আন্দেজের বুকে ঝড় উঠেছে, দূরের সারি সারি সফেদ শিখরগুলো মেঘের সাথে দুতিয়ালি করে সজারুর কাঁটার মত সাদা-কালো হয়ে মুচকি হাসছে আমাদের দিকে চেয়ে, আর পাঠিয়ে দিচ্ছে রাশি রাশি জল ভরা মেঘদূত, যারা কুয়াশার মসলিন চাদরের মত ঘিরে ধরেছে আমাদের লক্কড়ঝক্কড় একরত্তি গাড়ীতে, যার আবার একাধিক জানালার কাঁচ ভাঙ্গা। গাড়ীর অজানা কোন যন্তর কাজ সুচারুভাবে নিজের অকর্মণ্যতা প্রকাশ করে যেতে থাকায় গাড়ীর উইন্ডশিল্ডে আবছা কুয়াশা মত জমতে থাকল নিয়মিত গতিতে, আর গাড়ীর চালক পাতলা মলিন চিটচিটে এক ন্যাকড়া দিয়ে কাঁচ খানিকটা পরিষ্কারের চেষ্টা চালাতে থাকলেন। এর মাঝেই বিদ্যুৎ ঝলকের মত রাস্তার পাশে ঝড়ো বাতাসের নড়তে থাকা এক সাইনবোর্ডে চোখ পড়ল ক্ষণিকের তরে, মন চঞ্চল হয়ে উঠল অবিশ্বাসে, অ্যাড্রিনালিন হরমোনের স্রোত বইল দেহের শিরা-উপশিরায়, আলো-আঁধারের ফাঁকে ঠিক চোখের বর্শা যেয়ে বিধল সেই ল্যাতিন হরফগুলোর উপর, সেখানে লেখা- তিহুয়ানাকো, দূরত্ব- ৩ কিমি!
তিহুয়ানাকো মানে মৃত চাঁদের শহর, বলিভিয়ায় অবস্থিত এই প্রাচীন শহরেই আছে এক অখণ্ড পাথর দিয়ে মানুষের তৈরি সবচেয়ে বড় পাথরের দরজা, যার নির্মাণ রহস্যভেদ হয়নি আজও, কোথায় জেনেছিলাম এই নিয়ে? কেন- রহস্যপত্রিকার পাতায়!
শুধু তিহুয়ানাকো কেন, জীবন এখন পর্যন্ত রঙ ঝলমলে, উৎসাহ জাগানিয়া, রক্ত টগবগ করা জিনিস এবং মানুষগুলো সম্পর্কের জানতে পেরেছি তার বলা চলে নব্বই শতাংশই প্রিয় রহস্যপত্রিকার কল্যাণে। প্রথম এর সন্ধান মিলেছিল বড় মামার টেবিলে, সেখানে জ্বলজ্বল করছিল রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি, সাথে ওয়েস্টার্ন লেখক শওকত হোসেনের সাক্ষাৎকার।
কৌতূহলভরে হাতে নিতেই আঁটকে গেলাম চলুন, খুঁজে আনি গুপ্তধন! নামের এক ফিচারে, দক্ষিণ আমেরিকার হারিয়ে যাওয়া হীরক উপত্যকা, কলম্বাসের নৌকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের জলদস্যুদের গুপ্তধন, সোনার তালের গল্প, সেই সাথে মাচু পিচুর ছবি, বুঝি আর না বুঝি, দেহমনে এক অদ্ভুত রোমাঞ্চে ছেয়ে গেল! ভাবলাম এই স্কুলে যাবার একঘেয়ে দিন বুঝি শেষ হয়ে এল, ঐ যে দূরের আলোকময় জীবন, ছোটাছুটি, গুপ্তধন, অজানার হাতছানিতে পূর্ণ, আর রহস্যপত্রিকা হয়ে দাঁড়াল সেই জীবনের পথে বাতিঘর।
