মেহিকো এক জাদু ঘেরা ভূখণ্ড, বিশ্বের আর কোন অঞ্চলের সাথে যার মিল নেই কোন। সারা জীবনে হলিউডের সিনেমাতে দেখলাম রুক্ষ লাল পাথরের পাহাড়, যেয়ে দেখলাম গহন বৃষ্টিঅরণ্য! শুনে গেলাম সেখান চোর, ডাকাত, কিডন্যাপার , যেয়ে দেখি কোন বাড়ীতে গেলে না খেয়ে উঠতেই দেবে না, অযাচিত বন্ধুত্বের হাত আসে দশ দিক থেকেই! পড়ে গেলাম খটখটে শুকনা এক প্রান্তরের কথা, যেয়ে মজাসে ডুবলাম নদী, জলপ্রপাত, সাগরের জলে। কী অপূর্ব স্বস্তিকর তামাশা।
কমাস আগে জার্মান রেডিও ডয়েচ ভেলের এক সাক্ষাৎকার জানতে চেয়েছিল বিশ্বের কোন অঞ্চলে যেয়ে সবচেয়ে বেশী ভাল লেগেছে? বলেছিলাম বাংলা নামের দেশটাতে নাড়ি পোতা আছে, এখানেই জীবনের দুই-তৃতীয়াংশ কাটিয়েছি, কাজেই এখানের প্রতি একটা আলাদা টান আছে, এর বাহিরে মেক্সিকোকে আমি ১০০র মাঝে ১০০ই দিব, তাদের প্রকৃতি, ইতিহাস, মানুষ, স্থাপত্য, সংস্কৃতি, খাবার, রঙ, ট্যেকুইলা সব মিলিয়েই। মেহিকো এক এবং অদ্বিতীয়। তার পরপরই মনে হল মেহিকো নিয়ে শুরু করা সিরিজটা অনেক দিন ধরেই বেতো ঘোড়ার মত ঝিমোচ্ছে আস্তাবলে, সেটার পিঠে চেপে একটু বেড়িয়ে আসা দরকার বুনো প্রান্তরের লোনা বাতাসে—
পুয়েবলা থেকে যাত্রা শুরু আমাদের, এমনিতে মূল রাস্তায় থাকা হচ্ছিল বরাবরই, ফলে পথ হারানোর ভয় যেমন ছিল না, তেমন ছিল না নিজেদেরই হারাবার মানে কিডন্যাপ হবার। তবে দক্ষিণের দিকে চলেছি আমরা তাই-ই এমতাবস্থা, উত্তরের দিকে গেলে উল্টো হত, সীমান্তের কাছের প্রদেশগুলোতে মাদকের কারবারিদের দৌরাত্মে পুলিশের হাঙ্গামা অনেক বেশী সইতে হয়, আর দক্ষিণে কেবল এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশে প্রবেশের সময় বলতে হয় যে আমাদের কাছে কোন রকম শস্য, জীবিত মুরগী, হাঁস, ভেড়া, গরু, শুয়োর, ছাগল কিছু নেই, মানে কিনা কোন জীবাণু আমরা এইভাবে পরিবহন করছি না, ব্যস! মিলে গেল আরও দক্ষিণমুখে যাবার ছাড়পত্র। যেখানে উত্তরে এগোলে মিলত লাল ধুলোর অঞ্চল সেখানে দক্ষিণে যত যাচ্ছি ততই ঘন অরণ্য, চিয়াপাসের মত রাজ্যে তো বিশাল সব মহীরুহের ছায়ায় রীতিমত ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে পুরোটা সময়ই।
বিশাল দেশ মেহিকো, মহাকাশের তারার মতই অগণিত বিশ্বখ্যাত পর্যটক আকর্ষণ থেকে খুব বেছে বেছে মায়া , অ্যাজটেক, ওলমেক সভ্যতার গুটিকয়েক জায়গা ঠিক করে সেই মোতাবেক চতুস্পদ যন্ত্রযান ছোটানো হল ইসাইয়াস সেরণার নেতৃত্বে। যা আছে শোবার জায়গার ঠিক, না খাবার জায়গার। গাড়ী চলছে সুদূরের পথে, হৈ হৈ রৈ রৈ, কলরবমুখর আমরা, সাথে হুয়ান ভিদালের কেনা অনেক অনেক বোতল পানীয়, যাতে ক্যাপ্টেন হ্যাডকের মত তেষ্টা ভয় আমাদের পেয়ে না বসে।
