(১)
বসে ছিলাম ছায়াবীথির সামনে তৈরি বাংলা একাডেমির মাচায়। আমি আর ইমতিয়াজ আহমেদ। লম্বা-চওড়া এক ভদ্রলোক এলেন। পরামাণুর গহীন নিসর্গে বইটা কিনে ইমতিয়াজ ভাইয়ের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘স্যার একটা অটোগ্রাফ প্লিজ!’ এরপর আমি একটু অনমনষ্ক, কে না কে! ওদিকে নজর দিলাম না। হঠাৎ একটা কথা কানে এলো, ‘আমি অভিজিৎ।’
২৮ বর্গমিটারের একটা ঘর। সেটাই আমার অ্যাপার্টমেন্ট। একজন মানুষের বেঁচে থাকতে যা কিছু লাগে সব আয়োজন এর মাঝেই। একটা দেয়াল কাঁচের। সেটাই জানালা। পর্দা সরিয়ে দিলে, কনকনে শীতে কুঁকড়ে যাওয়া গাছগুলোকে ঝড়ো বাতাসের সাথে যুঝতে দেখা যায়। কিছু ছাত্রহোস্টেলের শ্যাওলা ধরা ছাদ চোখে পড়ে। তার মাঝে মাঝে বয়লারের ধোঁয়া বের হবার চিমনি। বৃষ্টির পানি জমে আছে এখানে সেখানে। এরকম একটা অ্যাপার্টমেন্টেই কি মারা গেছি
কোন সময়ে কোন কথা বলতে হবে বা হবে না'র হিসাব করতে করতে সব থেকে জরুরি কথাগুলোই শেষ পর্যন্ত বলা হয়ে ওঠে না। ছাপা মাধ্যম/নেট মাধ্যম সব জায়গাতেই "সঠিক সময়" নির্ণয়ের গণিত নিয়ে প্রবল কামড়াকামড়ি চলে। যারা এই অতি বিতর্কিত "সঠিক সময়ের" তোয়াক্কা না করে নিজ বিচারে সঠিক কথাটা বলে ফেলতে পারেন, তাঁদের কথাগুলিই শেষ পর্যন্ত বলা হয়। অভিজিৎ সেরকমই একজন। সব থেকে বড় কথা, যাকে আঘাত করতে তিনি কলম চালিয়েছেন ঠিক তাঁকেই ত
এখন প্রশ্ন হলো, আমাদের কি করবার আছে? কার কাছে যাওয়া যায়? কার কাছে বিচার চাওয়া যায়? কার সাথে রাস্তায় নামা যায়? কে প্রতিবাদের ইভেন্ট খুললে গোয়িং বলা যায়? কয়জনের কুৎসিত প্রতিক্রিয়ার উত্তর দেয়া যায়? আমতা আমতা করে বলা অব্যয় বহর কতো সহ্য করা যায়? হঠাত মনে হতে পারে উত্তর সহজ, আবার পরক্ষণে দুর্বিষহ কঠিনও লাগতে পারে।
জানি, নিশ্চিত করেই জানি এখানেই থেমে যাবে সবকিছু। কিচ্ছু হবে না। কিচ্ছু হয়না এখানে। এই অন্ধকারে, বদ্ধ আবহে নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো অবশিষ্ট থাকবে না আর কোনো বিশুদ্ধ বাতাস। প্রতিবার কিছু বোকা মানুষ তড়পাবে, কাঁদবে, মুষ্টবিদ্ধ হাত উপরে তুলে প্রতিবাদ করবে... তারপর সেই যুথবদ্ধ কণ্ঠের মাঝ থেকে সবচেয়ে তীব্র কণ্ঠটাকেই নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে।