হাঁসের বাচ্চা ডিম থেকে বেরোবার পর ১৩-১৬ ঘণ্টার সময়টুকু অতীব গুরুত্বপূর্ণ, এই সময়টুকুতে তারা প্রথম যে চলমান বস্তুটি দেখে তাই তাদের বাবা-মা, মানে অভিভাবক হয়ে দাঁড়ায়! মনে করা হয় তাদের মস্তিষ্ক বিশেষ ধরনের ছাপ রাখে সেই সময়ের ঘটনাবলী এবং সেই চলমান বস্তুর, ফলশ্রুতিতে সেটিই হয়ে দাঁড়ায় তাদের অভিভাবক। স্পষ্ট মনে আছে শিশুকালে গ্রামে দেখতাম এক দল তুলতুলে কুসুম হলুদ হাঁসের ছানা পুকুরে সাঁতার দিচ্ছে আর তাদের মুরগী মা পাড়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে সতর্কতা জারি করেই যাচ্ছে! এমন অবাক বিষয় দেখে কারণ জিজ্ঞাসা করলেই বড়রা দায়সারা উত্তর দিত- মুরগীর বসিয়ে হাঁসের ডিম তা দিয়ে ফোটানো হয়েছে, তাই হাঁসের বাচ্চাগুলোর মা সেই মুরগী! যদিও এখন আমরা জানি ডিমে তা দেওয়া মুখ্য ব্যাপার না, আসল ব্যাপার সেই গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে ডিম ভেঙ্গে বের হওয়া ছানাদের সামনে থাকা, এই বিষয়টিকে বলা হয় imprinting, এবং এটি কেবল হাঁসদের ক্ষেত্রে নয়, অনেক ধরনের পাখিদের জন্যই প্রযোজ্য।
গৃহপালিত মুরগীর ছানাদের ক্ষেত্রে এই বিষয়টি লক্ষ্য করে উনবিংশ শতাব্দীতে প্রথমবারের মত সবার সামনে আনেন শখের জীববিজ্ঞানী ডগলাস স্প্যাল্ডিং, কিন্তু সত্যিকারের ভাবে প্রথমবারের মত এই বিষয়টি নিয়ে ব্যপক বৈজ্ঞানিক গবেষণা চালান এবং ধারনাটিকে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলেন প্রাতঃস্মরণীয় জীববিদ কনরাড লোরেঞ্জ, তিনি নিজেই অনেক সময় ডিম ভেঙ্গে বাহির হওয়া রাজহাঁসের ছানাদের সামনে থেকে হাতেকলমে প্রমাণ করে দেখেছেন যে ছানারা তাকেই মা মনে করে সবখানে অনুসরণ করে ( অনেক সময় আসলে তার পায়ের বুট জোড়াকে!) !
এমনকি কাঠের তৈরি হাঁস বানিয়ে তাকে চাকার সাহায্যে নড়াচড়া করিয়ে দেখালেন যে সেই জড়বস্তকেই মা মনে করে রাজহাঁসের বাচ্চারা। এমনভাবেই জীববিজ্ঞানের বিশেষত প্রাণীদের ব্যবহার নিয়ে উম্মোচিত হল বিজ্ঞানের রাজ্যে এক নব অধ্যায়ের।
জীবনে প্রথমবারের মত কনরাড লোরেঞ্জের নামে শুনেছিলাম পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হকের এক সাক্ষাৎকারে, তিনিই বলেছিলেন কিং সলোমনস রিং এবং অন অ্যাগ্রেসন বই দুটির কথা। জানলাম নোবেল বিজয়ী একজন বিশ্বখ্যাত পাখিবিশারদ কনরাড লোরেঞ্জ, তার মানে পাখি নিয়ে কাজ করেও নোবেল পুরস্কার পাওয়া সম্ভব? এটা তো গণিতবিদরাও পান না! আবার মনে হল, কেন না? পাখিরা যদি না থাকে বিশ্বে তাহলে কয়টা গাছ টিকে থাকবে আগামী কয়েক দশক পরে পোকার অত্যাচারে? নিঃসন্দেহে পাখিদের নিয়ে গবেষণা অত্যন্ত উঁচুদরেরই কাজ। আরও পরে দেখি আমাদের কনরাড লোরেঞ্জ আসলে সকল কাজের কাজি, তাকে প্রাণীদের ব্যবহার নিয়ে নিয়ে বিজ্ঞান অর্থাৎ এথোলজির ( ethology) জনকদের একজন বলে মনে করা হয়, পাখিদের নিয়ে তার গবেষণা ভুবনবিদিত হলেও মাছ, ছুঁচো, বানর, পতঙ্গ, মানুষ, জলজ উদ্ভিদ কী নিয়ে কাজ করেন নি তিনি! জীববিজ্ঞানে (চিকিৎসায়) নোবেল পেয়েছেন ১৯৭৩ সালে। সেই সাথে অসাধারণ এক লেখক এই জীব বিজ্ঞানী, তীক্ষ রসবোধ সম্পন্ন দীপ্তিময় ভাষায় উপহার দিয়েছেন আমাদের অবশ্যপাঠ্য কয়েকটি বই, তার মধ্যে সর্বপরিচিতটি নিয়েই আজকের পোস্ট।
অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানীর বই স্বাভাবিক ভাবেই জার্মান ভাষায় বেরিয়েছিল ১৯৪৯ সালে, এর ৩ বছর পরেই বাজারে এসেছিল প্রথম ইংরেজি সংস্করণ, এবং এখন পর্যন্ত নিয়মিত ভাবে পুনর্মুদ্রণ হয়ে চলেছে কিং সলোমনস রিং-এর। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ টাউনের এক পুরনো বইয়ের দোকানে ঘুরঘুর করার সময়ে মিলে গেছিল ১৯৫৩ সালে ছাপা জুলিয়ান হাক্সলির ভূমিকা সম্বলিত দুর্দান্ত বইখানা, প্রতিটি অধ্যায়ের শুরুতেই ছিল সামঞ্জস্যতা পূর্ণ অসাধারণ সব কবিতা, সেখানে কবিদের তালিকায় কিপলিং, ব্রাউনিং, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, কিটস, টেনসন, লংফেলো, শেক্সপীয়ার কেউ বাদ নেই! আর পাতায় পাতায় আছে অপূর্ব সব অলংকরণ- যেন জীবন্ত সব পশু-পাখি, আর মাঝে মাঝেই নানা প্রাণীর সাথে লেখক লোরেঞ্জ নিজে!
প্রথমেই আছে কিপলিংয়ের কবিতা-
There was never a king like Solomon
Not since the world began
Yet Solomon talked to a butterfly
As a man would talk to a man.
কিংবদন্তী বলে ইহুদী রাজা জ্ঞানী সলোমনের এক অসাধারণ আংটি ছিল যার সাহায্যে সে সকল প্রাণীর ভাষার বুঝতে এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারত, তাই বইয়ের প্রথমেই এসেছে সলোমনের কথা এবং বইয়ের নামকরণের মাধ্যমে লেখক বুঝিয়েছেন যে প্রাণীদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন কিভাবে সম্ভব তা নিয়েই মূলত আলোকপাত করেছেন অমূল্য জ্ঞানের আকরটিতে। সেই সাথে তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করে ভেঙ্গে দিয়েছেন নানা প্রাণীদের দিয়ে মানুষের কিছু প্রচলিত ভ্রান্ত বিশ্বাস, যেমন শেয়াল মোটেও অন্য শিকারি প্রাণীদের তুলনায় বুদ্ধিমান কোন প্রাণী নয়! আসলে নেকড়ে বা কুকুরদের তুলনায় তার বুদ্ধিমত্তার লেভেল বরং অনেক নিচু মনের। আবার সারা বিশ্বে ঘুঘুকে শান্তির প্রতীক বলা হলেও ঘুঘু মোটেও শান্তিকামী কোন পাখি নয়, প্রায়শই তারা রক্তক্ষয়ী লড়াইতে জড়িয়ে পড়ে! সিংহকে বনের রাজা বলা বিশাল ভুল একটি তথ্য কারণ সিংহ বনে থাকে না সে থাকে তৃণভূমি, মরুভূমি এবং পাহাড়ি অঞ্চলে, বরং তাকে মরুভূমির রাজা বলা যেতে পারে। আবার লোরেঞ্জ নিজেই রাজহাঁসদের নিয়ে গবেষণার করতে যেয়ে যখন দেখলেন যে মানুষ যেমন মনে করে যে রাজহাঁস জুটি সারাজীবন একসাথে থাকে এবং তারা সবসময়ই পরস্পরের সাথে সততা রক্ষা করে চলে কথাটি ডাহা মিথ্যা, বরং তারা সুযোগ পেলেই পরকীয়ায় লিপ্ত হয় তখন বেশ বিমর্ষ হয়েছিলেন, তাকে চাঙ্গা করার জন্য সেক্রেটারি বলেছিল- Geese are just Human, Mr Lorenze!
