(১৯৭৩ এর ২৩ সেপ্টেম্বর পাবলো নেরুদা চিলিতে মারা যান বা হয়তো খুন হন। তার দেড় মাসের মধ্যেই ১৯৭৩ সালের নভেম্বরে ‘বিনোদন’ পত্রিকায় শামসুর রাহমানের এই লেখাটি প্রকাশিত হয়, যা সাধারণত কোথাও দেখি না। সম্প্রতি পত্রিকাটি হাতে আসায় ভাবলাম এই লেখাটি ব্লগে থাকুক। আর ভারতীয় কূটনীতিক জনাব মুচকুন্দ দুবের একটা কথা মনে পড়ল, উনি শামসুর রাহমানের কবিতা নিয়ে বলেছিলেন যে “বিশ্ব সাহিত্য নিয়ে আমার যে লেখাপড়া তাতে সত্যি বলতে মেটাফোর বা উপমার সার্থক প্রয়োগের ক্ষেত্রে পাবলো নেরুদার পরেই শামসুর রাহমানের স্থান, আর যে কোন কবির চেয়ে”, সেই হিসেবেও এই লেখা পাঠ জরুরী। আর বিশ্ব সাহিত্যে নেরুদা মত কোন কবি আসেনি যার নির্বাচিত কবিতা সংকলন হয় ১৫০০ পাতার এবং মূল সমগ্র ৩০০০ পৃষ্ঠার, আবার শামসুর রাহমান প্রায় ৩০০০ কবিতা আমাদের উপহার দিয়ে গেছেন যা বাংলায় অদ্বিতীয়)
চিলির বুক থেকে অবিরল ঝরছে রক্ত। চিলি এখন ধর্ষিত। চিলির প্রগতিবাদী জনসাধারণের আর্তনাদ যাতে বহির্বিশ্বে ধ্বনিত না হয় সেজন্যে সামরিক জান্তা ধারালো বেয়োনেট চেপে ধরেছে তাদের গলায়। কিন্তু তবু বুলেটের গর্তের মত চিলির বুক ঠেলে আর্তনাদ ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। আমরা সেই আর্তনাদ শুনে শোকার্ত, ক্ষুদ্ধ। আমরা ধিক্কার দিচ্ছি চিলির ফ্যাসিস্টদের, যারা বুলেটে ঝাঁঝরা ক’রে দিয়েছে প্রেসিডেন্ট আলেন্দের হৃৎপিণ্ড, যারা হত্যা করেছে বুদ্ধিজীবীদের, যারা জীবনের প্রান্তর থেকে উপড়ে ফেলেছে বহু সতেজ প্রাণ। চিলির রক্তময় রাস্তাগুলো ভয়ার্ত পথিকদের শোনাচ্ছে এক জঘন্য বর্বরতার কথা, কখনো বা প্রতিরোধের কথা। পাবলো নেরুদা যিনি ধর্ষিত চিলির প্রতি নিবেদন করতে পারতেন নতুন শোকার্ত, পবিত্র সর্গমালা, এক কবিতায় উচ্চারণ করেছিলেন ঃ
শুধু আক্রোশ আর শোকের অনবকাশ
শুধু মৃত্যু আর ক্রোধ –
যতক্ষণ না অশ্রু আর বুকফাটা দুঃখের
পুনর্মিলন ঘটেছে,
যতক্ষণ না কথা আর হতাশা আর ক্রোধ
জমে উঠেছে রাস্তার ওপর কংকালের স্তূপ
কিংবা কবরের ওপর ধুলোয়-ঢাকা
স্মৃতিফলক হয়ে।
এতো অগুনতি কবর, এতো শহীদের
আত্মত্যাগ, হায়রে
ধ্রুবতারার দেশে এতগুলো জানোয়ারের
উম্মত্ত দাপাদাপি।
হায়রে।
এই ভয়ংকর রক্তাক্ত ক্ষত কিছুতে
শুকোবার নয়,
জয়লাভেও নাঃ
কিছুতে না, সমুদ্র-সিঞ্চনে না-
সময়ের সিকতা-সৈকতে অতিক্রম করে
এলেও না,
কবরের মাটিতে জ্বলন্ত জেরেনিয়াম ফুটলেও না।
