i am Borat. I love Sex.
কেপ টাউনকে খুব মনে পড়ে, তিলোত্তমা কেপ টাউন সমগ্র আফ্রিকার সবচেয়ে নয়নাভিরাম শহরতো বটেই, সারা বিশ্বের হলেও অবাক হবার কিছু নেই। ভারত এবং অতলান্তিক দু, দুটো মহাসাগর তার পা চুমে যাচ্ছে অবিরত, শহরের যেখানে শেষে সেখানেই আকাশ পর্যন্ত ছুঁয়ে স্তব্ধ হয়ে আছে টেবিল মাউন্টেন, অদূরের সমুদ্রে রোবেন দ্বীপ, পাশেই পেঙ্গুইনের দল ইতিউতি করে বেড়াচ্ছে, সাথে উদ্ভিদের বিশাল রাজ্য স্থানীয় ন্যাশনাল পার্কে। হ্যাঁ, প্রায় দিনই ফিরতে ইচ্ছে করে কেপ টাউনে। এর আগে উল্লেখিত সব বিষয়ের জন্য তো বটেই কিন্তু তাদের সবার সম্মিলিত মোহের চেয়েও অনেক অনেক দুরূহ আকর্ষণ তৈরি করে শহরের উপকূল ঘেঁষে এলিজাবেথ হোস্টেলের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া লম্বা রাস্তাটা, সেই রাস্তা দুই-তৃতীয়াংশ পেরোলে যেখানে দুই ভাগ হয়ে গেছে, উপর দিকে মুখ তুললে লায়ন্স হেড পাহাড়ের চোখ চোখ মিলে যায় তার সাথে বার্ণিশ করা সাদা কাঠের একটি দোকান, বড় বড় কাঁচের জানালা, বাহির থেকে আঁচ করা যায় কী অসামান্য গুপ্তধন লুকিয়ে আছে এর আড়ালে-আবডালে। হন হন করে জেমস টাউনের টেম্পু ধরার জন্য এগোচ্ছিলাম, যার স্থানীয় নাম কুমভি, ২০১০র জুলাইয়ের এক সকালে, এক আলতো নজর বুলিয়েই জানা হয়ে গেছিল সেদিনের দুপুরের প্ল্যান। কেবল দুপুরে নয়, দোকানটিতে ঐ একদিনেই তিন তিন বার যেয়ে তের কিলো বই কিনেছিলাম মনের সুখে, এবং মনের দুঃখে অনেক অনেক বই রেখে আসতে বাধ্য হয়েছিলাম। শুধুমাত্র সেই দোকানটিতে যাবার জন্য হলেও বারবার ফিরে যেতে ইচ্ছে কেপ টাউন। আপাতত আস্তানা হেলসিংকি শহরে, উত্তুরে এই শহর থেকে দক্ষিণতম শহরগুলোর একটিতে যেতে বিমান ভাড়া গুণতে হবে লাখ দেড়েক টাকা, সেই টাকায় তো বইয়ের পাহাড় না হলেও টিলা কেনা যেতেই পারে!
কিন্তু না ভুলটা করলেন এইখানেই!
বই আপনি যত ইচ্ছা কিনুন, কিন্তু পুরনো বইয়ের দোকানের বিবর্ণ স্তূপ থেকে আলগোছে, অবহেলায় নাড়া চাড়া করতে করতে যখন লুকিয়ে থাকা এক বহু আকাঙ্ক্ষিত গ্রন্থখানা ধরা দেবে, প্রথমেই কম্পমান হাত দুটো দিয়ে সেটার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হতে উৎকণ্ঠায় শুকিয়ে আসা ঠোঁট জিহ্বা দিয়ে আলতো ভিজিয়ে নিয়েই চট করে অতি দ্রুত ঘাড় উভয় দিকেই ঘুরিয়ে দেখে নেবেন যে আর কেউ আপনার হাতের সম্পদখানা দেখে নিল নাকি, বিশেষ করে বইয়ের দোকানী! সেই আনন্দের দাম চুকানোর ক্ষমতা বিশ্বের সকল হীরের খনিরও নেই, বাদ থাক বিমানভাড়া।
পুরনো বইয়ের দোকানের মত আনন্দদানকারী স্থান সারা ব্রহ্মাণ্ডে নেই, থাকতে পারে না। বিশেষ করে কী খুজিতে কী মিলিতে পারে সেই উৎকণ্ঠা, সেই রোমাঞ্চ, সেই আনন্দ, সেই অ্যাড্রিন্যালিনের প্রবাহ- এই জন্যই আমার সবচেয়ে বড় নেশা পুরনো বইয়ের দোকান ঘেঁটে বই কেনা। নতুন বইয়ের দোকানে সেই আনন্দ পাওয়া যায় না, এবং অবশ্যই দামও দিতে হয় গুচ্ছের। আর এখন তো নেটের কল্যাণে আমাজন বা অন্যান্য কোম্পানি থেকেই বইয়ের অর্ডার দেওয়া যায়, কিন্তু তাতেও সেই পার্থিব সুখ অপার্থিব রূপে ধরা দেয় না কিন্তু, অন্তত আমার কাছে।
এই নেশা শুরু হয়েছিল হাইস্কুল জীবন থেকেই, সেবার বই পড়া শুরু করেছি ভাড়া করে, সেখানে কিছু বই মেলে না, এক বন্ধু জানালো সোনা দীঘির মোড়ে কিছু পুরনো বইয়ের দোকান আছে, মূলত পড়ার বইয়ের, কিন্তু মাঝে মাঝেই মিলে যায় চমৎকার সব গল্পের বই, সেবার পুরনো পত্রিকা। আর তখনই বুঝে গেছিলাম পুরনো বইয়ের দোকানীদের চরিত্র । কেন জানি মনে হয় বিশ্বের সব বইপড়ুয়ারা যেমন প্রাণের বন্ধু, আত্মার আত্মীয়, ঠিক তেমনি পুরনো বইয়ের দোকানদাররাও ঝিম মেরে সুযোগের জন্য ওঁত পেতে থাকা এক আবিশ্ববিস্তৃত মাফিয়া চক্রের সদস্য, যাদের কাজই বইপ্রেমীদের অকৃত্রিম উৎসাহ আর নিষ্পাপ আবেগের বহিঃপ্রকাশকে পুঁজি করে যতখানি সম্ভব তাদের পকেট হালকা করা। এর ব্যতিক্রম কোথায়! প্রিয় নীলক্ষেত, পল্টন থেকে শুরু করে দিল্লীর দরিয়াগঞ্জ, কেপটাউনের শহরতলী, হাভানার স্কয়ার, প্যারিসের গলি, অন্নপূর্ণার উপত্যকা? কোথাও না!
