• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

বুদাপেস্টের আতঙ্কবাড়ী

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: সোম, ০২/০৯/২০১৩ - ৬:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

544525_10153155805495497_1478094835_n

আঁধার জগতে যাবার লিফট নামা শুরু করল পাতালের দিকে, কোমল অন্ধকার ঘিরে ধরল আমাদের দরজা বন্ধ হবার সাথে সাথেই, তার মাঝেই সামনের দেয়ালে ফুটে উঠল নীলাভ অশরীরী আলো, শূন্য থেকে ভেসে আসল যেন এক বৃদ্ধের করুণ বিলাপ- আমি ছিলাম এই কসাইখানার মেথর, বর্জ্য না, মানুষের মৃতদেহ আর জমাট বাঁধা রক্ত পরিষ্কার, এইটাই ছিল আমার কাজ। পার্টির কর্তারা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিতেন কে কবে খুন হবে, শেষ ইচ্ছা পূরণ ধরনের বিলাসিতার বালাই ছিল না, পরিবারের কাছে লেখা তাদের সমস্ত চিঠি ছিড়ে ফেলা হত, বিশেষ দয়া হিসেবে কাউকে মেরে ফেলার আগে কয়েক বেলা হয়ত দ্বিগুণ খাবার দেওয়া হত, ব্যস! সেইটাও অযাচিত ছিল আমাদের নরকে।
এরপরে অন্ধকারের দূতের মত কী করে পার্টির দেওয়া মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত, ফাঁসির মঞ্চে দাড় করিয়ে কিভাবে গলার চারপাশে এঁটে দেওয়া হত , জীবনে শেষ মুহূর্তগুলোর সঙ্গী নির্মম ঘাতকেরা তরতাজা মানুষকে প্রাণহীন বস্তুতে পরিণত করত – তার আবেগহীন বর্ণনা।

1150277_10153155800800497_311742932_n

বৃদ্ধর বক্তব্য শেষ হবার সাথে সাথেই আবার গাঢ় আঁধারে ডুবে গেল চারধার, সেই মুহূর্তেই লিফট এসে গেল গন্তব্যে, টিমটিমে আলোয় চললাম সবাই আতঙ্কবাড়ির নির্যাতন কেন্দ্র এবং ফাঁসিকাঠ দেখতে, কদর্য ইতিহাসের কিছুটা পঙ্কিলতা অনুভব করার জন্য।

1236256_10153155801150497_1051155197_n

২০০৮ সালে বুদাপেস্ট ভ্রমণের সময় প্রথম দেখেছিলাম এই কুখ্যাত জাদুঘর House of Terror, বাহিরের দেয়ালে সারি সারি সাদা কালো ছবি, ছবির নিচে নাম লেখা, কোন কোনটাতে আবার নাম লেখা কিন্তু ছবি নেই, ভয়াবহ কালো রঙে মুছে গেছে আস্ত মানুষটার অস্তিত্ব। শুনেছিলাম সেইটিই টেরর হাউজ, যা ছাদের দিকে তাকালে ধাতব পাতে খোঁদাই করা নামটা নজরে আসে,

1234236_10153155800725497_1119294191_n

1184819_10153155805755497_51154453_n

এই শতাব্দীতে হাঙ্গেরি জনগণ নিষ্পেষিত হয়েছিল নাৎসিদের হাতে, পরবর্তীতে কম্যুনিস্টদের হাতে ( স্বদেশের এবং রাশিয়ার), তারই কিছুটা চিত্র ধরে রাখা হয়েছে এইখানে, সেই সাথে বিশেষ ভবনটি অনেক বছর ব্যবহার করা হয়েছিল সোশ্যালিস্ট দলের প্রধান কার্যালয় এবং একই সাথে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো সচেতন মানুষদের নির্যাতনের জন্য, মাটির নিচের সেই বিশেষ ডানজনে কার্যকর করা হত সাজানো বিচারের পর মৃত্যুদণ্ড। সেবার তাড়ার কারণে যাওয়া হয় নি ভিতরে, তাই গত মাসে হাঙ্গেরিতে অবস্থানের সময় সুযোগ মেলার সাথে সাথেই আর ভুল হয় নি কালো ইতিহাস অবলোকনের সুযোগ।

