২০১২ সালের আগুনঝরা এক গ্রীষ্ম দিনে নির্নিমেষে চেয়েছিলাম ধ্বংসপ্রাপ্ত পম্পেই কোন এক কানাগলিতে, ইতিহাসের অনেক ভুলে যাওয়ার অধ্যায়কে অনুভবের সাথে সাথে মনে পড়ছিল ১৯০০ সালে সেখান ইতিহাসের টানে ঘুরতে আসা এক বরেন্দ্রভূমির সন্তানের কথা, নাম তার কুমার শরৎকুমার রায়। কোলকাতার প্রেসিডেন্সী কলেজ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে মাস্টার্স করে একই বছর ইউরোপ ভ্রমণে এসেছিলেন কুমার শরৎ কুমার রায়, জ্ঞানের চোখে ইতিহাসের টানে বুভুক্ষুর মত ঘুরে বেরিয়িছিলেন থিবস, পম্পেই, প্রাচীন মিশর। অতীতের চিহ্নকে বর্তমানে দেখে তাদের মূল্য অনুভব করেছিলেন বিশুদ্ধ জ্ঞানের তাড়না থেকে, যা বয়ে চলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে।
ভিনদেশের মাটিতে জীবন্ত ইতিহাসকে অনুভবকে করেই ক্ষান্ত হন নি সেই তরুণ, বরেন্দ্রভূমিতে ফিরে নিজেই উদ্যোগ নিয়েছিলেন বিশাল বাংলার ইতিহাসকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করার জন্য গড়েছিলেন বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর, বিশ্বখ্যাত বরেন্দ্র জাদুঘর।
কে ছিলেন কুমার শরৎকুমার রায়?
নাটোরের বিখ্যাত দিঘাপতিয়া রাজপরিবারে ১৮৭৬ সালের ২২ এপ্রিল (১১ বৈশাখ, ১২৮৩ বঙ্গাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন কুমার শরৎকুমার রায়, বাবা ছিলেন রাজা প্রমথনাথ রায় এবং মা রানী দ্রবময়ী দেবী। প্রমথনাথ রায় ঠিক জন্মগত উত্তরাধিকার সূত্রে রাজা হন নাই, দিঘাপতিয়ার রাজা প্রসন্ননাথ নিঃসন্তান থাকার দরুন তাকে দত্তকপুত্র হিসেবে গ্রহণ করেন। রাজা প্রমথনাথ রায় রাজশাহী কলেজ, রাজশাহী এসোসিয়েশন, রাজশাহী দাতব্য চিকিৎসালয় এবং বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়ে নিজেও ব্যপক অর্থসাহায্য করেছিলেন। ১৮৮৩ সালে মৃত্যুর পরে তার জমিদারী দুই পক্ষের উত্তরাধিকারীদের মাঝে ভাগ করে দিয়ে যান, প্রথম পক্ষের পুত্র প্রমদানাথ দিঘাপতিয়াতেই থেকে যান, উইল অনুযায়ী দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন পুত্র বসন্তকুমার রায়, শরৎকুমার রায় এবং হেমেন্দ্রকুমার রায় দিঘাপতিয়া থেকে আলাদা হয়ে যেয়ে অভিরামপুরে বসবাস শুরু করেন, এবং তাদের পূর্বপুরুষের নামানুসারে স্থানটির নামকরণ হয় দয়ারামপুর। বড় ভ্রাতা বসন্ত কুমার নিঃসন্তান অবস্থায় মারা গেলে কুমার শরৎকুমার রায় এস্টেট পরিচালনার সমগ্র দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পদ্মা পারের রাজশাহীতেই উনার বেড়ে ওঠা, কলেজিয়েট স্কুলে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত অধ্যয়নের পরে কোলকাতা গমন করেন, এবং উচ্চতর শিক্ষালাভের পর নিজ বাসভূমে ফিরে আসেন। ইতিহাসের প্রতি প্রগাঢ় টান এবং বিদেশ ভ্রমণের অমূল্য অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন, মূল লক্ষ্য ছিল প্রাচীন পুঁথি, উপকথা, কিংবদন্তী ইত্যাদি সংগ্রহ, সংকলন এবং সংরক্ষণ। বরেন্দ্রভূমিতে প্রত্যাবর্তনের পরপরই কুমার শরৎকুমার রায় পুরনো বইপত্র, যার সিংহভাগই ছিল তালপাতা এবং তুলোট কাগজে লেখা প্রাচীন পুঁথি) সংগ্রহের কাজ শুরু করেন, এবং তা দিয়ে রাজশাহী শহরের মিয়াপাড়ায় নির্মিত দিঘাপতিয়া রাজপ্রাসাদের একাংশে জমা করে একটি গ্রন্থাগার গড়ে তোলেন।
সেই সাথে ভাগলপুরের সমৃদ্ধ পুরাকীর্তির ভাণ্ডার দেখে তার মনে পড়ে যায় ইউরোপ-আফ্রিকার জাদুঘরগুলোর কথা, মনের মাঝে দানা বাঁধে এক মহাপরিকল্পনা, যাতে সবসময় সাথে ছিলেন ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ( সেই সময়ে রাজশাহী কোর্টের উকিল) এবং নৃতাত্ত্বিক ও পুরাতত্ত্ববিদ রমাপ্রসাদচন্দ্র (রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষক), সেই পরিকল্পনা মোতাবেকই ১৯১০ সালে শরৎকুমার রায়, অক্ষয়কুমার, রমাপ্রসাদ, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের রামকমল সিংহ এবং কলকাতা জাদুঘরের অধীক্ষক রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় নিয়ে একটি ক্ষুদে অনুসন্ধানী দল গঠন করা হয়। তারা রাজশাহী জেলেরা পালপাড়া, দেওপাড়া, চব্বিশনগর, কুমুরপুর, খেতুর, মান্দোইল, খেতুর, জগপুর, মালঞ্চ ইত্যাদি জনপদ ঘুরে ৩২টি দুষ্প্রাপ্য পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করেন।
সেই সমস্ত পুরাকীর্তি নিয়ে অনুসন্ধানী দল রাজশাহী ফিরলে প্রত্নবস্তগুলোর সংরক্ষণ এবং অবস্থান নিয়ে বিরাট সমস্যা দেখা দেয়, রাখালদাস বন্দোপাধ্যায় প্রস্তাব রাখেন উল্লেখযোগ্য সংগ্রহগুলো তিনি কোলকাতা জাদুঘরের জন্য নিয়ে যাবেন, একই ভাবে রামকমল সিংহও কিছু নিদর্শন পরিষদের সংগ্রহশালার জন্য নিয়ে যাবার প্রস্তাব উত্থাপন করেন। কিন্তু রমাপ্রসাদচন্দ্র এই ব্যাপারে জোরালো প্রতিবাদ উপস্থাপন করেন এবং অন্যান্যদের সাথে মতামত বিনিময় করে কুমার শরৎকুমার রায় এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে সংগৃহীত পুরাকীর্তি কোথাও যেতে দেয়া হবে না, বরং এগুলো দিয়ে রাজশাহীতেই একটি পূর্ণাঙ্গ অনুসন্ধান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা হবে, যার কাজ হবে বরেন্দ্র অঞ্চলের প্রাচীন ইতিহাসে আলোকপাত করা।
সেই যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, আজ পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে কুমার শরৎকুমার রায়ের স্বপ্ন। প্রথম দিকে প্রশিক্ষণবিহীন কয়েকজন উৎসাহী কর্মী দিয়ে কিভাবে এই বিপুল কর্মযজ্ঞ চালাবেন তা নিয়ে ব্যপক চিন্তায় পড়লেও তার সামনে উদাহরণ হিসেবে ছিলেন ডাঃ বুকানন হ্যামিল্টন, জেনারেল কানিংহামসহ অন্যান্য অতীতসন্ধানীরা, যারা সকল বাঁধা পায়ে