কিন্তু তাতেও আকর্ষণ কমে না, বরং নিজে অধিকাংশ সময় ঠকলেও খুব বাহবা দিয়েই নিজেরই পিঠ চাপড়ে- বেশ ভাল দাও মেরেছ! অন্য কেউ হলে আরও বেশী টাকা খসতই! বইয়ের নেশার বুদ হবার পর যখন ঢাকায় গেছিলাম, প্রথমেই চিরুনি অভিযান চালিয়েছিলাম বাংলাবাজারে, তারপর থেকে নিয়মিত নীলক্ষেত আর পল্টনে। কত যে মণিমুক্তা মিলেছে, তার হদিসই আর করা সম্ভব হবে না কোনদিন।
সপ্তাহে কয়েকদিন পুরনো বইয়ের দোকানে যায়, কিছু মিলুক বা না মিলুক, দেখতে, ছুঁতে, বহু আকাঙ্খিত কিছু মেলার রোমাঞ্চে সিক্ত হতে ভাল লাগে। তাও ভাল আপাতত যে দেশে আছি সেখান ইংরেজি তৃতীয় ভাষা, ইংরেজির চল খুবই কম, ফলে ইংরেজি বই মিলেও কম। তারপরও যে হারে সংগ্রহ বাড়তেই আছে, গত কয়েকবছর ধরে অসহায়বোধ করি, মনে মনে বলি- বই কিনিবার ক্ষমতার যাহাকে দিয়াছ, তাহারে পড়িবার দাও সময়!
আর মাঝে মাঝে জেদ করে বই কিনি, বেশী দামী বই দেখলেই মনে হয় এত্ত দাম দিয়ে কিনব, কিন্তু বই কিনে নাকি কেউ দেউলিয়া হয় নি আজ পর্যন্ত? আমিই কি নিখিল বিশ্বের প্রথম দেউলিয়া হিসেবে গিনেস বুকে নাম লেখাতে যাচ্ছি! দেখিই না শেষ পর্যন্ত কি ঘটে, যেমন একবার ঘটেছিল TIME-LIFE LIBRARY OF ART সিরিজের অসাধারণ বইগুলো সংগ্রহের সময় , শিল্পীএবং তাদের সৃষ্টি নিয়ে এত অসাধারণ তথ্যের সমাবেশ আর কোথাও পাবেন না। তবে টানতে যেয়ে কোমর ব্যথার গল্প চেপে যাই আজকের মত, নাকি?
এমনভাবেই এক বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যাতে অপরিচিত এক পুরনো বইয়ের দোকানে ঢু মারতেই দেখি পিছনের এক তাকের নিচে গাদা করা মহাকাশচারীদের নিয়ে দারুণ সব বই। সাথে চাঁদ ছোঁয়া মানুষগুলোকেই অলীক বলে মনে হয়,চাঁদ তো আর ছোঁয়া হচ্ছে না, যদি তাদেরই ছুতেঁ পারতাম, চাঁদের অংশ মনে করে! নিজেও সবসময়ই মহাকাশবিজ্ঞানী হতে চাইতাম কিনা, একটা আলাদা পক্ষপাতিত্ব ছিল তাদের প্রতি, সেখানে নিল, বাজ অলড্রিন থেকে শুরু করে চাঁদের বুকে আজপর্যন্ত পা দেওয়া শেষ মানুষ ইউজিন স্যারনানের বই পর্যন্ত হাজির। সেই সাথে আছে গ্যাগারিনের জীবন নিয়ে একটা তথ্যময়গ্রন্থ। উত্তরের আকাশে রূপা চাঁদ দেখি, এই বইগুলোর দিকে বারংবার দৃষ্টিপাত করি, মাঝে মাঝে হাতে তুলে নিই এখনো। বিশেষ করে নিল আর্মস্ট্রংএর একমাত্র জীবন দ্য ফার্স্ট ম্যানের কথা শোনাবার জন্য তো আলাদা পোষ্ট দিয়েইছিলাম।
বিলেতের বৃষ্টি ভেজা একদিনের কথা খুব মনে আছে, এক দিনে আর কতই বা চাওয়া যায় বা পারা যায়, আজীবনদেখতে চাওয়া ডজন খানেক বস্তুর সবগুলোর চাক্ষুষ দর্শন পেয়েছিলাম সেই বুধবার লন্ডনে= যাদের মধ্যে আছেরোসেটা স্টোন, রাজা দারিয়াসের সিলিন্ডার, স্ফটিক খুলি, শেক্সপিয়ার, ডিকেন্স ও জেন অস্টেনের একমাত্রপোট্রের্ট, ইস্টার দ্বীপের মোয়াই, ভ্যান গগের সানফ্লাওয়ার, ভিঞ্চির ভার্জিন অন দ্য রক, ফারাও রামসেসেরভাস্কর্য, গুটেনবার্গের বাইবেল, বিটোভেনের চিঠি, শার্লক হোমসের বাড়ী, ওয়েস্ট মিনিস্টার অ্যাবে ইত্যাদি ইত্যাদিঅজস্র অগুনতি চিত্রকর্ম আর প্রত্নসম্পদ। কিন্তু মন সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল হয়েছিল চ্যারিং ক্রসের এক পুরনোবইয়ের দোকানে, হন হন করে হেটে চলেছি, কিন্তু পুরনো বইয়ের দোকান দেখলেই যা হয়, ঝা করে ঢুঁকে