মানুষের জীবনের সেরা সময় যেমন শৈশব- কৈশোর, তেমন সবচেয়ে প্রিয় স্থানটি হচ্ছে সেই জায়গা যেখানে সে তার শৈশব অতিবাহিত করেছে। তার জন্মস্থান কিন্তু নয়, খানিকটা জ্ঞান-বুদ্ধি হবার পর থেকে বিশেষ করে স্মৃতির পর্দায় জীবনে ঘটনাগুলো আটকা পড়ে সেই সময়ের কয়েকটা বছরই সর্বশ্রেষ্ঠ কাল, সেই দেশই সেরা দেশ , যার কারণে ফেলা আসা সেই দিন,জায়গা, সাথীদের কথা ভেবে মনের অজান্তেই দীর্ঘশ্বাস ফেলে প্রতিটি মানুষই। যে জন্য মনে হয় আমার জন্ম যদি মঙ্গোলিয়াতেও হত বা বলিভিয়ার পর্বতে, তারপরও আমার কাছে বিশ্বের সবচেয়ে মায়াময় স্থানটি হত বাংলাদেশের পদ্মাপারের নিরিবিলি শহর রাজশাহী, সেখানেই যে কাটিয়েছি আমার শৈশব – কৈশোর, যে স্থানের সাথে তুলনীয় এর কিছুই হতে পারে না বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে। তাই বিশ্বের সেরা দেশ আক্ষরিক অর্থে সেই দেশটাই, কিন্তু এখানে বিশ্বের সেরা দেশ বলতে নিউজ উইক পত্রিকার ২০১০ সালের বিশ্বের সকল দেশের নাগরিকদের শিক্ষা,চিকিৎসা, নিরাপত্তা, দুর্নীতি, মানবাধিকার ইত্যাদি নানা বিষয় জরিপ করে যে দেশটার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সেটার কথাই বলা হয়েছে।
খুব ছোট্ট থাকতেই সাধারণ জ্ঞানের বইতে দুইটা প্রশ্নে চোখ আটকে যেত- হাজার হ্রদের দেশ কোনটি? উত্তর- ফিনল্যান্ড। হাজার দ্বীপের দেশ কোনটি? উত্তর সেই একই - ফিনল্যান্ড! অবাক হয়ে ভাবতাম একটা দেশে কী করে এত হ্রদ আর দ্বীপ একসাথে থাকতে পারে! সেই থেকে ফিনল্যান্ড নামের সাথে পরিচয়। কিন্তু ফিনল্যান্ড আজ শুধুমাত্র হাজার হ্রদের বা দ্বীপের দেশ বলেই নয়, কিংবদন্তীর দূরপাল্লার দৌড়বিদ পাভো নুরমি, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল কতৃক পরপর কয়েকবার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে নির্বাচিত, ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে মহিলাদের ভোটাধিকার প্রদান, আয়তন অনুপাতে সর্বাধিক বনের ( ৭০%) অধিকারী, লিনাক্স এর আবিস্কারক লিনাস টোরভেল্ড, একাধিক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ফর্মুলা ওয়ান ড্রাইভার, সর্বোপরি মোবাইল কোম্পানি নোকিয়া এবং অ্যাংরি বার্ডস, এদের কারণেই ফিনল্যান্ড আজ বিশ্বের অন্যতম আলোচ্য দেশ।
ফিনল্যান্ড ইউরোপের ৭ম বৃহত্তম দেশ, আয়তন ৩,৩৮,০০০ বর্গ কিমি, জনসংখ্যা আয়তন অনুপাতে যথেষ্টই কম, মাত্র ৫৫ লক্ষ। রাশিয়া, সুইডেন এবং নরওয়ের সাথে এর সীমান্ত আছে, আর দক্ষিণে- পশ্চিমে আছে বাল্টিক সমুদ্র। দুই লক্ষ পাঁচ হাজার হ্রদ আছে এইখানে, অধিকাংশ হ্রদই একে অপরের সাথে যুক্ত। আছে লাখো দ্বীপ। ফিনল্যান্ডের প্রকৃতির কিছু আলোকচিত্র নিচের লিঙ্কগুলোতে পাবেন-
দেশটির ৭০% বন হলেও বৈচিত্র এখানে খুবই কম, মূলত বার্চ, পাইন এবং স্প্রুস নিয়েই সমস্ত ভূভাগ আচ্ছাদিত, একমাত্র ল্যাপল্যান্ডে গেলে ভিন্ন টিলাময় নিসর্গের দেখা মেলে।
ইতিহাস- ফিনিশ জাতির ইতিহাস হচ্ছে মধ্য রাশিয়া থেকে আগত একদল দেশান্তরী মানুষের ইতিহাস, যারা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে চেষ্টা করেছে সুইডিশ আর রাশিয়ানদের বজ্রকঠিন শাসনের মধ্যে থেকে স্বতন্ত্র নতুন জাতিস্বত্বা গঠনের। দুঃখজনক হলেও সত্য যে ফিনিশ ইতিহাস মূলত লেখা হয়েছে সুইডিশ লেখকদের দ্বারা, যেখানে অনেকাংশেই উপেক্ষা করা হয়েছে এই সংগ্রামী জাতির কঠিন সংগ্রামময় অতীতের কথা।
ফিনল্যান্ডে মানবজাতির পদার্পণ ঠিক কবে ঘটেছিল তা বলা মুশকিল, তবে পূর্ব ফিনল্যান্ডে আবিষ্কৃত প্রায় ৬০টি প্রস্তরযুগের চিত্রকর্ম প্রমাণ করে যে এখানে মানুষের আবির্ভাব প্রস্তরযুগের সময় বা তার পূর্বেই ঘটেছিল। সামি জাতির আগমন ঘটেছিল পূর্ব ইউরোপ থেকে ঠিক ৬০০০ বছর আগে। ধারণা করা হয় এর কিছু পরেই ফিন জাতির আবির্ভাব ঘটেছিল এশিয়া- ইউরোপের সংগমস্থল উরাল পর্বতমালা আর ভলগা নদী অধ্যুষিত অঞ্চল থেকে। এই ফিন এবং হামের জাতির মানুষেরা এস্তোনিয়া, কারেলিয়া ও ফিনল্যান্ড জুড়ে তাদের বসত স্থাপন করে এবং বাধ্য করে পূর্বে আগত সামি জাতিকে আরও উত্তরে সরে যেতে, ফলশ্রুতিতে সামিরা সর্ব উত্তরে ল্যাপল্যান্ডে বসবাস শুরু করে। উল্লেখ্য সামিরা আজও ল্যাপল্যান্ডেই (ফিনল্যান্ড, সুইডেন, নরওয়ে) বাস করে, তাদের অনুপম ভাষা, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে লালন করে, বলগাহরিণের পাল নিয়ে।
সুইডিশদের আগমন ঘটে ১১৫৫ সালে, তারা প্রথমে চেষ্টা করেছিল ফিনিশ খ্রিশ্চিয়ান সংস্কৃতিকে রাশান প্রভাব থেকে রক্ষা করতে, পরবর্তীতে তারা সেখানে সাম্রাজ্য বিস্তার করে, ১৩২৩ সালে বর্তমান ফিনল্যান্ডের উপরেই সুইডেন ও রাশিয়া তাদের সীমান্ত নির্ধারণ করে।
উপরের ছবিটি বিখ্যাত মধ্যযুগীয় দুর্গ অলাভি লিন্নার, সাভোন লিন্না শহরের কাছে হ্রদের মাঝে নির্মিত হয়েছিল এটি সুইডেন এবং রাশিয়ার সীমান্তে! অথচ এটি এখন ফিনল্যান্ডে!
দুই সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তির যুদ্ধ চলতেই থাকে প্রায় হাজার বছর ধরে। ১৭১৪ থেকে ১৭২১ পর্যন্ত রাশিয়া দখল করে রাখে ফিনল্যান্ড। ১৭৪৩ সালে এই দখল দারিত্বের অবসান ঘটলেও ১৮০৯ সালে আবার ঘটে পুনর্দখল। ১৮১২ সালে রাশানরা ফিনল্যান্ডের রাজধানী তুরকু শহর থেকে সরিয়ে হেলসিংকিতে স্থানান্তরিত করে, তাদের যুক্তি ছিল- তুরকু সুইডিশ সীমান্তের খুব বেশী কাছে। এত দখলদারিত্বের মধ্যে থেকেও ফিন জাতি তাদের স্বকীয়তা অর্জনের চেষ্টা চালাতে থাকে। রাশান জারের সাম্রাজ্যের অংশ হলেও ১৮৫৬ সালে এরা নিজস্ব ডাকটিকেট প্রকাশ করে আর ১৮৬০ সালে প্রচলিত হয় নিজস্ব মুদ্রা ফিনিশ মার্ক।
১৯০৫ সালে নারী অধিকার সংরক্ষণে কিছু নতুন আইন প্রণয়ন হয়, আর ফিনল্যান্ড পরবর্তীতে ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে নারীদের সম্পূর্ণ ভোটাধিকার এবং রাজনৈতিক অধিকার প্রদান করে। ২০০৩ সালে ফিনল্যান্ড ছিল সারা বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানকার রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারপ্রধান ( রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী) উভয়েই ছিলেন নারী। এবং জাতিসংঘের একাধিক জরিপে দেখানো হয়েছে ফিনল্যান্ডের মহিলারা সবচেয়ে বেশী স্বাধীনতা ভোগ করে ( এর অর্থ অবশ্য পরিষ্কার বুঝি নাই, মনে হয় অর্থনৈতিক এবং সামাজিক স্বাধীনতা বোঝানো হয়েছে)
১৯১৭ সালে রাশিয়ার কম্যুনিস্টদের উত্থান আর জারের পতনই ফিনল্যান্ডের স্বাধীনতা অর্জনের পথ সুগম করে দেয়, ফিনল্যান্ডের সিনেট ১৯১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা ঘোষণা করে। সিনেটের সদস্যরা রাশিয়া যেয়ে ভ্লাদিমির লেলিনের সাথে দেখা করে তাদের স্বাধীনতার দাবী উত্থাপন করলে লেনিন সহজেই তাতে সম্মতি দেন, তার আশা ছিল রাশিয়ার আসে পাশের সমস্ত দেশই সার্বভৌমত্ব নিয়ে তাদের সাথে যোগ দেবে। যদিও স্বাধীনতা ঘোষণার পরপরই স্বাধীনতাকামী ফিন এবং বামপন্থী ফিনদের মাঝে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, যা ইতিহাসে পরিচিত লাল- সাদার যুদ্ধ নামে। ১০৮ দিনের যুদ্ধে ৩০,০০০ লোক নিহত হয়। অবশেষে মার্শাল মান্নারহেইমের নেতৃত্বে জার্মানদের সহায়তায় সাদারা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে, গঠিত হয় স্বাধীন ফিনল্যান্ড।
তিরিশের দশকে স্ট্যালিনের রাশিয়ার সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে ফিনিশ সরকারের, শত্রুর শত্রু আমার বন্ধু নীতিতে তাদের সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হতে থাকে জার্মানির নাৎসি সরকারের। ফলশ্রুতিতে ২য় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে যুদ্ধ হয় ফিন এবং সোভিয়েতদের মাঝে, যা ৩৯এর তালভি সোতা বা শীত যুদ্ধ বলে পরিচিত। যুদ্ধে পরাজয় ঘটে ফিনল্যান্ডের, ফলশ্রুতিতে ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশাল ক্ষতিপূরণ দিতে হয় সোভিয়েত রাশিয়ার কাছে, হারাতে হয় ফিনল্যান্ডের সেই সময়ের ২য় বৃহত্তম শহর ভিপুরি সহ কারেলিয়া রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, যা এখনো রাশিয়ার অংশ। উইকি থেকে প্রাপ্ত ম্যাপটিতে উল্লেখিত লাল অংশ দখল করে নেয় রাশিয়া।
ভাল মতো খেয়াল করলে ফিনল্যান্ডের ম্যাপটি দেখতে একজন মহিলার মতো লাগে যে কিনা দুই হাত মেলে সন্তানকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছে, যে কারণে ফিনিশরা মনে করে রাশিয়া সেই ফিনিশ মায়ের একটি হাত কেটে নিয়ে গেছে।
২য় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে Cold Warএর সময়েই ফিনদের অনেকাংশেই কোণঠাসা থাকতে হয়েছে সোভিয়েতদের কাছে, অবশেষে প্রেসিডেন্ট উরহো কেক্কোনেনের সুদীর্ঘ শাসনামলে (১৯৫৬-১৯৮১) বহির্বিশ্ব এবং সোভিয়েত ব্লকের সাথে ফিনল্যান্ডের সম্পর্ক অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসে, অর্থনীতি ক্রমশই উন্নত হতে থাকে, বাড়তে থাকে মাথাপিছু আয়। সেই সাথে নানা পশ্চিমা দেশের সহায়তায় বাণিজ্যিক শিল্পায়ন দ্রুত বিস্তার লাভ করে। ১৯৯৫ সালে ফিনল্যান্ড ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের যোগদান করে এবং ১৯৯৯ সাল থেকে এর মুদ্রা হিসেবে গ্রহণ করা হয় অভিন্ন মুদ্রা ইউরো। ১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের এক জরিপে, উন্নত জীবন ব্যবস্থার নিরিখে ফিনল্যান্ড বিশ্বের প্রথম পাঁচটি দেশের একটি হবার গৌরব অর্জন করে। এবং ২০১০ সালে নিউজ উইক পত্রিকার বিশদ জরিপের পর ফিনল্যান্ডকে বিশ্বের সেরা বসবাসযোগ্য দেশ ঘোষণা করা হয়।
ভাষা – ফিনল্যান্ডের সরকারি ভাষা ফিনিশ এবং সুইডিশ, সেই সাথে সামি জাতির সামি ভাষা। সাধারণত সব রাস্তারই নাম ফিনিশ এবং সুইডিশ ভাষায় লেখা থাকে। এক সময়ে অভিজাত সুইডিশরা ফিনিশকে যথেষ্ট হেয়জ্ঞানই করত ( সোজা ভাষায় মনে করত ফিনিশ ছোটলোকদের ভাষা, আর বনেদীরা কথা বলবে সুইডিশে), কয়েক বছর আগে পর্যন্তও স্কুলগামী প্রত্যেকের জন্য ফিনিশ এবং সুইডিশ বাধ্যতামূলক ছিল, সম্প্রতি আইন করা হয়েছে যে কেউ চাইলে সুইডিশের জায়গায় অন্য ভাষা শিখতে পারবে। এমনিতেই ৬% লোকের মাতৃভাষা সুইডিশ।
ফিনিশ ভাষাটি কেমন? এই প্রশ্ন করলেই বিদেশীদের কাছে উত্তর পাওয়া যায় এটি বিশ্বের কঠিনতম ভাষা! কিন্তু আসল সত্য হচ্ছে এটি যতটা কঠিন তারচেয়েও খুবই ভিন্ন ধরনের একটি ভাষা। সাড়া ইউরোপে যত ভাষা আছে তার প্রায় সবই পড়ে ইন্দো-ইউরোপিয়ান ভাষা গোষ্ঠীর মধ্যে, কেবলমাত্র হাংগেরিয়ান, এস্তোনিয়ান এবং ফিনিশ পড়েছে আরেক ভাষা গোষ্ঠীতে, যার নাম ফিন্নিক, এই থেকেই আন্দাজ পাবেন যে বাকী কোন ভাষার সাথে এদের কোন মিল নেই, যেমন আছে জার্মানের সাথে সুইডিশ, ডেনিশ,নরওয়েজিনের মিল, ইতালিয়ানের সাথে আছে স্প্যানিশের মিল তেমন মিল ফিনিশ ভাষার সাথে একমাত্র আছে এস্তোনিয়ানদের। এক, দুই, তিন যেমন ইংরেজিতে ওয়ান- টু- থ্রি, সুইডিশে এত- থুয়ো –ত্রে, জার্মানে আইন-সোয়াই- ঢ্রাই, স্প্যানিশে উনো- দোস- ত্রেস এমনকি হিন্দিতে এক - দো-তিন, মানে অল্প হলেও মিল আছে সেখানে ফিনিশে ইয়ুকশি- কাকশি- কোলমে!!! এমন বিশাল পার্থক্যের ভাষার সাথে একমাত্র খানিকটা মিল আছে এস্তোনিয়ানদের, তাদের ভাষাতেও ১,২,৩ হচ্ছে ইয়ুকশি- কাকশি- কোলমে!!! সম্ভবত একই গোত্রের মানুষেরা যারা বাল্টিক সাগর অতিক্রম করে ফিনল্যান্ডে পদার্পণ করেছিল তারা এই জাতি গঠন করেছে, যারা থেকে গিয়েছিল তারা আজকের এস্তোনিয়ান।
ফিনল্যান্ডের এক দশক আগে পা দিয়েছিলাম লোনলি প্ল্যানেট অবলম্বন করে, সেখানে লেখা ছিল জাতি হিসেবে ফিনিশরা খুব বেশী চুপচাপ, এক অস্ট্রেলিয়ান ছেলে তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছে – আমার ডর্মমেট গত ছয় মাসে মাত্র একটি কথা বলেছে আমার সাথে, তা হচ্ছে – I think its your turn to buy the toilet paper!