পুরনো বইয়ের দোকানে চষে ফেলেছি সবসময় রহস্য পত্রিকার খোঁজে, নতুন সংখ্যা কেনার সামর্থ্য হত না রিকশা ভাড়া আর টিফিন বাঁচিয়ে কেনা টাকায়, ইতিমধ্যে তিন গোয়েন্দা আর কিশোর ক্ল্যাসিক কেনা হয়ে গেছে যে ! এখন ভরসা পুরনো বই-ই। তবে কদিন পরই টের পেয়ে গেলাম রহস্য পত্রিকার প্রথম দিকের সংখ্যাগুলো, মানে প্রথম কয়েক বছরের গুলো গুণগত মানের দিক থেকে সেরা, একেবারে সোনার পাত দিয়ে বাঁধিয়ে রাখার মত, সেই হিসেবে পরের বেশ কিছুতে সংখ্যাতে ভাল গল্পের অভাব, আর পাঠকদের অভিজ্ঞতা বর্ণনার বন্যাতে ভেসে গেছে পত্রিকার পূর্বসুনাম আর আকর্ষণ, যে দুর্নামটি এখনো চলছে রহস্যপত্রিকার নামে , কিন্তু প্রকাশ হচ্ছে নিয়মিতই, প্রতি ইংরেজি মাসের প্রথমে। এখনো দেশে গেলেই পুরনো বইয়ের দোকানে চিরুনি অভিযান চালানো হয় সেই স্বর্ণসংখ্যাগুলোর জন্য, নীলক্ষেতের এক মামা এবার বলছিলেন তার কাছে কিছু পুরনো সংখ্যা আছে কিন্তু ২০০৮ সালের, খানিকতে বিরক্ত হয়েই বলেছিলাম, ধুর মামা,আমি খুঁজি ১৯৭১ সালের আর তা না হলেও ১৯৮৮র আগের,আপনি আসছেন সেদিনের ডিম লইয়া!
সেবা প্রকাশনীর কর্ণধার কাজী আনোয়ার হোসেনের সাথে সামনাসামনি সাক্ষাতে জানতে পারলাম ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরে যাত্রা শুরু করা রহস্য পত্রিকার সম্ভবত ৪টি সংখ্যা বেরিয়েছিল একটানা, স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় যে বিরতি তৈরি হয় তা গিয়ে ঠেকে এক যুগেরও বেশী সময়ে, অবশেষে ১৯৮৪র নভেম্বর থেকে নিয়মিত বাহির হওয়া শুরু করে রহস্য পত্রিকা, যে প্রকাশ আজও অব্যাহত রয়েছে।
তবে কাজীদা প্রথমেই বলেছিলেন রহস্য পত্রিকা তার একার ব্রেনচাইল্ড না, সেখানে অনেকেই যুক্ত ছিলেন, অনেকেই পরে অন্য পেশাতে জড়িয়ে গেছেন, সেই জায়গায় নতুন মুখেরা এসেছে, পত্রিকা এগিয়ে চলেছে সবার অবদানের ফলেই। একসময় চিত্রকর হাশেম খান, সাংবাদিক রাহাত খান , শাহরিয়ার কবীর খুব যুক্ত ছিলেন পত্রিকাটির সাথে। কাজীদা সেই দিনগুলোর কথা রোমন্থন করে হাসতে হাসতে বললেন- শাহরিয়ার কবীর লেখা আদায় করার ব্যাপারে ছিল খুব কড়া, আমাকেই একদম দিনক্ষণ দিয়ে বলত এই দিনের মধ্যে এই লেখাগুলো দিতেই হবে।
( একটু অপেক্ষা করুন, কাজীদার সাথে আড্ডার বর্ণনা আসিতেছে)
হ্যাঁ, ১৯৮৪র নভেম্বরে নবযাত্রা শুরু হয় দেশনন্দিত পত্রিকাটির, এরপর কেবল মন জয় করারই গল্প। খুব মনে পড়ে ১৯৮৫র ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় ছাপানো প্রেমের ভূত গল্পটি, কিভাবে এক চীনে ভূতের পাল্লায় প্রেম শিখতে বাধ্য হয়েছিল ল্যাং নামের যুবক, ঐ বছরের জুন মাসের সংখ্যাটি ছিল বিশেষ বিশেষ প্রিয়, সেখানে স্বয়ং কাজী দা রূপান্তরিত এক অনন্যসাধারণ গল্প ছিল জালিয়াত নামে, বাস্তবতা, ইতিহাস এবং কল্পনার মিশেল দিয়ে এমন এক জাদুকরী সম্মোহন তৈরি করেছিলেন তিনি যে এখনও মাঝে মাঝে পড়ার পর মনে হয় গল্প না, কোন সত্য ঘটনার বর্ণনা সেটি। আর ছিল কাজি মাহবুব হোসেনের লেখা চমৎকার ছন্দময় ওয়েস্টার্ন ছোট গল্প বেড়া।
