১।
কাঁপাকাঁপি জিনিসটা সবসময় ভালো না। আমার কথা বিশ্বাস না হলে হাইতির লোকজনকে জিজ্ঞেস করে দেখুন। অনেকে আবার ভ্রুকুঞ্চিত করে আদিম কাঁপাকাঁপির দিকে অদৃশ্য আঙুল বাঁকিয়ে ধরবেন, তারা নিতান্তই কাঁপনমূর্খ। আদিম রসাস্বাদনের সাথে কাঁপাকাঁপির কোনো সরলরৈখিক সম্পর্ক নাই, সেখানে রাসায়নিক বিক্রিয়ার ছন্দটাই আসল এবং সেই ছন্দে কাঁপাকাঁপি প্রায়শঃই ঋণাত্মক অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। কিন্তু রসায়ন, ভূতত্ত্বে কাঁপাকাঁপিকে সৎছেলের দৃষ্টিতে দেখা হলেও আমাদের বাংলাদেশে তাকে আদর করে পত্রিকার পাতা ভরা হয়, জনমানুষের চেতনাসুদ্ধা সেই কাঁপন পৌঁছে দেয়া হয়। ৩০ মিনিটের কাঁপাকাঁপিতে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখার যুগান্তকারী বিষয় আমরা সবাই জানি। এবার তার সাথে যোগ হয়েছে ক্রিকেট বিশ্বকাপের মতো দুনিয়া কাঁপানো ঘটনা। অবশ্য বিশ্বকাপের ৪৯ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ৮ ম্যাচের আয়োজক বাংলাদেশের টিকেট না পাওয়া হতাশ দর্শক ঘরে ঘরে টিভিতে, রাস্তার মোড়ে বিগস্ক্রীনে এবং অতি অবশ্যই ছাপড়া চায়ের দোকানের কম্পমান চেয়ার-টেবিলে কি মাত্রার কাঁপাকাঁপি সৃষ্টি করতে পারবেন, যাতে দুনিয়াসুদ্ধা লোক কেঁপে কেঁপে দোয়া ইউনুস পড়বে, সে বিষয়ে সন্দেহ থেকে যায়।
১.
স্বপ্ন নিয়ে কাঁটাছেড়া এ পর্যন্ত নেহায়েত কম হয়নি, কিন্তু সত্যি করে বললে তার কতটুকুই বা আমরা জানি। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বলা যায় স্বপ্নের কথা প্রায়ই আমার মনে থাকেনা, আর যেটুকুও মনে থাকে সেটুকুও বোধহয় অনেকটাই আটপৌরে। কোন উঁচু স্থান থেকে নিচে পড়ে যাওয়া, পরীক্ষার হলে সময় খুব দ্রুত ফুরিয়ে আসছে অথচ একটি প্রশ্নের উত্তরও ঠিকঠাক দিতে পারছিনা বা কোন কিছু আমাকে তাড়া করছে, আমি ক্রমা ...
সাধনের স্বপ্ন বিচ্ছিন্ন, কিন্তু ছিন্ন নয়। সে-স্বপ্ন ভেসে যায়, ডুবে যায় চন্দ্রবাণ নদীর বুকে। কখনো কখনো বা মুখ তুলে ওঠে, যখন চন্দ্রবাণ নিজে উদ্যোগী হয়ে তার দু হাত দিয়ে সেগুলো কুড়িয়ে নিজের বুকের ওপর রোপণ করে। চন্দ্রবাণের যে তীরের ভূমি বন্ধ্যা, বন্ধুর, যে-তীরের আধাঁরে সূর্যের উজ্জ্বল রুদ্র আলো কিংবা কোজাগরি পূর্ণিমার চাঁদের শীতল, শান্ত আলো চির ধরাতে পারেনা, যে-তীরে কারাতের শ ...
লিন্ডা আমেরিকান স্টাইলে স্কার্ট পড়া। উচ্চতা মাঝারি। গায়ের বর্ণ দেখে তার জাতীয়তা বলা কঠিন। যে সময়ে তার আসার কথা তার আগেই এসেছিল। ঝেং তাকে অভ্যর্থনা জানালো সে আসার পর। তার তর সইছিল কীনা বলা কঠিন। আর লিন্ডা কথা বলার পর বোঝা গেল, সে ন্যাটিভ নয়। গাড়িতে ওঠার পর ফোনে কারো সাথে কথা বলল স্প্যানিশে। ঝেং এর বন্ধু ডাল্টন পুরো ব্যাপারটা ম্যানেজ করছিল। ঝেং যেহেতু তখনও গাড়ি চালানো রপ্ত করতে ...