ফিনিশরা আসলেই অতিমাত্রার চুপচাপ এক জাতি, একাধিক বইতে পড়েছে বিদেশী হয়ে যে দুইটা জাতির ভিতরে ঢোকা খুব কঠিন তারা হল ফিনিশ এবং নরওয়েজিয়ান! পরে ফিনিশ বন্ধুদের জিজ্ঞাসা করেছি- এই মামুর বুটারা, তোরা রাস্তায় দেখা হলে হ্যালো বলিস না কেন অপরিচিত মানুষকে? তাদের উত্তর- দেখ আমাদের দেশে ছয় মাস বরফ পড়ে, সেই সময়টা ব্যপক আঁধারে ঢাকা, দেখা গেল এর মাঝে ঝড়ো বাতাস আর তুষারপাত, তখন কি আমি রাস্তায় অপরিচিত মানুষকে জ্যাকেট থেকে মুখ বাহির করে হ্যালো বলব!!! বলব না! কেউই বলবে না। কাজেই বছরের এই ২-৩ মাসের গ্রীষ্মেয় বা সেই অভ্যাস আসবে কোথা থেকে!
২০,০০০ লোকের ভারকাউস শহরে কিন্তু আমার অল্প দিনেই অনেক ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছিল, সেখানের মানুষেরা রাজধানী হেলসিংকি বা অন্য বড় শহরের মানুষের চেয়ে অনেক বেশী দিলখোলা, বন্ধুত্বপরায়ণ। কিন্তু আমার স্কুলের ফিনিশ বন্ধুরাও বলত এই শহরে তাদের বেশী বন্ধু নেই, বিদেশী বলেই নাকি আমি বেশি খাতির পেয়েছি! সত্য না মিথ্যা জানি না, কিন্তু ফিনিশ জাতির মানুষেরা উত্তরের আর সব দেশের মতই- প্রচণ্ড পরিশ্রমী, চুপচাপ, সৎ। এদের মাঝে বেশ বড় একটা অংশ বিশেষ করে বৃদ্ধরা একাকীত্বে ভোগে। একাকীত্বের এবং আঁধারময় আবহাওয়ার কারণেই উত্তরের বাকী দেশগুলোর মতই হতাশ কিছু মানুষ অ্যালকোহলাসক্ত হয়ে যায় এবং আত্মহত্যার হারও খুব বেশী। সুনীল গঙ্গোপ্যাধ্যায় তার এক ভ্রমণ কাহিনীতে উল্লেখ করেছিলেন ভদ্র জাতিতের মাঝে একমাত্র সুইডিশরাই প্রকাশ্যে মাতলামি করতে দ্বিধা বোধ করে না! সুনীল ফিনল্যান্ডে আসেন নি বলেই এই কথা বলেছেন, এখানের শুঁড়িখানাগুলোতে কিছু বাঁধা মাতাল আছে যারা বছরের অধিকাংশ দিনই প্রকাশ্যে মাতলামো করে, বিশেষ করে উইকএন্ডের রাতে তাদের তান্ডব দেখা যায়, তবে তাদের সংখ্যা সৌভাগ্যক্রমে খুবই অল্প।
দুর্নীতি -- ফিনল্যান্ডে যে বিষয়টি আপনার নজরে পড়বে না তা হচ্ছে দুর্নীতি, যে কারণে বেশ কয়েকবার বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিমুক্ত দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে ফিনল্যান্ড, এবং সবসময়ই দুর্নীতিমুক্ত শীর্ষ দেশগুলোর মাঝে আছে এর সুনিশ্চিত দৃঢ় অবস্থান। কিছুটা বিস্ময়বোধ করি ফিনল্যান্ডের এই ব্যাপারটি নিয়ে, স্থানীয়দের কেউ কেউ জানতে চায় কেন বাংলাদেশে এত দুর্নীতি। তবে অবাক করা ব্যাপার হচ্ছে আজ পর্যন্ত একজন ফিনকেও দেখিনি যে কিনা দুর্নীতিমুক্ত ব্যাপারটি নিয়ে গর্ববোধ করে। তাদের ধারণা- এটি খুবই স্বাভাবিক একটা ব্যাপার, এই নিয়ে আলাদা গর্ব করার কিছু নেই। আর দুর্নীতি কেন করব- এই বিষয়টিই যেন তাদের মধ্যে বিস্ময়বোধ বাড়িয়ে তোলে। ফিনল্যান্ডের দুর্নীতিমুক্ত হবার পিছনে রয়েছে এই দেশে শিক্ষা, জনগণের সচেতনতা এবং আইনের সঠিক ও কঠোর প্রয়োগ। এখানে যার উপার্জন যত বেশী তার কর তত বেশী। এই করের টাকা দিয়েই নিশ্চিত করা হয় শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, বরফ পরিষ্কার ও অন্যানয নাগরিক সেবা। ( সর্বোচ্চ করের হার ৬০ %, মানে ১০০ টাকা বেতন পেলে ৬০ টাকায় কর, নোকিয়ার চেয়ারম্যানসহ অনেক ধনী ব্যক্তিকে তাই দিতে হয়!), ফলে আর্থসামাজিক ব্যবস্থায় থাকছে সামঞ্জস্য, কারো কর ফাঁকি বা দুর্নীতি ধরা পড়লে আইনের প্রয়োগ হয় অতি দ্রুত এবং নিশ্চিতভাবে। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা তখনই আসে যখন হয় এর সঠিক প্রয়োগ, ফিনল্যান্ড এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ, আমার ধারণা দুর্নীতি এত কম হওয়ার মূল কারণই এই বিষয়টি। এখানে ২টি ঘটনার উল্লেখ করছি-
২০০৩ সালে ফিনল্যান্ডের প্রথম নারী সরকারপ্রধান, প্রধানমন্ত্রী আন্নেলি ইয়াত্তেনমাকি ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র ৯ সপ্তাহের মাথায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হন কারণ তার নামে অভিযোগ এসেছিল যে ইরাক যুদ্ধ নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রপতি বুশের সাথে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ফিনল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পাভো লিপ্পোনেনের যোগাযোগের কিছু তথ্য তিনি অন্যায় ভাবে ভোটের সময় ব্যবহার করেছিলেন নিজের সমর্থন বাড়ানোর জন্য এবং সেই তথ্যগুলোর উৎস সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন সংসদে। তখন বলা হল, সাধারণ মানুষ মিথ্যা বলতেও পারে, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলতে পারে না, কারণ সে সমগ্র জাতির প্রতিনিধি। তাকে পদত্যাগ করতে হল।
কিছু দিন আগে ফিনল্যান্ডে এক শিল্পপতিকে নির্দিষ্ট গতিবেগের উপরে গাড়ী চালানোর জন্য জরিমানা করা হয়, গাড়িটির দাম ছিল ১ লক্ষ ৪০ হাজার ইউরো, জরিমানা করা হয়েছিল ১ লক্ষ ৮০ হাজার ইউরো! কারণ সেই শিল্পপতি একই বছরে আগে একবার জোরে গাড়ী চালিয়ে আইন ভঙ্গ করে ছিল, এবং কেবল মাত্র সে ধনী তা না, সে একজন শিল্পপতি, তার কারখানায় অনেক লোক কাজ করে, সে মানুষের কাছে রোল মডেল, কাজেই সে এই ভাবে আইন ভঙ্গ করতে পারে না! তাই জরিমানা করা হল গাড়ীর দামের চেয়ে অনেক বেশী।
মাঝে মাঝে মনে হয় পুলিশ আর গোয়েন্দারা বসেই থাকে কখন শিল্পপতি আর রাজনীতিবিদরা কোন আইন ভাঙবে, কারণ তাদের শাস্তি হবে সাধারণ জনগণের চেয়ে অনেক অনেক গুণ বেশী!। আর হ্যাঁ, পুলিশ জনগণের বন্ধু! যে কোন বিপদে সবার আগে কাছে পাবেন তাদেরই।
ফিনল্যান্ড যে বছর বিশ্বের সেরা বসবাসযোগ্য দেশ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল সেবার সুইজারল্যান্ডের (২য়) এবং সুইডনের ( ৩য়) সাথে অনেক ব্যাপারের সুচকে বেশ লড়াই হলেও শিক্ষা ব্যবস্থার কারণেই তারা সেরার সন্মানে ভূষিত হয়। যতদূর মনে পড়ে ফিনল্যান্ড পরপর তিন বছর বিশ্বের সেরা শিক্ষাব্যবস্থার শিরোপা পায় ( শিশুশিক্ষা থেকে শুরু করে এ-লেভেল পর্যন্ত), এর পিছনের কারণ গুলো ব্যাখ্যা করা স্বল্প পরিসরে মুশকিল, অল্প কথায় বলছি- এখানে শ্রেণী কক্ষে পড়ালেখায় প্রতিযোগিতার বদলে শিক্ষার্থীরা কে আসলেই কোন ব্যাপার আগ্রহী এবং ভাল করতে পারবে সেটা আবিস্কারের পিছনে অধিক জোর দেওয়া হয়, সারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান একই রকমের, রাজধানীতে যে মানের স্কুল আছে, ১০০ জন লোক থাকে এমন জনপদের বাচ্চারাও একই মানের স্কুলে পড়তে পারে, বরং আমার গ্রামের ফিনিশ বন্ধুদের সাথে কথা বলে দেখেছি তারা ছোট শহরের স্কুলই বেশী পছন্দ করে যেহেতু সেখানে শিক্ষকের মনোযোগ এবং সময় বেশী পাওয়া যায়।
