ডেডউড গালশ স্টেজ স্টেশন। স্যামস ইন হোটেলের সামনে এসে ঘোড়া থেকে নামল যুবক। হোটেলের সামনে কাঠের রেলের সাথে ঘোড়াটাকে বেঁধে তীক্ষ নজরে একবার চারপাশটা ভাল করে দেখে নিল সে। তারপর একটা খুঁটিতে হেলান দিয়ে স্টেজ কোচ এসে পৌঁছানোর অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রইল।
লোকটার কালো ফেল্ট-হ্যাটটা সামনের দিকে একটু নামানো। একটা সাদা আর ব্রাউন ডোরা কাটা কর্ডের জ্যাকেট, বাকস্কিনের শার্ট আর নীল জীনসের প্যান্ট তার পরনে। পায়ে উঁচু গোড়ালির স্টার বুট। বুটের পিছনে সুন্দর নক্সা করা একজোড়া ক্যালিফোর্নিয়া স্পার ঝুলছে। খাপের ভিতর থেকে কোমরের দুপাশে দুটো হাতির দাঁতের বাঁট দেখা যাচ্ছে। ক্ষিপ্রগতিতে ব্যবহারের জন্য দুটো খাপেরই নিচের দিকে চামড়ার ফিতে দিয়ে পায়ের সাথে বাঁধা। আকৃষ্ট করার মত বলিষ্ঠ সুন্দর চেহারা যুবকের। দেখেই বোঝা যায় শক্ত ধাতুতে তৈরি।
এসে গেছেন এরফান জেসাপ। তিনি আসলেন, দেখলেন, জয় করলেন।
বাংলা ভাষার প্রথম ওয়েস্টার্ন আলেয়ার পিছে প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৮৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, কাজি মাহবুব হোসেনের অপূর্ব বাঙময় লেখনীতে। ঘোড়ার পিঠে ধাবমান নায়ক, দারুণ দক্ষতায় নিখুঁত ভাবে চলন্ত অবস্থাতেই ল্যাসো ছুড়ে গরু ধরে ফেলছে, স্যাডল থেকেই বুলস আই শট করে উড়িয়ে দিচ্ছে শত্রুর হাতের পিস্তল, ওয়াগনে করে পাড়ি দিচ্ছে আদিগন্ত বিস্তৃত প্রেইরি, ধু ধু তেপান্তের মাঝে তার গরুর খামার, কালো কফির সাথে বেকন দিয়ে সকালের নাস্তা, মাঝে মাঝে ভাজা গরুর মাংস আর রাই হুইস্কির কড়া স্বাদ, এলোচুলের স্বর্ণকেশীকে উদ্ধারের জন্য জীবনের ঝুঁকি নেয়া, সবচেয়ে বড় কথা দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের পালন---- এই ছিল ওয়েস্টার্ন কাহিনীর মূল চরিত্রগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য।
আলেয়ার পিছেই রাকা ওয়েস্টের সাথে দেখা হল এরফান জেসাপের, যার আসল নাম এরফান ইউসুফ, যার দাদা গিয়েছিল বাংলা নামের পৃথিবীর উল্টো মাথার সবুজ দেশটা থেকে, যে রাকাকে দেখেই এরফানের অনুভূতি ছিল- বুকের ভেতরটা এমন লাফাচ্ছে কেন? পেটের ভিতরেও মনে হচ্ছে হাজারো প্রজাপতি ডানা ঝাপটাচ্ছে। হাতের আগুনের ছ্যাকা লাগতেই চমতকে অস্ফুট কাতরোক্তি করে কাঠিটা ছুঁড়ে ফেলল সে-
এক এরফান না, এমন হয়েছে প্রায় সব চরিত্রেরই- বাঁধনের ভবঘুরে রক সাথে সেই মেয়ের দেখা হবার পরপরই বুঝেছিল যে ভবঘুরেমির দিন শেষ, এখন থিতু হবার প্রহর। সেধে যেয়ে মেয়েটিকে বলেছিল সে- জানি আমার চেহারা ভাল দেখাচ্ছে না, কিন্তু ভবিষ্যতে যাকে বিয়ে করতে যাচ্ছ তার সাথে দেখা করা থেকে তোমাকে বঞ্চিত করতে পারি না! কেউ আবার মনের মন মানুষ পাচ্ছিল না বলেই দাবড়ে বেড়িয়েছে সারা পশ্চিম। কারো না স্ত্রী খুন হয়েছে ঘাতকের হাতে ওরিন ওসমানের মত, নেমে পড়েছে সে প্রতিশোধের উম্মত্ততায়। কারো স্ত্রী আবার সরাতে চাচ্ছে ধনী স্বামীকে, রাইডারের স্ত্রী পাওলীনের মত- এমনই চিত্রবিচিত্র বহুবর্ণা সব চরিত্র। এবং সবচেয়ে বিশৃঙ্খল অবস্থা যে জনপদের ছিল সেইখানেও একটা ব্যাপার কড়াকড়ি ভাবে মনে চলা হত বুনো পশ্চিমে- মেয়েদের গায়ে হাত দেবার একমাত্র শাস্তি ফাঁসি। তুমি লুট কর, আগুন লাগাও, চুরি কর, খুন কর – সব কিছু বিচার হতে পারে, তারপর সাজা হবে না হয় মাফ কিন্তু নারীদের অপমানের ক্ষেত্রে কোন আপিল হাইকোর্ট নাই, সোজা নিকটতম উঁচু গাছের ডালে ঝুলিয়ে রাখা হবে। যে কারণে নিষ্ঠুর, কদর্য আউট-ল রাও দুই বার চিন্তা করত এই ব্যাপারে নিজেদের জড়াতে।
কেন ভাল লাগত ওয়েস্টার্ন কাহিনী? কেন এত আফসোস বাড়াত তা জীবনের প্রতি?