পড়েজিজ্ঞাসা করলাম ডেভিড অ্যাটেনবোরো আর জেরাল্ড ডারেলের বই আছে নাকি, শুভ্র কেশের ভদ্রলোক নাকেরডগায় চশমা নিয়ে বললেন, ডেভিডের একটা বই এসেছিল বটে গত সপ্তাহে, বেশ পুরাতন কিন্ত মলাটটিনয়নকাড়া, তুমি চাইলে খুজে দেখব কিন্তু সময় লাগবে। বলে ফেললাম, আমার হাতে সারাদিন আছে ডেভিডের বইহল, মনে মনে ভাবছি কোন বই আর হবে লিভিং প্ল্যানেট না হয় লাইফ অন আর্থ। কিন্তু সে নিচের এক স্তূপ থেকেবাহির করল ১৯৫৮ সালে ছাপা জু কোয়েস্ট টু গায়ানা~ যার ছবি কেবল নেটেই দেখেছি এতদিন, কোনদিন হাতেনিব চিন্তাও করিনি! উৎফুল্লতার তোড়ে হতভম্ব হয়ে কেবল বিড়বিড় করে বললাম, আশা করি খুব একটা দামীনয়। এদিকে মুখ তো জ্বলে উঠেছে হাজার পাওয়ারের বাল্বের মত, ভাবছি ব্যাটা তো দাম ২০ গুণ চেয়ে চাইবেই,ঘোড়েল বিক্রেতা! কিন্তু দাঁত বাহির সে বলল, এক পাউন্ড দাও, এই বইয়ের জন্য এটি এমন বেশি কিছু দাম নয়!!! পরে আর কিছু খেয়াল নেই, শুধু বইটি বগলদাবা করার আনন্দে মনে মনে হুটোপুটি খেয়েছি সারা দিন!
এই সেই লন্ডনী বইয়ের দোকান,
এখানেই আরেকদিন মিলেছিল নিচের বইটিও,
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকসোসাইটির ম্যাগাজিন এবং বই মানেই যে বিশ্বকাঁপানো দুর্দান্ত আলোকচিত্র তা নয়, সেখানে থাকে অসাধারণ সবচিত্রকর্মও। জীবজগত, মহাকাশ, মানুষ, সভ্যতা- সবকিছুই নিয়েই সেখানে আসে বিশ্ব সেরা চিত্রকরদের সৃষ্টি। এই বিশেষ বইটিতে তার অনেকগুলোই স্থান পেয়েছে, এমন সংকলন অবশ্যই অবশ্যই সংগ্রহে থাকা দরকার। তবে বেশ দামী বইটির দাম নিজেকে চুকাতে হয় নি, সাথে ছিলেন বিশাল প্রাণ কিন্তু সবচেয়ে শম্বুকগতির অসাধারণ ছোট গল্পকার সচল রানা মেহের আপা ( চুপি চুপি বলে রাখি, রানাপুকে সাথে নিয়ে বই কিনতে গেলে উনি দাম দিতে দেন না, এমনকি খেতে গেলেও, লন্ডন যারা যাচ্ছেন, বুঝতেই পারছেন!)
লেখা শুরু করেছিলাম কেপ টাউনের সেই চিত্তহরণকরা দোকান দিয়ে কারণ সেখানের প্রায় সব বইই ছিল ইংরেজিতে, এমনটা আমার জন্য বেশ বিরল। এবং নামমাত্র মূল্যে পেয়ে গিয়েছিলাম অসাধারণ সব বই, বিশেষ করে অনেক বছর ধরে খুঁজতে থাকে জ্যাক লন্ডনের সেরা জীবনীভিত্তিক উপন্যাস অশ্বারোহী নাবিক। নামটা দেখেই দোকানী ভদ্রলোক বললেন, বইটা তো ছিল, দেখি! আমার হার্টবিট বাড়িয়ে মিনিট তিনেক পরে বইটা হাতে ধরিয়ে দিলেন, দাম ৫০ সেন্ট! মিলেছিল জেরাল্ড ডারেল, এডমণ্ড হিলারি, থর হেয়ারডালের কী যে দুষ্প্রাপ্য সব বই, এবং অবাক করা কম দামে। আবারও এমন মজা পেয়ে গেলাম বিলেত যেয়ে, প্যাচপ্যাচে বৃষ্টিময় কুৎসিত আবহাওয়া পুরনো বইয়ের দোকানে ঢু মারা মাত্রই ফিঞ্চ পাখির সুরে মুখরিত বসন্তে রূপান্তরিত হত সবসময়ই। সেই আনন্দেই কেবল গেলবার কিনেছিলাম এইগুলো-
তবে বিশেষ পক্ষপাতিত্ব আছে কিছু লোগোর প্রতি, সবার আগে সেই জায়গা দখল করে আছে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, সে বই-ই হোক, বা তাদের অনন্য মাসিক পত্রিকাটি, পেতেই হবে হাতে।
গত ২ বছর বাদে আগের সব ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক, ম্যাগাজিনই কিনেছি পুরনো দোকান থেকে, ২০ সেন্ট করে রাখে। ইচ্ছা আছে সেই ১৮৮৮ সাল থেকে প্রকাশিত সব কিছু সংগ্রহ করার। হায়, জীবন এতো ছোট ক্যানে?
