেয়, পরে এক গহনার দোকানে দেখালে চতুর স্বর্ণকার মাত্র ৩টি চামচের বিনিময়ে হীরেটি হাসিল করে, যেখান থেকে এর নামে হয়েছে স্পুনমেকারস ডায়মন্ড। এমন আরও কয়েকটি গল্প প্রচলিত আছে অমূল্য রত্নটি নিয়ে। কিন্তু গবেষকরা জানাচ্ছেন ১৭৬৪ সালে পিগট নামের এক ইউরোপিয়ান কর্মকর্তা মাদ্রাজের মহারাজার কাছ থেকে হীরেটি ক্রয় করে এবং দেশে ফেরার পথে ডাকাতেরা তার হীরেটি লুট করে নেয়। অথবা তার মৃত্যুর পরে অন্য মানুষের হাতে চলে যায়। এরপর নানা নিলামের পরে, অনেক হাত বদল হয়ে এটির মালিক হয় ফরাসী সম্রাট নেপোলিয়নের মা। তিনি পরবর্তীতে তার ছেলের নির্বাসনে থাকার সময় অর্থসংগ্রহের কারণে বিক্রি করে দেন। তখন আলী পাশার একজন প্রতিনিধি হীরাটি কিনে ইস্তাম্বুলে নিয়ে আসে। তবে হীরকখন্দটি ঘিরে যে ৪৯টি অসাধারণ পলকাটা হীরে বসানো আছে তা ঠিক কোন সুলতানের আমলে হয়েছে তা আমাদের জানা নেই। গুজব আছে হীরাটির এককালের মালকিন ছিল ফরাসী সম্রাজ্ঞী মেরি অ্যাতোয়ানেৎ!
আছে বহুমূল্য পাথর বসানো ছুরি ( খঞ্জর), পানপাত্র, তৈজসপত্র।
উপরের পান্নাখচিত ছুরিটির ছবির উৎস এই পেজ।
দেয়ালে দেয়ালে ঝুলছে সুলতানদের প্রতিকৃতি, সেই আমলের চিত্রকর্ম।
কিন্তু সেই একই সমস্যা- ছবি তোলা নিষেধ! তবে জানা গেল হারেমে আলাদা টিকেট কেটে ঢুকতে হলেও সেখানে ছবি তোলা যাবে! অতএব, এবারে গন্তব্য হারেম-
মূল হারেমে ৪০০টির অধিক কক্ষ আছে! সুলতানের খেয়াল বলে কথা! তো এত ঘরে তো আর উঁকি দেয়া সম্ভব না, তারা বেছে বেছে কিছু বিশেষ ঘর খুলে রেখেছে দর্শনার্থীদের জন্য। অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে হারেমের মূলকত্রী ছিল খোদ সুলতানের মা! যার উপাধি ছিল ভালিদ সুলতান, যে হত সেই সাম্রাজ্যের অন্যতম ক্ষমতাধর ব্যক্তি কারণ সুলতানের কোন স্ত্রী এবং কোন সন্তানের সাথে তার কি রকম সম্পর্ক হবে তা ঠিক করে দিত এই ভালিদই।
এই পর্যায়ে এসে ইতিহাসের এই কচকচানি আর ভাল লাগছে না , মনে হচ্ছে কত বিষণ্ণ দীর্ঘশ্বাস মিশে আসে এই স্থাপত্যের প্রতিটি কোণে, সারা বিশ্ব থেকে ছলে-বলে-কৌশলে সুন্দরীদের আনা হয়েছে ইচ্ছেয়-অনিচ্ছেয়, কিনে- লুট করে- উপহার হিসেবে সুলতানের জন্য। ইউরোপের নানা দেশের যুদ্ধবন্দী শ্বেতাঙ্গিণী, বলকানের মেয়েদের অবিরাম সরবরাহ ছিল হারেমে, আসলে কোন দেশের ছিল না! তাদের দেখভালের জন্য, পাহারা দেবার জন্য ছিল খোঁজাদের দল। নিবীর্য করা অসহায় এই মানুষগুলি কি অভিসম্পাত করত না ২৪ ঘণ্টা!
