গাছ থেকে গাছে, আর, মাঠ থেকে রোদ শুধু শুধু মরে যায়
সব আলো কোন দিকে যায়!
সব আলো কোন দিকে যায়? জানি না, আলোকে মনে হয় জীবনানন্দের কবিতার মত- সর্বব্যপী, সর্বগামী, জীবনের উৎস, ভালোবাসার উৎস, তিমির হননের প্রেরণা।
তার নক্ষত্রখচিত শব্দগুলো দুর্বল ছবিতে আঁটানোর নেহাত শিশুসুলভ, অনেকটা দেবতাকে নৈবদ্য দেবার মত, তাতে পূজারীরই কেবল সুখ, দেবতার কিছুই যায় আসে না। তাই সেই চেষ্টা চলে অবিরাম--
ঘনিষ্ঠজন মাশুকা তাবাসসুম শুক্তি একবার বলেছিল তার জন্য সবচেয়ে ভাল যে জিনিসটা আমি করতে পারতাম তা করে ফেলেছি আমার জীবনের আনন্দ, জীবনানন্দ ছবি ব্লগ তৈরি করে। এই পোস্টটি বিশেষ ভাবে তার জন্য, শুভ জন্মদিন বন্ধু।
মাছির গানের মতো অনেক অলস শব্দ হয়
সকালবেলা রৌদ্রে; কুঁড়িমির আজিকে সময়।
আজ অন্ধ শতাব্দীর শতচ্ছিদ্রতার
ভিতর আলোর খোঁজে যদি চলে যায়
তবুও শাশ্বত হয়ে থাকে অন্ধকার।
আজ অন্ধ শতাব্দীর শতচ্ছিদ্রতার
ভিতর আলোর খোঁজে যদি চলে যায়
তবুও শাশ্বত হয়ে থাকে অন্ধকার।
তোমায় ভালোবেসেছি আমি,তাই
শিশির হয়ে থাকতে যে ভয় পাই,
তোমার কোলে জলের বিন্দু পেতে
চাই যে তোমার মধ্যে মিশে যেতে
শরীর যেমন মনের সঙ্গে মেশে।
তখন শস্যের গন্ধ ফুরায়ে গিয়েছে ক্ষেতে — রোদ গেছে পড়ে,
এসেছে বিকালবেলা তার শান্ত শাদা পথ ধরে;
তখন গিয়েছে থেমে অই কুঁড়ে গেঁয়োদের মাঠের রগড়
হেমন্ত বিয়ায়ে গেছে শেষ ঝরা মেয়ে তার শাদা মরা শেফালির
বিছানার পর;
মদের ফোঁটার শেষ হয়ে গেছে এ মাঠের মাটির ভিতর!
ছিন্ন ভিজে খড়
বুকে নিয়ে সনকার মতো যেন পড়ে আছে নরম প্রান্তর ;
বাকা চাঁদ চেয়ে আছে - কুয়াশায় গা ভাসায়ে নেয় অবিরল
নিঃশব্দ গুবরে পোকা -সাপমাসী -ধানী শ্যামাপোকাদের দল ;
দিকে দিকে চালধোয়া গন্ধ মৃদু - ধুসর শাড়ির স্বর
শোনা যায় - মানুষের হৃদয়ের পুরনো নীরব
বেদনার গন্ধ ভাসে –
যেখানে আকাশে খুব নীরবতা শান্তি খুব আছে,
হৃদয়ে প্রেমের গল্প শেষ হলে ক্রমে ক্রমে যেখানে মানুষ
আশ্বাস খুঁজেছে এসে সময়ের দায়ভাগী নক্ষত্রের মানুষ
আশ্বাস খুঁজেছে এসে সময়ের দায়ভাগী নক্ষত্রের কাছে:
এ-রকম হয়েছে অনেক দিন-রৌদ্রে বাতাসে,
যারা সব দেখেছিলো-
যারা ভালোবেসেছিলো এই সব- তারা
সময়ের সুবিধার নিলেমে বিকিয়ে গেছে আজ।
তারা নেই।
আসো আমরা যে যার কাছে- যে যার যুগের কাছে সব
সত্য হ’য়ে প্রতিভাত হ’য়ে উঠি।
নব পৃথিবী পেতে সময় চলেছে?
হে অবাচী, হে উদীচী, কোথাও পাখির শব্দ শুনি;
কোথাও সূর্যের ভোর র’য়ে গেছে ব’লে মনে হয়!
একদিন কুয়াশার এই মাঠে আমারে পাবে না কেউ খুঁজে আর, জানি;
হৃদয়ের পথ চলা শেষ হল সেই দিন — গিয়েছে যে শান — হিম ঘরে,
অথবা সান্ত্বনা পেতে দেরি হবে কিছু কাল
নিঃস্বত্ব সূর্যকে নিয়ে কার তবে লাভ!
সচ্ছল শাণিত নদী, তীরে তার সারস-দম্পতি
ঐ জল ক্লান্তিহীন উৎসানল অনুভব ক’রে ভালোবাসে;
তাদের চোখের রং অনন্ত আকৃতি পায় নীলাভ আকাশে;
দিনের সূর্যের বর্ণে রাতের নক্ষত্র মিশে যায়;
তবু তারা প্রণয়কে সময়কে চিনেছে কি আজো?
প্রকৃতির সৌন্দর্যকে কে এসে চেনায়!