মাঝে শখ হয়েছিল ছোট গল্প নিয়ে বিশদ কাজ করার, স্বয়ং চেখভ আর ও হেনরি কেরামান-কাতেবিন হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন দুই কান্ধে, একে একে অনেক দিন ধরে সারা বিশ্বের ছোট গল্প গুলোর একটা সংগ্রহ তৈরি করেছিলাম, সেখানে বিষয় ( প্রাণী, রহস্য,প্রকৃতি, ভ্যাম্পায়ার, সমুদ্র), দেশ, মহাদেশ, লেখক ভিত্তিক নানা সংকলনের সমারোহ। অধিকাংশই অবশ্য পড়াহয় নি এখনো, এক সন্ধ্যেয় খানিকটা আফসোস নিয়েই ছোট গল্পের আলাদা তাকটা পরিষ্কারের সময় ছবিটা তোলা। কবে পড়ব মার্ক টোয়েনের সমস্ত গল্পগুলো?
তবে ততদিনে একটা মজার জিনিস জেনে গেছি, এখানকার লাইব্রেরীগুলোতে কোন বই যদি দুই বছর কেউ ইস্যু না করে না নামমাত্র মূল্য বিক্রি করে দেওয়া হয় (২০ সেন্ট), এবং আরও ভাল ব্যাপার হচ্ছে একটা আলাদা তাকই থাকে যেখান থেকে বিনামূল্যে বই দেওয়াও যায়, নেওয়াও যায়। ব্যস তারপর থেকেই ফি সপ্তাহে লাইব্রেরী ঢু মারার সময় কোথায় সবার আগে চলে যেতে হয় তা নিশ্চয়ই আর বলার দরকার নাই!
লাইব্রেরীতে অনেক বই-ই মেলে, বন্ধুদের কাছে ধারও নেওয়া যায়, কিন্তু নিজের মত করে নেবার একটা আলাদা আকর্ষণ আছে, ইচ্ছামত সময় লাগিয়ে পড়া যায়, বারবার পড়া যায়, আর আমার মত বর্বর পাঠকেরা পছন্দের লাইনগুলোতে মার্কার কলম দিয়ে আঁকিবুঁকি করে ভালবাসা জানিয়ে রাখেন। এইখানেই চলে আসে আবার পুরনো বইয়ের গল্প, সেই সাথে বইগুলোর সাথে জড়িত স্মারকের গল্প। বইটি উপহার হিসেবে দেওয়ার সময় কারো ভালোবাসার বাণী, পাতার ফাঁকে সযত্নে রাখা পাখির পালক, ঝরা পাতা এক অন্য সৌরভ নিয়ে আসে পাঠের সময়, মানসপটে ভেসে ওঠে এক না বলা গল্প। এমন করেই একবার হাতে এসেছিলে সুপ্রাচীন এক বুড়ো আংলা, তার প্রথম পাতায় লেখকের সাক্ষর সহ লেখা ছিল- অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, দোলপূর্ণিমা, শান্তি নিকেতন!