সেই সাথে প্রমাণ সহকারে বলেছেন আমরা কারো আরামপ্রদ বা সাবলীল অবস্থার কথা বলতে সাধারণত জলের মাছ (Fish in the water) কথাটি ব্যবহার করি, কিন্তু মাছ পানিতে মোটেও খুব আরামে থাকে না কারণ তাদের প্রচুর অসুখ হয়, নানা ধরনের পরজীবী তাদের শরীরে বাসা বেঁধেই থাকে সবসময়!
অ্যাকরিয়ামের প্রতি ছিল কনরাড লোরেঞ্জের বিশাল ঝোঁক, পড়ার ঘরে সবসময়ই অ্যাকোরিয়াম থাকত তার, যাতে নিবিষ্ট মনে চিন্তার বা লেখার সময়ও মাঝে মাঝে মাছদের জীবনযাত্রা লক্ষ্য করতে পারেন, বইয়ের একাধিক অধ্যায়ে এই নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন মানে আমাদের জানিয়েছেন যে অ্যাকোরিয়ামে কেবল মাছ ছেড়ে দিলেই চলবে না, সেখানের পরিবেশ কী করে সুস্থ রাখতে হবে, জলজ উদ্ভিদ এবং পতঙ্গের জীবনের দিকচক্র নিয়ে নতুন তথ্য আবিস্কারের পেছনের কাহিনী ইত্যাদি ইত্যাদি।
আরেক বিশ্বখ্যাত প্রাণীবিদ, দ্য নেকেড এপ খ্যাত ডেসমণ্ড মরিসের স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ WATCHING-এ আছে কিভাবে কোন রকম জানান না দিয়েই নিজে নিজেই কনরাড লোরেঞ্জ তার বিশাল অ্যাকোরিয়াম পরিষ্কার করতে নেমে সদ্য আগত অতিথিদের ভিরমি খাইয়েছিলেন, সে বইয়ের কথা অন্য দিন বলা যাবে খন!
কুকুর নিয়েও ছিল লোরেঞ্জের প্রবল উৎসাহ, তাদের উৎপত্তি ও পোষ মানার ইতিহাস নিয়ে তিনি পড়ে ম্যান মিটস ডগ নামে একটি বইও লিখেছিলেন, তিনি মনে করেছিলেন এক বিশেষ ধরনের শেয়াল থেকে বিবর্তনের ফলে কুকুরের আবির্ভাব, কিন্তু সেই ১৯৪৯ সালে ডি এন এ ম্যাপিং অনুসরণ করে, যাচাই-বাছাই করার কোন সুযোগ ছিল না, ফলে সকল কুকুরই যে আসলে নেকড়ের বংশধর সেটা তখন জানা ছিল না তার।
নানা প্রাণীদের নিয়ে সারা জীবনের বিচিত্র সব অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন, প্রাণী পোষা নিয়ে তার মতামত জানিয়েছেন, সেই সাথে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে জানিয়েছেন যে সেই প্রাণীটিই মানুষের মাঝে সবচেয়ে বেশী হাসির উদ্রেক করে যার মাঝে মানুষ নিজেকে খুঁজে পায়- It is seldom that I laugh at an animal, and when I do, I usually find out afterwards that it was at myself, at the human being whom the animal has portrayed in a more or less pitiless caricature, that I have laughed. We stand before the monkey house and laugh, but we do not laugh at the sight of a caterpillar or a snail.