বিশ্ব সাহিত্যের এমন অনেক মণি কাঞ্চনের সাথে পরিচয় ঘটেছে রহস্য পত্রিকার মাধ্যমেই- আগাথা ক্রিস্টির ফাঁদ, জ্যাক লন্ডনের এ পীস অফ স্টেক, হেমেন্দ্রকুমার রায়ের মরণখেলার খেলোয়াড়, হেমিংওয়ের কিলার, অ্যালান পো-র স্বর্ণকীট, মার্ডারস ইন দ্য রু মর্গ, জেরোম কে জেরোমের ত্রিরত্নের নৌবিহার, ফ্রেড জিপসনের ওল্ড ইয়েলার, নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ঝাউ বাংলোর রহস্য, মার্ক টোয়েনের লাইফ অন মিসিসিপি, বিপ্লবী চে গ্যেভারার শেষ দিনগুলি- আরও কত অগণিত নাম সেই কাতারে। দৌড়ের মত সাইন্স ফিকশন আর আছে কী সারা বিশ্বে, কিংবা বিজয় নামের রোবটকে নিয়ে রূপান্তরিত গল্প- শুধু জীবনের জন্য। কিন্তু এত কিছুর পরও রহস্য পত্রিকাকে আমি মূল কৃতিত্ব দিই আমাদের আট পৌরে জীবনের মাঝে একটা অলীক জানালা খুলে দেবার জন্য, যে জানালার বাহিরের জগতটাতে আমরা সবাই পিটারপ্যান হতে পারি, যা ফিরিয়ে নেয় আবার সোনালী কৈশোরে, নানা দেশের দুর্গম রহস্যের সমাধান করতে মন আঁকুপাঁকু করে, চাঁদকে দেখে চিন্তা করতে ভাল লাগে হয়ত এটা কোন গ্রহান্তরীদের অতিকায় যান।
গ্যালোপাগোসের জীববৈচিত্র, নাজকার রহস্যময় আঁকিবুঁকি, লক নেসের দানব, মাচু পিচুর নির্জনতা, ফারাওয়ের কাহিনী, সাহারার হাতছানি, আমাজনের দুর্গমতা, সুমেরু- কুমেরুর অভিযান, আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থাগার, এনগোরংগোরোর জ্বালামুখ, বাহামার গুপ্তধন, গ্রিনল্যান্ডের মেরুজ্যোতি, প্রিয় লেখক-অভিনেতা-গায়ক- গোয়েন্দা- অভিযাত্রীদের জীবন- সব, কী না জেনেছি পত্রিকাটির কল্যাণে! জীবনে যা নিয়ে মেতে রয়েছি, যা নিয়ে জানতে চেয়েছি তার প্রায় সবকিছুরই শুরু সেবার রহস্য পত্রিকা থেকে।
আর তাই-ই তো রহস্য পত্রিকা আর সেবার প্রতি কৃতজ্ঞতার অন্ত নেই।
( এই লেখাটি আমার এককালের প্রিয় গল্পলেখক এবং বর্তমানের প্রিয় গায়ক মাহবুব আজাদ( হিমু ভাই)-এর জন্য, রহস্য পত্রিকাতে বেশ নিয়মিতই তার লেখা এখন প্রকাশিত হচ্ছে।
সেবা প্রকাশনীর সহায়তাই এ পর্যন্ত প্রকাশিত প্রায় সকল রহস্য পত্রিকার মলাটের ছবি সংগ্রহ করতে সমর্থ হয়েছি কিছু দিন আগে, আপনার চাইলে ফেসবুকের এই অ্যালবামে গিয়ে সেই ছবিগুলো দেখে স্মৃতি রোমন্থন করতে পারেন, যদিও সব ছবি সেখানে দিতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে)
মন্তব্য
রহস্য পত্রিকা এখেনো পড়ি, এখনো তাতে লিখি। তবে আগের সেই রহস্য পত্রিকা কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। ধন্যবাদ অণুদা। চমৎকার পোস্টটার জন্য।
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
আগের মত নেই আর, সত্য, কিন্তু পুরনো গুলোই যে ভাল লাগে !
