হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল নামটা কি পরিচিত লাগছে?
হর্নবিল মানে তো ধনেশ পাখি, অসাধারণ যে প্রাণীটাকে প্রায় বিলুপ্তির মুখোমুখি নিয়ে গেছি আমরা গাছ কেটে, বন ধ্বংস করে। কিন্তু হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম অজানা কোণ নাগাল্যান্ডের যত জাতের আদিবাসী আছে তাদের সকলের সমারোহ, নিজ নিজ পোশাকে, এমনকি আলাদা আলাদা জাতির ভিন্ন ভিন্ন বাসগৃহের প্রমাণ আকারের মডেল পর্যন্ত এনে রাখা। ১০ দিনে সেখানে চলবে নাচ গান, আনন্দ আর সারা বিশ্ব থেকে পর্যটকেরা আসবে নাগাল্যান্ডের এই অসামান্য অদ্বিতীয় আকর্ষণের টানে।
আর হ্যাঁ, আমরাও চলেছি! হাচল সৈয়দ আখতার ভাই জানালেন বাংলাদেশ থেকে এই প্রথম সম্ভবত একটি দল যাচ্ছে হর্নবিল ফেস্টিভ্যালে, এবং সে দলে আছেন সচল পরিবারের কয়েকজন সদস্য!। সচলেরা দলে আরও ভারী হতে পারতেন কিন্তু পান্থ রহমান রেজা ভাই কী এক কিম্ভূত অজুহাতে সটকে পরাই অল্পে জন্য একহালি হতে পারলাম না।
এই মুহূর্তে আমি আরামবাগের শ্যামলী বাস কাউন্টারের সোফায় কোনমতে চেপেচুপে জায়গা করে নিয়ে লিখে যাচ্ছি, আশা করছি বিশ্বখ্যাত এই সেভেন সিস্টার্সে ২ সপ্তাহ কালীন অবস্থানের সময়ে প্রতিদিনই অল্প হলেও লেখা এবং ছবি আপনাদের সাথে ভাগাভাগি করতে পারব, ঠিক পূর্ব ইউরোপ ভ্রমণের মত!
কাল ভোরে আমরা পৌঁছাচ্ছি সিলেটে, সেখানে থেকে ভাড়া করা গাড়ীতে করে তামাবিল, তারপর সীমান্ত অতিক্রম করে এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রামের উপাধি পাওয়া মাওলিন্নং দেখে সোজা শিলং। চট্টগ্রাম থেকে ইতিমধ্যেই রওনা দিয়ে চিয়েছেন দৈপায়ন দা, আর ফিনল্যান্ড থেকে আমার বড় ভাই তানভীর অপু, সাথে পুরান ঢাকার বাসিন্দা এভারেস্টজয়ী এম এ মুহিত এবং অপুর বাল্যবন্ধু সকল কাজের কাজী নাদিম ভাই। সৈয়দ আখতার ভাই ইতিমধ্যেই আমাদের জন্য অপেক্ষা করছেন ডাউকি সীমান্তে, তাঁর সাথে শুরু হচ্ছে আসাম ভ্রমণ। সেখান থেকে চেরাপুঞ্জি যাবার আগ পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব প্রিয় ভ্রামণিক তন্ময় দা এবং তাঁর ভাই প্রণবের জন্য। উল্লেখ্য তন্ময়দাকে ভারতীয় দুতাবাস ভিসা দেয় নি, অপরাধ- সে বিয়ে করার মত মহাভুল কাজ করেছে!
আসলে হয়েছ কী, তাঁর পাসপোর্টে লেখা অবিবাহিত কিন্তু ভিসা ফরমে উনি লিখেছেন বিবাহিত! বিয়ে আবার হয়েছে ধর্মীয় মতে, তাঁর নেই কোন কাগজ ! কাজেই বিবাহিত প্রমাণ করতে না পারাই তাঁর ভিসা মেলে নি! এখন হয় অবিবাহিত কিন্তু ডিভোর্সি, যে কোন একটা দেখিয়ে ভিসা নিয়ে উনি কাল রওনা দেবেন প্রণবের সাথে, তার পরপরই শুরু হবে আমাদের ৮ জনের বৃষ্টিরাজ্য চেরাপুঞ্জি ভ্রমণ !