দলেছিলেন কেবল নিষ্ঠা এবং জ্ঞানের প্রতি ভালবাসা থেকে। এক ভাষণে কুমার শরৎকুমার রায় বলেছিলেন- সত্য আবিস্কার এবং তাহার দ্বারা মনুষ্য জাতির জ্ঞানভাণ্ডার পরিপুষ্ট করাই অনুসন্ধান সমিতির মুখ্য উদ্দেশ্য। জ্ঞান ভাণ্ডারে পুষ্ট না হইলে মনুষ্য জাতি উন্নতির পথে অগ্রসর হইতে পারে না। সুতরাং মনুষ্য সমাজকে উন্নত করিতে হইলে অনুসন্ধান সমিতির বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রহিয়াছে। ----- তৎকালীন বাংলাদেশের কৃষ্টির প্রভাব যে ভারতের বাহিরে বর্তমান নেপালে, তিব্বতে, চীনে, জাপানে, কম্বোডিয়ায় এমনকি সুমাত্রা জাভা বালি প্রভৃতি সুদূর দ্বীপপুঞ্জেও বিস্তার লাভে সমর্থ হইয়াছিল ইহা সর্বজনবিদিত। তারপর বাঙ্গালীর অধঃপতনের কাহিনীও ভাবিবার বিষয়। যে জাতি একসময়ে এতদূর উন্নতির পথে অগ্রসর হইয়াছিল, সে জাতি ক্রমে অবনতির এত নিম্নস্তরে নামিয়া গেল কেন? --- আমাদিগকে অনুসন্ধান করিয়া এই সকল তথ্যের প্রকৃত কারণ জানিয়ে হইবে এবং কারণ জানিয়া তাহার সাহায্যে আমাদের জাতীয় জীবনকে গড়িয়া তুলিতে হইবে। নচেৎ আমরা যতই স্বায়ত্তশাসন লাভ করি না কেন উনা বজায় রাখিতে পারিব না। আমাদের অপেক্ষা অধিক বুদ্ধিমান, অধিক বলবান ও যোগ্যতর জাতি আসিলে পুনরায় আমাদিগকে তাহাদের পদানত হইতে হইবে।
উল্লেখ বরেন্দ্র অনুসন্ধান কমিটি ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দে রেজিস্ট্রিভুক্ত হয়, এবং সমিতির সকল আর্থিক দায়ভার প্রথম দিকের বছরগুলোতে কুমার শরৎকুমার রায় নিজেই বহন করেন। পরবর্তীতে অগ্রজ রাজা প্রমদা নাথ রায়ের প্রদত্ত জমিতে নিজেই সেই আমলের তেষট্টি হাজার টাকা ব্যয় করে গৌড়ের প্রাচীন স্থাপত্যশৈলীর অনুকরণে অপূর্ব সুষমামণ্ডিত ভবন নির্মাণ করেন, জানা যায় এই ভবনের নকশাকারও ছিলেন স্বয়ং কুমার শরৎকুমার রায়। ১৯১৬ সালের ১৩ নভেম্বর সেই সংগ্রহশালা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল এবং ৩ বছর বাদে ১৯১৯ সালের ২৭ নভেম্বর এ দ্বারোদঘাটন করেন বাংলার আরেক গভর্নর লর্ড রোনাল্ডসে।
কুমার শরৎকুমার রায়কে কোথাও রাজা বলে উল্লেখ করা হয় না, উনি আসলে রাজকুমারই ছিলেন ( ব্যক্তিগত ভাবে রাজা-রানী, রাজকীয় জিনিস আমি ব্যপক অপছন্দ করি। রাজার ছেলেই রাজা হবে এমন মূর্খতা আমাদের অনেক ক্ষতিসাধন করেছে এবং করবে), কিন্তু তিনি ছিলেন গণমানুষের রাজা, মনের রাজা। তাকে অধিকাংশ প্রজাই বেশ পছন্দ করতেন, যদিও পুরাতত্ত্ব বিষয়ে অধিক উৎসাহের কারণে তাকে পাগলা বলতেও দ্বিধা করতেন না। জানা যায়, অনেক সময়েই মজা পুকুর খননের সময় মূর্তির সন্ধান পাওয়া গেলে হাতি পাঠিয়ে সেই মূর্তি জাদুঘরে আনার ব্যবস্থা করতেন কুমার শরৎকুমার রায়, এবং মানুষ বলত- দ্যাখ পাগলা রাজার কীর্তি, রাজারা বাইজী নাচায় আর উনি ভাঙ্গা মূর্তি নিয়ে যান হাতি দিয়া!