facebook
সেকথা আর বলতে, একেকটা গোল্ড মাইন যেন
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
facebook
রূপকুকথার আরেকখান পর্ব লেখায় হাত দিলাম, তার মাঝে এই জিনিস ... নাহ তারেকাণু লোক্টা আসলে ততো খ্রাপ্না।
রূপকুকথা লিখতে হবে, ুদুর ুদুর চইত্ত ন !
facebook
আমার দুর্ভাগ্য রহস্য পত্রিকা কখনো সেভাবে পড়া হয়ে ওঠেনি। চার পাঁচটা বোধয় পড়েছিলাম- কিন্তু কেন যে আকর্ষণ করেনি আমাকে তা এখন আর মনে নাই।
facebook
অসাধারণ লাগ্লোপড়তে!!! ইস কতো দিন যে রহস্য পত্রিকা পড়ি না! আমাদের হিমু ভাই যে লেখেন জানাই ছিলো না। অণু ভাইয়া কাজীদার সাথে আড্ডার সব খুঁটি নাটি জানতে চাই। এই লেখাটা জলদি দাও।
--------------------------------------------------------
আমি আকাশ থেকে টুপটাপ ঝরে পরা
আলোর আধুলি কুড়াচ্ছি,
নুড়ি-পাথরের স্বপ্নে বিভোর নদীতে
পা-ডোবানো কিশোরের বিকেলকে সাক্ষী রেখে
একগুচ্ছ লাল কলাবতী ফুল নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছি
আসিতেছে ( আমার লেখাও আছে এই বছরের রহস্য পত্রিকায়)
facebook
খাইছে, এই বছরে আর ছাপা হবে কিনা বলা যায় না। আমার ২০০৭ সালে পাঠানে একটা গল্প ২০১০ সালে ছাপানে হয়েছিল পাক্কা তিন বছর ১ মাস পরে। এখন যেগুলো ছাপা হচ্ছে ওগুলো গত বছর জমা দেয়া
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
facebook
কোথায় আসিতেছে? সচলে না রপতে? সেই যে কবে থেকে এই 'আসিতেছে...'-টা মুলার মত নাকের সামনে ঝুলায়ে রাখছেন, এখন আমার গাইতে ইচ্ছা করছে - আসি আসি বলে বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে....♫♪
****************************************
facebook
আমার কাছে পুরানো রহস্য পত্রিকা, বিচিত্রা, রোববারের বিশাল কালেকশন ছিল। তারপর গাধার মতো একদিন বিক্রি করে দেই; বাসাটা আমার বড় ছোট তাই পরিবারের লোকজন এগুলো বিদায় করার জন্য হইচই করত। এখন বুঝি স্বর্ণখনি জলের দামে বিকিয়ে দিয়েছি।
facebook
ছবিগুলো কি তন্ময় ভাইয়ার বাসায় তোলা?
ক্লান্ত তীর্থ
রহস্য পত্রিকাগুলো অধিকাংশই সেবাতে তোলা
facebook
ধন্যবাদ ভাইয়া,আপনি রাজশাহীতে আসলে এবার দেখা করবোই!
ক্লান্ত তীর্থ
facebook
রহস্য পত্রিকা এখেনো মাঝেমাঝে পড়ি!
নাইস পোস্ট
facebook
পুরান দিন মনে করায় দিলেন গো ভাইডি!
আহা!!