বিলাস ব্যসনের কমতি ছিল না কিছুতেই, শত বছর আগের শৌচাগারও বেশ আধুনিকই মনে হল।
সুলতানের ছেলেকে আবার সামান্য বয়প্রাপ্ত হলেই হারেমে নিয়ে আসা হত, যেন সে মহিলাদের সাথে একজন প্রকৃত সুলতানের মত ব্যবহার করা শিখতে পারে! ( মানে কি? নিশ্চয়ই সহবৎ!), দেয়ালে দেয়ালে অপূর্ব সুক্ষ নকশা আঁকা, কোন কোন সুলতানের বিশেষ চেম্বারে নাম খোদাই করা আছে, কিছু ঘরে নর্তকী আর খোঁজাদের পুতুল সাজিয়ে চেষ্টা করা হয়েছে সেই সময়ের পরিবেশ সৃষ্টির।
হারেমের রমণীদের ভাগে অনেক শ্রেণী বিন্যাস ছিল, কে সুলতানের মূল স্ত্রী, কে রক্ষিতা, কে তার কাছে নিয়মিত যেতে পারবে এমন সব নিয়ম কানুনের নিগড়ে বয়ে চলতে অন্তঃপুরের বাসিন্দাদের জীবন। হারেমের শত মেয়েই হয়ত কোনদিনই সুলতানের শয়তানপানা মুখ দেখার দুর্ভাগ্যের সম্মুখীনই হত না। মাঝে মাঝেই শুনেছি সুলতানের অরুচি হলে কয়েকজন রক্ষিতাকে( জী না, মুক্তি দেওয়া হত না, সম্রাটের ভোগ করা নারী কি অন্য কারো ক্রোড়ে শোভা পেতে পারে!) বিশেষ সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে বসফরাসের জলে ফেলে দেয়া হত, মৃত্যু এসে মুক্তি দিত সেই অভাগিনীদের এই ক্লেদময় জীবন থেকে।
পথের পাশে বিশাল পাত্র দেখে সন্দেহ হল ইহা কি সোমরসে পূর্ণ ছিল নাকি সুপেয় জলে?
কি নিষ্ঠুরতা চালাত মানুষ বিলাসিতার নামে, একজন সুলতান কি কোনদিন বুঝেছিল যে সে গুপ্তহত্যার শিকার হলে, লড়াইতে হেরে গেলে তার স্ত্রী-কন্যারাও এমন হারেমের বাসিন্দা বলেই ব্যবহৃত হবে অন্য কোন পুরুষের! মনে হয় না এতটা মনুষ্যত্ববোধ তাদের ছিল।
মাংসের কুৎসিত কারবারের পুঁতিগন্ধময় স্মৃতির এলাকা থেকে কোন রকমে বেরিয়ে চললাম বিশাল প্রাসাদের অন্য প্রান্তরে, বাগিচায় একাধিক গাছের দেখা মিলল যাদের বয়স কয়েক শতাব্দীর বেশীই হবার কথা। বিচিত্র ধরনের ফাঙ্গাসের আক্রমণে অবশ্য কয়েকটি গাছের সাংঘাতিক দুরবস্থা।
একের পর এক বিশাল বারান্দা , এক ফাঁকে যাওয়া হল সুলতানের দরবার কক্ষে, জাঁকজমকপূর্ণ তাকিয়া, মহামুল্য কাপড়ের পর্দা, আর স্মৃতির ধুপছায়া।
পায়ে পায়ে সবাই চললাম সেই কক্ষের দিকে যেখানে পীরি রইসের সেই বিশেষ মানচিত্রখানা আছে, কিন্তু এবারে বিধিবাম, শোনা গেল বিশেষ সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার জন্য আপাতত অসাধারণ সেই ম্যাপটি আপাতত জনসম্মুখে দেখানো হচ্ছে না! কাজেই আবার ফিরতে হবে তোপকাপি প্রাসাদে অন্য কোন বছর।
ফেরার আগে সুলতানের বাগিচা থেকে চোখে পড়ল বসফরাসের জলধারা, গোল্ডেন হর্ন, অপর পাড়ের মহাদেশ। মর্মর সাগরের বাতাস মন থেকে ধুয়ে নিয়ে গেল প্রাসাদের ক্লেদময় ইতিহাসের অনেকটাই, সেই সাথে আহ্বান জানাল অপর মহাদেশে যাবার জন্য। এবারের যাত্রা সেদিক পানেই—
( এই পোস্টটি সচল জীবাণুবিদ, স্বঘোষিত এবং জোরপূর্বক মডু এবং পেলেবয় উপাধি নেওয়া, বিখ্যাত ব্লগার, তরুণ বিপ্লবী অনার্য সঙ্গীতের জন্য। কয়েকদিন আগেই তার জন্মদিন গেছে, খাস দিলে আশা করছি তার জীবনের প্রতিটা দিনই যেন জন্মদিনের মত পার্টিময় হয়! হৈ রতন ভাইডি, আমার ইমো কই?)
