• Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function 'theme_imagefield_image' not found or invalid function name in theme() (line 669 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/theme.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_clear_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_electoral_list_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_results_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_votes_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).
  • Warning: call_user_func_array() expects parameter 1 to be a valid callback, function '_advpoll_writeins_access' not found or invalid function name in _menu_check_access() (line 454 of /var/www/sachalayatan/s6/includes/menu.inc).

পল রোবসনের আত্মজীবনী 'Here I stand'

তারেক অণু এর ছবি
লিখেছেন তারেক অণু (তারিখ: সোম, ১৬/০৮/২০২১ - ২:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

‘আমি নিগ্রো। যে-বাড়িটায় থাকি তা হার্লেমে- শহরের ভেতরে আর একটা, আমেরিকান নিগ্রো মহানগরীতে।‘- এভাবেই লেখক শুরু করেন তাঁর গল্প। লেখক মানে বিশ্বখ্যাত মনিষী, নব জাগরণের সঙ্গীতের পথিকৃৎ, অভিনেতা, মানবাধিকার কর্মী, হার্লেম রেনেসাঁর অন্যতম পুরোধা পল রোবসন।
পল রোবসনের জন্ম ১৮৯৮ সালে, আমেরিকার নিউ জার্সিতে, তাঁর পিতা জীবনের শুরুর দিকে একজন দাস হিসেবে শ্বেতাঙ্গ পরিবারে ছিলেন, এবং সেই পরিবারের ‘রোবসন’ নামটিই তাদের পারিবারিক নাম হিসেবে ব্যবহৃত ছিল।

পল রোবসন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কালো মানুষদের অধিকার আদায়ের জন্য অন্যতম উদ্যোগী এক বিদ্রোহী মানুষ এবং সেই যুগের এক মেগা স্টার যিনি জীবনের সকল ক্ষেত্রে অক্লান্ত ভাবে দাপিয়ে গেছেন।

পল রোবসনের আত্মজীবনী Here I stand শুধু তাঁর জীবনকথা নয়, এটা সারা পৃথিবীর সকল সংগ্রামীমানুষের কাহিনী, শোষিতের কাহিনী, মানুষের অস্তিত্বের কেন্দ্রবিন্দুতে যে স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা জ্বলজ্বল করে দীপ্ত মহিমায়, সেই স্বাধীনতার স্বপ্নে পথচলার কাহিনী।

এখানে একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে যে ‘নিগ্রো’ শব্দটা তখনকার দিনে খুব সাধারণ ভাবেই ব্যবহার করা হতো, যা এসেছে নিগ্রোয়েড জাতের মানুষ থেকে, এটি এই বইতে কোন বর্ণবাদী শব্দ নয়, ‘নিগার’ বর্ণবাদী শব্দ।

বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলমান এই অবস্থায় পল রোবসনের উদাত্ত কণ্ঠ আর আদর্শ বার বার মনে পড়ছে, এক বসাতেই উনার আত্মজীবনীর অনুবাদটাও পড়েই ফেললাম।

উনার বাচ্চাবেলায় প্রতিবাদী বড় ভাইয়ের কথা বলেছেন, “ বড়দার মতো অনেক নিগ্রো দেখেছি আমি। আমি তাদের রোজ দেখি। অন্ধের মতো, নিজস্ব বেপরোয়া পথে, তারা নিজেদের মুক্তি খুঁজে চলেছে; একা একা তারা সেই দেয়ালটায় অক্লেশে ঘুসি মারে যা কেবল অনেক মানুষের ধাক্কায় ভাঙতে পারে। বড়দা বলতেন “কখনো চুপচাপ মেনে নিস না, ওদের মুখোমুখি দাঁড়াবি, আর ওরা যতটুকু জোরে মারে তার চেয়েও বেশী জোরে মারবি।‘

পল রোবসন নিয়ে কথা উঠলেই মার্কিন প্রশাসন কতৃক তাঁর পাসপোর্ট আটক, বিদেশ ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো, কারণ সরকার মনে করছিল সারা বিশ্বে চরকির মতো ঘুরে ঘুরে পল রোবসন কালো মানুষের মুক্তির, বিশেষ করে আফ্রিকা দেশগুলোর উপনিবেশিক শাসনের শিকল ভেঙ্গে মুক্তির আলোয় আসার জন্য বড্ড বেশী প্রচার চালাচ্ছেন! সেই সাথে আমেরিকার কৃষ্ণাঙ্গদের দুরবস্থা নিয়েও সারা পৃথিবী জেনে যাচ্ছে তাঁর উত্তাল সঙ্গীত ও ভাষণে, তাই গণতন্ত্রের মহান ধারক ও বাহক দেশ সুন্দর করে তাঁর নাগরিকের কণ্ঠ রোধ করার প্রচেষ্টা চালাল।