যিনি লিখতে পারতেন অনুরূপ বেদনার্ত, জোরালো কথাগুচ্ছ, তিনি এই মুহূর্তে অন্তরীণ। কিন্তু তিনি যদি বেঁচে থাকেন শেষ পর্যন্ত, তবে তিনি যদি বেঁচে থাকেন শেষ পর্যন্ত, তবে ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই তিনি আবার চিলির শহীদদের কবরে কবরে অর্পণ করবেন তাঁর কবিতার জলন্ত জেরেনিয়াম। যে-কবি কণ্ঠে ধ্বনিত হতো মানবতার মহাসংগীত সে-কণ্ঠ আপাতত স্তব্ধ বটে, কিন্ত তাঁর মানসে মুহূর্তে মুহূর্তে বিদ্যুতের মত ঝলসে ওঠে যে-সব কবিতার পংক্তি তাকে থেঁৎলে দিতে পারে না কোনো জাঁদরেল জেনারেলের বুট। হয়তো ভবিষ্যতে কখনো মহাকালের নীলিমায় উদ্ভাসিত এমন কোনো বর্বর হুংকার নেই যা স্তব্ধ করে দিতে পারে এই মন্ত্র, বলীয়ান অর্কেস্ট্রাকে। অমর সেই সংগীত, যা পাবলো নেরুদার মেধা ও কল্পনায় লালিত হ’য়ে লতিয়ে উঠেছে এই শতকের অবয়বে। দীর্ঘায়ু তাঁর কবিতা, তিনি দীর্ঘজীবী হোন।
কখন প্রথম পড়েছিলাম পাবলো নেরুদার কবিতা? প্রায় একুশ-বাইশ বছর আগে ‘মাসেস এ্যাণ্ড মেইন স্ট্রিম’ নামে একটি পত্রিকায় প্রথম পড়ি পাবলো নেরুদার কবিতা। সুদীর্ঘ কবিতাঃ দীর্ঘ পঙক্তিমালায় ব্যপ্ত এক প্রাণখোলা, দরাজ ধ্বনিপুঞ্জ। কবিতাটি পড়ে সেদিন আমি আন্দোলিত হয়েছিলাম বলবো না- হয়তো তার অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারিনি। কিন্তু অন্ততঃ এটুকু উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম যে এই কবিতায় আছে এমন এক শক্তি যে শক্তি সমুদ্রকল্লোলের, প্রান্তরের উদ্দাম হাওয়ার।
তারপর বেশ কিছুকাল পাবলো নেরুদার কোনো কবিতা পড়ার সুযোগ আমার হয় নি। কিন্তু চিলির কবির নামটি আমার মনে মুদ্রিত হয়ে গিয়েছিলো অত্যুজ্জল অক্ষরে- সেই কবি আমার মধ্যে যে ঔৎসুক্য জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন তা কখনো নির্বাপিত হয় নি। আমি তাঁর কবিতার বইয়ের সন্ধানে ঘুরেছি ঢাকার প্রতিটি বুক স্টলে, অধীর ব্যগ্রতায় উল্টেয়েছি ম্যাগাজিনের পাতার পর পাতা। কিন্তু নিস্ফল হলো আমার সন্ধান। তা বলে হাল ছেড়ে দিই নি। হঠাৎ ১৯৫১ সালে শেষ দিকে হাতে এলো এক সংখ্যা ‘সাহিত্যপত্র’। কলকাতা থেকে প্রকাশিত সেই রুচিশীল, শ্মড়ীড্ডহ প্টড়ীকায় পেলাম পাবলো নেরুদার একগুচ্ছ কবিতা। অনুবাদক বিষ্ণু দে। পত্রিকাটি খুলে তখনই পড়লাম,
“ব্যাপারটা এই, মানুষ হয়ে আমি ক্লান্ত।
ব্যাপারটা এই, আমি দরজির দোকানে যাই,
সিনেমায় যাই,
জীর্ণ, অসাড়, পশমিনা এক মরালের মতোঁ
সব আদি আর অন্তের জলে সাঁৎরে সাঁৎরে।
এমন সব আপখি আছে যার রং গন্ধকের
আর বীভৎস নাড়িভুঁড়ি
