মৃতরা কী চায়? অদ্ভূত প্রশ্ন, কারণ জীবিতরা কী চায় এই প্রশ্নেরই উত্তর মিলে না। আর প্রশ্নটাও ঠিক অর্থপূর্ণও না। কত লোকে কত কিছু চায়। তার কী একটা উত্তর আছে? নাই। কিন্তু মৃতরা কী চায়, এমন প্রশ্নের পৃথিবীর সকল সংস্কৃতিতেই আবার একটা উত্তর পাওয়া যায়।
মৃতরা, কথিত আছে, চায় শান্তি। কিন্তু শান্তি জিনিসটাতো দৃশ্যমান না। মাপা কিংবা গোনাও যায় না। সুরতাং, বিবিধ সমাজের নিয়মনীতির দ্বারস্থ হলে জানা যাবে, মৃতরা চায় তাদের যথার্থ সৎকার হোক। নানা সমাজে নানা কালে সৎকারের বিচিত্র রীতি আছে। কিন্তু অন্তিমযাত্রা শান্তিপূর্ণ করবার দায়-দায়িত্ব মৃতর নিজস্ব সমাজের উপরই বর্তায়। প্রায় সমাজেই সাধারণত এটা সামাজিক দায়, কিন্তু আবার সমাজের সকল ব্যক্তির দায়িত্ব না। অর্থাৎ গ্রহণযোগ্য সংখ্যার লোক পালন করলেই চলে। 'ফর্জে-কিফায়া' বলে মুসলমানদের ব্যাকরণে।
... যাইবার কালে নিয়তি এমন এক দান দিল। কেউ ভাবেও নাই। প্রথমে প্রচুর ধুয়া দেইখা বাইর হইলাম, বিয়াপক আনন্দের সহিত। দেখলাম তারা ভাগছে। তারপর দেখলাম, নাহ, একটারে রাইখা গেছে। সিনন। সে কয়, তারে নাকি তার লোকেরাই বলি দিতে চাইছিল, যেহেতু সে লুকাইতে পারছে, জীবিত এখন। ওকে। কিন্তু ঐটা কী!
[১]
'মেলাবেন তিনি ঝোড়ো হাওয়া আর/ পোড়োবাড়িটার/ ঐ ভাঙা দরজাটা/ মেলাবেন'। প্রথম আলোর বাজেট প্রতিবেদনে অমিয় চক্রবর্তীর দেখা মিলল। অমিয় ছাড়াও সেখানে উদ্ধৃত বেঞ্জামিন ফ্রাঙ্কলিন আর ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্ট। বিশেষ প্রয়োজনে মার্কিন সরকারকে ডেকে আনা প্রথম আলোর স্বভাববিরুদ্ধ না। কিন্তু বাজেট বিশ্লষণে অস্তিত্ববাদীর মৌল সংকট-বিষয়ক কবিতার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজতে গেলে, আগে জানতে হবে তাদের দফতর আলো করে আছেন নিদেনপক্ষে আড়াইজন কবি। তারা কারণে-অকারণে সাহিত্য ডেকে আনেন।
তাই বাজেটের পরের দিন ছাপা হওয়া 'হুমায়ূন আহমেদের দেয়াল: সাহিত্যের সীমনা ও আদালতের দায়' খটকার জন্ম দেয়। লেখক সাজ্জাদ শরিফের আপত্তি '[হুমায়ূনের 'দেয়াল'] সাহিত্যের ['মধুর'] সীমা উপচে সমাজ-রাষ্ট্রের খোলা ময়দানে প্রবেশ করেছে'। কতগুলি পূর্বানুমান লক্ষ্য করি: সাহিত্যের সীমানা মধুর, সাহিত্য বদ্ধকাঠামো (যেহেতু সমাজ-রাষ্ট্রের 'খোলাত্ব' তাকে সাহিত্যের বিপরীতে দাঁড় করায়) এবং সমাজ-রাষ্ট্রের ময়দান খোলা, অর্থাৎ বদ্ধোকাঠামোয় সমাজ-রাষ্ট্র নাই।
আফসান চৌধুরি হাতেপায়ে লিখছেন। সবশেষটা পা দিয়ে লিখে থাকবেন। চৌধুরি সাহেবের পায়ের ধুলা।
উন্নয়ন বাণিজ্যে ভাড়াখাটা অন্যথায় সাংবাদিক পরিচয়ধারী চৌধুরি সাহেব সম্প্রতি দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে মূল্যবান বক্তব্য পেশ করেছেন। বলেছেন, বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়ে গত পঞ্চাশ বছরে একজন চিন্তক বা থিংকারের জন্ম হয় নাই। হবেও না শিওর। পরপরই বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যায় থেকে স্কলার আশা করে না কেউ। চৌধুরি সাহেবকে চিন্তক বা স্কলারের (এদুইকে গুলিয়ে ফেলেছেন ইংরাজি বাগাড়ম্বরের এই পরাকাষ্ঠা) একটা তালিকা কেউ একজন ধরিয়ে দিতে পারেন। রাও ফরমান আলি প্রায় পঞ্চাশ বছর আগেও চিন্তক কি স্কলারের একটা তালিকা করতে পেরেছিল, চৌধুরি সাহেব পারছেন না।
যেকোনো ম্যাৎকার বিরক্তিকর। কিন্তু ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার ম্যাৎকার তুলনাহীন।
ক. নেপোবাবুর প্রত্যাবর্তন
সরকারের দায়িত্বসম্পাদনায় নাগরিক অসন্তুষ্ট। সরকারকে গালি দেয়ার তার অধিকারটি মৌলিক। নাগরিক গালি দিচ্ছে। গালিতে কাজ যে খুব কাজ হচ্ছে তা না। কিন্তু তারও চেয়ে বেশি আপত্তিকর, সরকার তার কাজকর্মের কোনো ব্যাখ্যা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছে না। এগুলো জানা সমস্যা। বিরাট এইসব সমস্যার পাশে, একটা আপাতদৃষ্টিতে ছোট মুশকিল দেখতে পাই। কিছুদিন হল, এই দুর্যোগের সুযোগে, দৈনিক প্রথম আলো, বাংলাদেশের নেপোসমাজের মুখপত্র, তার আস্তিনের নিচের ছুরিকাটি আবার বের করতে শুরু করেছে। সামরিক শাসন কায়েমের মাধ্যমে নেপোতন্ত্র বাস্তাবায়নের স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ায় ছুরিকাটি আস্তিনের নিচে চালান করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিত অনুকূল হতে শুরু করেছে।
১.
আন্না হাজারে একজন অর্ধশিক্ষিত, স্থূল এবং সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি, ঠিক সেই রাজনীতিবিদদের মতনই যাদের প্রতিপক্ষ হিসাবে তাকে খাড়া করিয়েছে ভারতের কর্পরেট মিডিয়া এবং টিভিসৌখিন মধ্যবিত্ত। জ্বী, আমিও টিভিসৌখিন। কিন্তু, ন্যাটোর সাথে গাদ্দাফির ইঁদুরবিড়াল খেলা বাদ দিয়ে আন্না হাজারে ও তার স্যাঙাৎদের কাজকাম দেখছি। সুতরাং এই লিখা।