কিছুদিন আগে আল জাজিরার একটা পুরনো ডকুমেন্টারি দেখেছিলাম - 'I Knew Saddam'। বুঝতেই পারছেন সাবেক ইরাকি একনায়ক সাদ্দাম হোসেনের উপর বানানো সেটা। থাম্বনেইলে খাকি পোশাকে সাদ্দাম, মোটামুটি অল্পবয়স্ক তখনো, চোখমুখে ভাঁজ পড়েনি, কিন্তু চেহারার ক্রুর ভাবটা ঠিকই আছে। যে চেহারা অহর্নিশ টানা চব্বিশ বছর ধরে দেখতে হয়েছিল ইরাকের মানুষকে।
লেখার শিরোনাম দেখে আমি আপনার সম্ভাব্য দুটো প্রতিক্রিয়া কল্পনা করতে পারছি। একটাতে আপনি ভাবছেন যে এটা কোন ট্রেন এক্সিডেন্ট ফ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে লেখা, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে আপনি বুঝে গেছেন যে এটা ৪৭ এর দেশভাগ কিংবা সেটার পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে লেখা। খুশবন্ত সিং এর 'ট্রেন টু পাকিস্তান ' যদি আপনার পড়া থাকে, আপনি সম্ভবত দ্বিতীয় দলে পড়েছেন। বইটি যদি না পড়ে থাকেন এবং পড়ার ইচ্ছে পোষন করেন, তাহলে একটা স্পয়লার এলার্ট দিয়ে রাখলাম, কারন বইয়ের শেষ পৃষ্ঠার চমকটা কিন্তু আমি এখানে ফাঁস করে দেব! অবশ্য বইটা এত দারুণ যে সেটার পরেও এই বই পড়ে আপনি মুগ্ধ হবেন, শতকরা নব্বই ভাগ গ্যারান্টি।
-"আমরা সাড়ে সাতটার দিকে ছাদে যাব"।
বউয়ের কথা শুনে আমি কিঞ্চিত অবাক হলাম। ছাদে আমরা যাই মাঝে মাঝে, কাপড় মেলতে কিংবা টবের গাছগুলোতে পানি দিতে, কিন্তু সেতো বিকেল বেলায়। এই সন্ধ্যায় ছাদে কেন?
-"তখন ওই জিনিসটা দেখা যাবে"।-উত্তর পেলেও ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না, কোন জিনিসের কথা বলছে।
-"আজকে ভিজিবিলিটি খুব ভাল ওই সময়"।
দুবাই এয়ারপোর্টে সময় কাটানো তেমন কোন কঠিন ব্যাপার না, কিন্তু রফিকের ব্যাপার আলাদা। সুদৃশ্য দোকান গুলোয় ঢুঁ মারার ইচ্ছে তার কখনোই হয়না। চারপাশে দেশবিদেশের নানা রকম মানুষের শশব্যস্ত দৌড়াদৌড়ি দেখেও অনেকের বেশ সময় কেটে যায়, রফিকের সেটাও ভাল লাগেনা। কোন লাউঞ্জে বসে রাজকীয় ডিনার কিংবা স্টারবাকসে বসে কফি খাওয়াতেও কোন আগ্রহ পায়না, একটা সময়ে বুকশপে বই হাতাতে মন্দ লাগত না, আজকাল সেটাও ভাল লাগেনা। বুড়ো হয়ে য
সপ্তাহ কয়েক আগের কথা, একটা কাজে চট্টগ্রাম গিয়েছি। ভেবেছিলাম সারাদিন লেগে যাবে, কিন্তু দুপুর বেলাতেই কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় হোটেলে ফিরে এলাম। লাঞ্চ করেই এসেছি, তাই হোটেলে ফিরে একটা ঘুম দিলাম। বিকেলে ঘুম ভাঙার পর উশখুশ করতে লাগলাম। বাইরে টিপটিপ বৃষ্টি, কোথাও যাওয়ার উপায় নেই। অবশ্য উপায় থাকলেও যে কোথাও যেতাম ব্যাপার সেরকম নয়। এ শহরে আমার পরিচিত কেউ নেই যে দেখা করব। এককালের অতি প্রিয় শহরে আজ আর যাওয়ার মত