একবার অযাচিত ভাবে মিলে গেল - বিলেতের Duncan Baird Publishers কতৃক প্রকাশিত ডানের নীল হাইকু বইটি এবং বামের থাওদর্শনের কিছু পংক্তির লাল বইটি হাতে পাবার পরে মনে হয়েছিল- পাইলাম, ইহাদের পাইলাম! যেমন নির্বাচন, তেমনই ছাপা,সেই রকমই অলংকরণ। মাঝে মাঝে মনে হয় হাইকু নিয়ে এর চেয়ে সুদৃশ্য বই মনে হয় জাপান ছাড়া কোথাও মিলবে না,মাঝের জাপানিজ কবিতার বইটিকে কি কাবারের মাঝে হাড্ডি বলে ভ্রম হচ্ছে! উহু, এই কাজ ভুলেও করবেন না, ইহার১০০ কবিতার প্রতিটির সাথে আছে প্রাচীন জাপানের অসাধারণ সব চিত্রকর্ম, তবে বেশ দুষ্প্রাপ্য। ( হাইকু ভালবাসে এমন প্রেমিকা ছাড়া মাঝের বইটি পাওয়া বেশ মুশকিল, তবে কিনা বিশ্বে অসম্ভব বলে কিছু নেই! )
বিশ্বখ্যাত মেরু অভিযাত্রী রবার্ট ফ্যালকন স্কট তার স্ত্রী ভাস্কর ক্যাথলিন ব্রুসকে শেষ যাত্রার আগে বলেগিয়েছিলেন তাদের একমাত্র শিশুটিকে যেন প্রকৃতি নিয়ে পড়তে এবং জানতে উৎসাহ দেওয়া হয় বাল্যকালথেকেই। কুমেরু বিন্দু জয়ের পরও ট্র্যাজিক দুর্ঘটনার ফলে স্কট এবং তার সাথী যখন মৃত্যুবরণ করেন তখন সেইশিশু পিটার ছিলেন মাত্র ২ বছর বয়সী। স্কটসন্তান পরবর্তীতে স্যার পিটার স্কট পরিণত হয়েছিলেন বিশ্বখ্যাত পাখিবিশেষজ্ঞ, সংরক্ষণবিদ, চিত্রকর এবং প্রকৃতিবিদে। উনার আঁকা ছবিতে কোটি মানুষ অনুপ্রাণিত হয়েছে জীবজগৎনিয়ে। লক নেস দানবের সেই হাস্যরস পূর্ণ ইঙ্গিতময় ল্যাতিন নাম তারই দেওয়া, এবং একাধিক ছবিও একেছেন সেই কল্পিত জন্তুর। উনার বই পেলেই সংগ্রহের চেষ্টা করি, কিন্তু তার আঁকার বই আসলে দুষ্প্রাপ্য। অবশেষে ছবির বইখানা মিলে ছিল এক পুরনো বইয়ের দোকানে—অসাধারণ বইটি এখন বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সংগ্রহে আছে।
পুরনো বই কেনার কথায় মনে পড়ল বছর খানেক আগে এক বাদামি বিকেলে কৈশোরের স্মৃতিমেদুরতায় আক্রান্তহয়ে জলদস্যুদের রোজনামচার একটি সংকলন সংগ্রহ করেছিলাম, তাতে কি চমৎকার সব অলংকরণ আর প্রাচীন ম্যাপ-সমুদ্রযাত্রার এবং গুপ্তধনের, সেই সাথে রক্ত হিম করা খল খল হাসিময় জীবনযাত্রার বর্ণনা। ক্যাপ্টেন মরগান সহ অনেক কুখ্যাত জলদস্যুর দিনপঞ্জি আছে বইটিতে। যদিও জলদস্যু হতে আমার ইচ্ছে করে নি কখনোই, সবসময় চাইতাম এবং এখনো ইচ্ছে করে জাহাজডুবির নাবিক হতে যে কিনা থাকে একটি ক্রান্তীয় দ্বীপে।
সেবার অনুদিত বই পড়ার এই এক বিকট সমস্যা, মাথার ভিতরে অনুবাদগুলো ঘুরতে সবসময়, আসল বই হাতেপেলেও অনুবাদের মুগ্ধতার ঠেলায় অনেক সময়ই মুল বই আর পড়া হয়ে ওঠে না। ফার্লে মোয়াটের সেরা বইহিসেবে পরিচিত A Whale for the Killing প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৭২ সালে, সেবার রূপান্তর আসে ১৯৮২ সালে,তিমির প্রেম নামে । দুইটাই পেয়েছি অনেক ঝামেলা করে, বাংলাটা ঢাকার ফুটপাত থেকে জোগাড় করে দিয়েছে এক বন্ধু কিন্তু আজ পর্যন্ত ইংরেজিটা শেষ করতে পারলাম না, হায় রে সেবার জাদু।
মা প্রথম বারের মত আমাদের দেখতে আসবেন হেলসিংকি, তাকে না জানিয়েই বন্ধুদের বলে দেওয়া হল নীলক্ষেত তন্নতন্ন করে কিছু বই পাঠাবার জন্য। অনেক নতুন বইয়ের সাথে পুরানো কিছু আর মায়ের অভিযোগও চলে আসল-
তবে বই থাকলেই হয় না, সেটি পড়তে হয়, পারলে পড়ার আনন্দ অন্যের মাঝে সংক্রমণ করতে হয়, নবলব্ধ জ্ঞান জানাতে হয়, সেগুলো যদি না হয় তাহলে কেবল গাদি গাদি বই সংগ্রহ করা শুধুই সম্পদ কুক্ষিগত করে রাখার মতই লাগে। ইদানীং বেশ বইবৈরাগ্য দেখা দিয়েছে, ভাবছি যে বইগুলো আমার কাছে আছে কিন্তু সত্যিকারের কাজে লাগছে না তা যোগ্যতর লোকের কাছে গেলে ক্ষতি কী? সেই ধারণা থেকেই নিচের ছবির বইগুলো জানুয়ারি মাসে ঢাকায় ল্যান্ড করেছিলে, আশা করি তারা পেয়েছিল যোগ্যতর সংগ্রাহক।
কিন্তু আমার সংগ্রহ চলতেই আছে, পুরনো বইয়ের ফাঁকে ফাঁকে নতুনও কেন হচ্ছে, অনেক সময় পুরনোর দামেই, যেমন ফ্রাঙ্কফুর্টের বইমেলায় ২০০৮ সালে ৫৩ কিলোগ্রাম!