হয়ত প্রতিদিনের ছন্দবদ্ধ একঘেয়ে জীবন থেকে সম্পূর্ণ আলাদা এক অলীক জীবনধারা মনে হত, ভাবতাম মাথায় সমব্রেরো হ্যাট চাপিয়ে মাইলের পর মাইল ঘোড়ায় চেপে নতুন নতুন প্রান্তর, পর্বত, নদী, মানুষ দেখা ছাড়া আর কোন সুখের ব্যাপার থাকতে পারে না জীবনে, সৎ পরিশ্রমে নিজের উপার্জনে জীবন গড়ার একটা হাতছানি ছিল, বজ্জাত শত্রুর নাক-মুখ থেতলে পিটিয়ে প্রায় লাশ বানিয়েও নব জীবনদানের মহত্ত্ব ছিল, একটা শহর কোন কুচক্রের হাত থেকে একা মুক্ত করার বাসনা ছিল, পিস্তলের ছয়টা গুলিই একের পর এক জাদুময় দক্ষতায় বেঁধানোর খায়েশ ছিল, পায়ের দুই ফাঁকে স্যাডল আর কোমরের দুই পাশে নানা জাতের রিভলবার ঝোলানোর কল্পনা ছিল। আমার এখনও প্রায়ই ঘুম ভাঙ্গার পর মনে হয় প্রেইরির মাঝে নিজের হাতে তৈরি এক কাঠের কেবিনে আছি, চারিদিকের গমের ক্ষেতের মাঝে সরসর করে হাওয়া বয়ে যায়, সেই প্রান্তরে আগের জোছনাময় রাতের কথা মনে হওয়ার সুখের হাসি ফোটানো মুখে আনমনে বলে উঠি- শীতের সকালে শরীর গরম করতে কফির জুড়ি নেই।
যখনই উপলব্ধি হয় আমি ২০১৩তে আছি, আমার জন্য বাড়ীর নিচে ম্যাক্সিমার একটা মোটর গাড়ী থাকতে পারে, কোন ব্ল্যাক স্ট্যালিয়ন বা ধূসর অ্যাপালুসা ঘোড়া নেই, সারাদিনের গৎবাঁধা কাজ আছে, তার মাঝে গরুর ব্রান্ডিং নেই, দমকা ওঠা ঝড়ের মত স্ট্যামপিডের রক্তে নাচন তোলা সম্ভাবনা নেই, রাসলারদের খুঁজে বাহির করার ট্র্যাকিং নেই, এমনকি চোরদের ধরবার জন্য পসি বাহির করার কোন সম্ভাবনাও নেই, মনটা বেজার হয়। খুব কি ক্ষতি হত বুনো পশ্চিমের সেই সময়ে জন্মালে!না হয় ক্যালিফোর্নিয়ায় সোনার খনি খুঁজে পেতাম না কখনোই, কিন্তু পেতাম সেই রোমাঞ্চ, ভ্রমণ এবং অ্যাডভেঞ্চারের সোনার গুঁড়ো মাখানো অমূল্য সব স্মৃতি। বেশ কিছুটা শাপশাপান্ত করি তখন সেবার ওয়েস্টার্ন সিরিজকে, ঐ বইগুলা না পড়লেই তো এই আফসোস আসত না জীবনে!।
তবে কেবল অভিযান আর গুপ্তধন হয়, ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে প্রভেদটাও বেশ শিখিয়েছিল বইগুলো, কোন এক বইতে ছিল- পশ্চিম। সুদূরপ্রসারী বিস্তীর্ণ জনবিরল প্রান্তর পড়ে রয়েছে সামনে। এর ওপাশে প্রভাতী সূর্য লম্বা ছায়ার সৃষ্টি করছে বাতাসে দোল খাওয়া ঘাসের উপর। এই ছায়া সহজে মিলিয়ে যাবার নয়। ওই কালো ছায়া থাকবে রেড ইন্ডিয়ানদের মাতৃভূমির পাহাড়ে, সমতলে- সাদা লোকেদের এই অন্যায় দখলের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ করছে ওরা। এমন ভাবে বারংবার ফিরে এসেছে নানা বইতে সাদা মানুষের অত্যাচারের কথা, নেটিভ ইন্ডিয়ানদের বঞ্চনার করা, ক্ষোভের কথা। শ্বেতাঙ্গদের বীরত্ব নিয়ে লেখা হলেও দেখা গেছে ইন্ডিয়ান বিদ্বেষী কেউ ছিল না। ইন্ডিয়ান হামলা মোকাবিলার চেষ্টা করেছে অবশ্যই, যেচে খুন করতে যায় নি কেউই।
ওহ, কথা শুরু হয়েছিলে এরফান জেসাপ দিয়ে, প্রথম বইতেই তার সাথে রাকা ওয়েস্টের পরিণয় করিয়ে দেওয়া হল, সিরিজের পরের বইতে তার সাত বছরের ছেলে জিম এসে হাজির, আর কতদূর বইতে সে নিজেকে ঠিক বাপকে ব্যাটা প্রমাণ করল বটে, কিন্তু খাঁটি এরফানিয় স্বাদ সেখানে ছিল না। পরের বইয়ের নাম আবার এরফান, অসাধারণ প্রচ্ছদটির কারণে বইটির মনে দাগ কেটেছিল শুরু থেকেই, আর প্রথম লাইনও ছিল মনকাড়া –