এ লেখাটা লিখতে গিয়ে নিজেকে কেমন যেন মওদুদ আহমেদ মনে হচ্ছে। এই সচলেই ঠিক আগের লেখায় যা লিখেছি, পুরো ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে এখন উল্টো জিনিস লিখতে যাচ্ছি, সংগত কারনেই ওই ভদ্রলোকের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। আমি বিখ্যাত লেখক নই, সুতরাং আগের লেখায় কি ছিল সেটা কারো মনে থাকার কোন কারন নেই। সেখানে 'প্রতিভা' জিনিসটার প্রতি আমার দুর্নিবার আকর্ষনের কথা লিখেছিলাম। তাতে সমস্যা নেই, কিন্তু আকর্ষনের পেছনের কারনটা ছিল যে তাতে
মানুষের যে 'বৈশিষ্ট্য'টাকে আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি সেটা হচ্ছে গড়পড়তা হওয়া। Mediocrity এর বাংলা করলাম গড়পড়তা হওয়া। জানিনা অনুবাদটা ঠিক হল কিনা(সম্ভবত সেটাও গড়পড়তাই হয়েছে)। খেয়াল করলে দেখবেন যে প্রথম লাইনে বৈশিষ্ট্য শব্দটাকে আমি ইনভার্টেড কমার মধ্যে রেখেছি। কারন আমি এখানে মানুষের দোষ নিয়ে কথা বলছিনা, তাহলে হয়তো অসততা বা ভণ্ডামির কথা তুলতাম।
সন্ধ্যা প্রায় হয়ে গেছে, রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছের নীচে শুকনো মুখে দাঁড়িয়ে আছে রাজু। মনে হচ্ছে ঝড় আসবে, বৈশাখ মাসের সন্ধ্যায় আকাশের কোণে এরকম কালো মেঘ দেখলে এর চেয়ে ভাল কিছু চিন্তা করা যায় না। সাথে ছাতাফাতা নেই, সত্যি সত্যি বৃষ্টি চলে আসলে ভিজে চপচপে হয়ে যেতে হবে। আশপাশে গাড়ি ঘোড়া পাওয়া মুশকিল, এই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে কুষ্টিয়া শহরে যেতে খবর হয়ে যাবে।
ঠিক কোন ক্লাসে মনে নেই, কিন্তু স্কুলে থাকতে বাংলা বইয়ে পড়েছিলাম -" আমারই চেতনার রঙে পান্না হল সবুজ, চুনি উঠল রাঙা হয়ে"। রবীন্দ্রনাথের লেখা, সে বয়সে এসব মারফতি কথা বার্তা তেমন বুঝতাম না। এখনো যে খুব বুঝি,তা নয় কিন্তু হালকা পাতলা বুঝতে শিখেছি। বয়স পঁয়ত্রিশ পেরিয়ে গেছে, জুলফিতে পাকা চুল উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে (কবির ভাষায় জুলফি উঠল সাদা হয়ে)- কিছুটা মারফতি এখন ধাতে সয়, মাঝেসাঝে করতেও ইচ্ছে করে।
সাধারণত কাউকে আমরা যখন অমুকের আব্বা বা তমুকের মা সম্বোধনে ডাকি, সেটা বড় ছেলের বা বড় মেয়ের নামেই হয়।যেমন আমার বাবাকে অনেক আত্মীয় রাহাতের আব্বা নামে ডাকেন,এটা নিয়ে ছোট বেলায় আমার ছোট ভাইয়ের খানিকটা অনুযোগও ছিল।যাই হোক এখন যার কথা বলব তাকে আমার মা-বাবা বা আত্মীয়রা রিনার মা নামে ডাকতেন,মজার ব্যাপার হল রিনা সেই মহিলার তিন ছেলেমেয়ের সবচেয়ে ছোট। উনি আমাদের বাসায় কাজ করতেন,আমি আর আমার ছোটভাই উনাকে বুয়া না