সংগ্রহশালা স্থাপনের পরপরই ভারতবর্ষের নানা স্থান থেকে ব্যক্তিগত পরিচয়ের কারণে বেশ কিছু দুর্লভ নিদর্শন কুমার শরৎকুমার রায়ের কাছে আসে উপহার হিসেবে, এখনো বরেন্দ্র জাদুঘরে গেলে সেই উপহারগুলোর নামফলকে শরৎকুমারের নামসহ দাতার নাম দেখতে পারবেন।
সাহিত্যের প্রতি প্রবল অনুরাগের পরিচয় সারা জীবনই দিয়েছেন তিনি, যদিও নিজে লিখেছেন খুব কম, প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা মাত্র ৬ খানা- ভারতীয় সাধক, তৌলিক জাতি, রবীন্দ্রস্মৃতি, বুদ্ধের জীবন ও বাণী, মোহন লাল এবং শিবাজী ও মাহাট্টজাতি। যদিও সে যুগের নানা পত্রপত্রিকায় তার রচন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। রবি ঠাকুরের সাথে তার প্রগাঢ় বন্ধুত্ব ছিল, শুধু তাই নয় বিশ্বখ্যাত বন্ধুর দ্বারা এতটাই প্রভাবিত ছিলেন কুমার শরৎকুমার রায় যে নিজপুত্র বিধুধনাথকে কৃষি বিজ্ঞানে স্নাতক করতে আমেরিকার ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলেন ( রবীন্দ্রনাথ যেভাবে পাঠিয়েছিলেন রথীন্দ্রনাথকে),
নিজের খামারে উৎপাদিত আখের সুষ্ঠু ব্যবহারের লক্ষে প্রতিষ্ঠা করেন চিনিকল, যা ছিল উত্তরবঙ্গের প্রথম চিনিকল। এছাড়া কৃষি শিক্ষা প্রসারের জন্য অগ্রজের নামে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বসন্তকুমার এগ্রিকালচারাল ইন্সটিটিউট।
ব্যক্তিগত জীবনে অন্ধবিশ্বাস মুক্ত মানুষ ছিলেন কুমার শরৎকুমার রায়, তার রান্নাবান্নার কাজে নিয়োজিত প্রায় সকল কর্মচারীই ছিলেন মুসলমান সম্প্রদায়ের লোক, এমনকি বুধনরুহি দাস নামের একজন চর্মকারকে অন্যতম পাচক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে তিনি হিন্দু শাস্ত্রের বর্ণপ্রথার প্রতি চরম প্রতিবাদ উত্থাপন করেছিলেন। যারা উনার তিলি বা তৌলিক সম্প্রদায়ে অন্তর্ভুক্ত হবার কারণে অনেক বর্ণহিন্দুই তাকে বাঁকা চোখে দেখত।
বিদ্যোৎসাহী কুমার শরৎকুমার রায় নিরন্তর সাধনা ছিল জ্ঞান অন্বেষণ, একবার তাকে প্রশ্ন কর হয়েছিল কেমন করে একাকী তিনি রাজপ্রাসাদে রাত্রিযাপন করেন ( অনেকপূর্বেই তার স্ত্রী বিয়োগ ঘটেছে, পুত্র-কন্যারা নানা শহরে থাকেন), হাসি মুখে তিনি বলেছিলেন- এটা ভুল ধারণা, আমি একারাত্রি যাপন করি না, আমার সঙ্গে তখন থাকেন বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র, শেক্সপীয়ার, ওয়ার্ডসওয়ার্থ, বায়রন, শেলী, কীটস। আমি তাদের সান্নিধ্যেই রাত কাটাই।
হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৪৬ সালের ১০ এপ্রিল ( ২৯ চৈত্র, ১৩৫২) তার জীবনাবসান ঘটে।
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের দেশটার রাজা ভাগ্য না নেতা ভাগ্য বড়ই খারাপ, সবাই এসে চালিয়েছিলে শোষণ আর বজ্রকঠিন শাসন, করেছে সীমাহীন লুটপাট। এদের মাঝে এক উজ্জল ব্যতিক্রম কুমার শরৎকুমার রায়। মহাসমুদ্রের মত উম্মুক্ত হৃদয়ের অধিকারী মানুষটি নিজের নামের কিছুই করে যান নি রাজশাহী শহরে, বা বরেন্দ্র অঞ্চলে, তার নামে কেন অন্তত একটি মূল সড়ক বা গ্রন্থাগারের নামকরণ করা হয় নি সেটা শুধুই বিস্ময় জাগায়, বর্তমান সিটি কর্পোরেশন কতৃপক্ষ কি দায়িত্ব নেবেন এই সূর্য সন্তানের নাম কোথাও খোদাই করে এবং তার স্বপ্ন কিছুটা বাস্তবায়ন করে তার স্মৃতির প্রতি কৃতজ্ঞতা স্বীকারের?