আবার এখানে লেখাপড়া বিনামূল্যে, কোন টিউশন ফি নেই ( আন্ডার গ্রাজুয়েট পর্যন্ত, মাস্টার্স বা উপরের লেভেলে বিশ্ব- বিদ্যালয়ের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারবেন), যারা ফিনল্যান্ডে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক তারা অনুগ্রহ করে www.cimo.fi ওয়েব পেজে যেয়ে Educational Institute এ গেলে এখানকার সমস্ত বিশ্ব বিদ্যালয় এবং পলিটেকনিক নিয়ে যাবতীয় তথ্য পাবেন, তাদের সাথে যোগাযোগ করুন, খামোখা কোন এজেন্সির কাছে যেয়ে গুচ্ছের টাকা খরচের দরকার নেই। সাধারণত অ্যাডমিশন হয়ে গেলে ভিসা পাওয়া খুব একটা কঠিন হয় না, শুনেছি বাংলাদেশের অনেক এজেন্সী ফিনল্যান্ডের শিক্ষা ভিসা করিয়ে দেবে বলে মোটা অংকের টাকা দাবী করে, এই দেশের ভিসা কেউ টাকা দিয়ে করাতে পারবে না, এত বড় দুর্নীতি এখানে সম্ভব না, ভিসা হলে হবে আপনার রেজাল্ট এবং অন্যান্য কাগজপত্রের ভিত্তিতে, তাই কেউ এমন দাবী করলে টাকা তো দিবেন-ই না, সেখানেই আর যাবেন না।
অবারিত প্রকৃতি বাদে ফিনল্যান্ডে আমার প্রথম মুগ্ধতা জন্মেছিল এখানকার গ্রন্থাগারগুলো দেখে, ৩০০ লোক বাস করে এমন জনপদেও ছিমছাম গ্রন্থাগার আছে। যে কোন বই তা ফিনিশ হোক বা ইংরেজি, অর্ডার দেয়া হলে অল্প দিনের মধ্যে আনিয়ে নেয়া হয় অন্য শহরে থেকে, সেখানে না থাকলে। ৫ মিলিয়ন মানুষ যে ভাষায় কথা বলে সেই ভাষায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক পত্রিকা আছে ( হায়, বাংলা ভাষায় মনে হয় ৩৫০ মিলিয়ন মানুষ কথা বলে, জীবদ্দশায় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক বাংলাতে দেখব বলে মনে হচ্ছে না), যে বিষয়েই জানতে চান- মহাকাশ, পাখি, পতঙ্গ, মাছ ধরা, শিকার, গৃহনির্মাণ, বন, ফ্যাশন, গাড়ী- কোন কিছুর উপরেই মাসিক পত্রিকার অভাব নেই। রবি ঠাকুর ফিনিশ ভাষায় অনুদিত হয়েছেন শত বছর আগেই! হেলসিংকির পাসিলা গ্রন্থাগারে এখন বাংলা বইও পাওয়া যাচ্ছে।
মাছ ধরা আর শিকার এখানে মানুষের অন্যতম প্রধান শখ, বিশেষ করে যারা শহরের বাহিরে গ্রামাঞ্চলে থাকেন, যে কারণে লাইসেন্সধারী বন্ধুকের সংখ্যাও অত্যন্ত বেশী। শিকারের অনুমতি দেওয়া হয় যথেষ্ট কড়াকড়ি করে, যেমন কোন বনে কোন বছরে একটি হরিণ শিকার করা যাবে, সেটা মদ্দা না মাদী, আবার উলভেরাইন মারা হবে কি না, বা ভালুক। পাখি শিকারের ক্ষেত্রেও মৌসুম আছে, কেউ বেআইনি শিকার করে ধরা পড়লে সোজা ফাটক। কিন্তু শিকারির চেয়ে সৌভাগ্যক্রমে প্রকৃতি প্রেমিকের সংখ্যা অনেক অনেক বেশী, বিশেষ করে পাখিপ্রেমিকরা যে কেমন সংগবদ্ধ তা হয়ত একাধিক ঘটনাতে বলেছি-
বড় কান পেঁচা আর সুন্দরতম হাঁসের খোঁজে
রোদেলা দিনের মাতাল বোহেমিয়ান পাখির ঝাক এবং একটি পেঁচা
কোথায় নতুন বা বিরল কিছু দেখা গেলেই হয়েছে, সারা ফিনল্যান্ড ভেঙ্গে পড়বে সেখানে।
ফিনল্যান্ডে বসবাসরত বাঙ্গালীদের অধিকাংশই রাজধানী হেলসিংকিতে থাকেন, এর মূল কারণ অবশ্যই জীবিকা অর্জনের কাজ এবং ব্যবসার সুযোগ সুবিধা এই শহরেই বেশী, অন্যান্য কিছু শহরে থাকলেও তা যথেষ্টই কম। এটি অবশ্য সকল বিদেশীদের ক্ষেত্রেই। অনেকেই যে কারণে প্রথমে অন্য শহরে আসলেও পড়ে হেলসিংকি চলে আসতে বাধ্য হন। যখন এসেছিলাম তখন শুনেছি সারা ফিনল্যান্ডে হয়ত হাজারখানেক বাংলাদেশের মানুষ ছিল, এখন হয়ত সেটি তিন বা সাড়ে তিন হাজার হতে পারে। বলা হয় বিদেশে তিনজন বাংলাদেশী থাকলে সেখানে দুটি সংগঠন হয়, সেই সূত্র মতে এখানেও আছে রাজনৈতিক, এলাকাভিত্তিক, ধর্মভিত্তিক সংগঠন, সেই সাথে একাধিক সাংস্কৃতিক সংগঠন যারা ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর, পয়লা বৈশাখে চেষ্টা করে এক টুকরো বাংলাদেশ এখানে নিয়ে আসার। বেঙ্গল টাইগার্স নামে ক্রিকেট ক্লাবটিতে কেবলমাত্র বাংলাদেশিরাই খেলতে পারে, আবির্ভাবেই ২য় বিভাগ ক্রিকেট লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হবার গৌরব অর্জন করেছিল ক্লাবটি।
আছে আমাদের বাংলা লিটারেচার ক্লাব, প্রতি মাসে একবার কজনা সাহিত্য বিষয়ে উৎসাহীরা মিলিত হয়ে পড়া- অপড়া বই নিয়ে আড্ডা দিই, যে আড্ডা মধ্যমণি হয়ে থাকেন ছেলে-বুড়ো সকলের কাকা আমাদের সাহিত্যপ্রেমী আসলাম কাকা।
একসময়ে কজন তরুণ মিলে প্রকাশ করেছিল মাসিক বাংলা সাহিত্য পত্রিকা জননী বঙ্গভূমি, বেশ কসংখ্যা প্রকাশিত হবার পর নানা কারণে আপাতত তা থেমে থাকলেও জলদি প্রকাশের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সম্পাদক ওয়াসিম সাঈদ দীপু।
বিদেশের কথা বললেই অবধারিত ভাবে আসে বর্ণবাদের কথা, সেখানে রেসিজম কেমন? এখন বলি, পৃথিবীর কোন দেশ আছে রেসিজম ছাড়া? আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে বেশী যে দুই দেশে চামড়ার রঙের কারণে অসুবিধার সম্মুখীন হয়েছিলাম তা হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আর দক্ষিণ আফ্রিকা! জী হ্যাঁ, কৃষ্ণাঙ্গ বা শ্বেতাঙ্গ ব্যাপার না, মানুষ থাকলেই সেখানে রেসিজম আছে, নানা ভাবে, নানা বর্ণে। বিলেতবাসী অধিকাংশ বন্ধুর সাথে কথা বললেই বলে- এই ব্রিটিশরা বিশ্বের সবচেয়ে ভণ্ড জাতি, মুখে এক কথা, মনের আরেক জিনিস! সুইডেনবাসীরা বলে সুইডিশরা সবচেয়ে খবিশ, বিদেশীদের থাকতে দেয়, কিন্তু কাজকর্ম দেয় না। আফ্রিকাবাসীদের বক্তব্য- কাউলা শালাদের কথা কইয়েন না, এরা জাতে উঠবে না কোন দিন! যে রাশিয়াতে কম্যুনিস্ট আমলে লাখো লাখো বিদেশী ছাত্র-ছাত্রীকে সাদরে আমন্ত্রণ করা হত সেখানে নাকি আজ প্রায়ই তাদের উপর দলগত ভাবে বর্ণবাদী হামলা করা হয়। কিন্তু আমরাই যে কত বর্ণবাদী তা ভুলে যায় থেকে থেকেই- শ্বেতাঙ্গীনী বিয়ে করে বিদেশে অনেক বাংলাদেশীই সুখের জীবন-যাপন করছে, কিন্তু বাংলাদেশে যদি কোন আফ্রিকার লোক যেয়ে বঙ্গললনাকে বিয়ে করতে চায়, মনে তো হয় সারা পাড়া ছুটবে সেই কৃষ্ণাঙ্গকে ঠ্যাঙ্গানোর জন্য, নাকি ভুল বললাম?