সুবোধ অবোধ
facebook
facebook
রহস্য পত্রিকা । কি মনে করিয়ে দিলেন ! প্রতিবারই বাসায় হকার যখন রহস্য পত্রিকা দিয়ে যেত আমাদের দুই ভাইবোনের হাতাহাতি শুরু হত কে আগে পড়বে। প্রতিটা সংখ্যা হাতে পেয়েছি আর নাওয়া খাওয়া ভুলে ডুবে থেকেছি। অনেকদিন রহস্য পত্রিকা পড়া হয় না। আজ আপনার লেখাটা পড়ে পুরনো গুলো বের করে পড়তে ইচ্ছে হল।
পুরনো কতগুলো আছে?
facebook
অনেকদিন রহস্য পত্রিকা পড়া হয়না - হিমু ভাই এর লেখা বের হয়?! আবার সাবস্ক্রাইবার হয়ে যাচ্ছি তাহলে।
হ , আমারও নিয়মিত হবে আশা করি
facebook
বাহ! তাইলে তো ডাবল লাভ - গুড নিউজ।
facebook
অণুদা, অনুরোধ আপনি নিয়মিত রহস্যপত্রিকায় লেখেন, আমার বিশ্বাস তাতে ফিচারি বিভাগটা পুর্জীবন লাভ করবে
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
facebook
ভাইয়া, কি যে স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন ! আমার সবচে প্রিয় পত্রিকা ছিল রহস্যপত্রিকা আর কিশোরপত্রিকা । কিশোরপত্রিকা বন্ধ হবার পর বহুদিন ব্যাপারটা মেনে নিতে পারিনাই । ভাবতাম আবার প্রকাশ হবে অবশ্যই হবে । আর রহস্যপত্রিকার স্বর্নালী সময়টাতে আমার জন্মই হয়নাই । আমার বাবার আর ফুপার কাছে বিশাল সংগ্রহ ছিল সেইগুলার টান কখনো ভুলতে পারবনা । এখনও আছে কিছু পুরানো সংখ্যা । আমি একটু বড় হবার পর তো নিয়মিতই সংগ্রহ করেছি । এখন সেসব যক্ষের ধনের মত আগলে রাখি । সেবার বই আমার জগৎটাকে তৈরী করে দিয়েছিল । কিন্তু এখন কেন যেন সেবার বইগুলো আগের মত হয়না । গত কয়েকবছরে প্রকাশিত ক্লাসিক বইয়ের অনুবাদগুলো পড়ে হতাশ । অনুবাদ না বলে সারমর্ম নাম দেয়া উচিৎ ছিল । আপনার দেয়া প্রচ্ছদগুলো দেখে ভয়ানক লোভ হচ্ছে । স্ক্যান করে কিছু পুরনো সংখ্যা কি সবার সাথে শেয়ার করা যায় ?
আমার সবচে প্রিয় পত্রিকা ছিল রহস্যপত্রিকা আর কিশোরপত্রিকা । কিশোরপত্রিকা বন্ধ হবার পর বহুদিন ব্যাপারটা মেনে নিতে পারিনাই । আমারও।
স্ক্যান করে কিছু পুরনো সংখ্যার বিষয়ে সেবার সাথে কথা বলা দরকার
facebook
দারুণ।
১৯৭০ সালে বের হওয়া রহস্য পত্রিকার চারটি সংখ্যা আমরা কয়েক বন্ধু মিলে জোগাড় করেছিলাম। ওইগুলো পড়ার পরে ১৯৮৪ সালে নতুন রহস্য পত্রিকাটা একটু পানসেই লেগেছিল। তবে রহস্য পত্রিকা আমিও পড়তাম। খুব দীর্ঘদিন পড়িনি যদিও।
আমরা দুই বন্ধু সেবার পুরানো রহস্য পত্রিকা আর সেবা রহস্য সিরিজ বের করার জন্য রীতিমতো ছোটাছুটি করতাম। নীলক্ষেতে পুরানো বইয়ের দোকান অথবা এর ওর বাসা, হাতে-পায়ে ধরে ধার করে আনা, মাঝে মাঝে ওই সব ঘটনা আমার গত জন্মের স্মৃতি বলে মনে হয়।
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
facebook
ওয়াও ! ভাইয়া সেই ৪টা সংখ্যা কি আছে এখনো আপনার কাছে ?
নাহ ভাই ওইগুলো আমাদের ছিল না - হাতে-পায়ে ধার করে আনা।
ওই সংখ্যাগুলো সেবা প্রকাশনী কি রিপ্রিন্ট করেছে কখনো?
