তিব্বত-নেপালের সীমান্তে এককালের নিষিদ্ধ রাজ্য খ্যাত মুসটাং-এ ট্রেকিং করে কালীগণ্ডকী নদীর দিকে নামছি, পথের পাশে দেখা মিলল এক নির্ভীক চঞ্চল চড়ুইয়ের, উড়ে বেড়াচ্ছে পথের ধারের ঝোপগুলোতে, কিন্তু কী যেন একটা আলাদা ব্যাপার আছে তার চকচকে মসৃণ পালকগুলোতে। কেমন হলদে রঙের, সাধারণ চড়ুইয়ের চেয়ে আলাদা। হাইকিংরত পাখিবিশেষজ্ঞ ইনাম আল হককে পাখিটি দেখাতেই এক গাল হাসি দিয়ে বললেন- এই পাখিটিই তো সালিম আলীকে সালিম আলী করে তুলেছিল!
ছোট্ট সালিম আলী মনের সুখে পাখি শিকার করতেন এয়ারগান দিয়ে, তার গুলিতে ঘায়েল হয়েছিল এক আজব ধরনের চড়ুই, সেটার মাংস হালাল কিনা তা জানার জন্য পকেটে নিয়ে সোজা চলে গেলেন চাচা আমিরুদ্দিনের কাছে, তখন ১৯০৮ সাল, আমিরুদ্দিন ছিলেন বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির আদি সদস্যদের একজন, তারই সুপারিশপত্র দুরুদুরু বুকে নিয়ে বালক সালিম দেখা করলেন সোসাইটির সেক্রেটারি জনাব মিলার্ডের সাথে। মিলার্ডের অমায়িক ব্যবহারে সালিম বুঝলেন জগতের সব শ্বেতাঙ্গ এক ধরনের হয় না, যেমনটা তিনি শুনে এসেছেন, সেই সাথে প্রথম দর্শনেই পাখিটির ঠিকুজি জানা গেল Yellowthroated Sparrow ( Petronia xanthocollis),শুধু তাই না তিনি তার বিশাল সংগ্রহশালা উম্মুক্ত করে কৌতূহলী বালককে দেখালেন নানা ধরনের চড়ুই পাখি স্টাফ করা মৃতদেহ।
খুলে গেল তার মনের দরজা, শুরু হল এক নতুন যুগের – খামোখা এয়ার গান দিয়ে মনের সুখে গুলি করে বেড়ানো ব্যাদড়া বালক ঝুকে পড়লেন পাখি এবং প্রকৃতি নিয়ে বিশদ ভাবে জানতে, পরিণত হলেন ভারতীয় উপমহাদেশের সেরা পাখিবিশেষজ্ঞে। তারই কিচিরমিচিরে রচিত হয়েছে The Fall of A Sparrow, প্রকৃতির স্নিগ্ধ পরশ বুলানো সুখপাঠ্য আত্মজীবনী। গেলবার ঢাকাতেই পেয়েছিলাম অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসের ছাপা ইল্যুস্ট্রেটেড সংস্করণ, ভাষার সাথে সাথে আলাদা মজা জুগিয়েছিল অসাধারণ সব পাখির স্কেচ এবং অলঙ্করণ। সম্ভব হলে বইটি পড়ার সময় এই সংস্করণটাই জোগাড় করে নিন সামান্য ওড়াউড়ি করে !