মন্তব্য
হা হা তারেক অনু ভাই ডিস্ক্লেইমার টা দিয়া আপনি এই পোস্ট টারে একেবারেই জলো কইরা দিছেন। তয় এই কারণেই আপনার লাইজ্ঞা রাইখা গেলাম - ইমরান
ক্যান!
facebook
ক্যামেরা সম্পর্কে আমি একদমই অজ্ঞ; এগুলো কোন ক্যামেরায় তোলা?
লেখা বরাবরের মতোই তথ্যবহুল ও চমকপ্রদ।
__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;
আমার একটা ক্যান্ন ৪০ডি ছিল, এখন আর নাই , সেটা দিয়ে
facebook
শিক্ষণীয়
facebook
আমি আগেই বুজছিলাম আপনে খারাপ লুক। পীর পয়গম্বরের লাঠিজুতা নিয়া সংশয় প্রকাশ করেন সি সি সি!
হারেম দেখে মেজাজ খারাপ হয়ে গেসে দেখেই কি ছোট করে দিলেন? হারেম নিয়া আলাদা পোস্ট আসা উচিৎ ছিল, হারেম এক অদ্ভুত দুনিয়া।
..................................................................
#Banshibir.
ঠিক! একখান উপন্যাস লিখতে হবে- হারেমের হারামজাদা
facebook
..................................................................
#Banshibir.
হাসলেন যে বড়!
facebook
হাসিনাই কাইত হয়ে শুয়ে মাটি কিলাইতেসি।
..................................................................
#Banshibir.
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
ঐ তুই থাম তুষার
facebook
হে হে, ঐ উক্তি মনে আছে, "থামলে ভালো লাগে"।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
তারিক আনাম!
facebook
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
জটিল ছিল তার অভিনয়।
facebook
বারো রকম মানুষ!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
facebook
আপ্নেও?
..................................................................
#Banshibir.
জাতীয় ঐকমত্যর ভিত্তিতে আপনে আমি একসাথে কাইত হইয়া মাটি কিলাই।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
কই যামু!
facebook
যাইয়েন না, লাইনে আসেন।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
এক রামে রক্ষা নাই, সুগ্রীব দোসর!
পীর একা না, লগে অরফিয়াসের বাঁশরী!
facebook
আপনি কি সহলেখক হইতে ইচ্ছুক? তাহলে লাইনে আসুন।
facebook
কক্কনো না। আমি লিখবো ট্র্যাজিক হিরু শাজাহান বাদশারে নিয়া মিষ্টি পেমের উপন্যাস "তাজের কান্না"।
..................................................................
#Banshibir.
তাজের হাসি, পড়বে ফাঁসি!
facebook
হাহাাাহহাহাহ
আপনি কই সাজাহান কে ব্যানার বানাইতে চান?
facebook
নামটা কইলাম সেইরাম হইসে
কোনটা?
facebook
দারুণ লাগলো।
আপনে এমন জায়গায় গেলে না একখান ফাটাফাটি কাহিনী আসত!
facebook
পত্রখানা পড়িয়া বড্ড মোহিত হইলাম
ইস্তাম্বুল যাওয়ার শখ তো আর এই জীবনে পুরণ হবে না
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
কেন মোহিত হলেন, জাতি জানতে চায়!
খোদার উপর তাওয়াক্কুল রাখেন মিয়া, তাহলে না যাইতে পারবেন তুর্কি!
facebook
দারুণ দারুণ !!
