স্থির বর্ষণে মিশ্র রং ছড়িয়ে শুয়ে আছে টুকরো টুকরো আলো, ভোরের জানালা গলে অবসন্ন বাতাসেরা ঢুকে পড়ে, যেন সেদিনের প্রথম কুজন, সাথে তার জল বাঁধা মেঘ । মনে পড়ে সাত বর্ণের ঝালর উড়িয়ে পরিনত শুয়োপোকারা উড়েছিল কোন নদীতীরে, জল ছুঁয়েছিল মেঘের নুপুর পথ-নদী-স্রোত শালিখের ডানা । কৃষ্ণচূড়ার পথ করে নেয়া বিকেলে ঝরেছিল আসন্ন বর্ষার টুপটাপ অশ্রুকণা, সেও কবেকার কথা ~ সেই নদী বয়ে গেছে সবুজ উঠোন ঘেসে যেন তার সুগভীর বুকে রোদের মোহনা এঁকে । সেখানে শহর শেষে পদ্মগন্ধ ভাসে দৃশ্যত আনমনা বাতাসে । যতটানা স্বপ্নের আসা যাওয়া তারো অধিক আয়োজনে আত্মিক যাতায়াতে সমাজ বিবর্জিত কয়েকজনের বেহিসেবী উচ্ছলতায় মধ্যাকাশে মাঝরাত ছিল তারায় পরিপূর্ন ।
ডিস্ক্লেইমারঃ দেশের বিদ্যুৎব্যবস্থার অতুলনীয় উন্নতির ঘর্মাক্ত সাক্ষী আর সেইসাথে মশককুলের মনোহারিণী সঙ্গীতসহকার ভালোবাসায় বিদ্ধ হতে হতে মনে মনে রচিত নিম্নোক্ত অতি আজাইরা পঙক্তিমালা। সুতরাং নিজের মূল্যবান সময় অপচয়ের ইচ্ছা না থাকলে এখানেই ক্ষ্যামা দ্যান।
ঘোরলাগা সন্ধ্যায়
একা বসে বারান্দায়
ঘরে ফেরে পাখি উড়ে, মানুষ রাস্তায়
এলোমেলো সোনারঙা মেঘেদের আনাগোনায়
ভেঙে পড়ার আগে নিজেকে একটু ঠেস দিয়ে দাঁড় করাতে হয় যাতে ফটোগ্রাফার ভেঙে পড়ার সবগুলো ভাঁজে ফোকাস শার্প করে নিতে পারে। ভেঙে পড়ার আগে একটু নড়েচড়ে ভেঙেপড়া সবগুলো ভাঁজে আলো ঢুকতে দিতে হয় যাতে ফটোগ্রাফার সবগুলো ভাঁজ ঠিকঠাকমতো ক্যামেরাবন্দী করতে পারে। ভেঙেপড়ার আগে একটু সোজা হয়ে ফটোগ্রাফারের রেডি-ওয়ান-টু-থ্রি শুনে ঝুপ করে ফ্রেম বুঝে একসাথে ভেঙে পড়তে হয় যাতে ভেঙেপড়ার অ্যাকশনগুলো ফটোগ্রাফিতে জীবন্ত হয়ে উঠে...
ইস্কুলে কোনো অমেরুদণ্ডী প্রাণীর রচনা লিখেছিলাম কি না মনে নেই; আমাদের সবগুলো রচনাই ছিল শোয়ানো মেরুদণ্ডের গরু-ছাগল-ভেড়া-মহিষের মাহাত্ম্য কারণ এই শ্রেণির মেরুদণ্ডগুলা চারটা খুঁটির উপর লম্বালম্বি শুয়ে থাকে বলে শিং-খুর-নাক-কান-লেজ নিয়ে কয়েকটা বাক্য লিখে সরাসরি চামড়া ছিলে চামড়ার রপ্তানিমূল্য কিংবা ছিলা চামড়ায় লবণ মাখানোর কৌশল কিংবা সেই চামড়ায় বানানো জুতা-মোজা-ব্যাগের বর্ণনা দিয়ে লম্বায়প্রস্থে রচনা বড়ো ক
কয়েকদিন আগে নাট্যকর্মীদের একটা রবীন্দ্রমন্থন আড্ডা গড়াতে গড়াতে এসে পড়ে গান্ধারীর আবেদন- কর্ণ-কুন্তী সংবাদ আর বিদায় অভিশাপ; তিনটি কাব্যনাটিকায়। তিনটাই রবীন্দ্রনাথের মহাভারত পুনর্লেখন কিংবা পুনর্পাঠ। আমি ভাবার চেষ্টা করি রবীন্দ্রনাথ কি এই তিনটা কাহিনীর বাইরে মহাভারতের আর কোনো কাহিনী পুনর্লেখন করেছেন?