1235058_10153155800730497_1827884022_n

আতঙ্কবাড়ীর টিকেট কক্ষের সামনে বেশ লম্বা লাইন, সাথেই একটি টিভিতে চলছে দুই হাঙ্গেরিয়ানের সাক্ষাৎকার, ইংরেজি টাইটেলসহ। চোখের জল মুছতে মুছতে বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলছেন তিনি- এত এত মানুষকে হত্যা করা হল! কিসের জন্য! কার লাভ হল এই নির্মমতায়? ১৬-১৭ বছরের কিশোরদেরও হত্যা করা হয়েছিল আলাদা ধরনের চিন্তা-ভাবনার জন্য, মতের সাথে মিল না হলেই খুন করেছিল তারা নির্বিচারে, এইই ছিল তাদের সোশ্যালিজম। কথার এক পর্যায়ে তিনি বললেন- সেই খুনিদের ক্ষমা হয়ত করে দিচ্ছি কিন্তু তাদের কাজ কখনোই ভুলব না। সাথের সঙ্গী বললেন- কেমন করে তাদের ক্ষমা করতে পার তুমি বা কেউ? ঘাড় নাচিয়ে শ্রাগ করে ভদ্রলোক বললেন- কাউকে না কাউকে তো ক্ষমা করতেই হবে, নাকি?

1175180_10153155805700497_1592204638_n

মূল দরজার ভিতরে ঘিরে ধরে চমকে ওঠার মত প্রগাঢ় নীরবতা, বিষণ্ণতা লেপটে আছে যেন প্রতি বর্গইঞ্চিতে, এর মাঝে মৃদু সঙ্গীতের মূর্ছনা চুইয়ে চুইয়ে হৃদয়ের দুঃখের প্রকোষ্ঠে আঘাত করে। তারসাথে ইন্ধন যোগায় বিশাল এক ট্যাঙ্ক, যা দাড়িয়ে আছে কালো থিকথিকে তেলের উপরে। তার পিছনের দেয়ালে হাজার হাজার মুখের ছবি, তিনতলা পর্যন্ত চলে গেছে একটানা, হয়ত আকাশেও থেকে যেতে পারত এই ফিরে না আসা মানুষগুলোর মুখের সারি, থোকা থোকা বিষণ্ণ স্মৃতি, একেবারে উপরে লেখা VICTIMS , এই মানুষের শিকার হয়েছিল শাসকদের।
জাদুঘরটি মূল দুইভাগে বিভক্ত, ফ্যাসিস্ট নাৎসিদের সময়কার হাঙ্গেরির চালচিত্র এবং সোভিয়েত অধিকৃত হাঙ্গেরির ইতিহাস খোদাইয়ের চেষ্টা করা হয়েছে পরতে পরতে। সেই সময়ের হাঙ্গেরির রাজনৈতিক ইতিহাস বেশ জটিল, পরিবর্তন ঘটেছে তার নানা রূপে, রাষ্ট্রপ্রধান আত্মহত্যা করেছে, প্রধানমন্ত্রী নেগিকে ক্ষমতা থেকে চ্যুত করার পরে আবার সরকারপ্রধান বানানো হয়েছে, আবার তাকে প্রতিক্রিয়াশীল বলে গোপন বিচারে হত্যা করা হয়েছে বিপ্লবের শত্রু বলে, অথচ এখন আবার নেগি পরিণত হয়েছেন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবে তার স্বদেশবাসীর চোখে। আজ সেই ইতিহাসের অংশটুকু বাদ থাক, বরং ঘুরে দেখি আতঙ্কবাড়ীর জমাটবাঁধা দীর্ঘশ্বাস।

