তিব্বতের একটি গ্রাম দেখে জীবনানন্দের বিমুখ নেশনের কবিতা মনের মাঝে ঘুরে ওঠে, অতলান্তিক এবং ভারত মহাসাগরের মিলন স্থলের টেবিল পর্বত মনে করিয়ে দেয় বানিজ্যবায়ুর জন্য অপেক্ষমান নৌবহর আর নাবিকদের কথা, হাভানা বন্দরের ওপর পাশে কমলা রঙের সূর্য দেখি সেই সাথে দেখি কবির মুখ, বাদুড়ের আঁকাবাঁকা আকাশের নিচে যেন কবিরই প্রতিচ্ছায়া, উড়োজাহাজ থেকে বাংলার শ্যামল প্রান্তর দেখে সবার আগেই করুণ ডাঙ্গার প্রতি নিবেদন করা কবির নৈবদ্য মনে পড়ে। জীবনানন্দ কী বিশ্বময় নাকি পাঠকের হৃদি মাঝারে?
পোস্টটি সচল জীবনের শুরু থেকে সবসময়ই পাশে থাকা, দৃঢ় সমর্থন এবং উৎসাহ দিয়ে যাওয়া কবি মৃত্যুময় ঈষৎ-এর জন্য।
এই সিরিজের বাকী পর্বগুলো এইখানে
বাংলার শ্রাবনের বিস্মিত আকাশ
চেয়ে রবে; ভিজে পেঁচা শান্ত স্নিগ্ধ চোখ মেলে কদমের বনে
শোনাবে লক্ষ্মীর গল্প-
তবু কোনো পথ নেই এখনো অনেক দিন, নেই।
একটি বিরাট যুদ্ধ শেষ হয়ে নিভে গেছে প্রায়।
আমাদের আধো-চেনা কোনো-এক পুরনো পৃথিবী
নেই আর। আমাদের মনে চোখে প্রচারিত নতুন পৃথিবী
আসেনি তো।
এক দুই দিগন্তের থেকে সময়ের
তাড়া খেয়ে পলাতক অনেক পুরুষ-নারী পথে
ফুটপাতে মাঠে জীপে ব্যারাকে হোটেলে অলিগলির উত্তেজে
কমিটি-মিটিঙে ক্লাবে অন্ধকারে অনর্গল ইচ্ছার ঔরসে
সঞ্চারিত উৎসবের খোঁজে আজো সূর্যের বদলে
দ্বিতীয় সূর্যকে বুঝি শুধু অন্ন, শক্তি, অর্থ, শুধু মানবীর
মাংসের নিকটে এসে ভিক্ষা করে। সারা দিন- অনেক গভীর
রাতের নক্ষত্র ক্লান্ত হয়ে থাকে তাদের বিল্লোল কাকলিতে।
সকল নেশন আজ এই বিলোড়িত মহানেশনের
কুয়াশায় মুখ ঢেকে যে যার দ্বীপের কাছে তবু
সত্য থেকে- শতাব্দীর রাক্ষসী বেলায়
দ্বৈপ- আত্মা- অন্ধকার এক- একটি বিমুখ নেশন।
কোনো দিন নগরীর শীতের প্রথম কুয়াশায়
কোনো দিন হেমন্তের শালিখের রঙে ম্লান মাঠের বিকেলে
হয়তো বা চৈত্রের বাতাসে
চিন্তার সংবেগ এসে মানুষের প্রাণে হাত রাখেঃ
তাহাকে থামায়ে রাখে।
সে-চিন্তার প্রাণ
সাম্রাজ্যের উত্থানের পতনের বিবর্ণ সন্তান
হয়েও যা কিছু শুভ্র র’য়ে গেছে আজ-
সেই সোম-সুপর্ণের থেকে এই সূর্যের আকাশে-
সে-রকম জীবনের উত্তরাধিকার নিয়ে আসে।
বাণিজ্যবায়ুর গল্পে একদিন শতাব্দীর শেষে
অভ্যুত্থান শুরু হ’লো এইখানে নীল সমুদ্রের কটিদেশে;
বাণিজ্যবায়ুর হর্ষে কোনো একদিন,
চারিদিকে পামগাছ – ঘোলামদ – বেশ্যালয় – সেকোঁ – কেরোসিন
সমুদ্রের নীল মরুভূমি দেখে রোখে সারাদিন ।
ফাল্গুনের অন্ধকার নিয়ে আসে সেই সমুদ্রপারের কাহিনি,
অপরূপ খিলান ও গম্বুজের বেদনাময় রেখা,
লুপ্ত নাশপাতির গন্ধ,
অজস্র হরিণ ও সিংহের ছালের ধূসর পাণ্ডুলিপি,
রামধনুরঙের কাচের জানালা,
ময়ূরের পেখমের মতো রঙিন পর্দায় পর্দায়