আসলে অতিমাত্রায় বিশ্বাসীদের সচলায়তন এড়িয়ে চলাই ভাল।
facebook
চরম পোস্ট।
[আমার চারপাশ]-[ফেবু]-[টিনটিন]
facebook
এমনিতে আমি কফি পছন্দ করি না, কিন্তু বসফরাস এর ভিউওয়ালা কোন ক্যাফেতে বইসা টার্কিশ ডিলাইট সহযোগে কফি খাওনের ইচ্ছে আমার অনেকদিনের
______________________________________
যুদ্ধ শেষ হয়নি, যুদ্ধ শেষ হয় না
পরের বার, চইল্যা আহেন
facebook
হিংসাসমৃদ্ধ কমেন্ট
facebook
'Harem' এর পর 'THE Harem' লেখাটার আলাদা কোন তাৎপর্য আছে কিনা সেইটাই ভাবতাছি !
facebook
হীরক বসানো ছোরার গুতা খেয়ে মরলে কি আরাম বেশি লাগতো নাকি মড়ার মর্যাদা বাড়ত?
হুম কোনটাই হইত না!
facebook
facebook
এই হারেম জিনিসটা প্রথম কার মাথা থেকে বের হয়েছিল? দুনিয়ার সব সুলতান, মহারাজা গুলাই এক মনে হয়, নষ্ট অমানুষ।
লেখা দারুণ।
হারেম দেখার আমার কোনই ইচ্ছে নেই, কিন্তু বসফরাসের কাছে আমাকে একবার যেতেই হবে
আহা, বসফরাসের নোনা বাতাস।
রানীদেরও কিন্তু হারেমের মত ব্যবস্থা ছিল, রাশান জারিনা ক্যাথরিন দ্য গ্রেটের জীবন ঘাঁটলেই দেখতে পারবেন।
facebook
খ্যাতনাম্নী ক্লিওপেট্রারও নাকি ছিল।
facebook
ঘনুদা, এই মানচিত্রখানা নিয়ে বিস্তারিত লেখা চাই, যথেষ্ট আগ্রহ আছে এটা নিয়ে।
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
আমারও, ঘরে একখানা প্রমাণ সাইজের মানচিত্রও আছে, ইস্তাম্বুল থেকে উপহার পাওয়া।
facebook
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
লিখেই ফেলি তাহলে-
facebook
জোর যার মুল্লুক তার...
facebook
এই লেখায় তো ধর্ম নিয়ে কোন কথাই আপনি বলেন নি। অনর্থক সতর্ক করেছেন পাঠককে। আর ধর্ম বিষয়ক কিছু থাকলেও পাঠককে সতর্ক করার কিছু নেই। সত্য যে সহ্য করতে পারেনা তার মূর্খতা আলগে চলার কোন প্রয়োজন নেই।
লেখা চমৎকার। আগেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। তিব্বত তখনই কনফার্ম করেছি। আপনার এই লেখার জন্য আমার আঠারোতম জন্মদিন স্মরণীয় হয়ে থাকলো! অনেক ধন্যবাদ।
প্লেবয় ইত্যাদি দুষ্ট কথা বলেছেন দেখলাম আমার নামে। ভালোবাসা কোন অপরাধ তো নয়। বালিকারা আমাকে ভালোবাসলে আমি কী করতে পারি! এইসব বদনামের তীব্র প্রতিবাদ করলাম!
প্রসঙ্গত, সচলায়তনে কে মডু, কে মডু নয়, কে কীভাবে মডু ইত্যাদি আলোচনা নিরুৎসাহিত করা হয়। এমন চমৎকার একটি লেখায় এরকম খানিকটা দাপ্তরিক মন্তব্য করতে হল বলে দুঃখিত। কিন্তু এরকম মন্তব্য সচলায়তন সঞ্চালনে বিরূপ প্রভাব ফেলে।
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
হা হা, বালিকারা ভালবাসলে আর কি করবেন, হয় মাসুদ্রানা না হয় তারেক অণুর পন্থা ধরেন- টানেন সবাইকে, কিন্তু জড়াইয়েন না, ঠিকাছে ?
facebook
বড় বড় রাজা বাদশারা তো দেখি সব বিশ্ব বিখ্যাত চোর ছিল! শুধু চোর না সেই সাথে লুল ছিল। হারেমের কথা পড়তে যেয়ে খুব রাগ লেগে গিয়েছিল।
তুমি সাবধানে থাকো ভাইয়া। অতি বিশ্বাসীরা দা-বটি দিয়ে তারেকাণু ইমোর মাথা কেটে ফেলবে কিন্তু!
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
ফেললে কি আর করা! মাথা ছাড়া তো কথা ব্লা যাবে না!
facebook
আপনার লেখা দেখছি না অনেক দিন!
facebook
হেরেম নিয়ে বাজে কথা বলায় তীব্র দিক্কার জানাই- আমার অনেকদিনের শখ একটা হেরেম খোলার, আর আপনি কিনা তার বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতেছেন !
লেখা বরাবরের মতোই "উমদা" হইছে... এবং সেই সাথে দীর্ঘশ্বাসপূর্ণ !
অলমিতি বিস্তারেণ
বাজে কোথায় বললাম হে কাউবয়! গালাগাল তো করলাম সুলতানকে, আর সেখানের জীবনধারা কে!
আপনার ব্যক্তিগত হারেম সুখের হউক !
facebook
পান্না বসানো ছুরির শীথটা জটিল!!
এই 'হারেম' জিনিসটা ধর্মে 'হারাম' বানাইলে কি ক্ষতি হইত!! যত্তসব লুল-মি দেখি ধর্মগুলাতে দিব্যি বহাল তবীয়তে জায়েজ বানায়ে রাখা হইছে। এক সুলতানের জন্যে হারেমে চারশর অধিক কামরা! এনাদের সুলতান না বলে পতিত-পুরুষ বললে কেমন হয়?!
সুলতান নিয়ে মস্করা ঐ কে আছেস!
facebook
স্বল্প জ্ঞানে যদ্দুর জানি, হারেম জিনিসটা ধর্মে হারামই আছে। তবে যারা হারেম বানাইছে তারাও মনে লয় আমার মতন মডারেট ধার্মিক ছিলো
আমার খুব শখ আছিলো বড় হয়ে একটা হারেম খোলার!
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
বড় হয়ে খুইলেন
facebook
অণু ভাই,
৯০০ বছর বাঁচার ব্যাপারটা মনে হয় নূহ (Noah) এর , মূসার না। উইকিপিডিয়া বলছে, "Rabbinical Judaism calculated a lifespan of Moses corresponding to 1391–1271 BCE;[6] Christian tradition has tended to assume an earlier date.[7]" । এতে ১২০ বছর হয়।
লেখা ভাল লাগলো। 'হারেম' এই নামে শ্রীপান্থ এর লেখা একটা বই আছে। পড়া না থাকলে পড়ে দেখতে পারেন।
------------------------------------------------------------------
এই জীবনে ভুল না করাই সবচেয়ে বড় ভুল
ঐটা মুখে মুখে শোনা। আব্রাহামেরটা ব্লা হয় ১৭৫ বছর !
ধন্যবাদ
facebook
আইজকাই গুলশানের তোপকাপি রেস্টুরেন্টে গিয়া লাঞ্চ করা লাগবে, তারপর ছবি তুলার অনুমতি আছিল না কইয়া একটা বিশাল পোস্ট ফাঁইদা বসবো
তোপকাপি দেখছিলাম দূর থেকে! যাওয়া হয় নাই, কেমন তাদের খাবার?
facebook
লেখা চরম হৈছে
facebook
বসফরাসের জলের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম একবার । কেন ? সেটাও তো আপনি লিখাতেই বলে দিয়েছেন।
facebook
এইসব সুলতানদের কি একটাও বলার মত কোন পজেটিভ দিক ছিল না!!!
বুড়া মকবুল
ছিল, কিন্তু হারেমের সেই পরিবেশে ছিল না। আমার অটোমানদের নিয়ে অন্য পোস্ট আছে, সময় থাকলে দেখতে পারেন।
facebook
খুঁজলে হিটলারেরও ভালো দিক পাওয়া যাবে কিন্তু তার বজ্জাতির কাছে তা কিছুই না।
..................................................................
#Banshibir.
কিছু না মানে কিচ্ছু না। উম্মাদ খুনিটাকে নিয়ে লিখতে হবে শীঘ্রই
facebook
তারেক অণু'র লেখা যত পড়ছি,ততই মুগ্ধ হচ্ছি।
হারেমের হারামজাদাদের নিয়ে লেখাটা পড়ার অপেক্ষায় থাকলাম।
আরে , ঐটা লিখবে হারেম বিশেষজ্ঞরা, আমি কোন ছাড়
facebook
মিয়া,
সতর্ক বাণী দেইখা উল্লসিত হইয়া ঢুকসিলাম! এই ভাবে মুলো ঝুলিয়ে দিয়ে আমার মত গাধা কে নিরাশ করার জন্য অনার্য মডুর কাছে ফরিয়াদ জানালাম।
একেবারেই ভিন্ন প্রসঙ্গেঃ
১। লেখাটা বরাবরের মতই মুচমুচে হয়েছে।
২। নবীজির চিঠি দেখলাম দেখলাম সেই রকম থ্রেটে ভরপুর। ভাবখানা হল, লাইনে আয়, নাইলে কিন্তু গদাম! শান্তির ধর্ম বলে কথা!!