আমি একজনকে খুঁজছি। পশ্চিমে কথাটার একটা বিশেষ অর্থ আছে । হত্যা করার উদ্দেশ্যে কেউ কাউকে খুঁজছে।
ব্যস শুরু হয়ে গেলে এরফানের সাথে ডাবল বার র্যাঞ্চের ল্যারি ডাউটির মজার প্রতিযোগিতা এবং বন্ধুত্ব। বিবাহিত ভালো মানুষ এরফান তো আর অন্য নারীর সাথে জড়াতে পারে না, তাই প্রেক্ষাপটে আসা ল্যাডার ফাইভ র্যাঞ্চের অপরূপা রোনা বয়েডের। শত্রু হিসেবে আবির্ভূত হলেও শেষ পর্যন্ত অসাধারণ এক অভিযান শেষে দুইজনে হল দুজনার।
আবার এরফান এসে হাজির হল ডেথ সিটি নামের এক অসাধারণ বইয়ে যেখানে হেল সিটি নামের এক কুখ্যাত আউট-ল আস্তানা সে গুঁড়িয়ে দিল একাই, মুখোশ পরা স্যাটানের সাথে পাঞ্জা লড়ে।
ওয়েস্টার্ন সিরিজের ২য় বইয়ের নাম পাতকী, নায়কের নাম জাভেদ, ৩য় বইয়ের নাম রক্তাক্ত খামার, নায়কের নাম জুলিয়াস দত্ত।
কিন্তু সেই আমলে বাঙালী চরিত্র রুক্ষ পশ্চিমে নিয়ে যাওয়া যে খুব একটা বাস্তবসম্মত হচ্ছে না তা বুঝে গেছিলেন লেখক, ফলে সিরিজের ৪র্থ বই জলন্ত পাহাড়ে আবির্ভাব ঘটল জেকবের, হারানো ওয়াগনের সোনা খুঁজতে যে অন্যদের নিয়ে চলল মরমন কুয়ার আশেপাশে। শুরু হল এক অন্য যাত্রা।
সিরিজের ৫ম বইতে সেবা আমাদের উপহার দিল আরেকজন নতুন ওয়েস্টার্ন লেখক যার নাম খোন্দকার আলী আশরাফ, বইয়ের নাম কাঁটাতারের বেড়া। লিলিয়ান নামের এক দৃঢ় চেতা মেয়ের প্রতিশোধের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে লেখা। পরবর্তীতে উনি লিখেছিলেন লড়াই, ডাইনী ইত্যাদি পাঠকপ্রিয় বই।
ওয়েস্টার্ন সিরিজের ৭ এবং ৮ নং বইতে কাজি মাহবুব হোসেন আমাদের প্রথম বারের মত উপহার দিলেন ২ পর্বের উপন্যাস, ভাগ্যচক্র ১ এবং ২ । ড্যান নামের এক বালকের বড় হয়ে ওঠার নাটকীয় কাহিনী, যে নাটকের সাথে জড়িত জুয়া, জড়িত জীবন নিয়ে জুয়া খেলা।
ফেরা নামের বইটা নিয়ে এক নতুন ধরনের লেখককে, নাম তার রওশন জামিল, যিনি পাঠকদের কাছে অধিক পরিচিত ওসমান পরিবারের কাহিনীগুলোর জন্য। সেই যে বিলেত থেকে অ্যালান ওসমান কী কারণে নতুন পৃথিবীতে আসতে বাধ্য হল ( জলদস্যু),
মানসী রেবেকাকে নিয়ে কিভাবে জেমস নদীর তীরে বানালেন নিজের কেল্লা তার গল্প উঠে আসল নীলগিরিতে, কিভাবে তাদের বংশধরেরা রকি পর্বতমালায় আস্তানা গাড়তে সক্ষম হল ( বসতি),
সেই সাথে ওরিন অসমান ( , স্বর্ণতৃষা, রক্তের ডাক), কিভাবে ওরিন ওসমান এবং অ্যানজেল ওসমান খোঁজ পেল বাবার খুনির ( রত্নগিরি), ওসমান পরিবারের একমাত্র আউট-ল নোয়েল ওসমান যে কিনা নির্ভীক বেপরোয়া কিন্তু মেয়েদের সামনে অসহায় ( ছায়া উপত্যকা) , টোপ, আতঙ্ক চমকপ্রদ সব কাহিনী। উনার গল্প বলার ভঙ্গিমাটা ছিল খুব আলাদা ধাঁচের, অসংখ্য মানুষ, ইতিহাসে যেমন ঠাই পেত, তেমনি ছিল প্রকৃতি। বিশেষ করে বিধাতা ১ ও ২ কে তো বলা হয় সবচেয়ে বেশী প্রকৃতির বিশেষ করে মরুভূমির বর্ণনা সম্পর্কিত কাহিনী, যেখানে ধনী দাদুর ক্রোধ বাঁচিয়ে বড় হয়েছিল বালক ড্যান।
