প্রথম পর্ব এখানে
দ্বিতীয় পর্ব এখানে
[justify]মেসের জীবন আমার কখনই ভালো লাগতো না।
কিন্তু আমাকে যে কতবার মেস বদলাতে হয়েছে তার ঠিক নেই। প্রায়ই দেখা যায় আমাকে কেউ বলছে, “আরে তানিম! কি খবর?”
( প্রথম পর্ব এখানে )
[justify]
আমি প্রথম ঢাকায় আসি ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পরীক্ষার পর।
বিন্তী তখন খুবই ছোট, আব্বা কি একটা কাজে ঢাকা আসায় আমরা সবাই এসেছিলাম। আব্বা আমাদের নিয়ে চিড়িয়াখানায় এসেছিলেন। ওখানে একটা রাস্তার পাশের দোকানে খেলনা পিস্তল দেখেছিলাম, গুলি করলে সাদা ছোট ছোট পুঁথির মত বল বের হয়। ওটা দেখে আব্বাকে নিয়ে এসেছিলাম কেনার জন্য, দেখি ততক্ষণে বিক্রি হয়ে গেছে। ওটা নাকি একটাই ছিল! আমার এত খারাপ লেগেছিল! আমার প্রথম ঢাকা স্মৃতি ছিল খেলনা পিস্তল না পাওয়ার আক্ষেপটাই।
গ্রীষ্মের ছুটিতে আমরা মানে আমি রিমা মা-বাবা আর তিন্নিমাসীরা মানে তিন্নিমাসী, অরুণমেসো আর ওদের তিনবছর বয়সী ছোট্টো মেয়ে বুবলি সবাই মিলে বেড়াতে এসেছি। তিন্নিমাসী মায়ের স্কুলের বন্ধু ছিল। মা আর তিন্নিমাসী একসঙ্গে পড়েছিল ক্লাস ফাইভ থেকে টেন অবধি।
নদীটা এখনো একইরকম আছে, চুপ করে গিয়ে দাঁড়াই ওর কাছে। অদ্ভুত সুন্দর কলধ্বনি তুলে নদীর ধারা ছুটে যাচ্ছে সমুদ্রের দিকে। স্রোতোধারা ছুঁয়ে যাচ্ছে পাড়ের পাথর, বালি, ঝুঁকে পড়া গাছের পাতা। চারিপাশের মাঠ পাহাড় গাছপালা সবই যেন ওর কাছে মুহূর্তের দেখা হওয়া বন্ধু। নিরাসক্ত ভালোবাসায় তাদের ছুঁয়ে বা না ছুঁয়ে নদী চলে যায় নিজের পথে। ও কি কারুকে মনে রাখে?
১। আমার সঙ্গে যদিও বহুকাল অনীশের দেখা নেই, তবু বসে বসে খাতায় লেখালিখি মকশো করে যাই। অনীশ শুনেছি বেড়াতে গিয়েছেন পাহাড়ে। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছেন তিন ভাগ্নেভাগ্নী গ্যাঞ্জামা, নিশঙ্কা আর ঝঞ্ঝাকে। যাবার আগে আমায় কিছু ডেডলাইন দিয়ে গিয়েছেন , যাতে এসেই পাকড়াও করতে পারেন। অনীশ হলেন পাক্ষিক সাহিত্যপত্রিকা "আনন্দঝর্ণা"র সম্পাদক।
নীরার চোখের পাতা কেঁপে ওঠে, সত্যি তো কিভাবেই বা বলবে সে, এ কি অদ্ভুত পরিস্থিতি ! সময়ের ধাঁধা! নীরার ইতিহাস কি নীরার কাছে একদম শক্ত কঠিন দৃঢ়? সে যা জানে ইতিহাস বলে, তা কি ধোঁয়াচ্ছন্ন ও কাঁপা কাঁপা নয়?
স্নান সেরে হাল্কা গোলাপী নরম ড্রেসিং গাউন পরে বেরিয়ে আসে অদীনা, মাথায় ভেজা চুল শুকনো তোয়ালেতে জড়িয়ে। ব্রেকফাস্ট টেবিলে তখন টোস্ট এগপোচ চা কফি এইসব সাজাচ্ছে হিন্দোল। সেদিকে চেয়ে একটু হেসে নিজের ঘরে চলে যায় অদীনা। হেয়ার-ড্রায়ার চালিয়ে দিয়ে চুল শুকনো করতে করতে সে গুণগুণ করে কী একটা গানের কলি। অদীনা কোনোদিন গান শেখেনি বটে, কিন্তু তবু কেন জানি প্রতি সকালেই একটা না একটা গানের সুর তাকে অধিকার করে।
অদীনা চুপ করে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে চেয়ে থাকে। একা, একা, বড্ড একা লাগে তার এইসময়গুলোতে। বাইরে রোদ-ঝকমকে নিঃশব্দ দুপুর। চেয়ে থাকতে থাকতে তার মনে পড়ে অনেক, অনেক আগের এমন সব দুপুরবেলা। মনে পড়ে সেইসব দুপুরের নানা শব্দ। দুপুরজাগা রোদ্দুরের মধ্যে মিশে থাকতো সেইসব প্রিয় শব্দমালা। "হরে-এ-এ- ক মাল পাঁচসিকা"র ফেরিওয়ালা, "শিল খোটাও" ওলা, টিনালোহাওলার শব্দ। আরো থাকতো নিঃশব্দ কাগজকুড়ানি মেয়ে, যার রুখু বাদামী