৩। হারেম এর খুব কাছাকাছি উচ্চারণের আরেক শব্দ হল হারাম অথচ হারেম হারাম ছিল বলে কোন উল্লেখ নাই।
৪। 'হেরেমের হারামজাদা'-র পরবর্ত্তী ভল্যুমের নাম 'হারাম হেরেমজাদা' রাখার প্রস্তাব করলাম।
৫। নবীজিকে দাসী প্লাস কাপড় প্লাস ঘোড়া দেবার একটা 'সেরাম' কারণ মনে এসেছিল--কিন্তু সুশীল পাঠকের কথা বিবেচনা করে 'আলুচোনা' করা থেকে বিরত রইলাম---হে হে হে --
লাইনে আয়, নাইলে কিন্তু গদাম! এই কথা কোথায় পাইলেন_ ছিঃ ছিঃ, শান্তির দাওয়াতকে গদাম দিয়ে দিলেন! নাহ, আপনি মানুষ ভালা না
ইয়ে, মানে ভাইজান, আলুচোনা চলুক না- ক্ষতি কি?
facebook
গুলশানের তোপকাপিতে খাইছি তাই বলতে পারি আমিও তারেক অণুর চাইতে কোন অংশে কম না।
ইসলামের দাওয়াত দিয়া চিঠি লিখলেই যদি দুইখান করে দাসী উপহার পাইতাম তাইলে চিঠি লেইখ্যা ইসলামের দাওয়াত দিয়া পুরা দুনিয়া তামা বানায়ালাইতাম!
ইসলামের দাওয়াত দিয়া চিঠি লিখলেই যদি দুইখান করে দাসী উপহার পাইতাম তাইলে চিঠি লেইখ্যা ইসলামের দাওয়াত দিয়া পুরা দুনিয়া তামা বানায়ালাইতাম!
..................................................................
#Banshibir.
পীর সাহেব ফতোয়া দিয়ে দিল! ওরে কে আছিস
facebook
শুরু করেন লিখা! আর দেশে আসলে যদি নিরাপত্তা চান তাহলে আমাদের তোপকাপিতে খাইয়ে বিল দিতে হবে!
facebook
facebook
নবী, রসুলের লাঠি নিয়ে মস্করা! ঐটা বিবর্তনের ধারায় ছোট হয়ে গেছে।
এইডা তো চিন্তা করি নাই!
facebook
মুসার লাঠি থেকে এখন আর সাপ বের হয় না?
তামান্না ঝুমু
না, তখনো যা ছিল এখনো তাই আছে ।
facebook
...... সিমপ্লি অসাধারণ
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
যাহ! ম্যাপটাই দেখতে পেলি না!
এখানে যেতেই হবে!!
-----------------------------------------------
'..দ্রিমুই য্রখ্রন ত্রখ্রন স্রবট্রাত্রেই দ্রিমু!'
হ, পরের বার দেখুম। কিন্তু একটা কড়া কপি গিফট পাইছি, সেটাই চাইয়ে দেখি মাঝে মাঝে।
facebook
অসাধারণ!!!আপনাকে দেখে মাঝে মাঝে ঈর্ষা হয়।
বুনো পথিক
খামোখা!
facebook
আইচ্ছা, যামু নে একদিন !
facebook
লাইনে আসুন
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
সময় নাই, জীবন এতই ছোট্ট!
facebook
facebook
বরাবরের মতো! সেমেটিক গুরুদের জিনিসপত্রের আরো বর্ননা থাকলে ভালো হতো, খুব আগ্রহ নিয়ে পড়ছিলাম। সব পবিত্র জিনিস আর হেরেম একসাথে, একই রকম মনে হয়
ভুলে গেছি, খুব একটা আগ্রহ ছিল না তাদের নিয়ে।
facebook
তোপকাপি সম্পর্কে অনেক কিছু জানা হলো।
( অণু, হিংসা রাইখা গেলাম। আপনারে হিংসা করতে করতে সব হিংসা ফুরাইয়া যাইতাছে! )
কি কথা!