এখন বই নিয়ে একটাই সমস্যার কথা- জিনিসটা বেজায় ভারী! মহা মহা মহা ভারী! একেবারে ব্ল্যাকহোলের মত, দেখে মনে হয় পিচ্চি, কিন্তু ওজনে - আহেম! সামারে দেশে ৩৫০ কেজি বই পাঠাতে চাচ্ছি, সাথে যাবতীয় ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক। জাহাজেই পাঠাব, আফসোস, সস্তা উপায় খুঁজে বেড়াচ্ছি এখনও! ( সমাধান জানা থাকলে পাঠান, পুরস্কার হিসেবে মিলবে বই! )
ওহ, এই পোস্টের প্রথম লাইনটা কেন দিয়েছি! পাপীমনাদের জন্য। চরমউদাস যেমন ইয়েলোস্টোনে যেয়ে সুড়সুড়ি দেওয়া শিরোনাম দেয়, যাতে দ্রোহীদার মত আপাতদৃষ্টিতে দুষ্টু লুকজন এভাবে চিন্তা করতে করতে লাফিয়ে লাফিয়ে আসে—
কোন এক বইতে ডাসা পেয়ারার মত ফিগারের অধিকারীনী অবুঝ হয়ে মাসুদ রানাকে বলেছিল- মেয়েমানুষ, তার চেয়ে বড় নেশা আর কী হতে পারে? রানার উত্তর ছিল- অ্যাডভেঞ্চার।
যে অ্যাডভেঞ্চার আমার রক্তে পূর্ণ মাত্রায় দোলা জাগাতে সক্ষম তা আমি অনুভব করি প্রতিবার যখন পুরনো বইয়ের দোকানে অনুপ্রবেশ করি। থ্রি চিয়ারস ফর সেকেন্ডহ্যান্ড বই, হিপ হিপ হুররে
প্রিয় কয়েকটা বই নিয়ে পোস্ট এইখানে
নিল আর্মস্ট্রং-এর একমাত্র স্বীকৃত জীবনীগ্রন্থ- ফার্স্ট ম্যান,
অলড্রিনের আত্নজীবনী- রিটার্ন টু আর্থ,
ডেভিড অ্যাটেনবোরোর গায়ানা অভিযান
--জ্য পল সাত্রের আত্নজীবনী - শব্দেরা[/উরল],
[url=http://www.sachalayatan.com/tareqanu/47353]কনরাড লোরেঞ্জের কিং সলোমনস রিং,
জ্যাক লন্ডনের শ্রেষ্ঠ জীবনীগ্রন্থ -- অশ্বারোহী নাবিক,
দ্য হুইসপারিং ল্যান্ড ( ডারউইনের পদক্ষেপে জেরাল্ড ডারেল),
/url], [url=http://www.sachalayatan.com/tareqanu/43215]ফাতু-হিভা ,
মন্তব্য
ব্যাগ গোছাতে গিয়ে দেখি একটা বড় ব্যাগ শুধু বইতেই ভরে গেছে। রুমমেট প্যাক করতে সাহায্য করছিল, বলল বই নিবে নাকি কাপড়! আমি বললাম বই, সে বিরকত ত হয়ে বলল, তোমার মাথা খারাপ!? কি করবে এত বই টেনে নিয়ে যেয়ে? হাসি হাসি মুখে বললাম দুঃখিত কিনতু আমি কাড়প ফেলে যেতে পারব, আমার বইগুলো না।
ইমা
সাবাশ ইমা! চট্টলা আসি, দেখব কী কী বই আনলেন
facebook
facebook
ইমাবিবিকে চিনেছি।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
আপনার এলাকারই যে!
facebook
শীঘ্রি আসছি
facebook
বলে রাখা ভাল---
ক) জানুয়ারি মাসে ঢাকায় ল্যান্ড করা ঐ বইগুলোর মধ্যে ঢাউস দু-খানা বই এসেছে আমার ভাগে।
খ) আমি নয়া একখানা বুকশেলফ কিনেছি, সেটা এখনো প্রায় পুরোটাই খালি!
এইই। বাকিটা আপনাদের বিবেচনা।
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
তাতে কী ! খাইট্যা খান
facebook
অপনার বুকশেলফ খালি আর আমি গরিব মানুষ বলে ভাল একটা বুকশেলফ কিনতে পারছি না। বাকিটা আপনার বিবাচনা
ইমা
সচল নজরুল ভাইয়ের কাছে দুটো বই আছে আমার। কৌ হনুমান আর দমুদির পাঠানো।
কবে পামু হাতে রে, আহারে!
আর ইমা, চট্টগ্রাম পোঁছে যোগাযোগ কৈরেন। বই আপনার,শেলফ আমার = সমঅধিকার।
ভালো তো, ভাল না?
________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"
facebook
অণুদা আমার ভাগেরটা কই? এ অবিচার তো মেনে নেয়া যাবে না।
ইমা
আমেরিকা !
facebook
আমেরিকা থেকে তো চলে এসেছি। এখন?
দেশে আরাম করেন
facebook
প্রথম লাইনটা দেখে চমকেই গিয়েছিলাম। শেষে এসে কারণ দর্শানোতে বুঝতে পারলাম
তবে নির্দোষ বইয়ের ছবিগুলো দেখে হিংসা হচ্ছে ভীষন
__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার
facebook
লেখা যথারীতি একঘর উইথ অ্যাটাচড বাথ।
তবে পৃথিবীর সমস্ত পুরানো ঝুরঝুরে হয়ে যাওয়া বইগুলোকে ডিজিটাল করে ফেলতে পারলে বড় ভাল হত।
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'
হুম
facebook
মনে দুক্কু দেয়া এরম একটা পোস্টের জন্য আপনার জেল জরিমানা হওয়া উচিৎ অনুদা (মন বই এর আগুনে জ্বলে পড়ে ছাড়খার হওয়ার ইমো)
TIME-LIFE LIBRARY OF ART সিরিজটার জন্য মুখিয়ে আছি!!! কবে যে কিনতে পারব!!!
