শিক্ষামন্ত্রী নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন কারাগারের কয়েদীদের যোগ্যতা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবেন। নতুন এই নিয়মের বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জেলার গুলবদন খাঁ এর জীবন তেজপাতা হয়ে গেল। 'যোগ্যতা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষা' কথাটির যে কি অর্থ উনি এখন পর্যন্ত বুঝতে পারছেন না। এই যোগ্যতা কে যাচাই করবে? তার তহবিল কে দিবে? শিক্ষা না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়?
গোলাম আজম কি একটা কারণে প্যারোলে বের হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মেজর গুলবদন খাঁ প্যারোলের কাগজ সাইন করে মুখ গোমড়া করে অফিসে বসে আছেন। এমন সময় গেটের ওদিক থেকে ধস্তাধস্তি আর মারপিটের শব্দে তিনি ভয় পেয়ে ছুটে গেলেন।
(গেটের বাইরে)
জেলার বাইরে এসে দেখলেন দুই কারারক্ষী প্রচন্ড জোরে একজন আরেকজনকে কিলঘুষি মারছে।
পিজির ডাক্তারের অনুমতি নিয়ে শাহবাগ থানায় গোলাম আজম মামলা দায়ের করতে এসেছেন। ওসি কিছুটা বিরক্ত। দুপুরের খাওয়ার পর তিনি পিস্তল পরিষ্কার করছিলেন। এই সময় তিনি উটকো ঝামেলা পছন্দ করেন না।
- আপনি কোন ধারায় মামলা করতে চান?
- আইসিটি আইনের ৫৭ ধারায়।
- আপনার বাড়ি মগবাজারে। আপনি ওখানে মামলা করেন।
- আমি তো এখন পিজিতে প্রিজন কেবিনে আছি। তার উপর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে শাহবাগ থানা এলাকায়।
গোলাম আজমের মামলা তখন পূর্ণোদ্যমে চলছে। পিজিতো জাতীয় জাদুঘরের কাছেই। অনেকদিন কেবিনে শুয়ে বসে কাটাতে কাটাতে জাদুঘরের প্রভাবে তার মধ্যে শিল্পী সত্ত্বা সৃষ্টি হল। তো সে রংতুলি নিয়ে লেগে পড়ল। তার সৃজনশীলতার বিষয় একাত্তরের বধ্যভূমি। সেসময় তারা বিভিন্ন বধ্যভূমিতে মৃতদেহ ফেলার সময় স্তুপ হওয়ার বিভিন্ন প্যাটার্ন সৃষ্টি হত। সেটির নান্দনিক দিকটিই তার কাজের বিষয়। কিছুদিন পর ছবির হাটে গেল প্রদর্শনী করা নিয়ে কি
১. গোলাম আজমের যাবজ্জীবনের ঠিক পরের সপ্তাহের ঘটনা। উজ্জীবিত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আজম ঠিক করল বোনাস জীবনকে নতুন করে সাজাবে। পিজির ডাক্তারকে অনুরোধ করে সে বসুন্ধরা গোল্ড জিমে ভর্তি হল। দুই মাসে উচ্চতা বাড়ল দুই ইঞ্চি, বুকের ছাতি তিন ইঞ্চি, কোমর কমল চার ইঞ্চি। ফুরফুরে মন তবুও কখনও কখনও খচ খচ করে। কি যেন নেই, কি যেন নেই! নার্স ইদানীং আড়চোখে তাকায় কিন্তু এখনও কাছে আসে না। ডাক্তার অবশ্য বলে দিল,
(একটা উকুন পেটের ডাক্তারের কাছে গেল কোঁকাতে কোঁকাতে। )
ডাক্তার: নির্ঘাৎ ইফতারে ভাজাপোড়া খেয়েছেন। দাঁড়ান ঔষুধ লিখে দিচ্ছি। সকাল থেকে কয়বার পাতলা পায়খানা হয়েছে?
উকুন: গতকাল সন্ধ্যা থেকে আর পাতলা হচ্ছে না। নরমাল।
ডাক্তার: তাহলে তো ভাল হয়ে গেছেন। আমার কাছে আসলেন কেন? যান একটু আরাম করলে ঠিক হয়ে যাবে।
উকুন: না না। এমন ঔষুধ দেন যেন এটা আরো কিছুদিন থাকে।
ডাক্তার: মানে কি? ফাজলামি করেন?