রওশন জামিলের আরেক অপূর্ব উপহার ছিল প্রত্যয় বইয়ের নায়ক সাবাডিয়া, যাকে বলা হয় খুবই ক্ষিপ্র, ঈশ্বরের মতো! উনার মনে হয় পিস্তল এবং চাবুকে সমান দক্ষ এই মেক্সিকান- আমেরিকান যুবকর প্রতি সামান্য হলেও টান ছিল, হুয়ান কর্টেয সাবাডিয়াকে গল্পে নিয়ে এসেছেন সন্ধান এবং ছায়াশত্রু বইতে।
বাংলা ভাষার ওয়েস্টার্ন লেখকদের অন্যতম শওকত হোসেনের বুনো পশ্চিমের যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৯৮৬র এপ্রিলে প্রতিপক্ষ বইটির মাধ্যমে, এটি ছিল সেবার ১৫তম ওয়েস্টার্ন। অসাধারণ এক কাহিনীর মাধ্যমে আমাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন অ্যালেক্স, স্টু, প্যাট্রিক, রক বেনন এবং রেলর্ড রিচির সাথে। সেই সাথে প্রেক্ষাপটে হাজির অপরূপা লরা সোমার্স। মানানসই প্রচ্ছদটি করেছিলেন শরাফত খান, বিশেষ করে কাহিনীর সাথে সঙ্গতি রেখে সাদামুখো গরুর ছবিটা দুর্দান্ত ছিল। বইটির দাম রাখা হয়েছিল পনের টাকা।
তিন গোয়েন্দা খ্যাত রকিব হাসান যতদূর মনে পড়ে মাত্র ২টা ওয়েস্টার্ন লিখেছেন কিন্তু তার মধ্যে তৃণভূমি ( অন্যটি নির্জনবাস) সেবার সেরা ওয়েস্টার্ন কাহিনীগুলোর একটি, ১৯৮৬র নভেম্বরে প্রকাশিত অনন্য বইটির প্রচ্ছদ করেছেন আসাদুজ্জামান। এর ফ্ল্যাপে লেখা বাক্যগুলো সেই সিরিজের অন্যতম সেরা বলে মনে হয় এখনও!
এলো শেড মেরন, জমাট বাঁধল রহস্য।
বাজি ধরলো লুনা লোপেজ, জন্ম নিল প্রেম।
হাসলো পল হারম্যান, হাত মেলালো বন্ধু।
দেখা করলো রিব ফ্যারেল, বোধ হলো অস্বস্তি।
শাঁসালো বড় কলিনস, সজাগ হল ঈর্ষা।
পরিচয় দিল বিল কার্টিস, সৃষ্টি হলো উত্তেজনা।
জেগে উঠল পাহাড়
কেঁপে উঠল অন্তরাত্মা
বাঁধলো সংঘাত
বইলো রক্তস্রোত...
আহা, কি যে চমৎকার ছিল বুনো প্রকৃতির বর্ণনা- পাহাড়ের দিক থেকে ঠাণ্ডা বাতাসের সাথে দিনের আলো ফুটল। ঝোপের পাতায় শব্দ হচ্ছে। পাইন গাছগুলো যেন মাঝে মাঝে কেঁদে উঠছে। একটা ঝর্ণার পাড়ে খোলা মাঠের মধ্যে ওদের ক্যাম্প। আশপাশে উইলো ঝোপ আর কিছু কটনউড গাছ রয়েছে। পাহাড়ের গায়ে সোনালী অ্যাসপেনের ঘন জঙ্গল।
সেই সাথে ছিল ট্রাক অনুসরণে একেকজনের কিংবদন্তীর দক্ষতার কথা, আজদের নিয়ে বলা হত- পাথরের উপরে সাপের ট্র্যাকও খুঁজে বাহির করতে পাড়ে। আরেকদল ছিল ট্র্যাক লুকানোতে ওস্তাদ- খাড়ির মধ্য ঘোড়া নামিয়ে, ঝোপের মধ্যে বিশেষ ভাবে চালিয়ে, উজানের দিকে যেয়ে আমাদের উৎকণ্ঠাকে সাথী করে তারা চেষ্টা করত উপস্থিতির চিহ্ন মুছে দেবার।
রাইডার বইটা বিশেষ পছন্দ হয়েছিল পল হান্টার নামের এক ধনকুবেরের শৈশবের পশ্চিমে ফিরে আসার জন্য, যেখানে এসে রাইডার নাম নিয়ে সে ফিরে খুঁজে অতীতের স্মৃতি এবং সত্যিকারের রাইডারকে। পরিচয় হয় টিনা ক্রমওয়েলের সাথে। পিছু তাড়া করে আসে কুচক্রী স্ত্রী পওলিন এবং স্নাইপার বব।
লুটতরাজ বইতে প্রথমবারের মত কাজি মাহবুব হোসেন মূল চরিত্রে নিয়ে আসলেন কোন মহিলাকে, টিরেসা জেমস, চেরোকী ট্রেইলে স্টেজ স্টেশন চালাতে এসেছেন তিনি স্বামী খুন হয়ে যাবার পর। ভয়ঙ্কর আউট-ল, গেরিলা এবং ইন্ডিয়ানদের মোকাবেলায় কিভাবে তিনি দারুণ ভাবে সক্ষম হলেন তারই বর্ণনা লুটতরাজের পাতায় পাতায়।
