১.
আবুল হাবুলকে বলে-“গালে থাপড়ায়া হুতায়ালামু।”
হাবুল চেতে গিয়ে বলে-“দেখ্ না মাইরা”
আবুল হাবুলের গালে চটাস করে চড় মারে। চড় খেয়ে হাবুল ফুঁপিয়ে কেঁদে ফেলে। বলে-“পারলে আমগো বাড়ির সামনে আইয়া মার।”
আবুল বলে-“চল্”
দুজন মিলে হাবুলের বাড়ির সামনে যায়। হাবুল চোখ রাঙিয়ে বলে-“এইবার মেরে দেখ্।”
বাসায় নারী জাগরণের ভুতটা প্রথম আনলো মা।
এটি যতটা না লেখা তার চেয়ে বেশি হল শব্দ করে চিন্তা করা। আমার সমস্যা হল নারী, জেন্ডার ইস্যু, সমাজবিজ্ঞান এসব বিষয়ে আমার কোনো পেশাগত প্রশিক্ষণ বা অভিজ্ঞতা নেই, তবে আমার সৌভাগ্য হল আমার মা, বোন, জীবনসংগী সবাই স্বাধীন স্বাবলম্বী নারী। কাজেই আমার সঙ্গগুণ আছে। আমি সম্প্রতি প্রথম শ্রেণীর বাংলা পাঠ্যবইটি উল্টে পাল্টে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম এটা পড়ে কি আমাদের সমাজে মেয়েদের প্রতি যে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গী আছে তার
কেমন আছে বাংলার নারীরা? কিশোরী থেকে যারা তারুণ্যে এসেছে, তারুণ্য থেকে যারা পূর্ণ যৌবনা হয়েছে, হয়েছে কারও প্রেয়সী, হয়েছে কারও স্ত্রী তারপর একদিন হয়েছে মা। কেমন আছে সব কন্যা-জননী-জায়া-রা? কেমন আছে তারা নিভৃত গ্রামে কেমন’ই বা আছে শহরের চারদেয়ালের বদ্ধ ঘরে? স্ব-সম্মানে আছে তো কর্মজীবি নারীরা, নিজের অধিকারটুকু নিয়ে ভালো আছে তো গৃহিণী-রা?
(১)
যোগ্যতা...
==============
রেজা সাহেব আজ খুব খুশি।
একটি প্রথম সারির কর্পোরেট অফিসের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার। মানুষ হিসাবে তিনি বেশ হাসিখুশি- অধীনস্থদের মাঝে খুবই জনপ্রিয়। সবাই জানে মধ্যবয়স পার হয়ে যাওয়া এই লোকটি কাজপাগল- নিজের হাতে গড়ে তুলেছেন এই শাখাটা। অনেক উত্থান পতনের মধ্য দিয়ে এই শাখাটি গিয়েছে। কিন্তু গত এক বছরে এই শাখাটি যেভাবে পারফর্ম করেছে সেটা অবিশ্বাস্য। এর পেছনে যেমন সবার পরিশ্রম আছে তেমনি আছে একটি মেয়ের অসাধারণ ডেডিকেশন, অক্লান্ত খাটুনি, আর বুদ্ধিদীপ্ত কিছু ডিসিশন।
ধন্যবাদ সচলায়তন কে। কত অজানা কথা, অজানা গল্প, অজানা ক্ষোভ জানতে পারছি। নারী হিসেবে আমি নিজেও যে বৈষম্যের শিকার একেবারে হইনি, তা ও না। কিন্তু সে গল্প আজ থাক।আজ বরং অন্য এক নারীর গল্প বলি।এক সাধারণ নারীর গল্প।অথবা..... অসাধারণ।
বউ কি সেবা যত্ন করে?
