... একটা বিশেষ ধরণের বিরক্তি এই লেখা তৈরিতে উৎসাহী করেছে। এতে চলমান ভারতীয় পণ্য বর্জনের/ বয়কটের আহবানে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও এই ধরণের উদ্যোগের সামর্থ্য সম্পর্কে একধরণের মতামত দেয়া হয়েছে। বিচিত্র বিষয়ের অন্তর্ভুক্তি লেখাটাকে কিছুটা দীর্ঘ করে তুলবে।
১. দুশ্চিন্তা/উদ্বেগ/বিরক্তির প্রেক্ষাপট
ইন্ডিয়ার সমালোচনা হলেই পাকিস্তানপ্রেমীরা খুশিতে গদগদ হয়ে পড়েন। বলে, 'দেখালা? হুদাই খালি পাকিস্তানরে গালি দেও'। ভারতে উৎপাদিত পণ্য বয়কটের প্রসঙ্গ ওঠার পরেই দেখা যায় তারা আরো উত্তেজিত। ফেইসবুকে দেখলাম কেউ কেউ বলছে পাকিস্তানি রাজাকার যেমন আছে তেমন আছে ভারতীয় রাজাকার।
[১]
আনন্দবাজারিপনা বি. ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সাফাই। বিণ. উক্ত সাফাইয়ের লক্ষণ নির্দেশক।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে বাংলাদেশের একজন 'গ্রাম্য' ও 'দরিদ্র' তরুণের নৃশংসভাবে নিগৃহিত হওয়ার দুর্বহ অশান্তিকর চিত্র বাতাসের আগে ছড়িয়েছে অন্তর্জালে পাঁচ দিন হল। এনডিটিভি নামক ভারতের যে জাতীয় প্রচারমাধ্যমে এর 'প্রথম প্রকাশ' ঘটে সেখানে, সন্দেহ নাই, ঐ ঘটনার বর্ণনা প্রধানত নিন্দাজ্ঞাপক ছিল। কিন্তু ভারতের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার এই খবরটা প্রথম ছেপেছিল এই শিরোনামায়: 'বিএসএফের অত্যাচার নিয়ে মুর্শিদাবাদে আলোড়ন'। কীয়ৎকাল গেলে তারা অনুধাবন করে এই ঘটনা মুর্শিদাবাদ মাপের না। ত্বরিৎ নিন্দাজ্ঞাপনে সামিল হয়ে তারা ছেপে ফেলে সম্পাদকীয় ধিক্কার; এতে অস্বাভাবিকতা নাই। আবার এটাও অস্বাভাবিক না, ঠিক তিন দিনের মাথায় এই পত্রিকা নিন্দাজ্ঞাপনের সাময়িক ভণিতা ঝেড়ে ফেলে তাদের বর্ণাশ্রমিক এবং সাম্প্রাদায়িক চরিত্রানুগ মন্তব্য প্রতিবেদন ছাপবে। 'মারের ছবি প্রচারে পাক-হাতই দেখছে নয়াদিল্লি' শিরোনামার ঐ জল্পনায় নয়া দিল্লির গোয়েন্দা রিপোর্টের বরাত দিয়ে যে উদ্বেগের প্রকাশ ঘটেছে সেটা 'মার' নিয়ে না, স্পষ্টতই 'মারের ছবি প্রচার' নিয়ে। একটা নিম্ন-মাঝারি মানের প্রাদেশিক পত্রিকার প্রায়-অসমর্থিত প্রতিবেদন নিয়ে আমাদের না ভাবলেও চলত যদি না সেটা সাম্রাজ্যবাদী ভারতের সাম্প্রতিক লক্ষণগুলিকে ফুটিয়ে না তুলত।