আর ছিল টম প্রেস্টনের বুনো পশ্চিম, কিভাবে বারো বছরের এতিম হওয়া টম পরিণত হলে বিখ্যাত বন্দুকবাজে, পরিচয় হত লিজার সাথে, এবং উদ্ধার করল তাকে পুরনো বন্ধু কাম শত্রুর হাত থেকে তারই শিহরন জাগান গল্প। এখানে পরিচয় হয়েছিল প্লুটার্ক নামে বইয়ের সাথে, যা টম চারবার পড়েছিল।
আলীমুজ্জামানের মরুসৈনিকে আবার দেখা মিলল এক বাঙালী নায়কের, যার নাম ইয়াসীন হলেও বান্ধবী বেলিন্দা তাকে সিন বলেই ডাকে। অবশ্য তার সেই পশ্চিমযাত্রা কিভাবে সম্ভব হল তার ভাল উত্তর মিলে নি এখনও। বইটার একটা সংলাপ দারুণ পছন্দ হয়েছিল- ‘দুঃসময় কাউকেই খুব বেশি সময় দেয় না।‘
ছিল নানা সময়ে রহস্য পত্রিকায় প্রকাশিত অপূর্ব সব ওয়েস্টার্ন ছোট গল্প, যার কিছু প্রকাশিত হয়েছিল গল্প সংকলনে।
এমন ভাবেই মানস লোকের নায়ক হয়ে ওঠেন স্যাডেন শেভলিন, সাবাডিয়া, এরফানে জেসাপেরা।
সেবার সেই কিংবদন্তীর লেখকদের অনেকেই আর প্রকাশনীটির সাথে জড়িত নেই, বিশেষ করে কাজি মাহবুব হোসেন না ফেরার দেশে একেবারে চলে যাওয়ায় অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে আমাদের, এখনও ওয়েস্টার্ন সিরিজের বই বাহির হয় নিয়মিতই, কিন্তু সেগুলো পাঠকদের সেই অজানা অদেখা বুনোপশ্চিমের জীবনের প্রতি স্বপ্নালু করে তোলে কিনা তা বলতে পারবে বর্তমানের পাঠকেরা।
আমি বুঁদ হয়ে ছিলাম, আছি এবং থাকব ক্ল্যাসিক ওয়েস্টার্নগুলোতে, এবং সারা জীবনই মনে হয় আফসোস করেই যাব তাদের মূল চরিত্রগুলোর মত জীবন অতিবাহিত না করার জন্য।
মন্তব্য
এরফান , এক প্রকার আইডল ই হয়ে আছে আমার, সেদিন ফেসবুকে একজন ব্লগার চ্যাটে বলছিলেন তিনি টেক্সাসে থাকেন, সাথে সাথে জিজ্ঞেস করে ফেললাম সেখানে কি কাউবয় থাকে? প্রেইরী গুলার ছবি আছে কি ? র্যাঞ্চে গিয়েছেন কখনো ?
"সেবা" কে অসংখ্য ধন্যবাদ , এই বই গুলোর সাথে আবার ও পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য , আর ধন্যবাদ আপনাকেও ভাইয়া অনেক নাম না জানা বই এর নাম দেবার জন্য।
অনেক বইয়ের নাম দেওয়া হয় নি, পরে কোন দিন আবার হয়ত---
facebook
সত্যিই কাজি মাহবুব হোসেনদের চলে যাওয়ার পর তেমন একটা সাড়া জাগানো কোন লেখক পেলুম না। এখনকার লেখক দের মাঝে গোলাম মওলা নইম কে ভালো লাগে আমার।
বাহ, নিকটা তো বেশ!
facebook
অসাধারন লেখা।।।।।।। জীবনে পড়া প্রথম ওয়েস্টার্ন ছিল 'নীলগিরি' সেই ১৯৯২ সালে তখন পরি ক্লাস ফাইভে-সে যে কি অনুভূতি,অ্যালান ওসমানকে কি যে ভাল লাগত নিজেকে মনে হত রেবেকা । লেখাতা পড়তে যেয়ে সেই সময়ের কথা মনে পড়ল।
তখন নিষ্ঠুর, কদর্য আউট-ল রাও যে কাজ করতে ভয় পেত এখন তা সাধারন ব্যাপার- দেশ এগিয়ে যাচ্ছে , কি বলেন?
ভালো তো, ভালো না
facebook
"কে হায় হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালবাসে!"
আপনি বাসেন, সবাইকে টেনে নিয়ে কৈশোরের টাইম মেশিনে ফেলে মজা দেখছেন!!!
আহা সেই সব দিন!!!!