ঝোলে সন জঘন্য বাড়ির দরজায় দরজায়,
এমন সব ঝুটা দাঁত আছে কফিদানেই যা বিস্তৃত,
এমন সব আয়না
যা নিশ্চয়ই লজ্জায় আর ভয়ে কেঁদেছে,
চারদিকেই ছাতা আর নানা বিষ আর
নাভি-কুণ্ডলী”
আমি অভিভূত হয়ে গেলাম, বিদ্ধ হলাম পাবলো নেরুদার পংক্তিমালায়ঃ আমার মানসে সৃষ্টি হলো এক অপরূপ রৌদ্রছায়া যা কোনো সৎকবিতা পাঠের পরেই জেগে ওঠে আমাদের চৈতন্যে।
পাবলো নেরুদা ১৯০৪ সালের ১২ জুলাই তারিখে দক্ষিণ চিলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জনক ছিলেন একজন রেলশ্রমিক, যিনি নেরুদার ছেলেবেলাতেই ট্রেন থেকে প’ড়ে গিয়ে মারা যান। নেরুদা বলেছেন, ‘আমার পিতা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী বৃষ্টিমুখর সমাধিক্ষেত্রগুলোর একটিতে সমাহিত’। নেরুদার আসল নাম কিন্তু নেফতালি বেল্টরান। তিনি চেকোশ্লাভিয়ার উনিশ শতকী এক লেখকের নাম গ্রহণ করেন নিজের ছদ্মনাম হিসেবে। সেই লেখকের অনুরক্ত ভক্ত ছিলেন তিনি। জীবনের শুরুতেই তিনি কিছু কবিতা লিখলেন যাতে মনে হলো চিলিতে এমন একজন কবির আবির্ভাব ঘটেছে যার কাব্যখ্যাতি ভবিষ্যতে ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে। মাত্র উনিশ বছর বয়সে প্রকাশিত হলো পাবলো নেরুদার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘প্রেমের বিশ্তু কবিতা ও একটি হতাশার গান’। এই বই আজো দক্ষিণ আমেরিকার ঘরে ঘরে পড়া হয় সমাদরে। কাব্যগ্রন্থটির প্রতিটি পাতায় কান পাতলেই শোনা যায় এক প্রেমিকের অন্তরঙ্গ হৃৎস্পন্দন। সেই হৃৎস্পন্দন হ’য়ে ওঠে পাঠকেরও হৃৎস্পন্দন। এসব কবিতায় পাবলো নেরুদা বহুমুখী প্রেমানুভূতিকে রূপায়িত করেছেন ভাষার এক আশ্চর্য সাংগীতিক কারুকৌশলে। অজস্র অনুপম চিত্রকল্প উপহার দিয়েছেন তিনি সে-সব কবিতায়।
কাব্যজিবনের আদিপরবে পাবলো নেরুদা ছিলেন সুররিয়ালিজমে সমর্পিত। একুশ বছর বয়সে থেকে একত্রিশ বছর পর্যন্ত- এই দশ বছর তিনি এমন কিছু স্যুররিয়ালিস্ট কবিতা লিখেছেন যার সমকক্ষ কবিতা পাশ্চাত্যে এখনো লেখা হয় নি। এই কবিতাবলী ‘রেসেডেন্সিয়া’ নামক গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত। বিখ্যাত মার্কিন কবি রবার্ট ব্লাইয়ের মতে, এসব কবিতার পাশাপাশি ফরাসী স্যুররিয়ালিস্ট কবিতা খুবই নীরস এবং শনায় নাবাল্ক পাখির খোনা চিৎকারের মতো। পাবলো নেরুদা যেমন বোদলেয়ার র্যাবো ও অন্যান্য ফরাসী প্রতীকবাদী কবিদের কাছ থেকে নিজের কবিতার পক্ষে উপকারী ও জরুরি উপকরণাদি আহরণ করেছিলেন তেমনি তাঁর