আমার এক আত্মীয়া বিয়ের পরপরই ফোন দিয়ে আমাকে উৎকণ্ঠিত স্বরে জিজ্ঞেস করলেন, বউ কি সেবা যত্ন করে? আমি কাঁচুমাচু গলায় বললাম, বউ কি সেবা যত্ন করার জন্য? তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে বললেন, নয়তো কি? আমার কত বয়স হয়েছে কিন্তু এখনও তোমার চাচাজিরে রান্না করে খাওয়াই প্রতিদিন। বউকে লাই দিবা তো বউ মাথায় উঠবে। তখন বাকি জীবন তোমার সেবা করে যেতে হবে। বিষয়টা নিয়ে ঠিকমতো চিন্তাভাবনা করার আগেই মনে হয় আমার বউ লাই পেয়ে মাথায় উঠে গেল। তাই একদিন সে চা বানালে পরদিন আমাকে বানাতে হয়। একদিন সে আমার সেবা করলে, আরেকদিন আমাকে তার সেবা করতে হয়। সে রান্না করলে, আমার বাসন কোসন ধোয়া থেকে থেকে শুরু করে কাটাকুটির সব কাজ করে স্যু শেফের দায়িত্ব পালন করতে হয়। সে মেইন কোর্স বানালে, ডেসার্টটা আমাকে বানাতে হয়। সে ঘর ঝাড়ু দিলে, আমাকে ঘর মুছতে হয়। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে উল্টাটা সত্যি হয় না। আমি রান্না করলে সে বাসন কোসন ধোয় না। আমি ঘর ঝাড়ু দিলে সে সোফায় শুয়ে ঠ্যাঙ নাচায়। আমি চা বানিয়ে এনে দিলে চোখ সরু করে বলে, চা দিলা বিস্কুট দিলানা এইডা কেমন ভদ্রতা? সে যাই হোক। কালে কালে বুঝতে পারলাম আত্মীয়ার কথামত প্রথম রাতে বিড়াল মারতে ব্যর্থ হবার কারণেই আমার এই করুণ পরিণতি।
১.
আমার মেয়েটা ফ্রকের ফিতে বাঁধতে পারে না, নিজে জামা পড়তেও পারে না। জামা পাল্টাবার সময় হলেই চিৎকার করে, ‘মা, জামা পাল্টে দাও।’ আমি ওকে বকতে বকতে বলি, ‘এত্ত বড় মেয়ে কিছুই পারে না! খালি এই করে দাও, ওই করে দাও।’ মেয়েও পাল্টা রাগ করে গলা উঁচু করে প্রতিউত্তর দেয়,‘ নিজেই বলে আমি বড় হই না, আবার নিজেই বলে আমি বড় হয়ে গেছি!’
অক্ষমের অপারগতার স্বীকারোক্তি:
এই লেখাটা ঠিক নারী সপ্তাহ কে উদ্দেশ করেই নয়। সচলে বাল্যবিবাহঃ বাবামায়েরা কি জানেন তারা কী করছেন? লেখাটি পড়ে মনে এলো, এই ধরণের ঘটনা যে সকল কিশোরীর জীবনে ঘটেছে অথচ যারা লিখতে-পড়তে জানেনা, এরকম কত-শত কিশোরী/বালিকার মনঃপীড়ার কথা আমরা কোনদিনই জানবোনা।
আমার দেখা/জানা এমনই এক কিশোরীর জীবনের কিছু কথা:
প্রথম ঘটনাটা বেশ কয়েক বছর আগের। ২০০৮/৯ এর দিকে হবে। বাসে করে ক্লাসে যাচ্ছিলাম সকাল সকাল। পুরো বাস অফিসগামী মানুষ আর ক্লাসগামী ছাত্র দিয়ে বোঝাই। কোনমতে সামনের দিকে একটু জায়গা করে দাঁড়িয়ে খেয়াল করলাম মহিলা সিটে দুইজন ছেলে বসা। বাসে কোন মহিলা দাঁড়িয়ে নেই দেখে ভাবলাম থাকুক বসে। কেউ উঠলে নিশ্চয়ই সিট ছেড়ে দিবে।
ভুল ছিলাম আসলে।