এই দিক দিয়ে ফিনল্যান্ডে এমন কোন অভিজ্ঞতা আমার হয় নি ( কয়েকজনের শুনেছি তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে বিশেষ করে শহর হিসেবে), তবে বিদেশীরা এই দেশে এসেছে মাত্র কয়েক দশক আগে, এখনো অধিকাংশ এলাকার মানুষেরা বিদেশীদের সাহচর্যে অভ্যস্ত না বিশেষ করে পুরনো প্রজন্ম। তারা জাতিগত ভাবে খুব নিরবতাপ্রিয়, আমরা কোলাহলমুখর, তাই অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় বাসে- ট্রামে অল্প কয়জন বিদেশী মিলে বাজার গরম করে রেখেছে, আর স্থানীয়রা ঘাড় ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দেখছে! তবে ইউরোপের অধিকাংশ দেশের চেয়ে ফিনল্যান্ডের যে জিনিসটা আমাকে আকৃষ্ট করে তা হচ্ছে এদের উপনিবেশিকতার ইতিহাস, ফ্রান্স, পর্তুগাল, ইংল্যান্ড, হল্যান্ড, স্পেন, ইতালি, জার্মানদের মত এরা অন্য দেশে উপনিবেশ স্থাপন করে নি, নরওয়ে, ডেনিশ, সুইডিশদের মত অন্য ভূখণ্ডে যেয়ে জালাও-পোড়াও- লুটপাট করে নি, বরং নিজেরাই ৮০০ বছর অন্যদের কলোনি ছিল, কঠিন শাসনের শিকার ছিল। হয়ত এটাও একটা কারণেই যে বিদেশীদের সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতে বা তাদের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে তাদের সময় লাগবে, কারণ বিদেশী পরাশক্তি – জার্মান, রাশিয়ান, সুইডিশ- কারো সাথেই সুখকর অভিজ্ঞতা নেই ফিনদের।
সাহিত্য- ফিনিশ ভাষায় লিখার ইতিহাস খুবই নতুন, প্রথম উপন্যাস রচিত হয় ১৮৭০ সালে,
উপরের ছবির কুঁড়েটিতে ১৮৭২ সালে মাত্র ৩৮ বছর বয়সে নানা অসুখে আক্রান্ত হয়ে চরম দারিদ্রতার মাঝে মৃত্যুবরণ করে ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় সাহিত্যিক আলেক্সিস কিভি। তিনি ফিনিশ ভাষায় প্রথম উপন্যাস ৭ ভাই ( Seven Brothers) রচনা করেন ১০ বছর সময় নিয়ে, যা আজ পর্যন্ত ফিনিশ জনগণের কাছে তাদের ভাষায় সর্বোৎকৃষ্ট সাহিত্য বলে বিবেচিত। কিভি শব্দের অর্থ পাথর, শিলার মতই জীবনের সমস্ত গরল, দহন, যন্ত্রণা, অবহেলা সয়েছেন প্রতিভাবান এই তরুণ। জীবদ্দশাতে অল্প স্বীকৃতি পেলেও তা আশানুরূপ ছিল না, শেষে ভাইয়ের সংসারে গলগ্রহ হয়েই ছিলেন শেষ দিনগুলি, ভাইয়ের এই বাসগৃহেই তার লেখনী থেমে যায়। ( এখানে যেয়ে একটা অদ্ভুত তথ্য জানতে পারি- যেহেতু কিভি এখন অত্যন্ত জনপ্রিয়, তাই এই কুঁড়েটি হেলসিংকি বিশ্ববিদ্যালয় কিনে নেয় জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণের জন্য, এবং মূল বাড়ীটি কেটেছেটে খানিকটা ছোট করা হয়, একটি বারান্দা সম্পূর্ণ বাদ দেওয়া হয়, দরজাও! কেবলমাত্র সেই কুঁড়ের হতদরিদ্র অবস্থা ফুটিয়ে তোলার জন্য, যাতে ফিনিশেরা বুঝতে পারে কত বেশী অর্থকষ্টে চিরবিদায় নিয়েছেন তাদের সেরা সাহিত্যিক)।
ফ্রান্স এমিল সিল্লানপ্যা ১৯৩৯ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পান। তবে থ্রিলার জাতীয় রচনা লিখে আন্তর্জাতিক ভাবে সবচেয়ে বেশী খ্যাতি পেয়েছেন মিকা ওয়ালতারি, তার সবচেয়ে বিখ্যাত উপন্যাসের নাম সিনুহে, প্রাচীন মিশরের কাহিনী। বর্তমানে সোফি ওকসানেন বেশ নাম করেছেন স্ত্যালিনের সময়কার ঘটনা উপন্যাসে লিপিবদ্ধ করে। আর ফিনল্যান্ডের সাহিত্য মানেই ধরা হয় কালেভালা, এটি আসলে লোকগীতি বা কাব্যের বিশাল সংকলন, ফিনিশ পুরাণকথাও বলা চলে কালেভালাকে।
সঙ্গীত- ফিনল্যান্ডের সবচেয়ে বিখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞের নাম জন সিবেলিয়ুস, ক্ল্যাসিকাল মিউজিকের ভক্তদের কাছে সিবেলিয়ুসের স্থান অতি উঁচুতে, উনার নামেই এখানে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে সঙ্গীতের বিশ্ব-বিদ্যালয় সিবেলিয়ুস একাডেমী।
তবে তরুণদের কাছে ফিনল্যান্ডের সঙ্গীত মানেই মেটাল মিউজিক- ডেথ মেটাল, ব্ল্যাক মেটাল, পাওয়ার মেটাল, ফোক মেটাল, হেভি মেটাল, সিম্ফোনিক মেটাল- কোন কিছুরই অভাব নেই! মেটাল ব্যান্ডগুলোর মধ্যে কয়েকটা হচ্ছে-
Poets of Fall
Aarni
Alghazanth
Amoral
Amorphis
Apocalyptica
Archgoat
Azaghal
Barren Earth
Battlelore
Before the Dawn
Beherit
Behexen
Charon
Children of Bodom
Circle
Clandestine Blaze
Dawn of Relic
Deathchain
Demilich
Depressed Mode
Ensiferum
Entwine
Eternal Tears of Sorrow
Finntroll
Hevein
HB
HIM
Horna
Ikuinen Kaamos
Impaled Nazarene
Insomnium
Kalmah
Kiuas
Korpiklaani
KYPCK
Lordi
Lovex
Mokoma
Moonsorrow
Mors Principium Est
Negative
Nightwish
Norther
Omnium Gatherum
Poisonblack
Rotten Sound
Ruoska
Sargeist
Satanic Warmaster
Sentenced
Shade Empire
Sonata Arctica
Stone
Stratovarius
Swallow The Sun
Tarja Turunen
Tarot
Teräsbetoni
The 69 Eyes
Thergothon
Thyrane
Torsofuck
Torture Killer
Turisas
Turmion Kätilöt
Unholy
Verjnuarmu
Viikate
Waltari
Wintersun
Wyrd
এর মধ্যে লর্ডি একবার ইউরো ভিসনে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে হার্ড রক হালেলুইয়া গানটি গেয়ে।
সম্প্রতি টাইম ম্যাগাজিনে ফিনল্যান্ডের এই মেটাল সঙ্গীত প্রীতির পিছনের মূল বলা হয়েছে প্যাগান ইতিহাসকে, যেহেতু কয়েকশ বছর আগেও ফিনিশরা প্যাগানই ছিল, নানা প্রকৃতির শক্তিকে পূজা করত, এখনো সেই ইতিহাস থেকেই তারা অনুপ্রেরণা পায় মেটাল মিউজিক সৃষ্টির।