কাব্যসাধনার ‘দীর্ঘযাত্রায় রসদ সংগ্রহ করেছিলেন ওয়াল্ট হুইট্ম্যান এবং মায়াকোভস্কির কাব্যভান্ডার থেকে। এলিয়ট হুইটম্যানকে আদিম ও গ্রাম্য মনে করতেন। কিন্তু পাবলো নেরুদা এলিয়টের কথায় সায় দিতে পারেন নি। নেরুদা বলেছেন, ‘হুইটম্যান অতটা সহজ, সরল নন; আসলে তিনি একজন জটিল মানুষ। এবং তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতাবলী এই জটিলতারই প্রসূন। তিনি খোলা চোখে তাকিয়েছেন এই জগত সংসারের দিকে; তিনি আমাদের কবিতা এবং অন্যান্য অনেক কিছুই শিখিয়েছেন। আমরা তাকে ভালোবেসেছি প্রবলভাবে। আমাদের ওপর কখনো এলিয়টের তেমন কোনো প্রভাব পড়ে নি।‘
স্পেনের গৃহযুদ্ধ এবং মার্কসবাদ পাবলো নেরুদার কবিতার মোড় ফিরিয়ে দিল। নেরুদা মার্কসবাদে দীক্ষিত হন মধ্য জীবনে। ১৯৪৪ সালে চিলির খনি শ্রমিকেরা তাকে সিনেটরের পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য অনুরোধ জানান। তিনি সিনেটর হিসেবে নির্বাচিত হলেন। তারপর তিনি চিলির রাজনীতিতে গভীর ভাবে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। মানবতাকে সাহায্য করার উদ্দেশ্যেই তিনি নেমেছিলেন রাজনীতির পথে। পাবলো নেরুদা রাজনীতিমনস্ক হওয়ায় অনেকে আশংকা করেছিলেন যে তাঁর রচনা আর কবিতাপদবাচ্য হবে না। কিন্তু রাজনীতি তাঁর পথে কোনো বাইরের খোলস ছিলো না, কিংবা ছিলো না ভাগ্যোন্নয়নের কোনো মনোহর সিঁড়ি। মানবহিতৈষণাই তাঁর অসামান্য কর্মৈষণার উৎস।
তিনি চিলির কনসাল রূপে কাজ করেছেন বিভিন্ন দেশে, এই সেদিনও ছিলে রাষ্ট্রদূত। কূটনৈতিক কর্ম, রাজনীতি কিছুই তাকে কবিতার পথ থেকে বিচ্যুত করতে পারে নি। তিনি আজীবন চৈতন্যকে প্রখর রেখেছিলেন, নিজেকে ব্যপ্ত রেখেছিলেন কবিতা রচনায়। নেরুদা রাষ্ট্রদূতের পদ ত্যাগ করেন কাব্যসাধনায় আরও বেশী সময়ার্পণের জন্য। যিনি কবিতার জন্য এই ত্যাগ স্বীকার করতে পারেন, কবিতা তাকে ত্যাগ করতে পারে না। প্রচণ্ডভাবে রাজনীতিমনস্ক হয়েও তিনি ভালো কবিতা লিখেছেন, লিখেছেন মহৎ কবিতা। আর নেরুদার কাব্যসম্ভারের অর্ধেকই রচিত হয়েছিলো তাঁর কম্যুনিস্ট হওয়ার পর। জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই তিনি মহৎ কবিতা লিখে গেছেন, একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়।