(কুমার শরৎকুমার রায়ের উপর লেখার ইচ্ছে ছিল অনেক বছর ধরেই, কিন্তু পর্যাপ্ত কোন তথ্য ছিল না, অবশেষে ফোকলোরবিদ উদয় শঙ্কর বিশ্বাসের একাধিক লেখা এবং বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত সাইফুদ্দীন চৌধুরীর কুমার শরৎকুমার রায় হস্তগত হাবার ফলে কিছু তথ্য পাই বটে কিন্তু তা আসলেই অপ্রতুল। তার স্মৃতিধন্য বরেন্দ্র জাদুঘরে একাধিকবার যেয়ে কেবল জানতে পেরেছি উনার নাতি বর্তমানে লন্ডনে থাকেন। আশা করি, কেউ না কেউ একদিন এই মহামানবের জীবন নিয়ে পূর্ণাঙ্গ জীবনচরিত লেখায় হাত দিবেন, প্রথম ছবিটা নেট থেকে সংগ্রহিত, রাজার অন্যকোন ছবি কারো সন্ধানে থাকলে অনুগ্রহ করে যোগাযোগ করবেন। )
প্রিয় মুখ সিরিজের বাকী লেখাগুলো এইখানে
মন্তব্য
ভাল লাগল। এ রকম লেখা আরো চাই।
facebook
একটা মানুষের কয়টা গুণ থাকতে পারে বলুন তো। একাধারে ভূপর্যটক, অবিযাত্রী, পর্বতারোহী, বার্ডওয়াচার, আলোকচিত্রি, ইতিহাস সণ্ধানী, পাঠক, লেখক, প্রবাসী, সেবা-রহস্য প্রেমী--আর কিছু বাকি থাকে কী? কীভাবে পারেন?
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
কার কথা হচচে!
facebook
তারেক অণু নামে এক অতি মানব (দানব) আছে এই গ্রহে---
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
ছি ছি, ধুর মিয়া কিসের মাঝে কী!
আর হৈ মিয়া, আমি প্রবাসী না, আপাতত বাংলার বাহিরে আছি, যে কোন সময় চলে আসব। ( প্রবাসী হওয়াটা গুণ বলে মনে হবার কারণ! )
facebook
তারেক অনুরে দেইখা ভাল লাগতাছে। পোষ্ট সুন্দর হইছে, এক কথায় দারুন।
ধইন্যাপাতা ফর দ্যা পোষ্ট এন্ড শুভেচ্ছা।
দিলাম আপনারেও
facebook
দারুণ লিখেছিস। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। ধন্যবাদ রে!
আরো লেখা দরকার
facebook
দারুণ লিখেছিস। মুগ্ধ হয়ে পড়লাম। ধন্যবাদ রে!
facebook
অপূর্ব
facebook
ভালো লাগলো লেখাটা।
এর আগে একবার এই বরেন্দ্র জাদুঘরের কথা শুনেছিলাম। শুনে অবাক হয়েছিলাম খুব, সেই সেকালে যখন জমিদাররা বাইনাচ বেড়ালের বিয়ে বুলবুলির লড়াই এইসব ব্যক্তিগত বিলাসিতাতেই টাকা ওড়াতেন, সেই সময়ে এরকম একজন মানুষ যিনি কিনা মানুষের জ্ঞান আর অনুসন্ধিৎসাকে গুরুত্ব দিয়ে এত সিরিয়াসলি ভালো সব কাজ করেছেন, এইটা শুনে থেকেই এই সংগ্রহশালাটি দেখার একটা ইচ্ছা মনে মনে আছে। এটা কি সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত? যেমন কিনা আমরা সরকারী জাদুঘর দেখতে যাই টিকিট কেটে? নাকি বিশেষ অনুমতি আনাতে হয়?
ভালো থাকবেন।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
টিকিট লাগে না, উন্মুক্ত সবার জন্য
facebook
কত কিছু জানা বাকি রয়ে গেল।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
কত অজানারে জানাইলে তুমি,
কত ঘরে দিলে ঠাঁই- দূরকে করিলে নিকট, বন্ধু,
পরকে করিলে ভাই।
facebook
খুব ভাল লাগল লেখাটা। এরকম মানুষ জন্মেছিলেন বলেই পৃথিবীটা এখন ও বাস যোগ্য আছে ।
আপনি কী এখন বাংলাদেশেই স্থায়ী হলেন?