---
পিনাক পাণি
একে জেল, তাই আবার জরিমানা
facebook
দারুণ লাগলো পোস্টটা। বইয়ের দোকানে দোকানে ঘোরা আমারও প্রিয় নেশা।
এক বন্ধুর থেকে নতুন একটা শব্দ শিখলাম আগেরদিন। tsundoku অর্থ- the act of leaving a book unread after buying it, typically piled up together with such other unread books। http://en.wiktionary.org/wiki/積ん読
কত বই যে জমে গেছে এভাবে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
হ ,পেরেশানে আছি
facebook
আমার এই এক জিনিস হয়! কলেজ স্র্টীটে প্রতিদিনই যেতে হয়, আর গেলেই রাশি রাশি লক্ষ লক্ষ বইয়ের দোকানে সাজানো বইয়ের দিকে নজর ঘুরে যায়, আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে আমার সংযমের বারোটা বেজে যায়। আমার কেমন একটা মনে হয় যে ভালো বই খুঁজে পেয়েও না কেনা একটি বড় পাপ, - এ পাপ আমি কিছুতেই করব না! - বাস্ কিনে ফেলি, - এবং বাড়ি এনে বাকি বইদের সাথে এক করে দিই।
facebook
ভীষণ ব্যাস্ততা আজ কাজ নিয়ে - কি মনে করে সচলে উকি দিয়ে এই লেখা পড়া শুরু করলাম - দিলেন কাজের বারটা বাজিয়ে
"অসাধারণ"
এই লেখাটায় কি যেন আছে, ধরতে পারছিনা কিন্তু ভীষণ ভাল লাগার কিছু একটা আছে (অবশ্যই প্রথম লাইন না)
ঠাকুর ঘরে কে রে?
আজ্ঞে, আমি কথা খাই নি!
facebook
সিনেমাটা (borat) দেখেছিলাম অনেক আগে - বেশ অন্যরকম ছিল -What's in California? Pearl Harbor is there, so is Texas.....
হুম, আমার ভাল লাগে নাই যদিও। অনেক বিষয়ের বেশী পচানো বিশেষ করে যে কোন জাতিকে খুবই বিরক্তিকর।
facebook
এ জন্যই আর দ্বিতীয়বার দেখা হয় নাই - ভাল লাগা মুভিগুলো একাধিকবার দেখা হয়ে যায় -the bands visit ও তিনবার দেখে ফেলেছি - কেন জানি!
facebook
You have got a huge collection of books. Its so enormous. I love reading books....... Hope that I will also collect some of national geographic issues......... love your writings.
facebook
আমারও পৃথিবীর অন্যতম প্রিয় জায়গা পুরনো বইয়ের দোকান। আপনার মতো তো আর দেশ বিদেশ মাতাই না, ঢাকাই সই। নীলক্ষেতের আশপাশ দিয়ে গেছি অথচ ১০ মিনিটের জন্য ঢুঁ মারি নাই, এমনটা হয় না। পল্টনে বা মিরপুরে কাজে গেলে অবশ্যই পুরনো বইয়ের দোকানে হানা দিবোই দিবো। কতো যে দুষ্প্রাপ্য বই আমি সংগ্রহ করেছি।
আর এই অভ্যাস যে পুরনো তা নীলক্ষেতেরই এক পুরনো বিক্রেতা স্মরণ করিয়ে দিলো সেদিন। কলেজ লাইফে তার কাছ থেকে কেনা একটা বইয়ের স্মৃতিচারণ করে... সম্পর্কগুলো তৈরি হয়ে যায়
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
পুরনো বইয়ের দোকান সবই এক।
facebook
পুরনো বইয়ের দোকান সবই এক। একদম ঠিক। একরকম গন্ধ, আমেজ আর শুধু বই আর বই
আহা, কেপটাউন! আরেকবার যাইতে মন চায়! পাঁচরাত ছিলাম, একদম নস্টালজিয়া পেয়ে বসলো’রে ভাই।
বই দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। পড়তে থাকুন আর লিখতে থাকুন।
facebook
অসাধারণ অণু দা! আর সত্যি আপনি বই রসিক বটে। বই প্রেমিক অনেক হয়, হরেক কিসিমের প্রেম। প্রেমিক অন্ধের মত বই কেনে। রসিক জেনে-বুঝে কেনে। আমারও সাংঘাতিক নেশা। তবে অর্থাভাব প্রকট। গেল সপ্তাহে রাহুল সাংকৃত্যায়নের আত্মজীবনীর সেটটা কিনতে পারলাম না কয়েকশো টাকার অভাবে। এসব অসাধারণ বই আবার সেট ছাড়া বিক্রি হয় না। মনে মনে বলি- রোষো, একটু বড় হয়ে নি! বত্রিশ বছর পড়ে হয়তো বলব- আমি আর কত বড় হবো!
রবার্ট স্কট আর স্বেন হেদিনের লেখা নিয়ে পোস্ট চাই। সাথে কিছু ডাউনলোডের লিঙ্ক।
বেরসিক বৈরসিক !
facebook
লিঙ্ক কৈ?
কিসের!
facebook
দুরন্ত।
ডাকঘর | ছবিঘর
facebook
পা'টা একটু আগায়া দ্যান দেখি, ভ্রাত:। খানিকটা ধূলো নিয়ে ধন্য করি নিজেকে...