হ, আমার তো আর মন নাই
facebook
আমার ওয়েস্টার্ন পড়ার শুরু ১৯৮৩ সালেই, জ্বলন্ত পাহাড় দিয়ে। জ্যাকব রাইট দিয়ে শুরু, জেসাপ আর ওসমানরা আমার কাছে পরে এসেছে। মরুসৈনিক বা জলদস্যু একেবারেই ভিন্ন মাত্রার জিনিস। যে পড়েনি তাকে বোঝানো যাবে না। সেবার ওয়েস্টার্ন না পড়লে স্ট্যালিয়ন, মাসটাঙ, আপালুসা, বে এইসব প্রজাতির ঘোড়া, অ্যাপাচি, চেরোকি, শিউ, শাইয়্যান এইসব আদিবাসী জাতির কথা জানতে আমার আরো অনেক সময় লেগে যেতো। পশ্চিমের জীবন, পোশাক, খাবার, আচরণ, আইন এগুলো জানতেও বহু বছর লেগে যেত। সেবার বই না পড়লে কী ক্ষতি হতো সেটা বাংলাদেশে থেকে যে বেকুবরা সেবার বই পড়েনি তাদের মাথায় ঢুকবে না। একই কথা সেবার ওয়েস্টার্নের জন্য আরো প্রযোজ্য।
পশ্চিমের লোকেদের কথায় কথায় আগ্নেয়াস্ত্র বের করার মধ্যেও নিজস্ব আইন ও তার কঠোর প্রয়োগের কথাটা ভালোভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন আ সা ও কারনী স্যার। তিনি অকপটে স্বীকার করতেন তাঁর ওয়েস্টার্নপ্রীতির কথা। স্বাধীনতার পশ্চিম যে আসলে স্বেচ্ছাচারের পশ্চিম নয় সেটা একটু একটু বুঝতে শিখেছিলাম। তবে পরে অন্য ব্যাখ্যাগুলোও বুঝতে শিখেছি।
সেবার ওয়েস্টার্ন পড়ে স্কুল পড়ুয়া আমরা কয়েকজন ভাবতাম বড় হয়ে আমরাও ওয়েস্টার্নের আদলে গল্প লিখবো উত্তর নেত্রকোনা এলাকার মোষের রাখালদের নিয়ে, মঙ্গোলিয়ার (ইনার আর আউটার দুটোই) তৃণভূমির ভেড়া পালনকারী মানুষদের নিয়ে, মধ্য এশিয়ার পশুপালকদের নিয়ে। যাকগে, শুধু ইচ্ছে থাকলেই তো হয় না, তার সাথে যোগ্যতা লাগে। তাই আমাদের কারো আর কাজী মাহবুব হোসেন, খোন্দকার আলী আশরাফ বা রওশন জামিল হয়ে ওঠা হয়নি।
কয়েক বছর আগে এক বন্ধুর কাছে কাজী মাহবুব হোসেনের প্রয়াণের কথা শুনে বলে উঠেছিলাম, "আহা! এতো অল্প বয়সে তিনি চলে গেলেন"! বন্ধুটি উত্তর দিলেন, "খুব অল্প বয়স নয়, ষাট পার হয়েছিলেন"। বন্ধুটিকে কী করে বোঝাই কাজী মাহবুব হোসেন তো আমার কাছে এরফান জেসাপের মতো চির তরুণ। তিনি কি ষাটোর্ধ্ব বৃদ্ধ হতে পারেন!
তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।
আসলেই দাদা ! কাজি মাহবুব তো টেক্সাস যেয়ে ঘোড়ায় চড়াও শিখেছিলেন, কী একা শুটিং প্রতিযোগিতায় প্রথমও হয়েছিলেন । ঘোড়া, পিস্তল, আদিবাসীসহ অনেক কিছুর নামই বাদ পড়ে গেছে, আপনি কিছু একটা লিখবেন আশা করি।
facebook
পান্ডব দা'র ঝাড়ি খেয়ে ইদানিং দেইনা - কিন্তু দেখেন উনি এবারো একি কাজ করেছেন - আরে আমিও কিন্তু স্ট্যালিয়ন, মাসটাঙ, আপালুসা নাম জানতাম না সেবা ছাড়া !
সেবা!
facebook
আমার ওয়েস্টার্ন পড়ার ইতিহাস খুব বেশি নেই । তবে ওয়েস্টার্ন পড়ার সময় এক ধরনের অস্থিরতা কাজ করে । এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করে । পড়তে পড়তে বর্ণিত বর্ণিল অচেনা জায়গাগুলোতে হারিয়ে যাই । জায়গাগুলিকে বড় চেনা মনে হয় ।
অনেক চমৎকার একটা পোস্ট, যা আবার ওয়েস্টার্ন পড়বার তৃষ্ণা জাগিয়ে দিল _
বাহ ভাল বলেছেন হারিয়ে যাওয়ার মাঝেই তো খুঁজে পাওয়ার আনন্দ
facebook
সাবাডিয়াকে প্রথম পেয়েছিলাম প্রত্যয় বইয়ে - তারপর গোগ্রাসে শেষ করেছি বাথান, সন্ধান আর ছায়াশত্রু - এখনও মানসপটে ঘোরাফেরা করে সাবাডিয়া।
রওশন জামিলের জলদস্যু আর নীলগিরি পড়ে রাগ লেগেছিল প্রথমে - ওয়েস্টার্ন উপন্যাসে এগুলো কী! পরে বসতি এবং তার পরের বইগুলো বের হলে বুঝলাম সেই সময়টাকে পরিপূর্ণ ভাবে উপলব্ধি করতে হলে এই ব্যাকগ্রাউন্ড ইনফর্মেশনের কতটা প্রয়োজন ছিল!