1186032_10153155800955497_654926604_n

ফ্যাসিস্ট নাৎসিদের নির্যাতনের জন্য অবশ্য খুম কম জায়গা বরাদ্দ এইখানে, কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে যে জার্মানি এইদেশে জোর করে ছিল কয়েক মাস, কিন্তু সোভিয়েত লাল বাহিনী এবং তাদের তাবেদাররা ছিল কয়েক দশক ! কাজেই মূল প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে কম্যুনিস্ট আমল নিয়েই। দেয়ালে দেয়ালে ১৯৪৮-১৯৫৬ পর্যন্ত হাঙ্গেরির দণ্ডমুণ্ডের অধিকর্তা জনাব ম্যাতিয়াস রাকোসির কীর্তিকলাপের বর্ণনা, সেই সময়ে অন্তত সাড়ে তিন লক্ষ হাঙ্গেরিয়ান বুদ্ধিজীবী, কর্মকর্তা তার আক্রোশের শিকার হয়েছিল, ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরপর কম্যুনিস্ট শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দটি করলেও তাকে ফ্যাসিস্ট বা ফ্যাসিস্টদের বন্ধু বলে নাজেহাল করাটা রেওয়াজে দাড়িয়ে গেছিল, কাজেই পছন্দ না হলেই দেশের শত্রু, পার্টির শত্রু, প্রগতিশীল ইত্যাদি ইত্যাদি বলে শায়েস্তা কর, গলা টিপে মার।

জাদুঘরের ভিতরে ছবি তোলা নিষেধ, তাই কায়দা করে কিছু তুলতে হল, যদিও কাঁপা কাঁপা আসার জন্য বন্দীশালার কোন ছবিই পেলাম না। একপাশে পর্দা ঘেরা অবস্থায় আছে বুদাপেস্টের যমদূত – কালো গাড়ী ! এই গাড়ী বাড়ীর সামনে থামলেই সকলের বুক কেঁপে উঠত, জেনে যেত সবাই যে কোন অভাগার উপরে পড়েছে সন্দেহ বা আক্রোশের তীর, এসেছে তার বধ্যভূমির জল্লাদেরা। আঁধার চিরে চলত রাতের হাঙ্গেরিরে এই আতঙ্কের উৎস, একমাত্র চলচ্চিত্রের পর্দাতে দেখেছি এই ধরনের গাড়ী। দেখে ১৯৭১র ডিসেম্বরে বুদ্ধিজীবী হত্যার সময় পাক বাহিনী আর আল বদরদের ব্যবহৃত গাড়ীগুলোর কথা মনে হল।

1185719_10153155805635497_20526317_n

১৯৫৬র হাঙ্গেরিবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লবে যখন স্ট্যালিনের মূর্তি গুঁড়িয়ে দিল, তখন হাঙ্গেরির ক্ষমতালোভী রাজাকারেরা আবার রাশিয়া যেয়ে সেখানের প্রভুদের কান ভারী করে ট্যাঙ্ক নিয়ে এসে জনগণকে মাটিতে পিষে ফেলে আবার কম্যুনিস্ট বাহিনীকে ক্ষমতায় বসিয়ে গেল পুতুল সরকার হিসেবে। সেই সময়ে লাখো লাখো হাঙ্গেরিয়ান অন্য দেশে চলে যায়, মূলত মার্কিন মুলুকে। তাদের পাঠানো পোস্ট কার্ড আর চিঠি রাখা আছে এক দেয়াল জুড়ে।

1233463_10153155805605497_346766875_n

এমন আরেক দেয়ালে রাকোসির সময়ে হত্যাকাণ্ডগুলোর জন্য দায়ী কর্মকর্তাদের ছবি সাঁটানো, ভদ্রলোকের মত ভারিক্কী পোশাকপরা জন্তগুলোই কলমের খোঁচায় কত মানুষের জীবনে চির আঁধার ডেকে এনেছে ! সেই তালিকায় অনেক মহিলার ছবিও দেখা গেল।

রাশিয়াতে যেমন ছিল কেজিবি তেমন হাঙ্গেরির সিক্রেট পুলিশের হেডকোয়ার্টার ছিল এই ভবনে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত। নিয়তির কী পরিহাস যে যুদ্ধ শেষের আগ পর্যন্ত এই ভবনই আবার ব্যবহৃত হত হাঙ্গেরির ফ্যাসিস্ট দলের কার্যালয় হিসেবে, তাই দুই দলেরই প্রতীক খোদাই করা আছে বাহিরের দেয়ালে।