কক্ষ ও কক্ষান্তর থেকে আরো দূর কক্ষ ও কক্ষান্তরের
ক্ষণিক আভাস--
আয়ুহীন স্তব্ধতা ও বিস্ময়।
সুরঞ্জনা, আজো তুমি আমাদের পৃথিবীতে আছো;
পৃথিবীর বয়সিনী তুমি এক মেয়ের মতন;
কালো চোখ মেলে ওই নীলিমা দেখেছ;
গ্রীক হিন্দু ফিনিশিয় নিয়মের রূঢ় আয়োজন
শুনেছ ফেনিল শব্দে তিলোত্তমা-নগরীর গায়ে
কী চেয়েছে? কী পেয়েছে — গিয়েছে হারায়ে।
কিন্তু তবুও শহরের বিপুল মেঘের কিনারে সূর্য উঠতে দেখেছি;
বন্দরের নদীর ওপারে সূর্যকে দেখেছি
মেঘের কমলারঙের ক্ষেতের ভিতর প্রণয়ী চাষার মতো বোঝা রয়েছে তার;
আকাশ দিয়ে উড়ে গেল শাদা হাঁসের ভিড়।
এইখানেতে আজ পৃথিবীর অনেক মলিন অন্তেবাসী ভাবে;
দূর উপরের নীল আকাশের রোদের বিচ্ছুরণে
ওসব পাখি রূপশালী ধান? কোথায় উড়ে যাবে ?
স্থবিরের চোখে যেন জমে ওঠে অন্য কোনো বিকেলের আলো।
সেই আলো চিরদিন হয়ে থাকে স্থির,
সব ছেড়ে একদিন আমিও স্থবির
হয়ে যাব; সেদিন শীতের রাতে সোনালি জরির কাজ ফেলে
প্রদীপ নিভায়ে রবো বিছানায় শুয়ে;
অন্ধকারে ঠেস দিয়ে জেগে রবো
বাদুড়ের আঁকাবাঁকা আকাশের মতো।
স্থবিরতা, কবে তুমি আসিবে বল তো।
এই পৃথিবীতে এক স্থান আছে – সবচেয়ে সুন্দর করুণ :
সেখানে সবুজ ডাঙা ভ’রে আছে মধুকূপী ঘাসে অবিরল;
সেখানে গাছের নাম : কাঁঠাল, অশ্বত্থ, বট, জারুল, হিজল;
সেখানে ভোরের মেঘে নাটার রঙের মতো জাগিছে অরুণ;
সেখানে বারুণী থাকে গঙ্গাপসাগরের বুকে, - সেখানে বরুণ
কর্ণফুলী ধলেশ্বরী পদ্মা জলাঙ্গীরে দেয় অবিরল জল;
সেইখানে শঙ্খচিল পানের বনের মতো হাওয়ায় চঞ্চল,
সেইখানে লক্ষ্ণীপেঁচা ধানের গন্ধের মতো অস্ফুট, তরুণ;
সেখানে লেবুর শাখা নুয়ে থাকে অন্ধকারে ঘাসের উপর;
সুদর্শন উড়ে যায় ঘরে তার অন্ধকার সন্ধ্যার বাতাসে;
সেখানে হলুদ শাড়ি লেগে থাকে রূপসীর শরীরের ’পর –
শঙ্খমালা নাম তার : এ- বিশাল পৃথিবীর কোনো নদী ঘাসে
তারে আর খুঁজে তুমি পাবে নাকো বিশালাক্ষী দিয়েছিল বর,
তাই সে জন্মেছে নীল বাংলার ঘাস আর ধানের ভিতর।
মন্তব্য
জীবন বাবুরে সবসময় ভালু পাই। আর এই সিরিজটার তো কোন জবাবই নাই।
প্রতিটি পর্ব অনবদ্য।
শুভেচ্ছা রইল অনুদা।
সাফিনাজ আরজু
facebook
অসাধারণ রে,চালিয়ে যা।কৌস্তুভের মতোন ছবির আকার আরেকটু বড়ো করে দিতে পারিসনা?
-মনি শামিম
যায় নাকি? জিজ্ঞাসা করতে হবে-
facebook
আমার প্রিয় সিরিজ - ধন্যবাদ অণুদা
facebook
ভেসে থাকা দ্বীপ আর বাড়িগুলো একেবারে মন উদাস করে দিলো। এমন কোথাও থাকতে পারলে বেশ হতো! ছয় নম্বর ছবিটা অতীব চমৎকার
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
শীতে কিন্তু খবর হয়ে যাবে!
facebook
উনি ইতালীয় ললনা, এবার পাখির বাসার মত চোখওয়ালা বঙ্গললনার ছবি তুলতে হবে
facebook
"জীবনবাবু রি-ইনভেন্টেড"!!!