হ্যাঁ, আরেকটা দুর্নাম ছিল তাঁর বিরুদ্ধে, যে সোভিয়েত ইউনিয়নের শাসন ব্যবস্থার প্রতি পল রোবসন খুব সহানুভূতিশীল এবং সেটার সমর্থক! কিন্তু এটা যিনি দাস হিসেবে নিজের বাবাকে দেখেছেন, যিনি গায়ের চামড়ার কারণে সারা জীবন বৈষম্যের শিকার হয়েছেন, তাঁর কাছে অতি সাধারণ ব্যাপার, সোভিয়েত সেই সমাজে যতই ফাঁকফোকর থাকুক, যতই সমস্যা থাকুক অন্তত বাহ্যিক ভাবে এই সাদা-কালো পার্থক্য ছিলো না, হয়ত এটাই খুব আকৃষ্ট করেছিল পল রোবসনকে।

পল রোবসন লিখেছিলেন, রাশিয়ায় গিয়েই তিনি প্রথম অনুভব করেন যে, তাঁর চারপাশের প্রতিটি মানুষ তাঁকে একজন মানুষ হিসাবেই দেখছে, কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে নয়। ঠিক এই কারণেই পরে নিজের ছেলেকেও তিনি পড়তে পাঠিয়েছিলেন রাশিয়ায়। তিনি চেয়েছিলেন, তাঁর ছেলে মানুষ পরিচয় নিয়ে বাঁচতে শিখুক, নিগ্রো পরিচয় নিয়ে নয়।

রোবসন ২৫টি বিভিন্ন ভাষায় গান গেয়েছেন, তার মধ্যে ১৪টি ভাষা তিনি বলতে, পড়তে এবং লিখতে পারতেন। পল রোবসন ছিলেন একজন অতিমানব, দেশ কালের সীমানা অতিক্রম করা একজন মহিরুহ। তাঁর অতি বিখ্যাত ৬ নদীর গান কিভাবে রেকর্ড করা সম্ভব হয়েছিল তাঁর বর্ণনা আছে একখানে।

উল্লেখ্য যে ভুপেন হাজারিকার মর্মস্পর্শী গান ‘ও গঙ্গা তুমি বয়ে চলেছ কেন; আসলে পল রোবসনের মিসিসিপি নিয়ে গাওয়া ‘Ol' Man River ‘ গানের বাংলা অনুবাদ বলা চলে। এছাড়া হেমাঙ্গ বিশ্বাসের গাওয়া ‘জন হেনরি’ গানটা পল রোবসনের সুর প্রভাবিত। বাংলা অনুবাদে নাজিম হিকমতের লেখা গান এক সময়ে অতি জনপ্রিয় ছিল— ‘ওরা আমাদের গান গাইতে দেয় না, নিগ্রো ভাই আমার পল রোবসন।’ আর মনে পড়ে আমাদের স্কুলের র‍্যাপিড রিডার বইতে অমিয় চক্রবর্তীর ;অক্সফোর্ডে’ শিরোনামের স্মৃতিকথায় উল্লেখ ছিল যে অমিয় চক্রবর্তীর আমন্ত্রণে পল রোবসন অক্সফোর্ডে গিয়েছিলেন।

গুরুত্বপূর্ণ বইটি অনুবাদ করেছেন দীপেন্দু চক্রবর্তী। প্রকাশ করেছে কলকাতার অনুষ্টুপ। খুব চমৎকার ছাপা, বাঁধাই।

মানুষের অধিকার আদায়ের এই উত্তাল সময়ে পল রোবসন পাঠ আরও প্রাসঙ্গিক এখন। কমেন্টে উনার গাওয়া কিছু গান, বিশেষ করে মিসিসিপির গানটি এবং সেই সাথে দেবাশিস মৈত্রর লেখা অসাধারণ এক ব্লগের লিংক থাকল।

পল রোবসনকে জানুন, বিস্মিত হোন, জীর্ণ চিন্তা থেকে বের হয়ে বিশ্ব মানবতায় উদ্বুদ্ধ হোন।


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।