যেখানেই রাত, সেইখানেই কাত, বোহেমিয়ান জীবনের ছিটেফোঁটা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগের এমন সুযোগ আর কবে আসবে কে জানে। খাবার জন্য সবসময়ই পথের ধারের ছোট কোন ঘরোয়া পরিবেশের রেস্তোরাঁয় থামা হত, বিলাস বহুল জায়গায় থামলে নরম চেয়ার এবং এসির আরামের সাথে সাথে কোট পরা ওয়েটারের জবরদস্ত সার্ভিস আর কৃত্রিম হাসির মুখোমুখি হবার চেয়ে স্থানীয় কোন ক্ষুদে দোকান আর মানুষগুলোর দিল খোলা ব্যবহারের সাথে পরিচিত হবার ঝোঁক বেশী ছিল আমাদের।
অবশ্য তাতে বরাবরই একটা বিশেষ সমস্যায় পড়তে হত অধম বঙ্গসন্তানকে। সাথের তিন মেক্সিকানের সাথে আমার মঙ্গোলয়েড মুখ দেখে মেক্সিকান নেটিভ ইন্ডিয়ান ভেবে ব্যপক স্প্যানিশের তুবড়ি ছোটাতেন খাবারের কারবারিরা, তাদের খরস্রোতা সাবলীল স্পেনীয় ভাষার মুখে ডুবো চরের মত উঁকি দেওয়া নেরুদা পড়ে শেখা স্প্যানিশের অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন হতেই চোখ পাকিয়ে একটা কথাই বলতেন তারা – অ, বড়লোকের পোলা ! আমেরিকা যেয়ে বাপের ভাষা ভুলে গেছে !
( মানে কিনা খেমো দেখে তাদের ধারণা হয়েছে কোন মেক্সিকান পরিবারেরই জন্ম আমার, বিত্ত বৈভবে বড় হয়েছি আমেরিকাতে, ইংরেজির স্রোতে ভেসে যেয়ে স্প্যানিশ বরং ভুলতে বসেছি !)
তখন আবার বলতে হত, না হে, আমার জন্ম পদ্মা তীরের সেই অঞ্চলে যা কিনা মেহিকোর প্রতিপাদস্থান। শুনে তাদের মুখ হাঁ! তা বাংলাদেশের সব মানুষই কি মেক্সিকানদের মত দেখতে? নাহ, তবে মেক্সিকোর অধিকাংশ মানুষই (শ্বেতাঙ্গরা বাদে) বাঙালীদের মত দেখতে, কোন সন্দেহই নাই!
তারপর তো খাতির জমে যেত, এক দিদিমার রেস্তোরাঁতে মিলেছিল সেই সফরে খাওয়া সেরা মাছ, সমুদ্র কাছেই, মেক্সিকানরা মাছকে গ্রিল করার ব্যাপারটা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে, অল্প আঁচে এমন সুস্বাদু করে খাবারটা তৈরি করবে যে মুখের আলতো স্পর্শেই মাছখানা মাখনের মত গলে গলে উষ্ণতা ছড়াবে। বিশাল সেই মাছের সাথে ছিল নানা সালাদ এবং বিশ্ব-কুখ্যাত (?!) হাভেনেরো মরিচ।
অমৃত খেলে যা হয়, আরেকটু চেখে দেখতে ইচ্ছে করে। এক্কেবারে হেঁসেলে ঢুকে মহা অনুরোধ করে বলতেই হল- আরেকটা মাছ হবে কি? সাথে অন্য কিচ্ছু লাগবে না, কেবল মাছ ভাজা হলেই মেছো –ভেতো বাঙ্গালী খুশী !
শেষমেশ আরেকটা মাছ মিলল, যদিও আকারে তা আগেরতার তুলনায় বেশ ছোট। তারপরও মাছ তো !
আর ছবি তোলা হলে স্মৃতি রক্ষার্থে সেই দিদিমাসহ তার দুই কন্যা এবং নাতির সাথে। হয়ত কোন এক শীতের সন্ধ্যায় তাদের মনে হবে চার ছোকরার দলের কথা যাদের একজন ছিল নীল গ্রহের অপর প্রান্তের বাসিন্দা।
রাস্তা ছিল দুর্দান্ত ধরনের জীবন্ত, কিছু না কিছু ঘটছেই সবসময়। আর কয়টা দেশের রাস্তাতে আপনি একইসাথে ঘোড়া, গাড়ী, বাস, মোটর সাইকেল আর হেঁটে চলা মানুষ দেখতে পাবেন শুনি?