________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...
না, করাতে পারলে ভালই হবে
facebook
পুরনো দিনের কথা মনে করিয়ে দিলেন।
আমার বুকসেলফ-এ খুঁজলে মনে হয় আমিও রহস্য পত্রিকার কিছু সংখ্যা পেয়ে যাবো।
সিরাজুল লিটন
facebook
আহা, রহস্যপত্রিকা।
আমার তো এমনিতেই হরর গল্পের প্রতি অন্যরকম টান।
আগে খুব নিয়মিত পড়া হত, পুরান সংখ্যাগুলো কখনও সেবা কখনও নীলক্ষেত থেকে কিনে পড়েছি।
এখন তেমন নিয়মিত পড়া হয়না তবে রহস্যপত্রিকার টান কখনও অগ্রাহ্য করা সম্ভব না।
__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---
রহস্যপত্রিকার টান কখনও অগ্রাহ্য করা সম্ভব না।
facebook
কিশোর পত্রিকা বেশি ভালো লাগতো। লেখা
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
কিশোর পত্রিকা নিয়ে লেখা দেন! নাকি আমিই দিমু
facebook
আমার জীবনের প্রথম আয় এসেছিল কিশোরপত্রিকা থেকে।
৭৫ টাকা পেয়েছিলাম [/b]গোয়েন্দা ঝান্ডু[b] কমিকস এঁকে।
আহা রে ! দিনগুলি---
আপনার কমিকস আমার খুবই প্রিয় ছিল! এখন আঁকেন না আর?
facebook
আহা! অনেকদিন আগের কথা মনে পরে গেল! আমি প্রথম এই পত্রিকাতে লিখে সম্মানী পেয়েছিলাম রে ভাই। মহিউদ্দিন ভাই লাজুক হেসে বলতেন 'অতি সামান্য কিছু আছে এখানে। এইই রাখেন।' এখনও নামটা মনে আছে দেখে নিজেই অবাক হচ্ছি। দুইবার কাভার স্টোরীও করেছিলাম যদ্দুর মনে পরে।
ধূর মিয়া কত্ত স্মৃতি যে মনে পরে গেল! হুমমমম ,,,,
_________________
ঝাউবনে লুকোনো যায় না
সেইগুলা নিয়ে লেখা দেন!
facebook
সেই দ্বিতীয় শ্রেণীতে থাকতে প্রথম রহস্যপত্রিকা পড়ি। মানুষ মামাবাড়ি যায় আম-কাঠাল, পিঠা-পুলি খাওয়ার জন্য। আর আমি যেতাম রহস্যপত্রিকা পড়ার জন্য। আহা, নিজেকে আজ হঠাৎ অনেক বয়স্ক মনে হচ্ছে
স্বপ্নহারা মানব
facebook
সেবার বইয়ের মান নিয়ে বর্তমানে একটা যে নেতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠছে সেটা অনেকটাই রিকভার করা সম্ভব পুরনো ভাল বইগুলোকে রিপ্রিন্ট করে। সেবা নতুন প্রজন্মের পাঠক হারাচ্ছে ভাল বইয়ের অভাবে। কিন্তু এতো বড় রত্নখনি পুরো দুই বাংলা মিলে সেবা ছাড়া আর কার কাছে আছে? শুধু রত্নগুলো পোড়োবাড়িটার ধ্বংসাবশেষের নিচে চাপা পড়ে গিয়েছে। প্রিয় সেবা, নব্বইয়ের পর যাদের জন্ম তারা কেন বঞ্চিত হবে কেবল আরও কয়েকটা বছর আগে জন্মাতে না পারার কারণে?
--সাইফুজ জামান
facebook
ঠিক !
কিশোরপত্রিকা সম্পর্কে আমার বড় রকমের অভিযোগ আছে।
আমাদের চোখের সামনে এই পত্রিকাকে হাতে ধরে মেরে ফেলা হয়েছিল।
শেষের দশ-বারো সংখ্যায় দায়সাড়া গোছের সম্পাদনা আর নতুন ভাবনার অভাব
পত্রিকাটিকে কুড়ে কুড়ে খেয়েছে। নিয়মিত পাঠক যারা ছিলেন
তাঁরা খুব অবাক হয়ে গিয়েছিলেন সৃজনশীলতার অভাব আর এই ভগ্ন দশা দেখে।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন