নিউজিল্যান্ডের নাবিক জনাব ভিন্সেন্ত ব্যারীর সাথে আমার প্রথম মোলাকাত হয় হেলসিংকির এক পানশালায়। আশি ছুঁই ছুঁই অতি বৃদ্ধ পোড় খাওয়া এক মানুষ, শতাব্দী প্রাচীন বটগাছের মত জীবন নামক ঝড়ের কাছে মাথা নত করতে নারাজ। কয়েক দশক আগে জাহাজের এক দুর্ঘটনায় দেহের অর্ধেক হাড় ভেঙ্গে মৃত্যুশয্যায় ছিলেন কয়েক মাস, পরে দেহের নানা স্থানে ধাতব হাড়, নাট-বল্টু লাগিয়ে মেরামত করা হয় বেচারাকে, আগের মত ঢেউয়ের সাথে যুদ্ধ করা সম্ভব না বিঁধায় স্বদেশে না ফিরে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিংকির এক কোণে থাকার ব্যবস্থা করা হয় তাঁর। পানশালাটি সেই মহল্লাতেই।
ব্যারী আমার দেখা প্রথম বারমুডা ট্রায়াঙ্গল ফেরত মানুষ, তাও একবার না, শত শত বার ! বলত, ওখানে ব্যাখ্যার অতীত কিছুই নেই, সব মানুষের ভুয়া গল্প। খুব মুক্তমনা মানুষ ছিল, যুক্তির বাহিরে কিছু মানত না, কিন্তু সব কিছু শোনার একটা খোলা দরাজ হৃদয় ছিল তাঁর। দোষের মধ্যে একটাই- প্রবল কথা বলতে চাইত। একাকীত্বের প্রবল দৈত্য সওয়ার ছিল তাঁর কাঁধে দশকের পর দশক এই দূরদেশে। তাই সুযোগ পেলেই মনের খোরাক মেটানোর জন্য চলে আসত মাতালাড্ডায়।
এক ভোরে ঘুমের মাঝেই সীমাহীন সমুদ্রের উদ্দেশ্য পাড়ি দেয় সে, যার শেষ প্রান্ত থেকে কেউ ফেরে না।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেবার জন্য ছেলে স্তেফান সস্ত্রীক উড়ে আসে মার্কিন দেশ থেকে। ব্যারীর ইচ্ছে ছিল তাঁর মৃতদেহ পুড়িয়ে ছাই করে যেন আটলান্টিকে ভাসিয়ে দেওয়া হয়, যার নীল জলে কেটেছে তাঁর দুরন্ত যৌবনের দিনগুলো, নিদেনপক্ষে কোন একটা সাগরে। সিদ্ধান্ত হয় বাল্টিক সাগরেই ভাসানো হবে দেহভস্ম, যার তীরে কেটেছে তাঁর দুর্ঘটনা পরবর্তী ধূসর জীবন।
অল্প কজনা বন্ধু আসে, ছোট্ট ইঞ্জিন বোট পাড়ি দেয় জলপৃষ্ঠ ঠেলে। সেদিনে বিকাল আর সন্ধ্যার মাঝের আকাশে খেলা করছিল মেঘ আর বাতাস, তৈরি করছিল সূক্ষ সব নকশা, যাকে আচ্ছামত রাঙ্গিয়েছিল সূর্যরশ্মি। দেহভস্ম সমর্পণের আগে একটা বই খুলে ব্যারীপুত্র স্তেফানের দিকে এগিয়ে দেয় তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কালো চামড়ায় মোড়া পাৎলা একখানা বই, বাইবেলের চেয়ে কলবরে অনেক্কক্ক ছোট।
মানুষের সৃষ্টিশীলতায় বিশ্বাসী ব্যারী ছিল পাঁড় নাস্তিক । জীবনে এত করাল রূপেও মানুষ ছেড়ে অলৌকিক কোন দেবতা ভজেনি সে। তাঁর শেষকৃত্যে শান্ত সমুদ্রে উম্মুক্ত আকাশের নিচে চোখে জল নিয়ে পুত্র কোনমতে অস্ফুট স্বরে পড়ে যাচ্ছিল আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বই দ্য ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য সী।
এটাই ছিল নিজের শেষকৃত্য নিয়ে মানুষে আস্থা রাখা অবিশ্বাসীর শেষ নির্দেশ।
(সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা)
মন্তব্য
মাসুদ সজীব
facebook
বেশিরভাগ মানুষ উনার এই বিশ্বাসটাকেই 'অ'বিশ্বাস বলে ডাকবে। কারণ উনি তাদের প্রথাগত বিশ্বাসে বিশ্বাসী নন।
ভাল লাগল।
অমানিশা
প্রথা জিনিসটা বড়ই গোলমেলে, কিছুদিন আগেও স্বামী মারা গেলে বৌকে এক সাথে পুড়িয়ে মারায় প্রথা ছিল!
