[justify]
বুবুনের ঘরের জানালা দিয়ে একটা পাহাড় দেখা যায়।
একটা গোলগাল নীলচে মতো কাঠখোট্টা পাহাড়। শীতের বেলায় পুরো পাহাড়টা ঘোলাটে কুয়াশায় ঢাকা পড়ে।
দুপুরে মা ভাতঘুমে কাবু হয়ে পড়েন, বুবুন দখিনের ব্যালকনিতে পুরোনো ইজিচেয়ারটার হাতলে বসে দাদাভাইকে খবরের কাগজ পড়ে শোনায়।
বার বার ওর চোখ চলে যায় পাহাড়টার দিকে....
রোদ-রং মাখা বিতিকিচ্ছিরি একটা পাহাড়, কেমন গম্ভীর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে সারাক্ষণ..
রাত দুপুরে ঘরের চালে
প্যাঁচায় দেলে ডাক
বেনবেলা কেন মাথার পরে
কা কা করে কাক।
শোনো তুমি মা বনবিবি
বলি গো তোমারে
অভাগিনি শরণ নেলে
তোমারই চরণে॥
(ওমা) তোমারই চরণে
খা-নকি মা-গি। প্যাঁচা আর কাউয়ার মুখে তুমি তোমার নিজের কম্মের কথা শোনো? নিজের কম্ম তুমি নিজে জানো না? তোমার নিজের কম্মের গর্ত থেকে বনবিবি এসে উঠাবে তোমারে?
সুন্দরবনের শীত ভোরে গলায়-পিঠে ক্যামেরা ঝুলিয়ে কাদা ভেঙে হাঁটছে ফটোগ্রাফার দলটি। কারো পায়ে বুট- কারো স্যান্ডেল। সবাই হাঁটছে জুতায়-পায়ে কাদাঠাণ্ডার উহুআহা অনুভূতি নিয়ে। দলের সামনে নির্লিপ্ত বনপ্রহরী রতন আর পেছনে তার তরুণ সহকর্মী মাজেদ। বেতনের বাইরে ভাতা আর বখশিশের আকর্ষণ ছাড়া এই বন তাদের কাছে পুরোটাই বিরক্তিকর। তারা হাঁটছে সুন্দরবনের যে কেনো গার্ডের মতো বারবার বনের বেশি গভীরে না যাবার সতর্কতা জানিয়ে
দুনিয়াতে ধর্ষণ আর ধর্ষিতার অবাঞ্ছিত সন্তানের ইতিহাস কত পুরানা আমি জানি না। কিন্তু মাতৃলাঞ্ছনার অনন্তকালব্যাপী প্রতিশোধ সম্ভবত একটাই আছে দুনিয়ায়; কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের মহাভারত
রাজবংশজাত মুনি পরাশর জেলেকন্যা সত্যবতীকে নৌকায় ধর্ষণ করলে লজ্জিত মৎস্যগন্ধা পাটনি যমুনার দ্বীপে স্বেচ্ছাদ্বীপান্তর নিয়ে জন্ম দেয় জেলেদের মতো এক কালা-কৃষ্ণ দ্বীপের মানুষ দ্বৈপায়ন। তারপর...
তারপর অর্জুনেরা মরে যাবার বহুকাল পরে অর্জুনের ছেলের ছেলের ছেলে জন্মেজয় যখন রাজা। তখন চব্বিশ হাজার শ্লোকের একখান বিশাল পুথি নিয়ে হাজির হয় দ্বৈপায়নের শিষ্য বৈশম্পায়ন- নিন রাজা। গুরু দ্বৈপায়ন লিখেছেন আপনার বংশের বীরত্বের কথা...
[justify]
"একদিন চুপিচুপি দুর্গা বলিল– চড়ুইভাতি করবি অপু?
