‘শিম কিভাবে রান্না করতে হয়’ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ’র ইংরেজী ভাষায় লিখিত স্যাটায়ার ‘How does one cook beans' এর বাংলা অনুবাদ। রচনাটির একটি subtitle বা উপশিরোনাম আছে, 'এক এশীয়র ফ্রান্স অভিযান'। দীর্ঘদিন অপ্রকাশিত থাকা লেখাটির প্রচার প্রচারণা নিতান্ত কম বলে লেখকের দেয়া মূল ইংরেজী উপশিরোনামটি পেলামনা; তাই অনুবাদকের শব্দচয়নের রুচির ওপরই এ বেলা ভরসা করতে হচ্ছে। আমাদের এশীয়দের চোখে ইয়োরোপীয়দের অনেক আচরণই অদ্ভু
ক'জন তাদের একাডেমিক পেপার বা থিসিস ইংরেজি থেকে বাংলা করার চেষ্টা করেছেন, অথবা বিজ্ঞানচর্চার চেষ্টাই বা করেছেন বাংলায়? সংখ্যাটি অত্যন্ত কম বলেই আমার ধারণা। একবার মনের খেয়ালেই চেষ্টা করেছিলাম আমার এক কনফারেন্স পেপার বাংলা করার, দুই প্যারা করেই ক্ষান্ত দিয়েছিলাম। আমার মতে বাংলায় বিজ্ঞানচর্চার অভাবের প্রধান না হোক, অন্যতম কারণ হচ্ছে বাংলায় বিজ্ঞান-বিষয়ক লেখার অভাব। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে না হয় কিছু বাংলায় বিজ্ঞানচর্চা হলেও হতে পারে, প্রকৌশল বা চিকিৎসা বিদ্যালয়গুলোতে বাংলার ব্যবহার নিষিদ্ধই বলা চলে!
এ অবস্থার পরিবর্তন আনার জন্যে কঠিন কাজটি হলো বাংলায় সব বিষয়ে ভাল ভাল বই লিখে ফেলা। সে সুযোগ আমাদের তেমন নেই, কারন দেশের বিদ্যালয়ে জ্ঞানচর্চা হয় না, শেখানো কিভাবে চাকুরি পাওয়া যায়। বুয়েট আমাকে প্রস্তুত করেছে বিসিএসের জন্যে, গবেষণা করতে শেখায়নি, শিখিয়েছে অসংখ্য গাণিতিক বিশ্লেষণ, শিখায়নি গণিত, পদার্থবিদ্যা বা রসায়নকে ভালোবাসা যায়। বিচ্ছিরি সব ডিজাইন ঘাড় ধরে শিখিয়েছে, বোঝায়নি মূলনীতি (যা শিখে আমি খাতা-কলম-ক্যালকুলেটর না পিষে ছোট্ট একটা প্রোগ্রাম লিখেই সমাধান করে ফেলতে পারতাম)। দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থায় অবশ্য আমি নীতি-নির্ধারকদের খুব বেশি দোষ দিতে পারি না, আগে মাথার উপরে ছাদ আর পায়ে চলার পথ দরকার, আপাতদৃষ্টিতে 'অর্থহীন' গবেষণার থেকে।