জহিরুল ইসলাম নাদিম
পাহাড় চূড়োয় চড়তে গিয়ে
কাটলো পুরো দিন-ই
[উৎসাহটা মুসার দেয়া
তার কাছে তাই ঋণী।]
অনেক ক্লেশে পৌঁছে শেষে
পাহাড় চূড়ো চুমি
চোখের কোণে হঠাৎ ধরা
দিলো যে মালভূমি
এখান থেকে নামতে হবে
ভাবতে গিয়ে ঝুমি
হঠাৎ এলো উড়িয়ে নিল
এক হাওয়া মৌসুমী
অনেক উড়ে ঘুরে ঘুরে
হঠাৎ পড়ি ঝপাৎ
কোথায় এলাম? এলাম কোথায়?
একি! এ যে প্রপাত!
ওরে বাবা মরব নাকি
নামছে যে জল তেজে-
বাঁচতে গিয়ে দু হাত বাড় ...
তবু বদলায়নি কিছুই,
সবুজ প্রান্তর থেকে রৌদ্রতপ্ত পিচঢালা পথ
বালূময় সমূদ্র থেকে নীলাভ পর্বত;
ছায়াশ্বাপদ মূর্তির মতন অন্ধকারে
স্মৃতিরা কেবল নিঃশ্বাস ছেড়েছে গাঢ় শব্দে;
সময়ের আবাহনে থেমে থাকেনি জীবন,
ছুটে চলেছে অস্হির অনিশ্চয়তায়
আদি থেকে অনান্তি, কাল থেকে মহাকাল।
তবু বদলায়নি কিছুই,
ছেঁড়া স্যান্ডেল, মরচে পড়া জীর্ন হাতঘড়ি
শুকনো ঝাউশাখা, গনি মিয়ার চায়ের দোকান
গভীর রাতে মাতালের ...
মাউথ অরগানটার সুর আস্তে আস্তে মিলিয়ে যায়। আশেপাশে কোন বাড়িতে অজানা কেউ বুঝি বাজাচ্ছিল, হয়ত সে অজানা নয়, কিন্তু কে সে জানে না নির্জনা। জানার কোন ইচ্ছাও কাজ করেনা, সুরস্রষ্টা নয়, সুরটা তাকে ছুঁয়ে গেল। মনে হচ্ছিল সুরটা বুঝি তারই জন্য, কখনও ঝর্ণার মত উচ্ছল, উচ্ছলতার শেষে এক নির্জনা সে, রাতির মত শান্ত, নিকষ অন্ধকার সেখানে... সেই গভীর অন্ধকারের মাঝে আনন্দ আছে না কষ্ট আছে, উচ্ছল ঝর্ণার চোখ...
(যারা ১ম পর্ব পরেননি, তাদের সুবিধার্থে দুটো পর্ব একসাথে দিয়ে দিলাম)
রন্জু ঘুমের মাঝেই এপাশ ওপাশ করলো। ঘুমের মাঝে এপাশ ওপাশ করার মানে হচ্ছে স্বপ্ন পরিবর্তন করা, স্বপ্নের ঘটনায় কোন নতুন মোড় বা নতুন কোন চরিত্র, পছন্দ অপছন্দ। রন্জু স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবু আজ যখন চারদিক গুমোট একটা ভ্যপসা গরম, বহুদিন না বৃষ্টিতে ভিজে উত্তপ্ত সূর্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে বাতাস যখন ক্লান্ত, ...
রন্জু ঘুমের মাঝেই এপাশ ওপাশ করলো। ঘুমের মাঝে এপাশ ওপাশ করার মানে হচ্ছে স্বপ্ন পরিবর্তন করা, স্বপ্নের ঘটনায় কোন নতুন মোড় বা নতুন কোন চরিত্র, পছন্দ অপছন্দ। রন্জু স্বপ্নকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। তবু আজ যখন চারদিক গুমোট একটা ভ্যপসা গরম, বহুদিন না বৃষ্টিতে ভিজে উত্তপ্ত সূর্যের সাথে যুদ্ধ করতে করতে বাতাস যখন ক্লান্ত, সে সময়ের স্বপ্নগুলোও কেমন যেন হয়। রন্জু তাল মেলাতে পারেনা। মাঝে মাঝ...
তরুণ বয়সটা খুবই খতরনাক্- মাথার ভেতরের দুনিয়াটা ভেঙেচুরে উলটপালট করে দেয়। বাইরের জিনিসগুলো তখনও আস্ত থাকে বলে মনে হয় সেগুলোর সবকিছু চুরমার করে ফেলি। মানুষ শেষ পর্যন্ত সৃষ্টিশীল বলে নতুন করে গড়ার ইচ্ছেটা ভাঙার সাথে সাথেই প্রবলতর হয়ে উঠে।
মানুষের জন্মের সময় মস্তিষ্কে সাম্য-অসাম্যের কোনো উপাদান থাকে কিনা জানি না, তবে শৈশবকালে অসাম্যের দিকগুলো খুব একটা ধরা দেয় না। আস্তে আস্তে ব...