সকালে ঘুম ভাঙ্গালো হয়েছে প্রভাত রবির আলোয় ইউক্রেনীয় শহরের দুর্গ, অরণ্য, নদীর দেখার জন্য। এবং ছবি তোলার জন্য। রূপকথার দুর্গ ঝকমক করছে সূর্যের কুমারি আলোয়, আবার নদীর দুই পাশে চুনাপাথরের আদিম প্রাচীরও আঁধার চিরে জানান দিচ্ছে তার আভাস। শহরের একাধিক প্রান্তে যেয়ে একাধিক দুর্গের ছবি তুলে,
নীল ক্যাথেড্রালের স্মৃতি মনে রেখে বাসায় চটজলদি ফিরে সোজা ইউক্রেন- মলদোভার সীমান্তের পথে। উফ, সে কী রাস্তা! যে কোন সময় গাড়ীর টায়ার ফেটে যেতে পারে ঝাঁকুনিতে, বা আচমকা পড়ে যাওয়ায়। চিকন সব রাস্তা, ইউক্রেনের অসাধারণ সব স্মৃতি প্রায় মিলিয়ে যাচ্ছিল রাস্তার ঝাঁকুনিতে, সেই সময় উদ্ধার করল সীমান্তের চিহ্ন।
মলদোভার বর্ডার গার্ডরা অনেক বন্ধুবৎসল ইউক্রেনের তুলনায়। বেশ তাড়াতাড়ি সব কিছু চেক করে, গাড়ী প্রতি ৪ ইউরো ট্যাক্স নিয়ে ছেড়ে দিল আমাদের। অবশেষে আমরা মলদোভায়-
২০০৪ সালে স্নেজানার নামের এক অসাধারণ চোখের মেয়ের সাথে পরিচয় হয়েছিল, সে-ই আমার দেখা প্রথম মলদোভার মানুষ, জানিয়েছিল সেই দেশের ওয়াইন, পাহাড়, সরল মানুষের কথা। এক যুগ আগের কথা, স্নেজানা বা স্নেজির সাথে যোগাযোগ এবার হল না বটে, কিন্তু মলদোভা দেখে মনে হলে টিনটিনের কোন কাহিনীতে ঢুঁকে পড়েছি- সিলাডাভিয়া বা খেমেদে। তেমনি উচি নিচু পাহাড়ি পথ, ঘোড়ার গাড়ী, গ্রামের কৃষক, আঙ্গুরের ক্ষেত। খুব আপনার মনে হল দেশটাকে।
মনে হচ্ছিল আর দুইটা শব্দ- তুসকানি এবং ভিনসেন্ট! আসলেই মলদোভার প্রথম দিকের ল্যান্ডস্কেপ একেবারে ইতালির তুসকানির মতো দেখতে, কেবল এখানে অনেক জায়গায়ই পাহাড়গুলোর নিচে দারুণ সব হ্রদ হয়ে গেছে জল জমে। আর পপলারের সারি দেখে মনে হচ্ছিল ভিনসেন্ট ভানগগের অপূর্ব কোন চিত্রকর্ম।
এক জায়গায় দেখা গেল রমজান নামের এক স্থান, দেখেই রমজান ভাই প্রবল উৎসাহে ছবি তুলে ফেললেন গাড়ী থামিয়ে-
সেই সাথে সেখানের কিষাণীর কাছে থাকে নেওয়া হল সুস্বাদু তরমুজ, আবার আঙ্গুরও খুব কম দাম।
এমনিতেই তো আর মলদোভাকে বলা হয় না ওয়াইনের দেশ!
মাঝে দুপুরের ভোজন হল একেবারে বনের মাঝে, যাকে বলে বনভোজন।
প্রায় সাড়ে চারশ কিলোমিটার গাড়ী চালিয়ে পৌঁছানো গেল মলদোভার রাজধানী চিসিনাউতে। কী অসাধারণ এক শহর! কোন ব্যাটা বলেছিল মলদোভা ইউরোপের দরিদ্রতম দেশ! তারে কান ধরে ডেকে এনে দেখানো দরকার প্রাণময় ইচ্ছল শহরটি। খানিকক্ষণ শহরটি ঘুরে হোস্টেলে সব রাখে চলে গেলাম স্থানীয় বাজারে। একেবারে বাংলাদেশী বাজার, কেবল মানুষগুলো শ্বেতাঙ্গ এইই আর কী ! দামাদামি চলছে, আঙ্গুর, আপেল, মাছ, চিংড়ি সব পণ্যের বাজার। অবশেষে টাটকা মিনার কার্প কেনা হল আজ মাছ ভাজা খাবার আশায়।
কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি হল শহরে কেন্দ্রে, সংসদ ভবনে, আশেপাশে। সুনিতম্বনীর দল ঢেউ তুলে চলে যাচ্ছে পথ ধরে, পাগল করা শহর এক!
চোখ সামলে রাখায় দায় ( থুক্কু- লাইনে আসুন!)।
মলদোভা ইউরোপের সবচেয়ে সেরা ওয়াইন উৎপাদন দেশকারী দেশগুলোর একটা। কাজেই এখন আমরা ব্যস্ত, ফ্রাইডে নাইট ফেভার। আবার দেখা হবে-
মন্তব্য
দেখা তাহলে হয়ে গেল মলডোভায়! পানপাত্র উপুড় রাখা চাই কিন্তু।
অবশ্যই
facebook
প্রথম ছবিটার ক্যামেরাওয়ালার তুলনায় আপনার স্বাস্থ্য একটু বেশি ভালো বলে মনে হল। এত এত খেয়ে বেড়ালে ওজন তো বেশি হবেই
facebook
যেদিন থেকে সচলায়তন পড়ছি, দেখছি, সেদিন থেকেই আপনার
সাথে পরিচয়। ভাল লাগে আপনার পোস্টগুলো। ডয়েচ শিখছি বলে অয়রোপা সম্পর্কে আমার বেশ আগ্রহ আছে।
আপনার ছবিগুলো এক উদ্দীপনা সৃষ্টি করে আমার মাঝে। যাত্রা শুভ হোক (গুটে রাইজে !)
অয়রোপা কি ভাই?
facebook
মূর্তিটা বসানোর সময় এই লোকের-ই কল্পনা করেছিল মনে হচ্ছে!
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
facebook
রাগো ক্যা? ভালো কতাই ত কইলাম?
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
facebook
- তাই তো মনে হচ্ছে
facebook
চলুক।
facebook
আপনার সাথে ঘুরলাম মলদোভা। চমৎকার এক দেশ।
ছবিগুলো প্রাণবন্ত। ঘোড়ার গাড়ি, গ্রামের কৃষক ছবিটা ভীষণ ভালো লাগছে।
(নীল কথন)
facebook
নতুন মন্তব্য করুন