facebook
ভালো লাগলো।
__________
সুপ্রিয় দেব শান্ত
facebook
ধন্যবাদ, তারেক অনু ভাই। একজন সত্যিকার যুক্তিশীল মানুষের সাথে পরিচয় করানোর জন্যে। আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে এরকম আরো অনেক কিছু শোনার অপেক্ষায় রইলাম
ধন্যবাদ। জ্ঞানের ভিত্তি দৃঢ় না হলে যুক্তি কাজ করে না বয়সকালে বা বিশেষ অবস্থায়
facebook
মনে করেছিলাম দেশি কাউকে নিয়ে লিখবেন,যাই হোক এমন কোন দেশি গল্পের অপেক্ষায় থাকলাম । বুললে বুলবেন যে বুলছি
অবশ্যই
facebook
আপনার জীবনে প্রচুর অভিজ্ঞতা। এইসব অভিজ্ঞতা নিয়ে একটা বই লিখে ফেলেন। কে জানে হয়ত একদিন আপনাকে নিয়েও কেউ একজন লিখবে, হয়ত এই সচলায়তনেই । শুভ কামনা।
ফাহিমা দিলশাদ
ওরে বাবা! অভিজ্ঞতা অর্জন করি আগে
facebook
আহ্, হেমিংওয়ে। বৃদ্ধ সেই নাবিকের জন্য শ্রদ্ধা রেখে গেলাম।
গোঁসাইবাবু
ধন্যবাদ
facebook
লিখেছ, সত্য ঘটনা অবলম্বনে। সত্য ঘটনার থেকে গল্প-র দূরত্ব কতটা ছিল? গল্প না হয়ে ঘটনা হলেই আনন্দ পেতাম সবচেয়ে বেশী।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
দূরত্ব নেই
facebook
অসাধারণ! মনে জোর আনা গল্প/ঘটনা।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
facebook
ভাল্লাগছে।
ব্লগবাড়ি । ফেসবুক
facebook
এমন মানুষের কথা শুনলে মনে বল আসে। আশা জাগে। ধন্যবাদ লেখককে।
শুভেচ্ছা
facebook
ভাল লাগলো।
ঘটনা = যা ঘটে। ঘটনা তাই সবসময়ই সত্য।
ঘটে বটে, কিন্তু ব্যাখ্যা আমরা ভুল করি যে
facebook
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
ভালা আছেন নি, মুরব্বী?
facebook
ভালো নাইগো দাদা, ভালো নাই! গয়া নাইলে মথুরামের পথটা কোন্দিকে কইতে পারবেন? শান্তিতে কয়দিন রামনাম জপ করতে যাইতাম।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকাণ্ড । বিএসএফ ক্রনিক্যালস ব্লগ
..................................................................
#Banshibir.
এমনিতেই নাচুনে বুড়ি, তার উপর আবার ঢোলের বাড়ী!
facebook
ভূতের মুখে রাম নাম !
facebook
বুড়ো নাবিকের জন্য শ্রদ্ধা
facebook
অসংখ্য ধন্যবাদ এই অসাধারণ তথ্যটার জন্য।
আপনার লেখাটা পড়ে আমিও ভাবা শুরু করলাম, আমার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া আমি কেমন চাই। জনাব ব্যারির অতলান্তিকে ছাই ছড়ায়া দেয়ার গল্প শুনে আমি ভাবলাম আমার মৃতদেহটা পৃথিবীর কোন জায়গায় মাটির নীচে রেখে আসা যায় ( গাছ পোড়াতে হয় বলে মৃতদেহ পোড়ানোর ধারণাটা আমার পছন্দ না। ) তো ভেবে দেখলাম, পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হচ্ছে বর্ষারণ্য। আমাজন বা ইন্দোনেশিয়ার বর্ষারণ্যগুলা।
তারপর আমি ভাবা শুরু করলাম, আমার শেষ ইচ্ছা পূরণের জন্য আমার মৃতদেহ নিয়ে আমার বাচ্চারা ইন্দোনেশিয়া/ দক্ষিণ আমেরিকায় যাচ্ছে। আমার দেহ একটা বাক্সতে ভরে নিয়ে যাচ্ছে।
ঠিক তখনই বুঝলাম, আমার মৃতদেহ কোথায় রেখে আসা হচ্ছে, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। কারণ, আমি আর নাই, আর তাই আমার জানার উপায় নাই আমার শেষ ইচ্ছা আসলে পূরণ হইলো কিনা। আমার চাওয়া-না চাওয়ায় কিছুই যায় আসে না। আমি চাইতে পারি জীবিত অবস্থায়, আর তাই আমার চাওয়াও জীবিত আমির জন্য।
............