facebook
তোপকাপি নিয়ে জানতাম না। আপনার লেখার হাত অসাধারণ, আগে বলেছি কিনা মনে নাই।
না, প্রথম বললেন ! কোটি গুণ বাড়িয়ে বলেছেন, তারপরও অনেক অনেক ধন্যবাদ।
facebook
ফিলিং হিংসিত! :/ ঐখানে যেতে মন চায়
যাওয়ার মতই জায়গা, নিঃসন্দেহে
facebook
এমন কোন সুলতান বা রাজা কি ছিল না যার কোন হারেমখানা ছিল না ?
লেখাটা পড়ে দুরকম অনুভূতি কাজ করছে । খুব ভালো লেগেছে একই সাথে সেই অসহায় রমণীকুলের জন্য বুকভরা কষ্ট । ধন্যবাদ তারেক ।
আগাছা বাছতে ক্ষেত উজাড় হয়ে যাবে তেমন সুলতানের সন্ধানে।
facebook
পিরী রইস এর নাম আগেই দেখসিলাম এসাসিনস ক্রীডঃ রিভিলেশন খেলতে গিয়া। তয় এই নামে যে এক্কান পুরা মানুষ আসে জানতাম না। কত অজানারে!! তয় আমি কইলাম তোপকাপি'র খানাও খাইসি, আবার ঐ গেম খেলতে গিয়া তোপকাপির বাইরের চিপাচুপায় ও ঘুইরা আইসি! (সবতেরে পিসে ফেলায়া দিলাম ) ল্যাখায়
পুনশ্চঃ একটা আবদার আসিলো। পিরী রইস রে লয়া যদি ইক্টু লেখতেন। আমি অশিক্ষিত মানুষ, গুগল ভাই এর ইংরেজী দেখলে জ্বর আসে। ইশকুলে কোনোকালে ৩৫ এর উপ্রে পাই নাই অপেক্ষায় থাকলাম
আলতাইর
ভাল লাগল আপনার পোস্ট। কপালে থাকলে কখন এই প্যালেসে যাওয়ার ইচ্ছা রাখি।
তবে হারেম সম্পর্কে কিছু তথ্য শেয়ার করতে চাই।
অটোমানদের হারেম সম্পর্কে আমাদের একটা ভুল ধারণা আছে। আমরা মনে করি সম্রাটের অবাধ বাসনা মেটানোর জন্য হারেম। আসলে হারেম একধরনের সিলেক্টিভ রিপ্রোডাকশন সিস্টেম হিসেবে ব্যবহার হয়েছে অটোমান সম্রাজ্যে। অটোমান সম্রাটদের আসলে বিয়ে বলে কোন পদ্ধতি ছিল না সম্রাটের জন্য। প্রথম দশ জন সম্রাটের কোন স্ত্রীই নেই। দশম সম্রাট সোলাইমান প্রথম বিয়ে করেন। বিভিন্ন দেশ থেকে আনা মেয়েদের থেকে হারেমে খুব অল্প কয়েকজনই মনোনীত হত সুলতানের শয্যাসঙ্গী হিসেবে। সুলতান চাইলেই যাকে তাকে বিছানায় নিয়ে যেতে পারতন না। তাদের মাঝে যে সুলতানের সন্তানের মা হতেন তাকে আলাদা করে ফেলা হত এবং সুলতান আর কখনওই তার শয্যাসঙ্গী হতেন না। এদের থেকে একজন সুলতানের উত্তরাধিকারি হতেন এবং তার মা রানি জাতীয় মর্যাদা পেতেন।
দশম সুলতান সোলাইমান প্রথম তার এক দাসকে বিয়ে করেন এবং গতানুগতিক উত্তরাধিকার পদ্ধতি চালু করেন। এর পরের সুলতানরা কেউই প্রথম দশজনের মত শাসন করতে সক্ষম হননি এবং অটোমান সম্রাজ্য ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়। মূলত অটোমান সম্রাজই একমাত্র সম্রাজ্য যারা একের পর এক দশজন প্রতাপশালী সম্রাটের পতিষ্ঠা লাভ করে।
বিবর্তনবাদী
ছবি না দিলে বুঝুম ক্যাম্নে লাঠি ছুডু না বড়?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
নতুন মন্তব্য করুন