টেমিং অফ দ্য শ্রু নামের অসাধারণ একটা অধ্যায় আছে কেবল বিশেষ ধরনের জলজ ছুঁচো এবং তাদের আচার-ব্যবহার নিয়ে।
সবচেয়ে বেশি পাতা তিনি বরাদ্দ রেখেছেন একধরনের ক্ষুদে কাকদের (Jackdaw) জন্য, তাদের সাথে সখ্যতা অর্জন, তাদের মানুষ চিনবার ক্ষমতা ( এমনকি যে মানুষকে তারা অপছন্দ করে, সে পোশাক পালটালেও তারা বুঝতে পারে!), বর্ণ সনাক্ত করার দক্ষতা, সেই পাখির বাচ্চাকে কী করে তিনি নিজের মুখ থেকে খাবার খাওয়াতেন, তারা কেন লোরেঞ্জের ন্যাওটা হল এই নিয়ে বিস্তারিত রসঘন জ্ঞানগর্ভ আলাপ।
আর সারা বইটিতেই ঘুরে ঘুরে এসেছে নানা প্রাণীর সাথে বিশেষ করে তাদের আচরণের সাথে মানব জাতির মিল- অমিলগুলো। কনরাড লোরেঞ্জ বোঝায় চেষ্টা করেছেন একই অতীত থেকে যাত্রা শুরু করে বিবর্তনের পথ ধরে ঠিক কোন জায়গায় মানুষ একজন মানুষ হয়ে উঠল, অন্য প্রাণীর সাথে আসলেই তার পার্থক্য কতটুকু। দুজন মানুষ দেখা হলেই যে পরস্পরকে টুপি উঁচিয়ে সম্ভাষণ জানায়, মাথা সামান্য ঝোঁকায়, বা কুচকাওয়াজের সময় হাত তুলে রাখে এর সাথে অন্য অনেক প্রাণীর আচরণের কত অসাধারণ মিল। বইটির শেষ পর্যায়ে এসে লোরেঞ্জের দৃকপাত করতে চেয়েছেন মানব জাতির ভবিষ্যতের উপরে। সেটি কী জানতে হলে বইটি যত শীঘ্রই সম্ভব পড়া শুরু করুন।
এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি যে কনরাড লোরেঞ্জের কিং সলোমনস রিং পড়লে চারপাশের প্রাণীদের নিয়ে নতুন করে চিন্তা শুরু করতে হবে আপনার।
( ব্যবহৃত ছবিগুলো জীব বিজ্ঞানের নানা ওয়েব পেজ থেকে নেওয়া, স্কেচ দুটি যে বইটি হাতে আছে সেটিরই ছবি।
এই পোস্টটা প্রিয় নিশিতার জন্য, সে যেন সারাজীবন তার চারপাশের প্রাণীগুলোর প্রতি কৌতূহল এবং ভালোবাসা ধরে রাখে।)
প্রিয় কিছু বই নিয়ে আরও কয়েকটা পোস্ট---
মন্তব্য
তোমাকে কি বলে ধন্যবাদ দেয়া উচিত বুঝতে পারছিনা।
এত্ত এত্ত সুন্দর একটা উপহার দিয়ে আমার বছর শেষ হবে আগে জানলে আমি বছরের শুরু থেকে আরো খুশি থাকতাম
২০১৩ তাহলে খুশীতে বাকবাক থাক সবসময়
facebook
ছবি, লেখা সেরকম। আগ্রহ জাগায় দিলেন বইটা পড়ে দেখার।
পড়ে ফেলেন, ভাল লাগবে
facebook
দারুন রিভিউ। বইটাও খুব পছন্দ হলো। থ্যাঙ্কু অণু।
___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা
অন এগ্রেশন বেশী ভাল লাগবে তোর, পড়ে ফেল সময় করে
facebook
