পর্ব = ৭
(পূর্ববর্তী পর্বের লিঙ্ক গল্পের শেষে)
ওরা লম্বা একটা তারের টুকরো ভেঙ্গে নিয়ে এক কোনায় লুকিয়ে রাখলো। সূখোভ কয়েকটা তক্তা পেরেক ঠুকে জুড়ে দিয়ে একটা মই বানিয়ে গপচিককে পাঠালো স্টোভের পাইপটা ঝুলিয়ে দেয়ার জন্য। ছোকড়াটা একেবারে কাঠবেড়ালির মত চটপটে, তরতর করে খাম্বা বেয়ে উঠে দু-একটা পেরেক ঠুকে তার মধ্যে তার জড়িয়ে সেটা পাইপের তলা দিয়ে ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে নিল। সে নিজ থেকেই পাইপটার প্রান্তের কাছটায় আবার বেঁকিয়ে দিলো, ছেলেটার উৎসাহ দেখে সূখোভ আর কিছু বললো না। আজকের বাতাসের গতি খুব বেশী না হলেও কাল যে হবে না সেটাতো আর বলা যায় না, আর এই বাঁকানোটা ধোঁয়া বেরুনো রোধ করবে। ভুলে যাওয়া যাবে না যে স্টোভটা সারানো হচ্ছে ওদের সবার নিজেদের স্বার্থেই।
পর্ব = ৬
(পূর্ববর্তী পর্বের লিঙ্ক গল্পের শেষে)
এই বিস্তির্ন তুষার ঢাকা প্রান্তরে জানালার কপাটগুলো তুলে লাগানোর মত কিছু খুঁজে পাওয়া কঠিন। কিন্তু কিল্গাস বললো, “ভান্যিয়া (আইভান নামের সংক্ষিপ্ত রুপ), আমি একটা জায়গার খবর জানি যেখানে দারুন ফেল্টের (Felt : পশম বা লোমকে চেপে তৈরী এক ধরনের মোটা কাপর) রোল আছে যেগুলো ফ্রেমের সাথে জুড়ে ছাদের কাঠামোর অংশগুলো তৈরী হচ্ছে। ওগুলো আমি নিজের হাতে সরিয়ে রেখেছিলাম। চল, ওগুলো চুরি করে নিয়ে আসি।”
কিল্গাস জাতে লাটভিয় কিন্তু রাশান ভাষায় কথাবার্তা বলতে পারে একেবারে স্থানীয়দের মত। ওদের গ্রামের কাছে একটা প্রাচীন মতাদর্শীদের (Old Believers, এরা ১৬৬৬ ইং সনে এই মতাদর্শীরা আদর্শগত বিরোধের কারনে রাশান অর্থোডক্স চার্চ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন করে ফেলেছিল) একটা উপনিবেশ ছিল এবং একারনে শৈশব থেকেই তার রাশান ভাষা শেখা হয়ে গিয়েছিল। তার ক্যাম্পের জীবন মাত্র দুই বছরের, কিন্তু এরমধ্যেই সে সব কায়দা-কানুন বুঝে নিয়েছে। এখানে দাঁত দিয়ে কামড়ে আদায় করে নিতে না জানলে কিছুই পাওয়া যায় না। ওর আসল নাম জোহান এবং সূখোভও ওকে ভান্যিয়া বলেই ডাকে।
পর্ব = ৫
(পূর্ববর্তী পর্বের লিঙ্ক গল্পের শেষে)
১০৪ নম্বর দলটা মেরামত কারখানার একটা বড় ঘরে গেল যেটার জানালাগুলো গত শরৎকালেই ঘসেমেজে চকচকে করা হয়েছে আর সেটাতে ৩৮ নম্বর দলটা কংক্রিটের স্ল্যাব ঢালাইয়ের কাজ করছে। কিছু স্ল্যাব কাঠের ছাঁচের ভেতরে রাখা আর অন্যগুলো তারের জাল দিয়ে পোক্ত করে বানিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা। ছাদটা অনেক উঁচু আর মেঝেটা শুধুই মাটির। জায়গাটা একেবারে হিমশীতল হয়ে থাকতো, যদি না কয়লা জ্বালিয়ে উষ্ণ করে না রাখা হতো, অবশ্য সেটা কর্মীদের জন্য নয়, স্ল্যাবগুলো যাতে তারাতারি জমাট বাধঁতে পারে সেজন্য। সেখানে একটা থার্মোমিটারও আছে। এমনকি রোববারগুলোতেও, কেও যদি কোন কারনে নাও আসে, একজন সিভিলিয়ানকে সেখানে রাখা হয় শুধু উনুনটা জ্বালিয়ে রাখার জন্য। ৩৮ নম্বর দলের লোকেরা স্বাভাবিকভাবেই বাইরের কাউকে উনুনের আশেপাশে বসতে দিতে আগ্রহী না। তাদের দলের লোকেরাই সেটার চারপাশে বসে পায়ে প্যাঁচানোর ন্যাকরাগুলো শুকোচ্ছে। কি আর করা, ওই কোনায় বসা যায়, ওই জায়গাটাও খারাপ না।
সেদিন সকালে ভাগ্যদেবী বুঝি চোখ মেলে চাইলেন, কোন ভীড় বা লম্বা লাইন নেই। সোজা হেঁটে ঢুকে পরা যায়।
খাবার-হলের বাতাস যেন গোসলখানার মত ভারী। হিম-শীতল হাওয়া দরোজা দিয়ে ঢুকে ট্যালট্যালে লপসির ধোঁয়ার সাথে মিশে যাচ্ছে। এক দল টেবিলে বসা, আরেক দল টেবিলের সারীর মাঝের করিডোরে দাঁড়িয়ে, ফাঁকা সিট পাওয়ার অপেক্ষায়। চাপাচাপি-ঠেলাঠেলির মধ্যে এ ওকে উদ্দেশ্য করে চেচাঁমেচি করছে, প্রতিটা দলের দু’তিনজন বাটি ভর্তি লপসি আর কাঠের ট্রে ভর্তি জাউ নিয়ে খালি জায়গা খোঁজায় ব্যাস্ত। ওদিকে, ওই দেখো দেখো ঐ গোঁয়ার-গোবিন্দটা কি করে, কথা শোনে না, হাতের ট্রেটা ফেলেই দিলো, ঝপ-ঝপাৎ ঝপাস! হাত খালি থাকলে দাও ব্যাটাকে কষে একটা ঘাড়-ধাক্কা। ঠিকই আছে, অকারনে করিডোর জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা, জোচ্চুরির ধান্দা!