৮৭ বছর বয়সে বইটি লেখা শুরু করেন ততদিনে চিরতরুণ পাখিবুড়ো উপাধি পেয়ে যাওয়া সালিম আলী। শৈশবের করে মনে করেছেন প্রথমেই স্মৃতির ঝাঁপি খুলে, যে ধূসর সময়ে প্রকৃতিসংরক্ষণ জিনিসটাই ছিল মাঝে মাঝে শোনা বিরল একটি বিষয়, বাজারে কোয়েল, তিতির ইত্যাদি ধরনের পাখি বিক্রি হতো প্রচুর, শিকারের অভাব ছিল না কোথাও। পাখি নিয়ে উপমহাদেশে কাজ শুরু করেছিলেন যে ব্রিটিশ সাহেবেরা তাদের বালকজীবনে শখের বসে পাখি ডিম সংগ্রহ করা ছাড়া এমন কোন অভিজ্ঞতা ছিল না, কিন্তু উপমহাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য, অঢেল সময় এবং একাকীত্বের সদ্ব্যবহারের জন্য অনেকেই এই বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হন, এবং গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ করেন।
সালিম আলীর মনের পর্দায় ভেসে ওঠে স্কুলজীবনের নানা রঙের দিনগুলি, তিনি মাঝারি মানের ছাত্রই ছিলেন, গৎবাঁধা লেখাপড়া তাকে আকৃষ্ট করতে পারে নি কখনোই, তাই ১৯৩৪ সালে প্রকাশিত ভারতীয় লেখকদের বাছাইকৃত রচনা নিয়ে প্রকাশিত বইয়ে নিজের লেখা দেখে বেশ অবাক হয়েছিলেন, বিশেষ করে যেখানে ঠাই পেয়েছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সরোজিনী নাইডুর রচনাও! নানা অসুখের ভুগে লেখাপড়ায় কিছুটা ছেদ ঘটে তার, অবশেষে ১৯১৩ সালে বম্বে বিশ্ব –বিদ্যালয়ের অধীনে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন তিনি। নানা রোমাঞ্চকর সত্য কাহিনী পড়ে তখন পর্যন্ত জীবনের লক্ষ্য ছিল বিখ্যাত একজন শিকারি হওয়া ( বিগ গেম হান্টার) কিন্তু বাড়ীতে নানা ধরনের পাখি পোষা এবং প্রকৃতিতে পাখি দেখার নেশা থেকেই সিদ্ধান্ত নেন সম্ভব হলে জীববিজ্ঞানকেই পেশা হিসেবে নিবেন জীবনে। ১৯১৪ সালে তিনি বার্মা গমন করেন, মূলত এক আত্মীয়ের সাথে জীবিকা অর্জনের তাগিদে ব্যবসা করার জন্য।
সেই ৩ বছরের স্মৃতির কথা বলেছেন পাহাড়ি ঝর্ণার উচ্ছলতায়, বিশেষ করে নানা ধরনের রঙচঙে বার্মিজ পাখি দেখা অভিজ্ঞতা ( যদিও তার দূরবীন ছিল না তখনও), মজার ব্যাপার হচ্ছে সেই বিদেশবাসের দীর্ঘ ৬০ বছর পরেও সালিম আলী পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পাখিগুলো কোন স্থানের, কোন গাছের কোন ডালে কিভাবে বসেছিল তা মনে করতে পারেন! স্মৃতি বড় রহস্যময়। বার্মার সেই চমৎকার বাড়ীতে স্ত্রী তাহমিনার সাথে নতুন জীবন শুরু হয় তার, সাথে যোগ দেয় বার্মিজ রূপালি ফেজ্যান্ট পাখির সংগ্রহ করা ডিম ফুটিয়ে বাহির হওয়া ছানা, বনবেড়াল, গাছছুঁচো, উড়ন্ত লিমার, পাকরা ধনেশ। তেহমিনা এবং সালিম একসাথে কিন্ডারগার্টেনে পড়তেন শিশুকালে, পরবর্তীতে তাহমিনা বাবার সাথে অনেক বছর বিলেতে কাটিয়ে ভারতবর্ষে ফেরেন। অনেকটা পারিবারিক ভাবেই তাদের বিয়ে হয় ১৯১৮র ডিসেম্বরে, সালিমের বয়স তখন মাত্র ২২! স্ত্রী সম্পর্কে উজ্জল স্মৃতিচারণ করছেন তিনি- তাহমিনা ভালবাসতেন বই, কবিতা ( উর্দু এবং ইংরেজি), প্রকৃতিতে হাঁটতে, ফুল, বাগানের পরিচর্যা , এবং স্বামীর কাজের সময় পাখি নিয়ে আসলেই উৎসাহী হয়ে উঠেছিলেন।
এর মাঝে সালিম বুঝতে পারেন যে প্রাণীবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করতে হলে সেই বিষয়ে তার প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকা খুব জরুরী, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান রেভারেন্ড ব্ল্যাটার এবং শিক্ষক প্রফেসর মুল্লানের উৎসাহে ১৯১৭ সালে প্রাণীবিদ্যার উপরে বি এস সি পাশ করেন।