তাঁর কল্পনার সঙ্গী এক ব্যপ্ত, সুগভীর স্নেহশীলতা। তিনি বিশ্বের সব মানুষের সঙ্গে একাত্মবোধ করেন। এটা তাঁর কাব্যকে দিয়েছে স্বাতন্ত্র। রবার্ট ব্লাই, নেরুদা, এলিয়ট, ডিলান টমাস এবং এজরা পাউন্ডের আবৃত্তির একটি চমৎকার বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শ্রোতাদের সামনে এলিয়ট যখন নিজের কবিতা পড়তেন তখন সেটা একটা সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা বলে মনে হতো আবার এটাও মনে হতো যে তিনি ভাবছেন যাদের জন্য তিনি এই কষ্ট স্বীকার করছেন তারা আদৌ এর যোগ্য কি না, তবু যা হোক পড়ে যাবেন শেষ পর্যন্ত। টমাস যখন আবৃত্তি করতেন, মনে হতো যে তিনি জাদুকরী কিংবা আজগুবি কোনো কিছু করতে চলেছেন, হয়তো তিনটি শাদা ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হ’য়ে কুমারী মেরীর ছবি আঁকার মতো কিছু; এতে আপনারা লাভবান হ’তে পারেন কিংবা না-ও হ’তে পারেন। পাউন্ড অবশ্য তিনি কী করছেন তা’বুঝতে না পারার জন্য শ্রোতাদের ভৎসনা করতেন সারাক্ষণ। কিন্তু নেরুদা যখন তাঁর কবিতা আবৃত্তি করেন, তখন ঘরে এমন একটি পরিমণ্ডল গড়ে ওঠে যা শুধু তাঁর নিজের এবং শ্রোতামণ্ডলের মধ্যকার মমতা থেকে সৃষ্ট।
এজন্যই তিনি থিওক্রিটাস হতে চান নি, চান নি শুধু আধিবিদ্যক বিষয়ে কবিতা লিখতে। তিনি যেমন লিখেছেন দীর্ঘায়ু স্যুররিয়ালিস্ট কবিতা তেমনি রচনা করেছেন বহিজীবনের অসামান্য গাঁথা যার শক্তিমালা থেকে ঝরে পড়ে মমতার সৌন্দর্য, সৌন্দর্যের মমতা। যারা প্রকৃতই কাব্যপ্রেমী তারা চিরদিনই নতজানু হবেন এই মহান কবির প্রতিভার সামনে।
মন্তব্য
হ্যাঁ, থিওক্রিটাস হতে চাননি। তাই বলেছিলে, ওরা আমাকে বলেছে, "কি মহান তুমি থিওক্রিটাস।
আমি বলেছি, আমি থিওক্রিটাস নই।
জীবনের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে তাকে পেয়েছি,
জয় করেছি, চুম্বন করেছি।
তারপর প্রবাহিত মানুষের জীবনের
মুখোমুখি হওয়ার জন্য
হেঁটে গিয়েছি
পাহাড়ের মধ্যে দিয়ে, খনির গুহাগর্ভে।"
পৃষ্ঠাসংখ্যা বিবেচনায় শামসুর রাহমান আর নির্মলেন্দু গুণের সংকলনের আকৃতিও কাছাকাছি (কিংবা কিঞ্চিৎ বেশি) তো, তবে তাঁরা বোধহয় 'আন্তর্জাতিক' কবি নন!
____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?
অসাধারণ! আপনার, শামসুর রাহমানের, বিষ্ণু দে'র আর সর্বোপরি পাবলো নেরুদা'র মিলমিশে এবেলা ঋদ্ধ বাংলার প্রবাহে স্নান করে ঘরে ফিরি।
আহা, পাবলো নেরুদার গল্প। সবসময় ভালো লাগে।
'ইল পোসতিনো' নিয়ে তোমার লেখাটা মনে পড়ে গেল।
--------------------------------------------------------
এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।
এক লহমার... টুকিটাকি
নতুন মন্তব্য করুন