1150282_10153155800930497_560064407_n

বেশ কটি কক্ষে ভিডিওতে তথ্যচিত্র চলছে বিশেষ করে সেই নির্মমতার বলি যারা হয়েছিল তাদের পরিবারের সদস্যদের সাক্ষাৎকার, সেই সাথে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের ইতিহাস। একটা লাইব্রেরীমত কক্ষে মানুষগুলোর তথ্য, কত কত জীবন আটকে আছে ছাপার অক্ষর হয়ে, স্রেফ ইতিহাস হয়ে।

1170896_10153155801250497_1605221247_n

দুই ঘরের দেয়াল চর্বি দিয়ে তৈরি! খাঁটি শুয়োরের চর্বি। জনাব রাকোসি বেশী মাত্রায় র‍্যাডিক্যাল কম্যুনিজমগিরি চালাতে যেয়ে ঘোষণা দিলেন- কৃষকের উৎপাদিত সমস্ত ফসল, গোয়ালার উৎপাদিত দুধ, বা চামড়া বা চর্বি, সবকিছুর মালিক রাষ্ট্র, কাজেই সব তাদের কোষাগারে দিতে হবে। সেই ব্যবস্থার প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে এই চর্বির ইটের দেয়াল।

1185652_10153155801030497_1050128549_n

পুরো তিনতলা ঘুরে সব দেখে অবশেষে মাটির নিচের যমঘরে যাবার জন্য লিফটে ওঠার পর যে কী হল তা তো বলেছিই প্রথমে, সারি সারি জেলখানার মত ক্ষুদে ক্ষুদের নিরেট নরক, একটাতে আবার সমস্ত বাতাস বাহির করে দেবার ব্যবস্থা আছে অত্যাচারের জন্য, আরেকটা তে বন্দীকে জলের মাঝে দাঁড়ানো বা বসানোর ব্যবস্থা।

একটা স্পেশাল টর্চার চেম্বারের দেয়ালে অত্যাচার করার সমস্ত যন্ত্র ঝুলিয়ে রাখা আছে, নিরীহ দর্শন লাঠি, হাতুড়ি, লোহার তার, চামড়ার দণ্ড। দেয়ালে লেখা বাণী- সমস্ত কিছু দিয়েই আঘাত করা শিখতে হবে!

সারি সারি আতঙ্ক, কেমন একটা জান্তব ভাব আছে নির্জীব কক্ষগুলোর মাঝে, ঘুরপাক খায় নিহত মানুষেরগুলোর অসহায় শেষ নিঃশ্বাস, দীপ্ত আত্মবিশ্বাস, বুকের ভিতরে ঘুরে ওঠা হতাশা- নিজের জন্য, মাতৃভূমির জন্য ।

সমস্ত সাহস সঞ্চয় করে উঁকি দিলাম ফাঁসিকাঠে কক্ষে, যেখানে নিয়মিত মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হত শুদ্ধি অভিযানের নামে। আদর্শের নামে, অধিকারের নামে কতটা নির্মম পাগলপারা হতে পারে মানুষ ! স্বাভাবিক ভাবেই বদ্ধচিন্তার সমর্থক সেই দুই রাষ্ট্রযন্ত্রই মুক্তচিন্তার অধিকারী লেখক কবিকে তাদের পয়লা শত্রু বানিয়ে ফেলেছিল, তাই-ই হয়। উজ্জল কমলারঙা রোদের কবিতা লেখা একজন ফেদেরিক গার্সিয়া লোরকা অজানা বধ্যভূমিতে চোখ বাঁধা গলিত লাশ হয়ে পরে থাকেন, শব্দে জীবন ফোটানো পাবলো নেরুদা হুলিয়া মাথায় নিয়ে নির্বাসনে যান নানা মহাদেশে, নাজিম হিকমত কবিদের বলেছিলেন – ক্যানারি পাখির মত, যারা আর কারো সুর গলায় নেয় না, কেবলমাত্র নিজেদের সুরেই গেয়ে চলে আমরণ, সেই নাজিম হিকমতকে নিজের সুরে কবিতা লেখার জন্য পোরা হয় কারাগারে, কপালে জুটে নির্বাসন। নাৎসিরা আদেশ দিয়েছিল কষ্ট দিয়ে কবিতা লেখা যাবে না, বেদনা নিয়ে ছবি আঁকা যাবে না, কিন্তু জীবন তো যেমন ইচ্ছে তেমন লেখার কবিতার খাতা, তাই প্রতিবাদে কবিরা অতল দুঃখ নিয়ে লেখা শুরু করলেন, পিকাসোর মত শিল্পীরা শুরু করলেন বেদনার নীল রঙে আঁকা। সোভিয়েত আমলে বলা হল ভাববাদী দুঃখ বিলাসী লেখা মানুষকে পথভ্রষ্ট করে, ফ্রাঞ্জ কাফকা পড়া সুকৌশলে নিষিদ্ধ করা হল, এমন নজির ভুরি ভুরি আছে। মোদ্দা কথা হচ্ছে- মাথামোটা শাসক এবং তাদের তাবেদাররা সৃষ্টিশীল মুক্তকণ্ঠের মানুষদের ঘৃণা করে, ভয়ের চোখে দেখে, সুযোগ পেলেই হত্যা করে। যেমনটি হয়েছিল ছবির এই ফাঁসিকাঠে।