প্রশ্ন
সাধারণত পাশ্চাত্য বা চীনে বৈদ্যুতিক আগুনে এটা করা হয়, গাছের আগুনে নয়।
আমার মৃতদেহ কোথায় রেখে আসা হচ্ছে, তাতে আমার কিছুই যায় আসে না। কারণ, আমি আর নাই, আর তাই আমার জানার উপায় নাই আমার শেষ ইচ্ছা আসলে পূরণ হইলো কিনা। আমার চাওয়া-না চাওয়ায় কিছুই যায় আসে না। আমি চাইতে পারি জীবিত অবস্থায়, আর তাই আমার চাওয়াও জীবিত আমির জন্য। --- সঠিক উপলব্ধি
facebook
সতর্কীকরণঃ এই মন্তব্যটা শুধুমাত্র সেইসব প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যাদের শরীরকে কাটা-ছেঁড়া করা হচ্ছে দেখলে বা ভাবলে অসুস্থতাবোধ হয় না।
স্বীকারোক্তিঃ এই বিষয়টা নিয়ে আমি আগে চিন্তা করি নাই। আরো চিন্তা/ যুক্তি/ প্রমাণ প্রাপ্তির ভিত্তিতে আমার উপসংহার পরি-/বিবর্তনীয়।
..................
বাহ! ভালো তো!
প্রসঙ্গে --
নাহ, ভেবে দেখলাম, আমার কথাটা ঠিক না। আমি আমার মৃত্যুর পরে কি হইতে পারে, তাও চাইতে পারি। ধরেন, আমার বাচ্চাগাচ্চারা কি ধরণের পৃথিবী পাবে, সেইটা তো আমার চাওয়াই লাগবে। আমি জানি আর না জানি।
সেই পৃথিবীর মধ্যে কি আমার লাশের যা ইচ্ছা তাই হোক, আমি চাই? সেই পৃথিবীতে আমার বাচ্চাদের লাশের যা ইচ্ছা তাই হোক, সেইটা কি আমি চাই? আমার লাশ রাস্তায় পড়ে থাকুক, সেইটা কি চাই?
বেশ ভেজাইলা প্রশ্ন।
একদিকে আছে প্রথা। সম্মান জানানো। এইটা অবশ্য বড় কোন সমস্যা না। কোনটা সম্মান, আর কোনটা অসম্মান, সেইটা ব্যক্তির চিন্তা। চিন্তাটা যুক্তিসংগত কিনা -- অনুভূতিতে আঘাত পাওয়া ছাড়া তার বাস্তব আর কোন ফলাফল আছে কিনা -- সেইটা হচ্ছে প্রশ্ন।
ধরা যাক, আমার লাশ পিঁপড়ায় খাইলো। তাতে সমস্যা কি? তিব্বতে বৌদ্ধদের একটা সম্প্রদায় মারা যাওয়ার পর তাদের লাশ কেটে কুচি কুচি করে কেটে শকুনকে খাওয়ায়। তারা সেইটাকে অসম্মান না, বরং সম্মান বলে বিবেচনা করে। মুসলিম সম্প্রদায় যে দেহটাকে মাটির নীচে পুঁতে দেয়, সেইটাকেও তো অণুজীবরা খেয়ে ফেলে। কথা তো একই হইলো।
নাহ, তবে আমি চাই না আমার লাশ কুচি কুচি করা হোক। কারন, আমি চাই না আমাকে কারো লাশ কুচি কুচি করতে হোক। মানবদেহ এতো সুন্দর একটা জিনিষ যে এইটাকে কুচি কুচি করতে খারাপ লাগবে আমার। সুতরাং আমি চাই এতো বড়ো মস্তিষ্কের সবাই এই সৌন্দর্যটাকে প্রশংসা করুক এবং কেউ এইটাকে কুচি কুচি না করুক।