সময়ের পথ ধরে এল সেই শোকাবহ দিন। মুস্তাফা নুরউল ইসলাম নাকি হে? আরে না, আ’ম জাস্ট রানিং লো। নো আইডিয়া। তরঙ্গ কোম্পানির মাইক কুঁ কু করে। এভাবে দাঁড় করালে কিছু মাথায় আসে নাকি। তা মুস্তাফা নুরউল ইসলামও আসবেন নাকি? তার মুজিব ভাইয়ের কলকাতার ঘরে ফ্লোরে শুয়ে থাকার অভিজ্ঞতাটা আমরাও জানতে চাই। সেই মুজিব ভাই ১৮ বছর থেকে রাজনীতি করে করে বঙ্গবন্ধু। আমাদের জাতির জনক। একদা ফুটপাতেও রাত কাটিয় ...
[আমার ইউটোপিয়, বৈজ্ঞানিক ও গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র লেখায় জনাব কল্লোলের মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে দেখলাম যে মন্তব্যটি অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া আমার মনে হল আমার লেখায় যদিও আমি বলেছি কাদের আমি প্রলেতারিয়েত এবং কাদের আমি বুর্জোয়া হিসেবে চিহ্নিত করতে চাই আজকের যুগে, তথাপি ঠিক কোন কারণে আমি তা বলেছি সেটার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হয়নি। তাই মন্তব্য হিসেবে না দিয়ে ...
প্রথম কিস্তি – দ্বিতীয় কিস্তি – তৃতীয় কিস্তি – চতুর্থ কিস্তি
পাঁচঃ গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্র
আমি মার্ক্স এর কমিউনিষ্ট পার্টির ইস্তেহারের প্রথম কথা দিয়েই শুরু করছি। তিনি বলছেন যে আজ পর্যন্ত যত সমাজ দেখা গেছে তাদের সকলেরই ইতিহাস শ্রেনী সংগ্রামের ইতিহাস [১]। কথাটি আমি বলবো আংশিক সত্য। এ কথা ঠিক যে প্...
প্রথম কিস্তি – দ্বিতীয় কিস্তি – তৃতীয় কিস্তি
চারঃ সাম্যবাদ
তাহলে ইউটোপিয় সমাজতন্ত্র আর কমিউনিজম বা সাম্যবাদের মাঝে পার্থক্য কি? মার্ক্স এর মতেই ইউটোপিয় সমাজতন্ত্রীরা চান সমাজের প্রত্যেক সদস্যের, এমনকি সবচেয়ে সুবিধাভোগীর অবস্থার উন্নতি করতে [১]। আর মার্ক্সবাদীরা চান কেবল শ্রমিক শ্রেনীর মুক্তি, যা কিনা হবে বুর্জো...
তিনঃ সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদ
সমাজতন্ত্রের ধারণাও মার্ক্সই প্রথম বলেননি। ফরাসী বিপ্লবের (১৭৮৯-১৭৯৯) আগে দার্শনিক রুঁসো (Rousseau, ১৭১২-১৭৭৮) রচনা করেছিলেন ‘সামাজিক চুক্তি (social contract)’। যেখানে তিনি বলেন- মানুষ জন্ম নেয় মুক্ত হয়ে, কিন্তু জন্মের পর দেখে চারিদিকে শুধু বাঁধার শেঁকল [১]। এ থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে বলেছেন আই...
দুইঃ দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ
মার্ক্স এর দর্শনের প্রধানত দু’টি দিক- একটি বস্তুবাদ এবং অন্যটি দ্বান্দ্বিক পদ্ধতি। এই দু’য়ের সংমিশ্রনে সৃষ্ট তাঁর দর্শন দ্বন্দ্বমূলক বস্তুবাদ। বস্তুবাদ কিংবা দ্বান্দ্বিক পদ্ধতি, মার্ক্সই প্রথম বলেন তা নয়। বস্তুবাদ দর্শন আমরা দেখতে পাই গ্রীক দার্শনিক থেল্স্ (Thales, 624 BC-546 BC), ডেমোক্রিটাস্ (Democritus, 460 BC-370 BC ), ইপিকিউরাস্(Epi...