1236035_10153155805490497_524241067_n

এই গুমোট পরিবেশে মনে ওপর সাংঘাতিক চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল খানিকক্ষণ ধরেই, তাই সেই পালা না বাড়িয়ে চললাম অন্য গন্তব্যে। মন ভারাক্রান্ত সেই কালো ইতিহাসের স্মরণে-


মন্তব্য

সাকিন উল আলম ইভান  এর ছবি

মন খারাপ করে দেয়া কথামালা । হাঙ্গেরীর এই সোজালিজ্যম এর ভয়াবহতা সম্পর্কে আর আগে খুব কম পড়েছিলাম আজ বেশ কিছু জানলাম ।

সবাই দেখি নিজ নীতি আদর্শের সর্বোচ্চ চূড়ায় গেলেই মানুষকে তার তাবেদার মনে করে । কেউ আজকাল এর ব্যতিক্রম নয় :(

তারেক অণু এর ছবি

কেউ মনে হয় কোন সময়েই খুব একটা ব্যতিক্রম ছিল না, যে ব্যতিক্রম সে গণনার বাহিরে

ফয়সাল ইজা এর ছবি

লেখা এবং ছবিতে (Y)

তবে সাতসকালে কম্পিউটার খুলেই এই মন খারাপ করা পোস্ট পড়তে কেমন লাগে অণু ভাই। সত্য কথন বড় নির্মম।

তারেক অণু এর ছবি

সত্য বিনা উপায় নাই, হোক সে যতই নির্মম

Chhanda Mahbub এর ছবি

অসম্ভব তথ্যপূর্ণ চমৎকার লেখা। মনে পড়ে গেল-
" তুমি হায় বুঝবে ভাই, ফুরফুরে দিন কেটে যায়, বোঝাচ্ছ স্বাধীনতার মানে
যে অধীন দিনে রাতে, বুলেটে যে বুক পাতে সেই বুঝেছে স্বাধীনতার মানে। "

তারেক অণু এর ছবি

কার লেখা ?

চরম উদাস এর ছবি

মনটা খারাপ হয়ে গেল লেখাটা পড়ে ।

তারেক অণু এর ছবি

হু, ইতিহাসই এমন

অতিথি লেখক এর ছবি

আমি প্রথম কিন্তু মডারেশনের ফেরে পরে প্রথম হইতে পারি না =(( , কাঁপুনি ধরানো লেখা, মানুশ যে কত বর্বর হতে পারে :(
ইসরাত

তারেক অণু এর ছবি

ইশ, মডুরা খুব ফ্যাসিবাদী।

অতিথি লেখক এর ছবি

কি ভয়ংকর!
- একলহমা

তারেক অণু এর ছবি

আসলেই

অতিথি লেখক এর ছবি

শাসক - মানুষ নয়
ক্ষমতা - দায়িত্ব নয়
এই ফর্মূলার কারণেই সারা পৃথিবী জুড়েই এখন ক্রান্তিকাল। :(
*******
অনেক কিছু জানলাম আর দেখলাম।
অনেক শুভ কামনা জানবেন অনু।

---------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

তারেক অণু এর ছবি

এমনটা হবার কথা ছিল না :(

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

:(
আজকে দেখলাম ৯২ বছর বয়সী একটা নাৎসি ধরা পড়েছে... আমাদেরটার কি হবে?