এরপরে তার যাযাবর জীবন এবং পাখিদের পরিযায়ী যাত্রা নিয়ে নানা স্থানের, নানা মানুষের বর্ণনা, পাখির পালকের মতই রং ঝলমলে তার জীবন- আসে বোম্বে জীবনের প্রতিবেশী কবি সরোজিনী নাইডুর কথা, নাইডু মহাত্মা গান্ধীকে মাঝে মাঝেই মিকি মাউস বলতেন মজা করে, গান্ধীও দাঁতহীন মুখে বিশ্বের উজ্জলতম হাসি দিয়ে বন্ধুর সম্বোধনকে সাদরে বরণ করতেন), আসে বিখ্যাত প্রাণী বিজ্ঞানী ডিলন রিপ্লে, হিউ হুইসলার, মেইনারহাগেনসহ অনেকেই এবং সালিম আলীর গুরু বার্লিন বিশ্ব-বিদ্যালয়ের প্রফেসর আরউইন স্ট্রেসমান, যার সার্বিক তত্ত্বাবধানেই সালিম আলী সত্যিকারের পক্ষীবিজ্ঞানী হয়ে ওঠা শুরু করেন, বার্লিনের জীবনকেই পরবর্তীতে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় টার্নিং পয়েন্ট বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
আর আছে ভ্রমণের গল্প, শুনেছিলাম অশীতিপর অবস্থাতেও চিরতরুণ মনের অধিকারী মানুষটি হিমালয়ের নানা দুর্গম স্থানে বিলুপ্ত গোলাপি মাথা হাঁসের অভিযান চালাতেন। তার উল্লেখ না পেলেও মোটরসাইকেল করে তার ভারত থেকে সুইডেন গমন, হিমালয়ের নানা কোণে কোণে অগুনতি অভিযান, আফগানিস্তানে পাখির খোঁজে, ফ্ল্যামিঙ্গোর সন্ধানে রান এলাকায়, ভরতপুর, ভাওয়ালপুর, লাদাখ ইত্যাদি স্থানের বর্ণনায় প্রকৃতি সম্ভোগে অক্লান্ত মানুষটির ভ্রমণপিপাসু সত্ত্বার পরিচয় মেলে।
সেই সাথে তিনি ছিলেন ভারতবর্ষের প্রথমদিকের একজন নেতৃত্বস্থানীয় প্রকৃতিসংরক্ষণবীদ, যথেচ্ছ শিকারের বিরোধিতা করেছেন সবসময়ই, সারগুজার মহারাজার কথা উল্লেখ করে বলেছেন যখন রাজাকে প্রশ্ন করেছিলেন জীবনে কতগুলো বাঘ মেরেছেন? উত্তরে বেশ দুঃখ নিয়ে মহারাজা বলেছিল মাত্র ১১৪০টি! আরও বাঘ কেন হত্যা করতে পারেন নি সিএ নিয়ে তাকে যথেষ্ট দুঃখিত দেখাচ্ছিল। বলেছেন সেই মহারাজারই এক জ্ঞাতি ভাইয়ের কথা যার গুলিতে উপমহাদেশের শেষ বুনো চিতাটি ইতিহাস হয়ে মুছে যায় প্রকৃতি থেকে। সালিম আলী চেষ্টা করেছেন স্বাধীন ভারতে যত বেশি সম্ভব প্রকৃতি সংরক্ষণ করতে। সেই সাথে নানা সময়ে প্রাপ্ত পুরস্কারের অর্থ থেকে চেষ্টা করছেন বুনো পশুপাখির জন্য অভয়ারণ্য তৈরি করে রক্ষা করার।
(১৯৮৭ সালে ৯১ বছর বয়সে না ফেরার দেশে উড়ে যান তিনি, তার নামে নামকরণ করা হয়েছে Rock Bush Quail (Perdicula argoondah salimalii), Finn's Weaver (Ploceus megarhynchus salimalii এই ২ পাখির এবং বিশ্বের বিরলতম বাদুড়দের একটির Latidens salimalii, , সেই সাথে তার স্ত্রী তাহমিনার নামে নাম রাখা হয়েছে একটি কাঠঠোকরার Black-rumped Flameback Woodpecker (Dinopium benghalense tehminae) , জম্মু কাশ্মীরে উনার নামে ন্যাশনাল পার্কের নামকরণও করা হয়েছে, আছে উনার নামে হ্রদসহ অনেক কিছুই। মৃত্যুর বছর দুই আগে ১৯৮৫ সালে তার চিত্তাকর্ষক আত্মজীবনীটি প্রকাশিত হয়। যদিও ইল্যুস্ট্রেটেড সংস্করণটি ২০০৭সালে প্রকাশিত। ব্যবহৃত ছবিগুলো সালিম আলী বিষয়ক ওয়েবপেজ থেকে নেওয়া এবং তার নাম বিষয়ক তথ্যগুলোও।
আমার জানা মতে ঢাকা বিশ্ব-বিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ডঃ আলী রেজা খান, ডঃ আনোয়ারুল ইসলাম সালিম আলীর তত্ত্বাবধানে পি এইচ ডি অর্জন করেছেন। ডঃ রেজা খানের ( বর্তমানে দুবাইতে অবস্থানরত) একাধিক লেখাতে সালিম আলীকে নিয়ে চমৎকার স্মৃতিচারণ পড়েছিলাম। ডঃ আনোয়ারের সাথে সামনাসামনি সাক্ষাতেই তিনি উচ্ছসিত ভাবে বলেছিলেন তার প্রিয় শিক্ষকের কথা। )
বইয়ের শেষ অধ্যায়ে নিজের হিমালয়প্রেম বর্ণনা করেছেন প্রিয় পাখিবুড়ো এভাবেই-
From my boyhood days, and long before I had ever set eyes upon them, I had a romantic craving for the Himalaya and often day-dreamed that in later life, if I ever got the option of choosing a place to settle in, it would most certainly be somewhere among the foothills of the Himalaya where I would have at my doorstep, as it were, all the things that mattered most to me- beautiful forests, magnificent scenery, good birding, trekking in the mountains and plenty of opportunities for game shooting and naturalizing. What could be more idyllic?
