ছোট্ট বেলায় দাদি আমাকে শুনিয়েছিলেন এক আশ্চর্য ফলের কথা। বাড়িতে বাগানে ও ফল হয় না, হয় বনে জঙ্গলে, মেঠোপথের ধারে। রাখালদের তো মাঠেই কারবার। বিছুটি-লতায় আচ্ছাদিত ঝোপে ঝাড়ের কোন কোনায় কি ফুল ফুল ফুটেছে, কী ফল পেকে লাল হয়েছে--সব তাদের নখদর্পনে। ঘনঘোর বর্ষার দিন নেহাত ছোট নয়। আর গরু-বাছুরের যেন এসময় খিদেটা বাড়ে। মাঠ ভর্তি সজীব-সবুজ ঘাস ডগমগ করে। গরু-বাছুরের তো জিভে জল আসবেই। তাই গরু নিয়ে রাখালকে দীর্ঘসময় মাঠে কাটাতে।
গ্রেট ট্রিগোনোমেট্রিক্যাল সার্ভে চলাকালে ১৮৭০ সালে করা ভারতবর্ষের একটি মানচিত্র
১৮৫২ সালের এক দিন। ব্রিটিশ শাসিত ভারতের পার্বত্য শহর দেরাদুন। সেখানে একটি অফিসে সকালবেলা এক তরুণ প্রবেশ করেন এবং তাঁর সিনিয়রকে বলেন, “স্যার, আমি দুনিয়ার উচ্চতম পর্বতশৃঙ্গ আবিষ্কার করেছি!!” তাঁর সিনিয়র ব্রিটিশ ভদ্রলোক চমকে উঠলেন। একজন নেটিভ ভারতীয়, যিনি কিনা আবার বাঙ্গালী মাথায় এত বুদ্ধি রাখে?? তখন ব্রিটিশরা এদেশের মানুষদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করতো। সে কিনা এই আবিষ্কার করেছে?
শুকনো পাতার মতো মূককীটগুলো লেপ্টে আছে ঈষের মূল আর মেহেদি গাছের ডালে ডালে। কিছু প্রজাপতিকেও ঘুরতে দেখলাম। মূককীটগুলো ছবি নিয়ে রাখার এই সুযোগ। আগামী বছর যখন আবার শুয়োপোকা জন্মাবে তখন, ওগুলোর ছবি নেয়া যাবে। তো তুললাম কিছু মুককীটের ছবি। দেখতে ভারী ভালো লাগল। বিশেষ করে মাথার দিকে একটা সুতোর মতো তন্তু বেরিয়ে এমনভাবে গাছের ডালে লেপ্টে আছে, দেখলে মনে হয় কে যেন সুতো দিয়ে গাছের সাথে পোকাটাকে গেঁথে রেখেছে।
ছোট বেলায় আব্বু আর আমি মিলে বাসার ছাদে ছোট্ট একটা সবজি বাগান করেছিলাম। তারপর আব্বু প্রবাসী হয়ে গেল তাই আমারও আর বাগান করা হল না। অনেক বছর পর আবার বাবা মেয়ে মিলে সুদূর প্রবাসে ছোট একটা সবজি বাগান করলাম।
ধুতরাকে গাঁয়ের মানুষে ভয় পায়। কারণ এর ফুল বড্ড বিষাক্ত। আমরাও ভয় পেতাম। কিন্তু মাঝে-মাঝেই ভুলে যেতাম ভয়ের কথা, ধুতরার বিষের কথা। মা-দাদীরা বলতেন, ধুতরোর ফুল নাকে শুঁকলে মানুষ পাগল হয়ে যায়। কথাটা কতটা সত্যি জানতাম না। তবে ধুতরোর ফুল নিয়ে খেলা করলেও নাকে শুঁকতাম না কখনও।
যেহেতু অনেক পাঠক এই পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তথ্যসূত্র চেয়েছেন, পর্যাপ্ত তথ্যসূত্র আমার হাতে নেই, তাই পোস্ট থেকে লেখাগুলো সরিয়ে ফেললাম। যারা আমার কথায় আঘাত পেয়েছেন, তাদেরকে আঘাত দেয়ার জন্য আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
একদল নতুন বাচ্চাকাচ্চার সাথে একটা নতুন কাজ শুরু করলাম। ওদের অনেকে গেল বছর ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে ফার্স্ট ইয়ারে পড়ছে। আবার কেউ কেউ ক্লাস শুরুর অপেক্ষায় অলস সময় কাটাচ্ছে! বন্ধে ঘরে বসে থাকতে থাকতে ওদের অলস মাথা অবশ্য এখনও শয়তানের কারখানা হয়ে যায়নি বলেই মনে হল!! বরং আইডিয়ার কারখানা হয়ে গেছে বলা যায়!
বৈশাখ মানেই সূর্যের বাহাদুরী। ধানকাটা সারা। খালি মাঠে খাঁ খাঁ রৌদ্রের দোর্দণ্ড প্রতাপ। কৃষকের ব্যস্ততা নাইকো আর। বাগানজুড়ে শুকনো পাতার আস্তর। তপ্ত মরুর নির্জনতা ভর করে মাঠজুড়ে। বাঁশঝাড়ের কঞ্চি-পাতার জটলা থেকে নেমে আসা শ্যামা পাখির সন্তর্পণ পদচারণা। প্রাণহীন দুপরে খসখসে মৃদু ভৌতিক আওয়াজ। নির্জনতার বুক চিরে হঠাৎ ছাতারে দলের তীক্ষ্ণ চিৎকার। শিমুল গাছের মগডালে বাজপাখির জাজ্বল্যমান শ্যেন দৃষ্টি। হঠাৎ রকেটের গতি ভর করে তার ডানায়। ছাতারে দলের পাখায় পিস্টনের উল্লাস। ভীত প্রস্থান। জেট বিমানের মত ডাইভ দেয় বাজপাখি, ছোঁ মারে। বাজের নখরে আটকে থাকা ইঁদুর পুর্ণ আত্মসমর্পণে পৃথিবীকে বিদায় জানায় বৈশাখী হাওয়ায় ভেসে। সেকি জানে এই মৃত্যুই তাঁকে আকাশজয়ী করেছে। করেছে অনন্য। দোপেয়ের লাঠির আঘাতে, গর্তে ধুঁকে ধুঁকে, ড্রেনে পচে কিংবা শ্বাপদের নখরে ছিন্নভিন্ন হওয়ার চেয়ে আকাশজয়ী হয়ে মরা কি শ্রেয় নয়? বাজপাখি উড়ে যায় গ্রীষ্মের লেলিহান শিখার দিকে। বৈশাখের টকটকে বহ্নিশিখা যেন দাউ দাউ করে জ্বলছে কৃষ্ণচূড়ার ডালে ডালে। বাজপাখি সেই আগুনে আত্মাহুতি দেয়; মরণের জন্য নয়, রাজসিক ভোজন পর্বটা মহিমান্বিত করতে।