এইখানে সময়কে যতদুর দেখা যায় চোখে
নির্জন ক্ষেতের দিকে চেয়ে দেখি দাঁড়ায়েছে অভিভুত চাষা;
এখনো চালাতে আছে পৃথিবীর প্রথম তামাশা
সকল সময় পান ক’রে ফেলে জলের মতন এক ঢোঁকে;
অঘ্রানের বিকেলের কমলা আলোকে
নিড়োনো ক্ষেতের কাজ ক’রে যায় ধীরে;
এই সব পাখিগুলো কিছুতেই আজিকার নয় যেন-নয়-
এ নদীও ধলেশ্বরী নয় যেন-এ আকাশ নয় আজিকার:
ফণীমনসার বনে মনসা রয়েছে নাকি? আছে; মনে হয়,
এ নদী কি কালীদহ নয়? আহা, ঐ ঘাটে এলানো খোঁপার
সনকার মুখ আমি দেখি না কি? বিষন্ন মলিন ক্লান- কি যে
সত্য সব; তোমার এ স্বপ্ন সত্য, মনসা বলিয়া গেল নিজে।
নিড়োনো ক্ষেতের কাজ ক’রে যায় ধীরে;
একবার যখন দেহ থেকে বা'র হয়ে যাব
আবার কি ফিরে আসব না আমি পৃথিবীতে?
মাথার উপর দিয়ে কার্তিকের মেঘ ভেসে যায়;
দুই পা স্নিগ্ধ করে প্রান্তরের ঘাস;
উঁচু-উঁচু গাছের অস্পষ্ট কথা কী যেন অন্তিম সূত্র নিয়ে,
বাকিটুকু অবিরল গাছের বাতাস।
ঘুমায়ে পড়িব আমি একদিন তোমাদের নক্ষত্রের রাতে
শিয়রে বৈশাখ মেঘ-শাদা-শাদা যেন কড়ি-শঙ্খের পাহাড়
নদীর ওপার থেকে চেয়ে রবে- কোনো এক শঙ্খবালিকার
ধূসর রূপের কথা মনে হবে-এই আম জামের ছায়াতে
কবে যেন তারে আমি দেখিয়াছি-কবে যেন রাখিয়াছে হাতে
তার হাতে- কবে যেন তারপর শ্মশান চিতায় তার হাড়
ঝরে গেছে, কবে যেন; এ জনমে নয় যেন-এই পাড়াগাঁর
পথে তবু তিন শো বছর আগে হয়তো বা- আমি তার সাথে
কাটায়েছি; পাঁচশো বছর আগে হয়তো বা — সাতশো বছর
কেটে গেছে তারপর তোমাদের আম জাম কাঁঠালের দেশে;
এই সিরিজের বাকী পর্বগুলো এইখানে
মন্তব্য
হৃদয়ে প্রেমের গল্প শেষ হলে ক্রমে ক্রমে যেখানে মানুষ
আশ্বাস খুঁজেছে এসে সময়ের দায়ভাগী নক্ষত্রের মানুষ
আশ্বাস খুঁজেছে এসে সময়ের দায়ভাগী নক্ষত্রের কাছে:
দারুণ লাইনগুলা
facebook
facebook
____________________________
facebook
প্রিয় সিরিজ
জানতাম এইকথা বলবে স্যাম দা
facebook
তবুও ছবিগুলোকে উপেক্ষা করতে পারলাম না।
facebook
সময়ের কাছে সাক্ষী দিয়ে চলে যেতে হয় সবাইকে
কি কাজ করেছি আর কি কথা ভেবেছি
মাসুদ সজীব
হ
facebook
একবার যখন দেহ থেকে বা'র হয়ে যাব
আবার কি ফিরে আসব না আমি পৃথিবীতে?
না মুনে অয়
facebook
অণুদাদার ঘনিষ্ঠজন মাশুকা তাবাসসুম শুক্তিকে জন্মদিনের বিলম্বত শুভেচ্ছা।
প্রিয় কবি আর প্রিয় ব্লগারের সমন্বয়ের এই অসাধারণ সিরিজের এই পর্বও অসাধারণ লাগল।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
ধন্যবাদ, লেখা পড়িতেছি
facebook
কবিতায় ছবি আর ছবিতে কবিতা। অনন্যসাধারণ।
প্রথম ছবিটা দেখে ব্যাপক লোভ হচ্ছে সংগ্রহে রাখতে।
কেমতে কি?
-ছায়াবৃত্ত
রাইখা দেন !
facebook
প্রথম ছবিটা দেখে মনে হচ্ছে গাছ হয়ে যাই! আর সাত নম্বরটা দেখে মনে হয় ভোর!
কবিতার কথা কি আর বলব, ছবিগুলো মারাত্মক!
গান্ধর্বী
আহ , এমন কবিতা লিখতে পারলে- !
facebook
তবে হয়ে যেতেন তারেকানন্দ
গান্ধর্বী
facebook
১,৯,১১ ছবিগুলা কি বাস্তব নাকি স্বপ্নদৃশ্য??!!!
--------------------------
সুবোধ অবোধ
বাস্তব স্বপ্নের চেয়ে বেশী স্বপ্নময়
facebook
অণুদা, প্রথম ছবিটা ফেবুতে কাভার পিক বানাতে ইচ্ছা করছে। আপনাকে ফটো কার্টেসি দিয়ে কাজটা কি করে ফেলবো?
অবশ্যই
facebook
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
facebook
ভালা লাগছে বস, চালায়া যান
- আরাফ করিম
ওকে
facebook
আজকে একটা জীবনানন্দ পাব না?
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
facebook
দারুন।।।।। ছবিগুলো যেন জীবন বাবুর কথায় আরো জীবন্ত হলো।।।
facebook
নতুন মন্তব্য করুন