৫ ডিসেম্বর- চেরাপুঞ্জির নানা জলপ্রপাত, শিকড়ের সেতু, লেহদুর ঐতিহ্যবাহী খাসি জাতির বাজার ঘুরে রাতে ফেরা হবে চেরাপুঞ্জি রিসোর্টে।
৬ ডিসেম্বর- চেরাপুঞ্জি থেকে মাফ্লাং-এর পবিত্র বন ঘুরে তীর্থ শিব লিঙ্গ গুহা দর্শন সেরে খাসি জাতির তীরন্দাজী নৈপুণ্য দেখে ফেরা হবে রাতের ডেরায়।
৭ ডিসেম্বর- নাস্তা সেরে ৬ ঘণ্টা গাড়ী ভ্রমণ শেষে যাওয়া হবে কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে, দেখার চেষ্টা করব সেখানে বিখ্যাত গন্ডারসহ অন্যান্য প্রাণী ও নানা পখি বিশেষ করে বেঙ্গল ফ্লোরিকান দেখার।
৮ ডিসেম্বর- কাজিরাঙ্গা পার্কে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে যাত্রা শুরু হবে দিমাপুরের দিকে। পথে ডিজেফে গ্রামে কাঠ, বাঁশ ও ধাতব পাতে খোদাই করা শিল্পকর্ম উপভোগের জন্য থামা হবে অল্পক্ষণ। তারপর ৮০০ বছরের প্রাচীন কাচরি সাম্রাজ্যের পুরাকীর্তি দেখে সেদিনের মত ক্ষান্ত।
৯ ডিসেম্বর- দিমাপুর থেকে কোহিমার পথে কোহনোমার প্রাচীন যুদ্ধক্ষেত্রে টুকি মেরে বায়াভি হিলে জাতীয় জাদুঘরে দেখে নাগা গ্রামের বিশেষ বাজারে যাওয়া, যেখানে কিনা অধিকাংশ দোকানীই মহিলা।
১০ ডিসেম্বর—সোজা হর্নবিল ফেস্টিভ্যাল। এবং নাইট কার্নিভাল।
১১ ডিসেম্বর- কোহিমা থেকে মণিপুরের রাজধানী ইমফল। কাংলা দুর্গে লাঞ্চ সেরে ইমা বাজারে ঘুরফির করে আবার ফেরা হবে ইমফলের আস্তানায়।
১২ ডিসেম্বর- ইমফল থেকে ৪৮ কিমি দূরের লাক্টাক হ্রদ এবং সেন্দ্রা দ্বীপ দর্শন সেরে কেইবিল লামযো ন্যাশনাল পার্ক নামের বিশ্বের একমাত্র ভাসমান ন্যাশনাল পার্ক দেখে গান গাইতে গাইতে ফেরা হবে রাতের মোটেলে।
১৩ ডিসেম্বর- - ইমফল থেকে ৮৪ কিলোমিটার দূরের মনিপুরের পাহাড়ি শহর উখরুল যেখানে থাংকুল নাগা জাতির লোকের থাকে, তাদের দেখে ১৬৬২ মিটার উপরের বাতাসে নিঃশ্বাস নিয়ে আবার ফেরা হবে ইমফল।
১৪ ডিসেম্বর- ১ ঘণ্টার বিমান ভ্রমণে সোজা ইমফল থেকে গৌহাটি। সেখান থেকে গাড়ীতে আবার শিলং, পথে আমাদের অন্যতম আকর্ষণ কামরূপ-কামাখ্যা মন্দির, কিংবদন্তীর সেই স্থান এবং বারাপানি হ্রদের সূর্যাস্ত দেখে মনে করব জীবন কত সুন্দর।
১৫ ডিসেম্বর—আবার তামাবিল দিয়ে বাংলাদেশ! বিজয় দিবসের আলোয় রাঙ্গা প্রভাতে দেখা হবে ঢাকায়----
(তাহলে দেখা হচ্ছে কাল রাতে শিলং-এ! সাথে থাকুন, সচল থাকুন! )
মন্তব্য
এই বদলোকের সচলত্ব বাতিল করে সচলে লেখা বন্ধ করা হোক। তার সকল লেখা বাজেয়াপ্ত করা হোক। মিথ্যা কথা আর ফটোশপের একটা সীমা থাকে!
______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন
facebook
আমাদের আপডেটেট রাখবেন।
খ্যা খ্যা
facebook
পরিকল্পনা সফল হোক।
-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু
আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে
অবশ্যই
facebook
ধনেশ পাখির বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়া জওয়ানি বর্ধক এবং নারী পুরুষের বিভিন্ন রকম গোপন অসুখের অনেক রকম দাওয়াই তৈয়ার করা যায়। নিয়া আইসেন কয়েকটা।
এইগুলা বাজে কথা
facebook
আপনাদের নিয়া এই এক মুশকিল! বাংলাদেশে জোঁকের তেল, শিয়ালের তেল, মান্ডার তেল, হাড়গিলার হাড্ডি, ধনেশের মুন্ডু, এইসবের গুনাগুন নিয়া কেউ সন্দেহ করে নাকি? এখন টিভিতেও বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে হুঁ হুঁ! অব্যর্থ ফল।
প্ল্যান পড়েই মাথা ঘুরাচ্ছে, চমৎকার!
পোস্টাতে থাকেন, সাথেই আছি।
---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।
ওকে
facebook
পড়তে শুরু করলাম
------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল
নতুন মন্তব্য করুন