অপু মহা উৎসাহে শুকনা লতাকাটি কুড়াইয়া আনে। এই তাহাদের প্রথম বনভোজন। অপুর এখনো বিশ্বাস হইতেছিল না যে, এখানে সত্যিকারের ভাত তরকারি রান্না হইবে, না, খেলাঘরের বনভোজন– যা কতবার হইয়াছে– সেইরকম– ধুলার ভাত, খাপরার আলুভাজা, কাঁটালপাতার লুচি।"
#আম আঁটির ভেঁপু :বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
[justify]
"ভিজে হয়ে আসে মেঘে এ-দুপুর-- চিল একা নদীটির পাশে
জারুল গাছের ডালে ব'সে ব'সে চেয়ে থাকে ওপারের দিকে.."
মিরুজিন নদীটির ধার ঘেঁষে ঐ যে মস্ত জঙ্গল, তাতে ক্লান্ত সমুদ্র সফেন সম অশ্বত্থ গাছ, আরো নানা রকমের গাছ সারি সারি। নিবিড় বট, দেবদারু আর আমলকী গাছ তারা। ধূসর পাতার ফাঁকফোঁকরে ম্যালা পাখির বাসা...
এক মানুষ যদি আরেক মানুষের সামনে প্রায় একশো বছর বেঁচে থাকে তবে পুনরাবৃত্তি ছাড়া কীইবা গতি আছে তার? হাসপাতাল সবাইকে টানছে একশো বছরে আর ইন্টারনেট বসিয়ে রাখছে লাখো মানুষের পাশে
ঘুরেফিরে আমরা বকবক করি- বকবক শুনি। বলতে বলতে- শুনতে শুনতে শতবর্ষী রিপিটের ভাইরাসে অচল করে তুলি বৃদ্ধভারাক্রান্ত পৃথিবীর চাকা...
রিপিট হয়ে চলে সব। সব গল্প- সব ছবি- সব পক্ষ বিপক্ষ- হিরো আর ভিলেন
শুধু রিপিট হয় ন ...
বাসা থেকে খেলার মাঠটা বেশি দূরে না। শুধু মাঝে কিছু ঘিঞ্জি গলি পেরুতে হয়। সন্ধ্যা হলেই গলির মুখে কুপি জ্বালিয়ে পসরা সাজিয়ে বসে নানা কিসিমের দোকানদার। গাড়ি ঢুকবেনা, তাই রিকশাই ভরসা এই গলিতে। প্রতি সন্ধ্যায় রিকশার নিচে হারিকেন জ্বালিয়ে টুংটাং শব্দ তোলে কোনো এক বাড়ি থেকে ভেসে আসা বাচ্চার কান্নার সাথে পাল্লা দিয়ে।
গলির মোড়ে গত কদিন ধরে নষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা জীর্ণ ল্যাম্প পোস্ট আ ...
নিজের অহংকার থেকে একধাপ নেমে না এলে কাছে যাওয়া হয় না জেনেও কাছে এসে আরো দুই ধাপ অহংকারে চড়ে বসা আমাকে দেখার জন্য তোমার নিরহংকার চোখ যখন তাকায় উপরের দিকে তখন আমাকে তাকাতে হয় নিচে আর নীচে...
২০১০.১০.২৪ রোববার
ট্রেন ছেড়ে গেলে একটা টিকিট দেখিয়ে রেললাইনকে বলি- যাও তাকে পিছু এসে আমাকে নিয়ে যেতে বলো। শরীরে রোদ টেনে রেললাইন ঝিলিক দিয়ে হাসে- ট্রেন পিছু আসে না বাপু। ট্রেন শুধু ফিরে আসতে জানে। কিন্তু তখন তোমাকে অন্য টিকিট কাটতে হবে; অন্য তারিখের- অন্য সময়ের- অন্য সিটের- এমনকি হয়ত অন্য কোনো কামরার। তবে তুমি ইচ্ছা করলে তোমার গন্তব্য একই রাখতে পারো যদি তখনও তোমার মনে হয় যার কাছে যাবে সে একই জায়গায় ...