আচ্ছা, কেউ যদি "সুন্দর করে" কুচি কুচি করে, তাহলে কি আমি সেইটাকে স্বীকৃতি দিবো? আমার এই সৌন্দর্যতত্ত্বকে সে ব্যবহার করে তো বলতে পারে, "আমার কাছে এই কুচি কুচি করার শিল্প এতো সুন্দর লাগে যে, আমি চাই না এতো বড়ো মস্তিষ্কের কেউ আমাকে এই কাজে বাঁধা দিক।"
বেশ ভেজাইলা প্রশ্ন।
কুচি কুচি করার দরকারটা কি? কার্বনচক্র তো অন্যভাবেও পূরণ করা যায়। কিন্তু এইটা যে অন্যতম উপায়, সেইটাও তো অস্বীকার করা যায় না। অন্য উপায়গুলার চেয়ে এই উপায়কে কেন বেশী নিরুৎসাহিত করা উচিত? খারাপ লাগে ভাবতে, এইটা কোন কথা না। অনেক ব্যাপার নিয়ে প্রশ্ন তুললেই অনেকের খারাপ লাগে। খারাপ লাগা/ ভালো লাগা -- এইগুলা একটা কাজ করা উচিত না অনুচিত, সেইটার নির্ণায়ক হইতে পারে না।
আচ্ছা, আমার উত্তর আছে। আমার কাছে দুনিয়াটাই ভাল্লাগে। এই দুনিয়াতে আমাদের শরীরটা আসতে চৌদ্দশ' কোটি বছর লাগসে। যতো সুন্দর করেই কুচি কুচি করে হোক না কেন, সেইটা এই চৌদ্দশ' কোটি বছরের গল্পটাকে নষ্ট করে ফেলবে।
কিন্তু তাহলে তো আর কোন শিল্পকেই অনুমতি দেয়া যায় না। পাথর কেটে ভাস্কর্য বানানোও তো চৌদ্দশ' কোটি বছরের গল্পটাকে নষ্ট করে দেয়। আর, "শৈল্পিকভাবে" কুচি কুচি করুক বা না করুক, আমার কাছে মানবদেহ ভাল্লাগে বলে সেটা কেন তাদের শকুনদের ভালো চাওয়ার চেয়ে বেশী প্রাধান্য পাবে?
আচ্ছা, ওরা না হয় সহ্য করতে পারে কুচি কুচি করা, আর আমি পারি না। মেনে নিলেই তো হয়।
নাহ, সমস্যা থেকে যায়। ধরা যাক, আমার নাতির বাচ্চারা ( আবেগজনিত পক্ষপাত পরিহার করার জন্য আমার বাচ্চা ও তাদের বাচ্চাকে ধরলাম না, যেহেতু ওদেরকে আমার দেখে যাওয়ার ও ওদের সাথে পিতা-পিতামহের সম্পর্কটা পাওয়ার সম্ভাবনা আমার আছে ) মারা গেল, আর তাদের বাচ্চারা ঠিক করলো, শুকুনদের খাওয়ানোর জন্য তাদের বাবাকে কুচি কুচি করে কাটবে। আমার বংশধরদের মধ্যেই ডেক্সটার আসছে কিছু, ধরা যাক। আমি কি মেনে নিবো? তাদের সাথেও তো তাদের বাবার ভালোবাসার সম্পর্ক আছে। তাদের কাজকে যদি মেনে নেই, তাহলে আমার বাচ্চারা যদি আমার শরীর শকুনকে খাওয়ায়, আমি মেনে নিবো? নাকি আমার অনুভূতিতে আঘাত লাগে খালি এই যুক্তিতে তাদেরকে বাঁধা দেয়ার ব্যবস্থা করে যাবো?