আপাতত বাহিরে আছি, যে কোন সময় ফিরব
facebook
শিশুকালে আমার একটা বড়ো সময় কেটেছে এই জাদুঘরে। প্রায় ই ইস্কুল পালিয়ে টিফিন পিরিয়ডে চলে যেতাম সেখান, ঘরময় ছড়ানো ইতিহাস দেখতাম বিপুল বিস্ময় নিয়ে। এসবকিছু কেন যেন আমাকে শিশুকাল থেকেই পুরনো প্রেয়সীর মত টানত।
এতবার সেখানে গেছি কিন্তু কুমার শরৎকুমার রায় এর কথা জেনেছি অনেক পরে। তাও সেই জানাটা কেবল নামেই সীমাবদ্ধ ছিল। উপরি পাওয়া হচ্ছে এক্স কলেজিয়েট হিসেবে, এধরনের মানুষদের কে যখন দেখি 'কলেজিয়েট' তখন বুকখানা কয়েক হাত ফুলে যায়। আমার সৌভাগ্য, যে বিদ্যাপীঠে এরকম মানুষেরা ছিলেন সে বিদ্যাপীঠ কে আমি আপন করে পেয়েছিলাম।
এই চমৎকার লেখাটার জন্য ধন্যবাদ অনুদা।
বাহ,, চমৎকার স্মৃতিচারণ করলেন=
facebook
দারুণ। মিউজিয়ামটা কখনও লুটপাট চুরিচামারি হয়ে যায়নি তো?
নাহ, এখন ব্যপক সংস্কার চলছে, তবে মাঝখানে ফ্রান্সের গিমে জাদুঘরে প্রদর্শনীর জন্য মূর্তি নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনেক ঘাপলা হয়েছে, বিমান বন্দরেও একাধিক মূর্তি খোয়া গেছিল যা পরে ভাঙ্গা অবস্থায় পাওয়া গেছে
facebook
অনেক অনেক অনেক ভাল লাগলো। রাজশাহীর মানুষ হিসেবে এই লেখাটা অনুভব করা যায়।
এই মিউজিয়াম বাংলাদেশের ভূ-খন্ডের প্রথম মিউজিয়াম। ফাউন্ডারদের বাকি একজন সেই বিখ্যাত অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ! সিরাজুদ্দৌলার ওপর গবেষনা করেছিলেন (আমার কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র)। বাংলাদেশের একমাত্র এই মিউজিয়ামেই সিন্ধু সভ্যতার পুরাকীর্তি আছে।
আপনি যে বসন্তকুমার এগ্রিকালচার ইন্সটিটিউটের কথা বললেন সেটা তার মৃত্যুর পর আর ৪৭ সালের পটভূমির পর দূর্বল হয়ে গেছিলো। তাই পরে বিলুপ্ত হয়ে যায় (সংস্কৃত কলেজের সাথে)। রাজশাহী অ্যাসোসিয়েশনের সংস্কৃতি পত্রিকায় এই ব্যাপারে মানে রাজার ব্যাপারে ইনফো পাবেন (আমার কাছে আছে দু'টা)।
দুঃখের ব্যাপার এদের নাম শহরের কোথায় নেই ! এমনকি পাকিস্তানি স্টাইলে প্রমথনাথ স্কুলকে এখনও বলা হয় পিএন স্কুল। (এরকমটা ৪৭ পরবর্তি পাকিস্তানিকরণ ছিল,হিন্দুদের নাম নিশানা মিটিয়ে ফেলার একটা প্রসেস,দিনাজপুরের ঐতিহ্যবাহী একটি কলেজ হলো সুরেন্দ্রনাথ কলেজ এখনও যাকে এসএন কলেজ বলা হয়!)
৪৭ সালে যেভাবে বাংলায় জমিদারী রদ করা হয় তার প্রভার অনেক বিস্তর। আমাদের সংস্কৃতির ধারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।পুঠিয়া বা দিঘাপতিয়ার রাজপরিবারের কথাই চিন্তা করেন। কত কিছু এরা করেছে কিন্তু এদের কারও কিছুই এখন মানুষ জানে না!
তবে শেষ কথা বলি,যারা দিঘাপতিয়ার রাজবাড়ি যান নাই তারা ঘুইরা আইসেন,এমনি এমনি এটা উত্তরা গণভবন হয় নাই,এটার আভিজাত্য বাংলাদেশের যেকোন রাজবাড়িকে হার মানায়
facebook
খুব ভালো।
রাত-প্রহরী
facebook
নতুন মন্তব্য করুন