আসলেই অসাধারণ একটা বই। রিভিউ ভাল লেগেছে।
ধন্যবাদ, তার জীবনী পেয়েছি একটা গত মাসে।
facebook
রিভিউ ভালো লাগলো। শুরুর অংশটা পড়ে আমার নিজের জীবনের একটা অভিজ্ঞতার কথা ভীষণভাবে মনে পড়ে গেল। শেয়ার না করে থাকতে পারলাম না -
অনেক আগের কথা। তখন আম্মা বাসায় উঠোনে ছোট ঘর বানিয়ে সেখানে হাঁস-মুরগী পালতো। মাঝে মাঝে এগুলোর মড়ক আসতো... কোন কারণ ছাড়াই একটার পর একটা মরতে শুরু করতো। একবার এরকমই এক মড়কে দুম করে মোটামুটি সব কয়টাই শেষ হয়ে গেলো। একটা মাত্র মুরগী ঘরের এক কোণায় দুটো ডিম নিয়ে বসে ছিলো, ডিম ফুটে ছানা বের হওয়ার ঠিক আগ দিয়ে সেটাও মরে গেল... আমি তখন স্কুলে পড়ি চোখের সামনে ডিম থেকে ছানা বের হওয়া দেখার অভিজ্ঞতা আগেই ছিলো, এবার ডিমগুলো খুঁচিয়ে ওদের বের হতে সাহায্য করলাম, বাচ্চা দু'টোই চিঁ চিঁ করে আমাকে ওদের মা মনে করে বসল। কি কারণে জানি একটা সেই দিনই মরে গিয়েছিলো। অন্যটাকে নিয়ে আমি পড়লাম বেশ ঝামেলায়, কারণ ওর কাছ থেকে একটু দূরে গেলেই সে অস্থির হয়ে চিঁ চিঁ করে ভয়ঙ্কর চেঁচামেচি শুরু করে দেয়... আমি আপুর চুড়ি রাখার একটা ঢাকনাওয়ালা বক্সে ওকে ভরে সবসময় নিজের কাছেই রাখতাম, শুধু স্কুলের সময়টা বাদ দিয়ে... মনে পড়ে বাথরুমেও ওটা নিয়ে যেতাম...
একদম ছোট অবস্থায় ওরা সম্ভবত চোখে দেখে না, তাই ওকে খাওয়ানোর একটা বিশেষ কায়দাও আবিষ্কার করেছিলাম... ভাঙ্গা চাল সামনে দিয়ে, নখের ঠোকা দিয়ে শব্দ করে বুঝিয়ে দিতাম যে খাবারটা কোথায় আছে, তারপর সে খেত... না হলে ও ঠিক বুঝে উঠতো না এবং এদিক সেদিক খুঁজতে থাকতো। আমি অবশ্য মুরগীর ছানার এরকম কাল্পনিক মা হওয়াতে বেশ মজাই পাচ্ছিলাম। কিন্তু আম্মা বলল, ওকে এভাবে সঙ্গি সাথী ছাড়া একা রাখা ঠিক হচ্ছে না, তাই আমার এক বান্ধবীর বাসায় একই বয়সি ছানাদের সাথে ওকে মিশিয়ে দেয়ার সিধান্ত নেয়া হলো... যদিও এরকম আচমকা মা পরিবর্তনটা ছিলো আমাদের দু'জনের জীবনেই চরম স্পর্শকাতর মুহূর্ত! ওকে আমার ফ্রেন্ডের হাতে দিয়ে আমি দুরে লুকিয়ে দেখছিলাম... এবং সে'সময় বুক ফাটানো চিঁ চিঁ শব্দে ও যে প্রতিবাদটা করেছিলো, তা আমি কখনো ভুলবো না!
হুম
facebook
রিভিউ পড়েই মুগ্ধ !
facebook
#অনেক সুন্দর লিখেছেন, অভিনন্দন আপনাকে, শুভেচ্ছা
আশরাফুল কবীর
facebook
খাঁটি কথা!
facebook
নতুন মন্তব্য করুন