পাহাড়ি অঞ্চলের তেজি বৃষ্টি আমাদের ছুঁয়ে যায়, নাম না জানা উপত্যকায় ক্ষণিকের আশ্রয়ে থেকে সেই জাদু বাস্তবতাময় মেঘ, রৌদ্র, বন, পাহাড়ের ক্যানভাস কী যে ইন্দ্রজাল সৃষ্টি করে! যার সূক্ষ বর্ণনা এই মাটির সন্তান ফুয়েন্তেসের কলমেও পাই না, হয়ত বা তা বর্ণনার অতীত বলেই।
এ যেন আরেক বাংলাদেশ! গরু ঘুরে বেড়াচ্ছে গ্রামে, দূরের নারকেলবীথি, বিলের মত ছড়ানো সব জলাশয়, পেঁপে ভর্তি গাছ, অলস দুপুরে মানুষের আড্ডা, ঈষদুষ্ণ শীত, টিনের বাড়ী, নোনা ধরা টালির ছাদ, বাস-ট্রাকে বাচ্চাদের ঘোরাঘুরি, ফেরিওয়ালা, ইতস্তত ঘুরে বেড়ানো মুরগী।
এমনি ভাবে শত শত মাইল পেরিয়ে বিমুগ্ধ আমরা মায়াদের রাজ্যে প্রবেশ করি, দূরের পালেঙ্কে শহরে, যার গল্প এখানে করেছি অনেক আগে) , পথে নতুন খাবার হিসেবে জোটে
একই খাবার কিন্তু সসটা আলাদা বিধায় বর্ণও আলাদা। মায়ান মহারাজা পাকালের জয়জয়কার পালেঙ্কের সর্বত্র, হোটেলের সামনেও তার রাজসিক ভঙ্গিমার মূর্তি,
তারই সাথে হ্যালো বলে আমাদের যাত্রা ঘন বনের আড়ালে লুকিয়ে থাকা সুদূর অতীতের রহস্যে যেখানে আমাদের অপেক্ষায় ছিল এক আশ্চর্য সবুজ জলপ্রপাত, লাল রূপে –
( চলবে)
মন্তব্য
আপনার লেখার প্রশংসা করার অর্থ হয়না।
আপনি এবং গুটিকয় আপনারা ভ্রমণ কাহিনীর বলার ঢং অন্য পর্যায়ে নিয়ে গেছেন।
ছবি সমেত এই পর্ব ভালো লেগেছে।
আগের পর্বগুলো পড়া হয়নি। এখন পড়বো।
খাবারের বর্ণনাগূলো এমন করে দেন যে নিজেকে লোভী-পেটুক বলে মনে হোক। অবশ্য এর কিছুটা সত্য।
তবে, গতকাল দেখলাম 'নিরব হোটেল' এর ভর্তা, মগজ ভালোই চালিয়েছেন। ঐটা নিয়ে একটা লেখা হয়ে যাবে নাকি?
ভালো থাকবেন অনু।
শীগ্গীর দেখা হবে।
-------------------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ
হা হা , তার চেয়ে চলেন নিরবে একদিন খেয়ে আসি,
facebook
খাবারের ছবিগুলো দারুণ! ভরাপেটে দেখেও খিদে পেয়ে গেল। মাছের ছবি দেখে গতকালের প্রায় ইলিশের স্বাদের গোল্ডেন পম্পানো খাওয়ার কথা মনে পড়ে গেল! কি যে করো!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
আহহা, মাছ যে কী দারুণ
facebook
কেন জানি জানি না, মেক্সিকো দেশটাকে আপন লাগে। পৃথিবীতে আমাদের মত ওরাও খানিকটা আন্ডারডগ। এও যে গরুর ছবিটা দিয়েছেন, কচু গাছের ছবিটা দিয়েছেন, সবকিছুই বাংলাদেশের মত লাগে দেখতে।
ছোট বেলায় বইয়ে পড়েছিলাম লেখক জাফর ইকবালকেও নাকি লোকজন মেক্সিকান মনে করত, এবং স্পানিশে কথা বলা শুরু করত। একজন মেক্সিকানের থেকে উনি শিখেছিলেন "puedo t hablar español" (আমি স্প্যানিশ বলতে পারি না)। তাতে নাকি লোকজন আরও ক্ষেপে যেত, যে আমেরিকায় এসে এখন আর ভাষাও পারো না। আপনার অভিজ্ঞতাটাও সেরকম।
ভাল থাকুন, শুভেচ্ছা
[আপনার মাছের বর্ণনা শুনে ইচ্ছে করছে ফ্রিজ থেকে মাছ বের রাখি, একটু পর ভাজি শুরু করব ]
জাফর ইকবাল স্যারের এক বইতে পড়েছিলাম সেটা,
মাছে একা খাবেন? একটু দিবেন না?