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

তারেক অণু এর ছবি

খাবে দাবে, আবার কী !

স্বপ্নীল সমন্যামবিউলিসট এর ছবি

নাহ, অণুদা- আমি হৃদয় দিয়ে বিশ্বাস করি- আজ হোক কাল হোক একদিন এদের বিচার হবেই। খালি- একাত্তরের প্রজন্মটা বিদায় হয়ে নেক। ওরা বড্ড বেশি দুভাগ করা- সবাই নিজের কৃতিত্ব নিয়ে গর্ব করাতেই ব্যস্ত।
বুদাপেস্টের নির্মম ঘটনা জেনে খারাপ লাগলো- আবারো মনে পড়লো- ইস! মানুষ কতো নিষ্ঠুর!!

-------------------------------------------------
ভালবাসা কেবল নিজেকে দেয় এবং নিজ থেকে নেয়-
ভালবাসার যেমন নিজেরও কিছু নেই, তেমনি সেও কারো নয়;
কেননা, ভালবাসার জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট।

তারেক অণু এর ছবি

:( (পপ্পন)

অতিথি লেখক এর ছবি

আতঙ্কবাড়ীর জমাটবাঁধা দীর্ঘশ্বাস।

রাসিক রেজা নাহিয়েন

তারেক অণু এর ছবি
মন মাঝি এর ছবি

আপনার গত পোস্টে করা আমার মন্তব্যটা যে খুব একটা অফ দি মার্ক ছিল না, পরের পোস্টেই তা এমন ভাবে প্রমান হবে ভাবিনি!

ক্যাম্বোডিয়ায় কম্যুনিস্ট খেমার-রুজের পতনের পরপর ঐ দেশে ভ্রমণরত আমার এক আত্নীয়ের তোলা ভিডিওতে এমনই একটা চিত্র দেখেছিলাম - পলপটের টর্চার চেম্বারে। ব্যাটারা তাদের সব ভিক্টিমদের মাথার খুলি সাজিয়ে ক্যাম্বোডিয়ার মানচিত্র বানিয়ে রেখেছিল!!

স্টালিন আমলে বুদ্ধিজীবীদের পার্সিকিউশনের উপর আর্থার কোয়েসলারের একটা অসাধারণ উপন্যাস আছে - 'ডার্কনেস এট নুন'। আমার পড়া সেরা উপন্যাসগুলির একটা, র‍্যান্ডম হাউস নাকি মডার্ন লাইব্রেরির তালিকায় বিশ্বের সেরা ১০০টি উপন্যাসের একটা। পড়ে দেখতে পারেন - বুদ্ধিজীবী পার্সিকিউশনের খুব অন্তরঙ্গ একটা ছবি পাওয়া যাবে।

****************************************

অর্ফিউস এর ছবি

ব্যাটারা তাদের সব ভিক্টিমদের মাথার খুলি সাজিয়ে ক্যাম্বোডিয়ার মানচিত্র বানিয়ে রেখেছিল!!

এযে দেখি আধুনিক আসিরিয়ান। আসিরিয়ান রাই মানুষের হাড্ডি আর চামড়া দিয়ে স্তম্ভ বানিয়েছিল না?

তারেক অণু এর ছবি

সেটার ছবি দেখেছিলাম খবরের কাগজে , ঘোড়ার ডিমের কম্যুনিস্ট ছিল পলপট আর তার চ্যালারা

সত্যপীর এর ছবি

আকবর বাদশা চিতোর দুর্গ জয়ের পর লম্বা লম্বা পিলারে রাজপুতদের মাথা পেরেক মেরে টানিয়ে দিয়েছিলেন. হাজার হাজার মাথা. আকবর দি গ্রেট.