নাহ, তারা খাওয়াইতে চাইলে খাওয়াবে। আমার কাছে অনুভূতির চেয়ে সত্যি প্রিয়। এখন আমার ধারণাটা গিলতে কষ্ট হইতেসে। কিন্তু গিলতে কষ্ট হইলেও যুক্তি যা বলে, আমার কাজটা তাই হওয়া লাগবে। আমার দেহকে তারা যদি শকুনের খাবার বানাইতে চায়, আমার সেইটাতে আপত্তি রাখা উচিত না। আমার মরাদেহ শকুনে খেলে সেইটা তাদের উপকারেই আসবে। আমার অনুভূতিতে আঘাত লাগে, এই জেদ ধরে আমার মরাদেহটাকে ( যেটা কোনদিন বর্ষারণ্যে শায়িত হওয়ার শান্তিটা অনুভব করতে পারবে না ) একটা ভালো কাজের চেয়ে বেশী গুরুত্বপূর্ণ ভাবার মানে নাই।
আমার উপসংহার তাইলে দাঁড়াইলো, আমার দেহটাকে নিয়ে তারা যতোখন না পর্যন্ত এমন কিছু করতেসে যে, তাদের সেই কাজের জন্য পরিবেশের ক্ষতি হয়, আমার দেহ নিয়ে যা খুশী করার অধিকার তাদের আছে। আমার ব্যক্তিগত ইচ্ছা আমার দেহটা বর্ষারণ্যে যাক। এবং এইটা শকুনকে খাওয়ানোর চেয়ে কোন দিক থেকে কম ভালো না ( অবশ্য শকুনরা বিপন্ন, অণুজীবরা না; এইটা একটা কথা হইতে পারে। ) কিন্তু আমার বাচ্চারা যদি দেখে আমার দেহের অন্য কোণ পরিণতিও পরিবেশের জন্য সমান বা অধিকতর ভালো, আমার সেইটা নিয়ে সমস্যা নাই ( এখন যদিও গিলতে কষ্ট লাগতেসে, কিন্তু আমি এমন কিছু করে যাবো না যে, তারা বাঁধা পায় তাদের কাজ করতে। আর শকুনরাই যদি বেশী বিপন্ন হয়ে থাকে, এবং তারা আমার মৃতদেহটা ওদেরকে খাবার হিসেবেই দিতে চায়, আমি এমন কিছু করে যাবো না যে তারা সেই কাজটা করতে বাঁধা পায়। বরং আমি তাদেরকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়ে গেলাম এই ধরণের কাজে। )
...............
প্রশ্ন
পুনঃশ্চঃ আমি বেপথে চলে গেসি। আমার চিন্তাটা "আমার বাচ্চারা এইটা করতে চাইলে আমার কি করা উচিত বা উচিত না" হওয়া উচিত না। আমার চিন্তাটা হওয়া দরকার, "আমার কি করা উচিত?" আমার চিন্তাটা হওয়া দরকার, "আমি কি মরা শরীরের শান্তি চাই, নাকি আসলে শরীরটা কোন কাজে আসুক, সেইটা চাই?"
সপাদনাঃ আমার এই বিষয়ে মন্তব্যের সারমর্ম হচ্ছে, "মরদেহকে কি করা উচিত? যদি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানবজাতির উত্তরজীবিতাকে সাহায্য করে, এমন কোন প্রথাগত বা অপ্রথাগত পদ্ধতিতে মরদেহের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করা সম্ভব হয়, সেটা কি আমাদের করা উচিত?"
............
প্রশ্ন
নাহ, আমার মনে হয়, পোড়ানো বা কবর দেয়া বা শকুনকে খাওয়ানোর চেয়ে ভালো কাজ হবে মরণোত্তর দেহকে দান করে যাওয়া শিক্ষার জন্য। শকুনকে তো হাঁস-মুরগীও খাওয়ানো যায়। অণুজীব বিপন্ন না। শিক্ষা আর গবেষণার কাজে মানবদেহের উপযোগীতা আর যে কোন পদ্ধতির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার চেয়ে বেশী।
............
প্রশ্ন
মেডিক্যালে ডান করে যাওয়া একটা কাজের কাজ। আমাদের দেশে প্রথম করেছিল আরজ আলী মাতুব্বর
facebook
শেষের অংশটা পড়ে গায়ের লোম খাড়া হয়ে যাচ্ছিলো।
ধন্যবাদ
facebook
এরকম সব বুড়ো নাবিকদের জন্য ভালোবাসা................
_____________________________________________________________________
বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।
facebook
হৈ মিয়া, হেমিংওয়ের মুখ দিয়া গাইল দিলেন,
মানুষ যাও বা এট্টূ চিন্তা ভাবনা করত, এখন তো তাও করবে না
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
চিন্তা করলে কী আর এমন হয় !
facebook
আমার হয় না, "তেনাদের" তো হয়
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
তেনাদের নাম মুখে নিয়েন না মিয়াঁ
facebook
না বুইললে তো বুইলবে যে বুইলেশী
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
যুক্তিতেই মুক্তি ....
অসাধারন লেখা অণুদা ...
===========
দস্যু ঘচাং ফু
facebook
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে তিনি যেভাবে চেয়েছেন সেভাবেই তাঁর অন্ত্যেস্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে, অনেকেরই অনেক ইচ্ছা থাকে কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পর তা বাস্তবায়িত হয়না।
অভিমন্যু .
________________________
সেই চক্রবুহ্যে আজও বন্দী হয়ে আছি
সত্য
facebook
নতুন মন্তব্য করুন