তখন মেঘলা দিন। পরানমাঝির মাথার উপরে পুরোনো খড়ের চাল; পায়ের নিচে চাল চুঁইয়ে পড়া পানিতে কাদাকাদা মেটেল মেঝে আর বাঁশের খুঁটিগুলো নরম মাটিতে পড়োপড়ো প্রায়...
ত্রিপুরা রূপকথা অনুযায়ী পশুপাখির দৃষ্টিতে মানুষ হলো ফালিফালি করে কাটা এক অদ্ভুত প্রাণী। হাতির ঠ্যাঙের মতো একটা মাংসখণ্ডকে প্রথমে নিচের দিক থেকে অর্ধেক ফেড়ে বানানো হয়েছে তাদের পা। পাশ থেকে ধারালো ছোরা দিয়ে লম্বালম্বি দুইফালি মাংস ফেড়ে বানানো হয়েছে হাত। তারপর মুগুরে থেঁতলানো হাতপায়ের চ্যাপ্টা মাথা কেটে কেটে বানানো হয়েছে পাঁচফালি আঙুল...
সিলেটের মতো দুনিয়াতে অত বেশি জায়গার নাম কোনো শহরে আছে কি না আমার জানা নেই। এক নামের জায়গায় দাঁড়িয়ে বিড়ি টানলে ছাই গিয়ে পড়ে অন্য নামের জায়গায়। প্যাডেল আড়াই চক্কর ঘুরে আসার আগেই রিকশা চলতে শুরু করে বদলে যাওয়া নামের রাস্তায়। মেয়েরা যেখানে গেট দিয়ে ইস্কুলে ঢোকে সে জায়গা থেকে হেড মিস্ট্রেস যেখানে দাঁড়িয়ে ছাত্রীদের স্কুলে আসা তদারকি করেন সে জায়গার নাম ভিন্ন। আবার যখন তারা যার যার ক্লাসে গিয়ে বসে তখন হয়ত
সিলেটের ভারুয়ারা জানে ভারের ব্যালেন্স। দাঁড়িয়ে কথাবার্তা বলতে হলে তারা দুপাশে ওজন সমান করে কাঁধ ঠেকায় বাঙের মধ্যখানে। সমতলে হাঁটার সময় তারা বাঙের সামনের দিক ছোট রেখে পেছনে বাড়তি ওজনের সাথে ভারসাম্য করে হাঁটার গতির। আর পাহাড়ে উঠা কিংবা ঢালু বেয়ে নামার সময় তারা দুই কাঁধে বাঙ নিয়ে আড়াআড়ি আগায়...
ছেঁড়া শাড়ির কথা কি স্মৃতিতে ভাসে? ধুয়ে নিংড়াতে গেলে যে শাড়ি ফরফর করে ফেটে যেত কয়েক হাত? রংচটা সেই শাড়িটি কি স্মৃতিতে ভাসে? সেলাই দিতে গেলে সুতার টানে আরও বিঘতখানেক ছিঁড়ে আসতে যে শাড়ি? অপূর্ণ শৈশবের কয়েক সমুদ্র অশ্রু শুষে নেবার মতো পুরোনো সেই শাড়িটা কি তোমার স্মৃতিতে ভাসে?
তোমার কি স্মরণে আসে নাগরিক ড্রেন ছাড়া তোমার অশ্রু ঠিক কতদিন ধরে আর প্রশ্রয় পায় না কোথাও?
২০১১.০২.২০ রোববার