ধর্ম বিশ্বাস- প্যাগানদের কথাতে মনে হল ফিনিশদের ধর্ম বিশ্বাস নিয়ে দুইটা কথা বলা যেতেই পারে, বহু বছর ধরেই স্ক্যান্ডেনেভিয়ার দেশগুলো সেক্যুলার দেশ বলে বিশ্বে পরিচিত। মানুষের বিশ্বাসের মত জং ধরা প্রায় বাতিল জিনিস নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে এরা জোর দিয়েছে মানুষের উদ্যোগ এবং সৃষ্টিশীলতার উপরে। ফিনল্যান্ডের ঈশ্বরবিশ্বাসী মানুষের সংখ্যা গত ১০ বছরে কমেছে ১০ %, এবং সবচেয়ে বেশী মানুষ জন্মগত ভাবে যে মতের অনুসারি খ্রিস্টান ধর্মের লুথারিয়ান শাখা, তাদের মাত্র ২% সপ্তাহে একবার গির্জাতে যায়, এবং এই সংখ্যাও কমছে দ্রুত গতিতে, গত বছরই সমকামী সম্পর্ক নিয়ে এক যাজকের বেফাঁস উক্তির পরপরই ৩০,০০০ লোক গির্জা ত্যাগ করে । অধিকাংশ মানুষেরই পরকাল, ঈশ্বর নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রবণতা নেই, যারা একেবারে অবিশ্বাসী নন তাদের দর্শন হচ্ছে ঈশ্বর থাকলে আছে, না থাকলে নেই, এই নিয়ে এত ভাবার কোন দরকার নেই। তবে এখানেও আছে নানা ধরনের চার্চ, বিশ হাজার লোকের যে শহরে ছিলাম সেখানেই অন্তত ৭ ধরনের চার্চ ছিল আর আছে গোদের উপর বিষফোঁড়া জিহোভা উইটনেসরা। বিদেশীরা আসার পর মসজিদ, মন্দির, প্যাগোডা, হরে কৃষ্ণ উপাসনালয় ইত্যাদি ইত্যাদিও গঠিত হয়েছে।
রাজনীতি- ফিনল্যান্ড সহ স্ক্যান্ডেনেভিয়ার সব দেশে রাজনীতির যে মডেল ব্যবহৃত হয় তাকে সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ধাঁচের নর্ডিক মডেল বলা হয়, যার চর্চা চলছে অনেক অনেক বছর ধরেই, এর অন্যতম স্তম্ভ নারী ও পুরুষের সমান অধিকার। বামপন্থী অনেক রাজনীতিবিদ অবশ্য এক ট্রটস্কির রিফর্ম সোস্যালিজমের ব্রেন চাইল্ড বলে মনে করেন, কিন্তু নর্ডিক মডেলের চর্চা চলছে মার্ক্সবাদ আসার অনেক আগে থেকেই। সুইডেন, নরওয়ে ও ডেনমার্কে অবশ্য রাজা আছে, তবে নামে মাত্র, তাদের হাতে কোন ক্ষমতা নেই। ফিনল্যান্ডে রাজা কোন কালেই ছিল না। রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হন জনগণের ভোটে প্রতি ৬ বছর পর পর। আর সরকার গঠনের জন্য ভোট হয় প্রতি ৪ বছর পরপর, সাধারণত তিন থেকে চারটি প্রধান রাজনৈতিক দল মিলে কোয়ালিশন সরকার গঠন করে সবসময়ই। এই দেশের শাসনতন্ত্রে স্পষ্ট বলা আছে যে প্রতিটি নাগরিকের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষার অধিকার আছে, এগুলো ছাড়া কেউ থাকতে পারবে না, কোন মানুষ গৃহহীন নেই এখানে, যেমন নেই খাদ্য ছাড়া, নুন্যতম আয় না থাকলে তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। সেই সাথে আছে বাক স্বাধীনতা, যে কোন নাগরিক সরকারের সমালোচনা করতে পারে, বিরোধিতা করতে পারে প্রকাশ্যে।
আজ যদি আমার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যেতে হয় তাহলে ফিনল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি যে চিকিৎসা পাবে, আমিও সেই চিকিৎসা পাব। এবং রাজনীতিবিদরা সাংঘাতিক ভাবে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে, ফি বছরই কোন মন্ত্রী রাষ্ট্রের টাকায় কোন কোন সফর করেছে এবং সেই সফরে দেশের কতখানি লাভ হয়েছে তা নিয়ে ব্যপক বৈঠক হয়। মাঝে বেশ কবছর যে এলাকায় ছিলাম তার পাশের মহল্লায় ছিলেন বর্তমান ফিনিশ রাষ্ট্রপতি সাওলি নিনিসতো, এই যে তার ছবি।
ছবিটি কিন্তু প্রেসিডেন্ট হবার পর তোলা, বাড়ীর বরফ পরিষ্কার করছেন রাষ্ট্রপ্রধান= পাপারাজিরা এই ছবি তুলতে ভোলে নি। যদিও বেচারাকে এখন প্রেসিডেন্টের বাসভবনে থাকতে হয়, তারপরও উইকএন্ডে নিজের বাড়ীতে আসেন সময় পেলেই। ছবিটি একটি ফিনিশ ম্যাগাজিন থেকে নেওয়া।
অনেক বিদেশীর মুখে শুনেছি জনসংখ্যা কম এবং বিশাল দেশ হওয়ায় নর্ডিক দেশগুলো এমন সকল অধিকার নিশ্চিত করতে পারে, তাদের সবিনয়ে বলি ১৯১৭ সালে ফিনল্যান্ডের জনসংখ্যা ৩ মিলিয়ন ছিল, ২০১২ তে এসে ৫,৩ মিলিয়ন হয়েছে ৩ লক্ষ বিদেশীসহ, এমন ভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করাও নিঃসন্দেহে কৃতিত্বের ব্যাপার। বর্তমানে অভিবাসীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী সংখ্যায় আছে রাশান, তার পরপরই এস্তোনিয়ান, এর পরে সোমালি। আবার অতীতে অর্থনৈতিক মন্দার সময়ে অনেক ফিনিশ দেশ ছেড়ে ভাগ্যান্বেষণে অন্য দেশে গিয়েছে, এমন ফিনিশ সবচেয়ে বেশী আছে পাশের দেশ সুইডেনেই, এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াতেও আছে দেশান্তরী ফিনরা।
খেলাধুলা- ফিনল্যান্ডের প্রথম যে মানুষটির নাম জেনেছিলাম উনি কিংবদন্তীর দূরপাল্লার দৌড়বিদ পাভো নুরমি, প্রায় শত বছর আগে গড়া তার কীর্তি আজও অম্লান, ছবিতে দেখছেন হেলসিংকির অলিম্পিক স্টেডিয়ামের সামনে পাভো নুরমির ভাস্কর্য, ঐখানে ১৯৫২ সালে অলিম্পিক হয়েছিল।
ফিনল্যান্ডে সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা আইস হকি, যেটাতে ফিনিশরা একাধিকবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এর পরপরই ফর্মুলা ওয়ান রেসিং, মিকা হাক্কিনেন দুইবার এবং কিমি রাইক্কোনেন একবার বিশ্ব সেরা রেসিং ড্রাইভার হয়েছিলেন। ফুটবল এখনও খুব একটা জনপ্রিয় নয়, পাশের প্রতিবেশীরা প্রায়ই বিশ্বকাপ ফুটবলে ভাল করলেও আজ পর্যন্ত সেখানে খেলার সুযোগ মেলেই ফিনল্যান্ডের।
আসলে এক লেখাতে একটা দেশের সমস্ত কিছু তুলে আনা যথেষ্টই কঠিন আমার জন্য, বিশেষ করে যখন সেখানে থাকি বিগত কয়েক বছর ধরে। তাই তাল কেটে গেল বারংবার, প্রকৃতি, বুনো প্রাণী, অন্য অনেক শহর, আবহাওয়া,খাদ্য, সাওনা, বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে মেশার অভিজ্ঞতা এযাত্রা মুলতুবি থাকল। তবে আশা রাখি সামনের দিনগুলোতে ফিনল্যান্ড নিয়ে আরও লেখা পোষ্ট করার।
( লেখাটি ফিনল্যান্ডনিবাসী, আমার অতি কাছের বড় ভাই এবং অনেক ভ্রমণের সহযাত্রী এনামুল হক শিপু ভাইয়ের জন্য। ১৯ নভেম্বর তার জন্মদিন, শুভ জন্মদিন শিপু ভাই!)
মন্তব্য
একটা চরম গুরুত্বপূর্ণ টপিক বাদ পড়ছে, 'কমলা সুন্দরী' [কিন্তু তাই বলে এর আন্ডারে বিখ্যাত সিস্টেম লস ফল কমলা আর সুন্দরবনের সুন্দরী কাঠের বয়ান দেয়া শুরু করলে ডাইরেক্ট লাগাতার অবরোধ]। এই টপিকে কোনো কিছু লেখা না হইলে তাড়েকাণুর লেখায় কোনো মন্তব্য নাই। হরতাল।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
facebook
হেলসিংকির সাড়ে পাঁচ দিনে অণুর মুখে যা শুনছিলাম তার একটা লিখিত রিভিউ পইড়া ফালাইলাম...