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

লেখাটা দেন, ব্যাটার গ্রেট গিরি ছুটানো দরকার, এইটা কি দ্বীন ভেক ধরার আগে?

সত্যপীর এর ছবি

চিতোরকাণ্ড দ্বীন ই ইলাহির বহু আগে. আকবরের বয়স তখন ২৫/২৬.

দ্বীন ই ইলাহির ব্যাপারটা আমি পুরা সিওর না. থিওরি টা ইন্টারেস্টিং. সে ভেক ধরেছিল না সত্যই কিছু একটা তার প্ল্যানে ছিল বলা মুস্কিল. শালার আবুল ফযল এমন চাপাবাজি মেরে গেছে যে সত্যমিথ্যা আলাদা করা টাফ.

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

রাজশাহীতে আছে দ্বীন ই ইলাহীর একটা স্থাপত্য, দাঁড়ান ছবি দেখামু নে।

আচ্ছা, বাবুরনামা কেমন অথেনটিক?

সত্যপীর এর ছবি

আমি বাবুরনামা পুরাটা পড়িনাই, খাবলা খাবলা পড়সি. বেশ মজাদার বই. ভারত ও ভারতবাসীদের নিয়ে বাবুরের মতামত অতি মুচমুচে ও মসলাদার. চাপাবাজি কতটুক বলতে পারলাম না ঠিক. তবে আবুল ফযল এর মত চাপাবাজি নাই মনে হয়. সে আকবর এবং হুমায়ুন দুইজনকে নিয়াই ব্যাপক মিথ্যাচার করে গেছে. যেমন হুমায়ুন শের শা সুরির লাথি খেয়ে ইরান পালানোর পরে যে চরম অপমানের মধ্যে দিয়ে দিন গুজরান করে গেসে তার কোনো নাম নিশানা ফযল মামু লিখে যায়নাই.

হুমায়ুন বাদশার রেফ্যুজি জীবন নিয়ে একটা লেখা আধা ফিনিশ পড়ে আসে. সময় এত কম :(

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

বাদশাহ নামদার পড়েন মিয়াঁ, =))

আমাদের পিচ্চি কেমন আছে? সব মঙ্গল তো?

সত্যপীর এর ছবি

পিচ্চি জোস আছে। পিচ্চিকে কোলে নিয়েই লিখতেছি 8)

..................................................................
#Banshibir.

তারেক অণু এর ছবি

আহহা ! দিল্লেন বাচ্চাটার মাথা খেয়ে ! :p

ফাহিম হাসান এর ছবি

এরকম পোস্ট পড়া শেষে কেমন থমথমে একটা অনুভূতি হয়। তবে সীমাহীন বর্বরতার প্রদর্শনীর দরকার আছে, ঘা না খেলে মানুষ জাগে না।

তারেক অণু এর ছবি

হয়ত

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আতঙ্কিত ! :(

তারেক অণু এর ছবি
অর্ফিউস এর ছবি

তারেক অণু ভাই, আমি আপনার ভ্রমণ কাহিনীর একজন ভক্ত।আপনি কি ভাই সারাক্ষন শুধু দৌড়ের (ভ্রমণের) উপরেই থাকেন নাকি? মেলা লেখা দেখি তো ভ্রমণের উপরে তাই বললাম।আপনাকে ইর্ষা হয় আমার :-)) খুব ভাগ্যবান আপনি।

তারেক অণু এর ছবি

থাকার চেষ্টা করি, কিন্তু সবসময় হয় না, পিথিমি নিঠুর !

অতিথি লেখক এর ছবি

পড়ার সাথে সাথে মনে হচ্ছিল আমিও মনে হয় হাউস অফ টেরর এর মধ্যে চলে গিয়েছিলাম।

-পঞ্চ সুখ

তারেক অণু এর ছবি

ভয়াবহ অভিজ্ঞতা

অতিথি লেখক এর ছবি

প্রথমে পড়িনি, আজ পড়লাম। মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন !

-নিয়াজ

তারেক অণু এর ছবি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।