( এই পোস্টটি বাংলাদেশের দুই তরুণ পাখি গবেষক সামিউল মোহসানিন এবং সায়েম ইউ চৌধুরীর জন্য। বিরল পাখি নিয়ে তাদের মুল্যবান গবেষণা এবং দেশে-বিদেশে কাজের অভিজ্ঞতা সম্বলিত সাক্ষাৎকার আসছে শীঘ্রই সচলায়তনে, চোখ রাখুন নীড়পাতায়--)
মন্তব্য
facebook
পাখি ও প্রকৃতিপ্রেমী মহান এই মানুষটিকে অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে শ্রদ্ধা !
আপনাকেও ধন্যবাদ, অণু ।
facebook
খুব বেশি সুন্দর একটা পোস্ট!
রু
তাই নাকি !
facebook
ফেইসবুক
---------------------------------------------
এক আকাশের নীচেই যখন এই আমাদের ঘর,
কেমন ক'রে আমরা বলো হতে পারি পর. . .
facebook
পুরানো সালীম আলী প্রেম জাগিয়ে তুললেন। মিজানুর রহমানের ত্রৈমাসিক পত্রিকার পক্ষী সংখ্যাতে সালীম আলীকে নিয়ে রেজা খানের একটা লেখা আছে। "সালীম আলীর সাথে কিছু সময়"। সালীম আলীর লেখার একটা অনুবাদ ও আছে ঐ বইতে। পক্ষী সংখ্যা পড়ে বইপত্র যোগাড় করেছিলাম এনার। আত্মজীবনীটা এখনো পড়া হয় নাই। পড়ার খুব আগ্রহ জাগলো।
একটু অপ্রাসঙ্গিক। পক্ষী সংখ্যাতে আরো অনেক ভালো লেখার মধ্যে একটা লেখার কথা এখনো মাথায় রয়ে গেছে। হুমায়ুন আজাদের লেখা ছোট্ট একটা প্রবন্ধ 'আমার পাখিরা'।
মনে পড়েছে, মনে পড়েছে ! কী দারুণ একখান সংখ্যা ছিল সেটা! আহা !
facebook
আহা ! 'আমার পাখিরা' ! "... ছেলেবেলায় আমার আরো কতো পাখি ছিল । যখন আমি ট্রাকের শব্দে বধির হই, নগরের মুখ দেখে দেখে অন্ধ হই, তখন কান পেতে রই বাল্যকালের দিকে, চোখ মেলে ধরি ছেলেবেলার দিকে । পাখিদের ডানার রঙে, আর তাদের কলরবে আমার চোখ ঠাণ্ডা হয়, কান তৃপ্ত হয় । শুনতে পাই পাখি সব করে রব, শুনতে পাই পাখি সব করে রব; আমার কাননে কুসুমকলি ফোটে ।"
কী দারুণ লেখা ! হুমাতুন আজাদ অনন্য ।
facebook
এমাহ্ ! নামের বানানে এমন বাজে ভুল কেমনে করলাম ? হুমায়ুন আজাদ ! ছিঃ ! কী সাংঘাতিক ভুল
এখন ঠিক আছে
facebook
সালীম আলী নামটা কই শুনলাম, কই শুনলাম এইটা ঘুরতেছিলো পোস্ট দেখার পর থেকে। আপনার মন্তব্য দেখে সেটা মনে পড়লো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
আহ ! সেই পত্রিকা পড়ে?
facebook
লেখাটা ভালো লাগলো।
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
থ্যাঙ্কু বড়দা
facebook
সালীম আলীর কথা নানা জায়গায় নানা সময়ে শুনেছি! তার সম্পর্কে অন্যদের লেখা পড়েছি। কিন্তু তাকে জানান শ্রেষ্ঠ উপায় তার রচনা, সেটাই পড়া হয়নি। আশা করি, কোনো একদিন পড়ে নিতে পারবো হয়তো!