০২
তবে যত যাই হোক যে দেশে একমাত্র অণু ছাড়া আর কোনো মানুষ কথা বলে কি বলে না তা নিয় সন্দেহ হয়; সেই দেশরে দশের মধ্যে বড়োজোর সাড়ে তিন দিতে পারি আমি
আপনি পরের বার না আসা পর্যন্ত অ্যালা অফ যান গো দাদা
facebook
ব্যপক মজা পাইলাম কথাটা শুনে।
লীলেন দার কথায় কান্দিবেন না,
facebook
য়ূয়েনসূ শহরের আপনার এক গুনমুগ্ধ মধ্যবয়সী ফিন্ (খুব সম্ভবত নাম তেমু) আমাকে খুব খাতির করেছিল একবার, তারেক অণুর দেশের লোক বলে।
আপনি থাকেন কোন শহরে?
facebook
আমি য়ূ্যেনসু শহরে থাকি, নাম সাইফুল।
হা হা্ কি খবর ভাই! সাইফুল ভাই তো নাকি?
facebook
facebook
২ নম্বর প্যারায় দ্বীপ আর হ্রদ নিয়ে একটা টাইপো আছে বোধহয়।ঠিক করে দেন!
facebook
facebook
সম্ভবত বেখেয়ালে ছোট্ট একটা ভুল হয়ে গেছে। এক জায়গায় হ্রদের বদলে দ্বীপ হবে, নাকি ?
দেশটি সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারলাম।
ঠিক করে দিলাম, ধন্যবাদ
facebook
কিভি সাহেবের বাড়িটার বারান্দায় বসেই তো একজীবন কাটিয়ে দেয়া যায়!
ভাগ্যিস আপনি বললেন যে প্রেসিডেন্টের ছবিটা ম্যাগাজিন থেকে নেয়া।না হলে তো ভাবতাম আপনি ওনাকে গিয়ে বলেছেন--হ্যালো মিস্টার প্রেসিডেন্ট!আপনার একটা ছবি দেয়া হবে সচলে।বরফ পরিস্কারের একটা পোজ দেন তো প্লিজ!!
ফিনল্যান্ডে যাবার আগে আপনার লেখাটা অবশ্য পাঠ্য করার দাবি জানাচ্ছি।
তার বাড়ীর আশেপাশে থাকলেই ছবি তোলা যেত, কিন্তু প্রেসিডেন্টের ছবি তুলে কি ফায়দা
facebook
তা অবশ্যি!ওনার ওই ছবির সাথে জীবনবাবুর কবিতা ঠিক যেত না!
facebook
তাম্পেরে তে ভালো মন্দ মিশিয়ে বিভিন্ন মজার অভিজ্ঞতা আছে আমার। কিন্তু এটা নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, কখন যেন এই দেশটাও আমার খুব আপন হয়ে গেছে। ছোটতে রাজশাহীর অলি গলি যেভাবে চিনতাম, এখন তাম্পেরে সেভাবে চিনি। এই শহরটা আমার নিজের বাড়ির বাইরে দ্বিতীয় বাড়ি। লেখাটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ অনুদা।
অফ টপিক, খালি যদি এই নভেম্বর আর ডিসেম্বরে অন্ধকারটা ইট্টু কম হইত।
আমার নিজের বাড়ির বাইরে দ্বিতীয় বাড়ি।
খালি যদি এই নভেম্বর আর ডিসেম্বরে অন্ধকারটা ইট্টু কম হইত। একমত, আগে খুব গালাগালি করতাম এই আবহাওয়াকে, কিন্তু লন্ডন ঘুরের আসার পর বুঝলাম এর চেয়ে অনেক খারাপ আবহাওয়াও আছে!
facebook
ফিনল্যান্ডের দীর্ঘ ঔপনিবিশেক ইতিহাসের পরে উন্নয়ন থেকে মনে হয় উন্নয়নের পথে ঔপনিবেশিক ইতিহাস খুব একটা হয়ত বাধার পথ না। বিশেষ করে সুইডেনের বা রাশিয়ার সাথে তাদের সম্পর্ক যথেষ্ট ভাল। লাল-সাদার যুদ্ধে ফিনল্যান্ডের ক্ষমতা লালদের হাতে গেলে হয়ত ফিনল্যান্ড আজকে সুইডেন বা নরওয়ের স্থানে না থেকে পোল্যান্ড বা বেলারুশের কাছাকাছি কোথাও থাকত অর্থনৈতিকভাবে।
আপনার লেখার ভাল দিক একটা হল যে আপনি দেশী মানুষের বর্ণবাদটা চোখ এড়িয়ে যাননি। এই ব্যাপারটা অনেকেই স্বীকার করতে চায় না। ফিনল্যান্ডের প্রতি ভালবাসা দেখে খুব ভাল লাগল। জন্মস্থানের প্রতি ভালবাসা স্বাভাবিক, কিন্তু যুক্তি-বিচারের পরেও যদি বিদেশকে আপন দেশ বলে ভালবাসা যায় তাহলে সেই দেশের ও দেশবাসীর কৃতিত্বই আলাদা।
উল্টোদিকে আপনি নকিয়া নিয়ে কিছু লেখেননি। ফিনল্যান্ড নিয়ে লিখলেন আর নকিয়া বাদ চলে গেল?
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
নোকিয়া নিয়ে একটা আলাদা লেখা দেওয়া দরকার, কি বলেন? এখন লিখলে অবশ্য লিখতে হবে নোকিয়া উত্থান পতন!
জন্মস্থানের প্রতি ভালবাসা স্বাভাবিক, কিন্তু যুক্তি-বিচারের পরেও যদি বিদেশকে আপন দেশ বলে ভালবাসা যায় তাহলে সেই দেশের ও দেশবাসীর কৃতিত্বই আলাদা।
খুব সত্য কথা---
facebook
নোকিয়ার উচ্চারণটা ঠিক কেমন ফিনিশে - নকিয়া না নোকিয়া বাংলার? নোকিয়া নিয়ে লেখা পেলে খুশী হব।
পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।
নোকিয়া। এটা একটা গ্রামের নাম, সেখানের কিছু লোক গাড়ীর ফেলে দেওয়া টায়ার থেকে জুতা তৈরি শুরু করেছিল নোকিয়া কোম্পানি গঠন করে! চেষ্টা করব ভাই, কিন্তু টেকি সাইড এড়িয়ে যেতে হবে, আসলে খুব তাড়াহুড়ো করে লেখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বাদ পড়েছে।
facebook
ভালো লাগল আপনার লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম। আচ্ছা ফিনল্যােণ্ড অভিবাসী (সিটিজেন) হওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি? পড়াশোনা কিংবা চাকুরি। এ সম্পর্কে জানালে অনেকের সুবিধা হবে।
প্রকৃতি ভালো লাগে। তবে মানুষের ছবি বেশি ভালো লাগে। কর্মক্ষেত্রে যাওয়া মানুষ, আড্ডার মানুষ, পর্াকের বেঞ্চিতে বসা মানুষ, খেলাধুলায় মত্ত মানুষ, এদর ছবি দেন
পরে দিন আশা রাখি।
এখন তো নেটের যুগ ভাই, অভিবাসী, পড়াশোনা কিংবা চাকুরী সব নিয়েই দুইটা ক্লিক করলেই কিন্তু তথ্য পেয়ে যাবে উৎসাহীরা।
facebook
facebook
পোয়েটস অব দ্য ফল কই...
হাজার দ্বীপের দেশ... দেশটার ম্যাপ দেখলেই যেন কেমন লাগে- ছড়ানো ছিটানো বন-ঝোঁপ ঝাড়- জলা... চুপচাপ... কোলাহল নেই- কেবলই কলকাকলি। সারাদিন তাদের পাশে বসে কাটিয়ে দিয়ে পরের দিনের জন্য অপেক্ষা করা যায় যেন নির্দ্বিধায়। কিছু না পেলেও জিজ্ঞাসা নেই- পেলেও রেখে দিতে ইচ্ছে করে যেন, নিয়ে যেতে নয়...
facebook
লেখা ভাল লেগেছে।
তারেক ভাই, ভারতীয়দের সৌজন্যে আমরা কিন্তু জিওগ্রাফি আর ডিসকভারী চ্যানেল বাংলাতেই দেখি।
---
মিলন
হুম, কিন্তু পত্রিকা?
facebook
একটা দেশ সম্পর্কে অনেক কিছু জানলাম। আমি মনের ভাব গুছিয়ে লিখতে পারি না, তা নাহলে অস্ট্রেলিয়া নিয়ে লিখতাম। লেখা চলুক।
শুরু করে দিন, তারপর দেখ যাবে-
facebook
ফিনলানড এ কি স্কলারশিপ দেয়? আমার ত আসতে মন চাইতেচে। এত সুন্দর একটা দেশ। লেখা আর বরননা ভাল হ্য়েচে। (টাইপিনং তেমন ভালনা ভুল হয় অনেক!! )
দেয় তো বটেই, খোঁজ নিয়ে দেখুন নেটে ভালো মত
facebook
এ যে একেবারে ফিনিশিয় মহাভারত!
-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
facebook
facebook
ভালো লাগল আপনার লেখা। অনেক কিছু জানতে পারলাম। ফিনল্যান্ড নিয়ে আমার খুব নস্টালজিয়া আছে। আমার এক আপু থাকতেন ওখানে। আমার জন্য কি দারুন সব post card পাঠাতেন। আরও পাঠাতেন দারুন সব stamp।
তাহসিন রেজা
বামের টিকেটের কল্পিত প্রাণীগুলোর নাম মুমি, খুবই জনপ্রিয়।
facebook
তথ্যবহুল চমৎকার একটা লেখার জন্য ধন্যবাদ। ফিনদেশীয় লেখাটেখা দেখি বেশ ভালোই সরগরম করে রেখেছে সচলকে আজকাল।
রসিক সুজন
facebook
এক সময়ে সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের মানুষ হয়ে সবচেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্থ দেশে বসবাস! মানুষ দুর্নীতি ছাড়া বাঁচে কেমনে? আমার খুব আশংকা হয়, আপনিও দুর্নীতি ভুলে যাচ্ছেন না তো?
ইউরোপের প্রায় সকল ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। আর ফিনিস, হাঙ্গেরিয়ান এবং এস্তোনিয়ান(এবং আরও কয়েকটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর ভাষা) উড়ালিক উপ-ভাষা পরিবারের সদস্য, বৃহত্তর পরিসরে উড়াল-আলটাইক ভাষা পরিবারের অন্তর্গত। পৃথকভাবে আলটাইক উপ-ভাষা পরিবারের অন্তর্গত ভাষাগুলোর মধ্যে মঙ্গোলীয়, তুর্কী, উজবেক, তাজিক, কিরঘিজ ইত্যাদি ভাষাগুলো প্রধান। সে কারনে ফিনিস ভাষার সংগে ইউরোপের প্রধান ভাষাগুলোর কোন মিল নেই, বরং আলটাইক ভাষাগুলোর সংগে দূরবর্তী সংযোগ আছে।
ইউরোপে ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা পরিবারের অন্তর্গত হেলেনিক বা গ্রীক, জার্মানিক, ইটালিক এবং স্লাভ উপ-ভাষা পরিবারের বিভিন্ন ভাষাভাষী জাতিগুলোর সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসনের কারনেই ইউরোপের বিভিন্ন স্থানের আদি ভাষাগুলোর বিলুপ্তি ঘটেছে। রক্ষাপ্রাপ্ত গুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো স্পেনের কাতালান এবং স্পেন ও ফ্রান্সের বাস্ক। জর্জিয়া, চেচনিয়া, ঈঙ্গুশেটিয়া ও দাগেস্তানের প্রাচীন ককেশিয়ান ভাষা। এবং বলাই বাহুল্য, আপনাদের উড়ালিক ভাষাগুলো।
আব্দুল্লাহ এ.এম.
উরালিক ভাষা,
facebook
আজ ১৯ শে নভেম্বর, তোমার বড় ভাইকে জানাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা।
আর অণু দা, কি বোলব? আমার মনে হল, আমি যেন কিছুক্ষণ ফিনল্যান্ডে ঘোরাঘুরি করলাম। অনেক কিছু জানলাম। আরও অনেক কিছু জানার ইচ্ছে রইল।
ভালবাসা নিও
facebook
অণু দা, গত বছর ১লা মে তে হেলসেঙ্কি গিয়ে দেখি গাছে এটাও পাতা নেই, কি হাড় কাপান ঠাণ্ডা রে বাবা!! যে সময়ে সুইডেনে রীতিমত বসন্ত। সেই থেকে কানে ধরেছি ফিনলান্ড ভ্রমণ আর নয়
এহ, বাজে সময়ে এসেছিলেন! হা হা,
facebook
দারুন ! আমার তো এখন ফিনল্যান্ডে চলে যেতে মন চাচ্ছে
আসেন, তবে শীত চলেছে এখন-
facebook
এখানে সাউনার কথাটা বাদ রয়ে গেছে। এটা না হলে ফিনিশ কালচার পূর্ণ হয় না । দয়া করে জুড়ে দিবেন।
দিব! সাওনা থেকে জমাট বাঁধা হ্রদে লাফ দেবার অভিজ্ঞতাও বলব!
facebook
অণু ভাই লেখাটির জন্য থ্যাঙ্ক স
facebook
চমৎকার লাগলো ফিনল্যান্ড। লেখা নিয়ে বলার কিছু নেই। ফিনিশিয় সমাজ নিয়ে জানলাম। ফিনিশিয় সভ্যতা নিয়ে একটা বড় লেখা চাই। একবার পড়লাম। আবার পড়তে হবে। আগেই বলে যাচ্ছি, যে যে বিষয় আরও বিস্তারিত লিখব বলে আশ্বাস দিলেন তা যেন আশ্বাসে সীমাবদ্ধ না থাকে। এটা দাবী অথবা অনুরোধ।
স্বয়ম
ফিনিশিয় সভ্যতা কিন্তু ফিনল্যান্ডের না, মধ্যপ্রাচ্যের।
ফিনল্যান্ড নিয়ে আরও লেখার ইচ্ছা আছে, দেখা যাক।
facebook
ভুলটা আগেই ধরতে পেরেছিলাম। তবু ধরিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ। ভাবনার জট আর কি-----
স্বয়ম
কোন ব্যাপার না, উচ্চারণ একই রকম যে! আপনি কি ভেবেছেন একই ভুল আমি করি নাই
facebook
ডোন্ট ওয়ারি! লেবাননের আদি ফিনিশিয় সভ্যতার ফিনিশিয়রা বোধহয় খুব একটা মাইন্ড করবে না। করা উচিত না। যে বর্ণমালা ব্যবহার করে বর্তমানের ফিনল্যান্ডের ফিনিশিয়দের ভাষা, ভাষার নাম ইত্যাদি লেখা ও উচ্চারণ করা হয়, সেই বর্ণমালার আদি উদ্গাতা বোধহয় মধ্যপ্রাচ্যের ঐ আদি ফিনিশিয়রাই। সুতরাং আপনাদের কনফিউশনের জন্য তারাই এক হিসেবে দায়ী! যত দোষ ফিনিশিয় ঘোষ!
****************************************
facebook
অনুদা অনেক ভালো লাগলো আপনার লেখাটা পড়ে
শারমিন
শুভেচ্ছা
facebook
ইস্ এই লেখাটা যদি আরো বছর পাচেক আগে পড়তে পারতাম, কি যে উপকার হইত অনু ভাই। আপনার লেখা পড়ে মনে হ্েচ্ছ ফিনল্যান্ড চলে আসা ভাল। চেষ্টা করব.... আপনি একটু ফু দিয়া দেয়েন।
ফূূূূূূূূূূূূূূূূূূূ
facebook
আহা আমাদের দেশটি যদি এমন হত!
তামান্না ঝুমু
শুধু শীতকালটা বাদ দিয়েন!
facebook
প্রিয় তারেক ভাই,
আপনার সব লেখা মন দিয়ে পড়ি - বিশেষত ভ্রমণ কাহিনীগুলো বেশি ভালো লাগে - প্রায় সেরকম-ই এই লেখা টা পড়তে গিয়ে একটা লাইন এ চোখ আটকে গেল |
"... আর আছে গোদের ওপর বিষফোঁড়া জেহভাস উইটনেস রা |"
একটু বিশদ করলে ভালো হয় - মানে আমার স্বল্প অভিজ্ঞতায় খানিকটা তাই মনে হচ্ছিল - তাই জিগায়লুম আর কি |
শুভায়্ন |
এটি আরেক ধর্ম বা বলা চলে ক্রিশ্চিইয়ানিটির আরেক শাখামত!, সমস্যা হচ্ছে এরা বাড়ী বাড়ী যেয়ে দরজা নক করে ধর্ম প্রচার করে। বিশ্বাস করে যীশু ক্রুসে না বরং একটা স্তম্ভে মারা গিয়েছিল, আরও কিছু হাবিজাবি। চ্রম বিরক্তিকর
facebook
আপনার লেখায় নতুন কি আর বলব! যথারীতি
কিন্তু নোকিয়া? নোকিয়া কই?
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
দিতে দিতে বাদ পড়ে গেছে! অবস্থা পড়ন্ত তো
facebook
ভালো লাগলো পড়ে।
আগেও পড়েছিলাম। এবার রিভিশিন হলো।
কি ভয়ংকর!!
ফিনল্যান্ডের একটা আস্ত শহর যখন সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ে নিলো, তখন সেই শহরের বাসিন্দাদের কেমন লেগেছিলো অনুভনব করার চেষ্টা করলাম।
পারলাম না। আমার পক্ষে ভাবা সম্ভবও নয়।
ভালো থাকবেন অণু।
আপনার জন্য অনেক ভালোবাসা, শুভকামনা।
--------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
'এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর।
এ ভরা বাদর মাহ ভাদর
শূন্য মন্দির মোর।।'
নতুন মন্তব্য করুন