আগে দুষ্টুমি করে বেয়ারিং চিঠি পাঠাতাম কখনও কখনও বন্ধুদের। প্রাপককে যার মাসুল গুনতে হতো। আন্তঃজার্তিক ডাকে মনয় সেই ব্যবস্থা নাই! থাকলে তার ইস্তেমাল করে আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দিতে পারেন কিছু বই। আমি কিছু মনে করবো না।
এরচেয়ে ভালো বুদ্ধি আর দিতে পারছি না আপাতত।
হুম, নাহে ভাই কাজ করবে না এই বুদ্ধি
facebook
এ জন্যই বলে, মানুষকে কখনো ভালো বুদ্ধি দিতে নাই!
দুনিয়া বেইনসাফ
facebook
প্রতিটি বইয়ের মলাট, প্রচ্ছদের ছবি, অলংকরণ- এত চমৎকার, এত অসাধারণ যে সামনাসামনি ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে! কিন্তু সেটি সম্ভব নয়। আপনার "বুড়ো আংলার" মত আমার সংগ্রহেও রবীন্দ্রনাথের "জীবন স্মৃতি" বইটির একটি সুপ্রাচীন সংস্করণ আছে তবে পার্থক্য এটুকু যে সেখানে কবির স্বাক্ষর সহ কোন লেখা নেই।
অন্যরকম এই পোস্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ।
facebook
জীবন এতো ছোট আর এত বেশি আকাম-কুকাম করে বেড়াতে হয়, বই পড়াই হয়না নিয়মিত। ইচ্ছা আছে কোন এক নীল শুক্কুরবার সবকিছু ছেড়ে দিয়ে, একটা বইয়ের দোকান দিয়ে বসে পড়বো।
facebook
কপালদোষে বড় হইছি। ক্ষুধার জ্বালায় রাতদিন খেটে বইহারা। এইসব পোস্ট যে কেন দেন আপনেরা। (sigh)
এমনি এমনিই
facebook
এই ভাবে ছবি দিয়ে লোভ দেখানো একদম ঠিক না। ভিখেরির মত বলছি 'যা দিবেন হাতে, তাই যাবে সাথে (!!!) '।
চট্টগ্রাম বন্দর থেকে বইগুলি গায়েব করতে মাসুদ রানার সাহায্য চাই। কাজীদার কাছ থেকে অনুমতি এনে দেন।
এম আর ৯ বলছে সম্ভব নহে
facebook
কথাটা কার উদ্দেশ্যে বলা !
দারুণ, দারুণ সব বই ! পড়ুন পড়ুন, সময়করে সব বই ই পড়ুন এবং সে সব নিয়ে পোস্ট দিন।
আসল কথাটা হবে বই পড়িবার সাধ যারে দিয়াছ
facebook
সেটাইতো জানতে চাইছি, কে দিয়েছে ?
আশা করছি, এড়িয়ে যাবেন না।
বই!
facebook
হা হা হা !
facebook
বই আর ভ্রমণ, এই নিয়ে অণু রণন
facebook
আহহহ;
কবে যে এগুলো সংগ্রহ করব আর পড়ব…
অণুদা, অসাধারণ লিখছেন …
জলদিই
facebook
দারুন লাগলো , লেখাটা পড়ে নীলক্ষেত যেতে ইচ্ছা করছে।।।।।।। আজকেই অফিস শেষ করে যেতে হবে। সেবার পুরান তিন গোয়েন্দা ছিল ৭০টা, বাসা পাল্টানোর সময় হারিয়ে গেছে, মনে দুস্ক । আরেকটা কথা, যদিও আপনার সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই কিন্তু আমারেও কয়েক খান বই দিয়েন ভাই পিলিয
আহা!
facebook
আপনার লেখাটা পড়ে আমার খুব প্রিয় একটা কবিতা মনে পড়ে গেলো।
বই
হুমায়ুন আজাদ
_________________________________
বইয়ের পাতায় প্রদীপ জ্বলে
বইয়ের পাতা স্বপ্ন বলে।
যে-বই জুড়ে সূর্য ওঠে
পাতায় পাতায় গোলাপ ফোটে
সে-বই তুমি পড়বে।
যে-বই জ্বালে ভিন্ন আলো
তোমাকে শেখায় বাসতে ভালো
সে-বই তুমি পড়বে।
যে-বই তোমায় দেখায় ভয়
সেগুলো কোন বই-ই নয়
সে-বই তুমি পড়বে না।
যে-বই তোমায় অন্ধ করে
যে-বই তোমায় বন্ধ করে
সে-বই তুমি ধরবে না।
বইয়ের পাতায় প্রদীপ জ্বলে
বইয়ের পাতা স্বপ্ন বলে ।
(ইরস মরফিয়াস দেব'স)
দারুণ ! কিন্তু সমগ্রে পেলাম না যে।
facebook
বই কিনিবার ক্ষমতা যাহাকে দিয়াছ, তাহারে পড়িবার দাও সময়... হায় জীবন এত ছোট ক্যানে ... (আসেন টিমওয়ার্ক করি, আপনার বই আর আমার সময় )
আসলে হবে, বই পড়িবার সাধ যাহারে দিয়াছ
facebook
এমন মানব জনম আর কি হবে... মন যা পড় ত্বরায় পড় এ ভবে...
facebook
So many books,so little time!
@fb/turjo1996
facebook
নতুন মন্তব্য করুন