আসাদুজ্জামান সম্ভবত একটাই ওয়েস্টার্ন লিখেছিলেন, নাম ভুলে গেছি। নায়ক ছিল যতদুর মনে পড়ে একজন মার্শাল আর তার বন্ধু বেন। অসাধারন লেগেছিল বইটা। কী সব ডায়ালগ - মার্শালকে মিথ্যে ফাঁসি থেকে বাঁচানোর সময়ে বেনের কথা - "তোমাদের এই কেসে আমিই আছি লাশের ভূমিকায়। কারো যদি সন্দেহ থাকে, তবে জ্যান্ত লাশের খেলা দেখতে পাবে সে"। অথবা মার্শালের সাথে হাতাহাতি লড়াইয়ের সময়ে ভিলেনকে এগিয়ে গিয়ে মার দেয়ার উপদেশ দেয়ায় সে খেপে গিয়ে এক দর্শককে বলেছিল - " 'চুপ! আমি লড়ছি না তুমি!' -বিতৃষ্ণ জবাব এলো 'মার্শাল' " । হা হা হা।
ঠিক তেমনই ভালো লাগা একটা বই ছিল মরুসৈনিক। প্রথম প্যারায় মরূভূমির দুর্দান্ত বর্ননা - "উপরে নির্বাক নীল আকাশ। নীচে ধু ধু মরূভূমি। মোযেভ মরূভূমি। আজন্ম তৃষিত এক নিষ্ঠুর প্রান্তর" (কাছাকাছি কিছু)। এমন এক চুম্বকীয় টানে টেনে নিলো প্রথম প্যারাটাই - আর নামাতে পারলাম না হাত থেকে বই শেষ না হওয়া পর্যন্ত! লেখক বোধহয় আর কোন ওয়েস্টার্ন লেখেন নি।
আর এরফান - আহ এরফান! আর কিছু কী বলা লাগে?
ঠিক সেই রকমই বলি - আর তারেক অনু, আহ তারেক অনু! আর কিছু কী বলা লাগে?
শেষ লাইনটা বাদে পুরো মন্তব্যে
আহা, কিসব কথা, কত শত স্মৃতি!
facebook
'তৃণভূমি'ই প্রথম পড়েছিলাম । এরপরে রক্তাক্ত খামার, ভাগ্যচক্র, ধোঁকাবাজ, বন্দী অপ্সরা ... স্কুলে পাঠ্য বইয়ের মাঝে সেবা প্রকাশনীর বই লুকিয়ে পড়ে নাই এমন মানুষ এখানে পাওয়া যাবে না । বইগুলোর সাইজটাও কেমন লুকানো-বান্ধব ! আহারে ছেলেবেলা !
লুকানো-বান্ধব
facebook
লুকানো-বান্ধব
দারুণ!
facebook
আমার কাছে সেবার পুরনো বইগুলো মানেই আমার বাবার স্মৃতি ! 'রানা-ওয়েস্টার্ন-রহস্য পত্রিকা-অসামান্য সেবা অনুবাদ' বাসায় বাবা আর মা গোগ্রাসে গিলতেন ! আমি শুরু করি একটু দেরিতেই, তখন আমি প্রথম শ্রেণী, তখন আমি ৫! যেদিন কলেজ ছুটি হত সিলেট থেকে সবার সাথে ট্রেনে ওঠার পর এই বগি সেই বগি ঘুরতে ঘুরতে দেখতাম আমার আমৃত্যু তরুণ আব্বু (লিটেরেলি-মেটাফোরিক্যালি) ট্রেনেই গায়ে চাদর জড়িয়ে বসে আছে হাতে একটা রানা নয়তো রহস্য পত্রিকা নিয়ে । ছেলে বাড়ি ফিরলে হয়ে যাবে মায়ের আর নাহলে মাঠের, এই ফেরার পথটুকুই তো সম্বল !
শিবের গীতটাই হল, আর ধান ভেনে সময় নষ্ট না করি । তবে হ্যাঁ, এখনকার লেখকদের ভেতর গোলাম মওলা নঈম বোধহয় সবচেয়ে ভালো লেখেন।
ক্যালকিন নামেও হিরো ছিল না?
facebook
হ্যাঁ । গোলাম মাওলা নাঈমের ।
facebook
সেবা'র এই সিরিজ টা কেনও জানি কখনওই পড়া হয়ে ওঠে নি... এবার চেখে দেখতেই হবে
চাখুন এবং চাখান
facebook
যতদূর মনে পড়ে, আমার যৌবনেই প্রথম সেবা প্রকাশনীর 'ওয়েস্টার্ন' বই বের হয়। ওয়েস্টার্নের প্রায় সব বই-ই পড়েছি। যশোরে আমার খালার বাড়িতে এখনও একটা কাঁচের আলমারীতে সেবার বইগুলো রাখা আছে। সেখানে গেলে অবসরে সেবার ওয়েস্টার্ন সিরিজের বইগুলোই পড়ি আর যৌবনের সেই উন্মাদনা অনুভব করি।
ধন্যবাদ আপনাকে, এরকম একটা লেখার জন্য। কিছুক্ষণের জন্য বয়সটা ভুলে গিয়েছিলাম।
আপনি তো চিরতরুণ! বয়স একটা ভ্রান্ত ধারণা!