আমি নিশ্চিত উনি বেঁচে থাকলে আপনার ছবি দেখে দেখেই আরো কিছু মাস্টারপিসের জন্ম দিতেন।
ফারাসাত
facebook
গুল্লি অসাধারণ রে,চালিয়ে যা।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
তুই কোথায়! কোন খবর নাই!
facebook
facebook
বাহ্ !
**********************************
যাহা বলিব, সত্য বলিব
facebook
------------
'আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
facebook
উনি ইতালীয় ললনা, এবার পাখির বাসার মত চোখওয়ালা বঙ্গললনার ছবি তুলতে হবে
facebook
অতলান্তিক শব্দটা দেখেই মনে হলো, "অতন্দ্রিলা, ঘুমাওনি জানি..." কবিতাটা।
আবার অতন্দ্রিলা শব্দটা দেখেই মনে হলো অতন্দ্র প্রহরীর কথা। ব্যাটা লিখে না অনেকদিন।
ভাগ্যিস আপাতত আর কিছু মনে হচ্ছে না।
জীবনবাবুর শব্দচয়ন খুব দ্রুত ঘোর তৈরি করে, তাই না?
"রূপশালী ধান" - কি অসম্ভব সুন্দর একটা শব্দ!
৫, ৬, ৭ নম্বর ছবিগুলো বেশি ভালো লাগলো।
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
সেই ঘোর ভাঙা আমার কাজ না।
আর কী কী মনে হল জানিয়েন!
facebook
বরাবরের মতই। আপনার এই িরিজটার সুবাদে অনেক আগের পড়া কবিতাগুলো রিভিশান হচ্ছে। চলতে থাকুক িরিজ।
_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই
চেষ্টা করছি--
facebook
#অসাধারন লেগেছে প্রিয় তারেক অণু ভাই, লাইনগুলো ছবির সাথে মিলে মিশে একাকার
#শুভেচ্ছা আপনাকে, ভাল থাকুন
আশরাফুল কবীর
facebook
----------------------------------------------------------------------------------------------
"একদিন ভোর হবেই"
facebook
জীবনানন্দ আমাদের মরু জীবনেরই জলো আনন্দ। উনি আর্দ্র করতে জানেন, ঋদ্ধ করতে জানেন। উনার ভিতরে একবার অবগাহন করলে শুধু অতলে তলিয়েই যেতে হয়। এই মোহাবিষ্ট থেকে উত্তরণের উপায় বোধ করি কোনদিনই বাঙালি আবিষ্কার করতে পারবে না।
আপনার অপূর্ব ছবিউত্তলনমেধার সাথে সংগতিক জীবনবাবুর সুষমিত কাব্যাংশগুলো হীরকসম উজ্জ্বল আমাদের কাছে। চোখ ঝলসে যায়, মন আপ্লুত হয়; চেতনা স্নিগ্ধ হয়। এই আবহটি তৈরিতে আপনি সিদ্ধহস্ত।
অফটপিকঃ আমি অকর্মা একজন মানুষ। সচলে আমার কোন কন্ট্রিবিউশন (গুরুত্বপূর্ণ কোন লেখা) নাই; সক্ষমতার অভাবের থেকে অলসতাটাই বড় কারণ হয়তো। আমি এখানে আমার প্রিয় লেখকদের লেখা পড়ি- মুগ্ধতা জানাই মন্তব্যে; সমাজ সচেতনতা বৃদ্ধিতে অংশ নিয়ে থাকি; বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক আন্দোলনে সমর্থন জানাই। এর মধ্যে আপনাদের মত মানুষদের সাহচর্যে আসতে পেরেছি এটাই পরম পাওয়া। সবটুকু ভালোজানা-স্নেহ মাথা পেতে নিলাম প্রিয় কিংবদন্তি। আর আপনাকে আমার মর্ত্যের মানুষ মনে হয় না; অচেনা গ্রহ থেকে উঠে আসা স্বপ্নতরুণের মত মনে হয়! যার পিছু পিছু সমগ্র পৃথিবী ঘুরে আসা যাবে যেন................
_____________________
Give Her Freedom!
জীবনানন্দ আমাদের মরু জীবনেরই জলো আনন্দ।
অলসতা ঝেড়ে ফেলেন নিয়ম করে হে কবি!
facebook
আপাতত ছাড়া আর কিছু বলতে পারছি না।
------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।
পরে দেখে চিন্তে আবার বইলেন!
facebook
২য় ছবিটা কোথায়...
তিব্বতের এক গ্রাম।
facebook
কি অসাধারণ, তাই না?
স্রেফ অসাধারণ
facebook
নতুন মন্তব্য করুন