জিম করবেট হলেন জঙ্গলের বিজ্ঞানী। জঙ্গলের প্রতি পরতে পরতে লুকিয়ে থাকে মৃত্যু, জিাঘংসা, কূটিলতা। সে সব শুধু সুনিপূণ ভাবে আবিষ্কারই করেনি করবেট, রীতিমত জঙ্গলের আইন তৈরি করে উত্তরসুরিদের জন্য একটা সুনির্দিষ্টি পথনির্দেশনা রেখে গেছেন। জঙ্গল আজ বিলুপ্তির মুখে, তাই করবেটের ‘‘জাঙাল লোর’’ কতদিন কাজে লাগবে তা নিয়ে সন্দিহান আমরা। কিন্তু অ্যাডভেঞ্চার যাদের রক্তে মিশে আছে, তারা কী থেমে যাবেন। না, তাই কি হয়! শিকারের নেশা মানুষ কমাতে বাধ্য হয়েছে, কিন্তু দিন দিন বেড়ে চলে পর্বতের হাতছানি। এক হিমালয়ই ভুলিয়ে ভালিয়ে তার বুকে ডেকে নিয়ে শত শত পর্বতারোহীর প্রাণ কেড়ে নেয়। হিমালয় যেন মায়াবী ঘাতক--সে এভারেস্টই হোক আর কাঞ্চনজঙ্ঘা কিংবা অন্নপূর্ণা। কিন্তু এর মায়ডাকও তো উপেক্ষা করার মত নয়। তাই পদে পদে মৃত্যুর হাতছানি উপেক্ষা করে, তুষারের বুকে অগ্নির উপাখ্যান রচনা করতে নিশিতে পাওয়া মানুষের মতো চূড়ার দিকে অগ্রসর হন অদম্য প্রাণ অভিযাত্রীকেরা।
২০০৯ সালের আগস্টের ২ তারিখ। ফেসবুকের ইনবক্সে একটি নতুন মেসেজ আর সাথে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। “ম্যানিমেল তোরে চেনা চেনা লাগতাছে” আমার তো চক্ষু চড়কগাছ। ১৬ বছর পর ঐ বিদঘুটে নামে আমাকে সম্বোধনের সাহস করবে শুধু একজনই, এই বিকৃত নামের স্রষ্টা আমার স্কুল জীবনের সবচেয়ে বর্ণময় চরিত্র সজল।
পরিচিত মানুষের মৃত্যু সংবাদের মতো বিষাক্ত আর কোনো তথ্য নেই।
এভারেস্ট জয়ের পর অবরোহণের পথে সজল খালেদের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আমি মর্মাহত। আমি নিশ্চিত, আমার মতো আরো বহু মানুষ খবরটিকে প্রথম সাক্ষাতে অবিশ্বাস করেছেন।