facebook
আহ, সেই পুরোনো ওয়েস্টার্ন। এখনও পড়তে বসলে কিশোরকালের রোমাঞ্চই অনুভব করি। এখনও ক্যাম্পফায়ার ঘিরে বসে টিনের মগে কফি গরম করে বৃথাই অনুভব করার চেষ্টা করি এরফান- ওসমান দের।
এবং পুরনো বইগুলো নিয়ে মাঝে মাঝে বসলে বুঝতে পারি এখনও বুড়া হয়ে যাইনি।
বেশ কিছু প্রিয় বই মিস হয়ে গেছে অনু'দা - আর একটা পর্ব লিখেন।
অবশ্যই, অনেক অনেক মিস গেছে, হাতের কাছে নেই যে! অন্যরাও লিখবেন আশা করি।
facebook
ভাল লেখা। অনেক কথা মনে পড়ল। সঙ্গে অনেক পুরোন মানুষকেও। আসলেই কী এমন বয়স হয়েছিল নুরু ভাইয়ের! রবীন্দ্রনাথকে কি একাশিতেও তরুণটি মনে হয় না? ভাল ওয়েস্টার্ন এখনও টানে আমাকে। তবে ভাল ওয়েস্টার্নের বেজায় আকাল এখন। শুধু টানটান উত্তেজনা, অ্যাকশনই তো সব না, মানবীয় ব্যাপারস্যাপারগুলোর বড্ড অভাব। অভাব প্রকৃতির, বুনো পশ্চিমের প্রকৃতির যে নিজেই এক দুর্জ্ঞেয় চরিত্র। স্মৃতিকাতর করার জন্য লেখককে কৃতজ্ঞতা।
উনার চলে যাওয়া একটা বিশাল অমোচনীয় ক্ষতি
facebook
রওশন জামিল ভাই, আপনি নিজে থেকে এসে এই সামান্য পোষ্ট পড়ে আবার মন্তব্য করেছেন তাতেই খুশীতে ঘোড়ায় চেপে তেপান্তর পাড়ি দিতে ইচ্ছে করছে। হাতের কাছে বিধাতা বইটা নেই, থাকলে সেখান থেকে অনেক কোট করতে পারতাম, আশা রাখি আপনার ভিন্ন ধাঁচের ওয়েস্টার্নগুলো নিয়েই ভবিষ্যতে আবার লিখতে পারব।
যদি আপনি নিজেই লেখেন, তাহলে তো সোনায় সোহাগা --
facebook
অণু, তেপান্তর পাড়ি দেয়ার ইচ্ছা আমারও যায়। এবং সুযোগ পেলে দিইও। যদিও কল্পনায়। আগামীতে ওসমান পরিবার নিয়ে একটা স্মৃতিময় লেখা তৈরি করবার ইচ্ছে আছে। সুযোগ পেলেই বসব। ভাল কথা, কাজীদাকে নিয়ে করা আপনার ভিডিও চিত্রটাও এনজয় করেছি। ওই মানুষটির কথোপকথন ভঙ্গির সঙ্গে আমার এত বেশি পরিচয়, মনে হচ্ছিল সামনে বসে আছি। ভাল থাকবেন আপনারা সবাই।
আহা, সেই লেখার অপেক্ষায় থাকলাম! দারুণ হবে
facebook
রওশন জামিল আপনাকে সচলায়তনে লিখতে দেখলে আমাদের খুব ভালো লাগবে। স্মৃতিচারণ, গল্পের পেছনের গল্পগুলো পড়তে পারলে অনেক ভালো লাগবে।
১০০% সহমত
facebook
খিয়াল কৈরা হোটেলের নাম শুরুতেই স্যামস ইন
facebook
জটিল লাগলো হে ব্যানার জী
facebook
অসাধারণ স্মৃতি নিয়ে অসাধারণ লেখা।
রু
facebook
প্রথম দিকের ওয়স্টার্নগুলি প্রায় সবই গোগ্রাসে গিলেছি, কিন্তু এক সময় এসে কেন জানি আগ্রহ কমে যায় - একঘেয়ে লাগতে থাকে, মনে হয় মান পড়ে যাচ্ছে। ছেড়ে দেই শেষমেশ বিরক্ত হয়ে।
তবে আপনার লেখাটা জম্পেশ হয়েছে!
****************************************
আসলেই, মাস্টারপিসগুলো আগেই রূপান্তর হয়ে গেছে, সেগুলোই পড়ি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
facebook
ওয়েস্টার্নের সাথে পরিচয় "ভাগ্যচক্র"-র মাধ্যমে। এরফান কে জেনেছি প্রথম "ডেথ সিটি" তে। কাজি মাহবুব হোসেন চলে গিয়েছেন তা জেনেছি অনেক পরে; কতবার যে তার নতুন বই খু্ঁজেছি আর নিরাশ হয়ে ঘরে ফিরেছি!
অনেক অনেক ধন্যবাদ রকিব হাসানের বইগুলোর কথা জানানোর জন্য।
আর আজ যে চরিত্রগুলো সম্বন্ধে নতুন জানলাম, তাদের বইগুলো পড়তে প্রচণ্ড আগ্রহ হচ্ছে।
একটা অনুরোধ রইল। এরফানের সব বই পড়েছি কি না জানি না। কেউ কি এরফানের সব বইগুলোর নাম বলতে পারবেন?
আর ছিল অ্যারিজোনায় এরফান, মৃত্যুর মুখে এরফান, তাহলে হচ্ছে ৬ টা, বাকিগুলো খবর নিয়ে বলতে হবে। দেখা যাক অন্যরা কী বলেন---
facebook
১। আলেয়ার পিছে
২। আর কতদূর (এরফানের ছেলে জিমকে নিয়ে লেখা, তবে এরফানও ছিল)
৩। ডেথসিটি
৪। আবার এরফান
এর পরেরগুলো কেমন যেন পানসে হয়ে গেছিল -
৫। অ্যারিজোনায় এরফান
৬। মৃত্যুর মুখে এরফান
এই ৬টার পরে আর আছে কি?
facebook
নতুন মন্তব্য করুন