অবশ্যই
facebook
facebook
হলে থাকতে, কার কী হবি, তাই নিয়ে কথা হচ্ছে। তো এক বন্ধু বলে তার পাখি দেখার নেশা। তার কম্পিউটারে দুই তিন গিগাবাইটের একটা ফোল্ডার আছে, সেটা ভরা নাকি পাখিদের ছবি! পড়তে পড়তে মাথা গরম হলেই সে ঐ ফোল্ডার খুলে বসে। ভাবলাম আমরা যেমন "পাখি" দেখি সেও বুঝি তাই। আগ্রহ নিয়ে হাজির হলাম একদিন তার রুমে। সেও, আরেকজন ফেলো পাখিপ্রেমী পেয়ে খুবই উৎফুল্ল। কম্পিউটার খুলে নানান জাতের পাখির ছবি দেখাতে লাগলো। একেবারে প্রজাতি প্রাপ্তিস্থান, বৈজ্ঞানিক নাম সহ ক্যাটালগ করা। আমি কিছুক্ষণ আক্কেলগুড়ুম হয়ে বসে থাকলাম। সত্যিসত্যিই যে পাখি দেখা কারো নেশা হতে পারে সেইদিন প্রথম শিখলাম। একটা অ্যাড ছিলো না টিভিতে? "কালে কালে কত শিখবো খালা?" সেই রকম। তার কদিন আগেই ঝড় হয়ে জগন্নাথ হলের বেশকিছু চিল মারা গেছে। ও আফসোস করছিলো সেই ঘটনা নিয়ে। জগন্নাত হলের চিলগুলো আমারো প্রিয় ছিলো। উড়তে দেখতাম আকাশে, মাঠের উপরে। কিন্তু এত চিল এই ঢাকা শহরে থাকে কোথায় জানাম না। সেইদিন জানলাম। পাখিবুড়োর কথাও ওর কাছেই শুনি।
এই পোস্টটা দারুণ লাগলো। এমন বর্ণময় জীবন ভালো লাগে।
ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...
আমারো।
স্যাম দার ব্যানারের মত
facebook
সেই বন্ধু এখন কোথায়? দেশে থাকলে যোগাযোগ করিয়ে দিয়েন। দারুণ নেশা দেখি তার।
facebook
facebook
------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।
facebook
facebook
অণু ভাই অসাধারণ লেখা এক অসামান্য মানুষকে নিয়ে।
আমি এই বইটা যতবার পরি ততবার ই রোমাঞ্চ অনুভব করি। নতুন এডিশন এর বই বের হয়েছে জানতাম না। আজকেই কিনতে যাবো।
facebook
তারেকাণু ভাই! আপনার সৌজন্যে যে কত কিছু জানা হচ্ছে! শুধুমাত্র আপনার ফেসবুকে এবং ব্লগ অনুসরণ করে দুনিয়া দেখার খায়েশ মেটাচ্ছি।
বটতলার উকিল।
আরে কী কথা! বটতলা ছেড়ে চলেন বিশ্ব দেখি!
facebook
এই সালিম আলী আমার একজন খুব প্রিয় মানুষ। সেই ছোটোবেলা প্রথম যখন ছোটোদের পত্রিকায় পড়লাম এঁর কথা, মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তারও আগে, না জেনেই মনে হয় মানুষটাকে ভালোবেসেছিলাম, আরও অনেক ছোটোবেলা পড়তে শেখারও আগে, একটা ছবির বই দেখতাম, পাখির ছবিতে ভর্তি, মা পাখিগুলোর নাম পড়ে পড়ে দিতেন আর আমি ছবিগুলো দেখলে নামগুলো বলতাম। ঐসব পাখির ছবি সব সালিম আলীর তোলা, পরে জানতে পারি।
আপনার লেখা নিয়ে আর কী বলি, দুর্দান্ত ভালো।
-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -
সালিম আলী এক নতুন যুগের সূচনাকারী।
facebook
পাখীও যে গনণা করা হয়, সেটা ছোট বেলাতে প্রথমে জেনেছিলাম সালিম আলীর লেখা হতে। সে সময় মনে হতো উনার সাথে যদি বনে বাদাড়ে পাখী দেখতে যেতে পারতাম! আমি তখন ভেবেছিলাম উনি বাংলাদেশী
দেশ বন্ধু
নতুন মন্তব্য করুন