facebook
নিকট হইল দুর । এখনও মেহিকো যাওআ হল না।
হবে
facebook
পেঁপেগাছের ফটুক টা কি আসলেই মেহিকান?? আমার ঘরের সামনেরটাও তো হুবহু এইরকম!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ, যাই হোক পেঁপে এসেছেই আম্রিকা মহাদেশ থেকে, সেইটা ভুইলেন না মুরব্বী
facebook
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
হ ,
facebook
আসোলেই মনে হয় আরেকটি বাংলাদেশ। বিশেষ করে টিনের চাল এর ঘর ও মাঠের গরু দেখে।
facebook
ক্যানের টুনাভুনা খাই পিয়াইজ দিয়া ...
অজ্ঞাতবাস
আহারে
facebook
আমি মেহিকোর স্রেফ একটা জিনিষই চিনি। ঐ একটাই ফাটাফাটি! আমার জন্য ঐটাই যথেষ্ট।
****************************************
টেক্যুইলা
facebook
আরে না না, তোবা তোবা। আমি জালিস্কো প্রদেশের একধরণের নির্বিষ নীল সব্জির কথা বলছিলাম মাত্র!
****************************************
facebook
খাওয়ার ছবিতেই আটকায়ে আছি এখনো
-------------------
ঈমান নূর
facebook
----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony
facebook
মেহিকান বালিকারা বড়ই মনোহর। উদারও বটে
..................................................................
#Banshibir.
বহুত কিছু বাইরায়া আসতাছে
facebook
হৃদয়ের কথা বাইরাইতে ব্যাকুল শুধাইলনা কেহ।
..................................................................
#Banshibir.
facebook
বেশ লাগল/ আমাদের অপেক্ষায় ছিল এক আশ্চর্য সবুজ জলপ্রপাত, লাল রূপে –
....................................
বোধহয় কারও জন্ম হয় না, জন্ম হয় মৃত্যুর !
আসলেই, সেই গল্প আরেক দিন
facebook
দারুণ লেখা, ছবি!! মেহিকো সবসময় যেতে চেয়েছি এমন একটা দেশ, শুধুমাত্র এখানে যাব একদিন ভেবেই হার্মাদ ভাষা শেখার চেষ্টা করি। পরের পর্বের অপেক্ষায়।
অন্ধকার এসে বিশ্বচরাচর ঢেকে দেওয়ার পরেই
আমি দেখতে পাই একটি দুটি তিনটি তারা জ্বলছে আকাশে।।
facebook
আপনার নতুন বা পুরোনো যে কোনও লেখা পড়ার সাথে সাথেই মনের কোণে লুকিয়ে থাকা আফসোস টা আয়তনে বৃদ্ধি পেতে থাকে।আর আপনাকে নিয়ে প্রচলিত দুইটা ডায়ালগ মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে অবিরত
১। ''আপনি কি মানুষ?'' এবং
২। ''তারেক অনু একটি অভিশাপ''
গত পরশুদিন আমার এক বান্ধবীকে ফেইসবুকে আপনার মাচুপিচুর এলবাম টা দেখাচ্ছিলাম, আর বলছিলাম আজ থেকে ১০ কিংবা ২০বছর পর এই মানুষটা হয়তো খুব বিখ্যাত কোনো পরিব্রাজক হিসেবে পরিচিতি পাবে।
অনেক অনেক শুভকামনা রইলো।
বান্ধবী !
facebook
পরবর্তী পর্ব কবে পাচ্ছি??? তাড়াতাড়ি চাই কিন্তু।
facebook
খাবারের পিক দেখলে খুধা পাই
facebook
____________________________
facebook
আমি ভোজনরসিক মানুষ, খাবারের ছবি দেখে জিবে জল চলে আসলো।
আপনাকে হিংসা করার আসলেই কোন মানে নাই
শব্দ পথিক
নভেম্বর ১১, ২০১৩
এক্কেরে ! কোন মানেই নাই -
facebook
যেখানেই রাত, সেখানেই কাত..........বোহেমিয়ান জ়ীবন !!!!.............আহা কত্ত মজ়া না?????
মজাই মজা
facebook
নতুন মন্তব্য করুন