মোর আপনার চেয়ে আপন যে জন
খুঁজি তারে আপনায়...
নিজের চেয়েও যে আপন-
সে কেমন আসলে?
মানবজীবন যখন পাঠশালা
সেই পাঠশালায় পড়াশোনা কেমন হয়-
তা বোঝাতে সাধু কাজী নজরুলকে ডেকে এনেছেন।
কাজী নজরুল সেখানে পড়েছেন।
নিজের ভেতরকে জেনেছেন।
ভেতরের আমিকে খুঁজেছেন।
খুঁজতে খুঁজতে
মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি’
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি’
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
০ (শূন্য)
।।।।।।।।।
কে আমি?
বিস্তৃত মহাকাশে ছুটে চলা সহস্র লক্ষ কোটি গ্রহ তারার মধ্যে
পৃথিবী নামের একটি গ্রহে- এই যে আমি;
কে এই আমি?
কী আমার পরিচয়?
৮৭ লক্ষ প্রজাতির জীব পৃথিবীতে আছে
বিজ্ঞানীরা অনুমান করেন।
এই এত জীবের মধ্যে মানুষই একমাত্র জীব
যে নিজের আত্মপরিচয় খুঁজে বেড়ায়-
আর কেউ নয়-
আড়াই হাজার বছর আগে
মানুষের লিখিত ইতিহাসের প্রথম যুগে
আদি শিক্ষক সক্রেটিসকে
তিনি কহিলেন-
ওর বৈশিষ্ট্য ওর একাকীত্ব।
সকল কিছুর ভেতরে সে একা দাঁড়িয়ে থাকতে পারে।
ও যদি কারও সামনে দাঁড়িয়েও থাকে- তাকে কেউ দেখতে পায় না।
জীবনে ওর বিচলিতভাব প্রকাশ পায় না।
ও জ্ঞানহারা হয় না। সজ্ঞানে থাকে। এই কারণে তাকে আলাদা মনে হয়।
যেমন ধরেন ও আসবে বলে কত কথা হচ্ছে।
ওর বসার জায়গা আছে।
ও আসলো ঠিকই কিন্তু ওর জায়গায় ও বসলো না। ওর স্বভাবই ওরকম।
এই যে আপনি আর আমি মুখোমুখি বসে আছি-
এই যে দুইজন আমরা এখন কথা বলছি...
আমরা এরকম আর থাকবো না, তাই না?
না কি, আমরা কোনদিনও এরকম ছিলাম না?
তাহলে এই যে বসে আছি, এ কেমন?
সাধুদের বথাগুলো এরকমই।
পথের ধারে ফুটে থাকা বুনো ফুলের মতন। এমনিতে চোখে ধরবে না কিন্তু যে এর রস পেয়েছে, তার জন্য পৃথিবীটা হয়ে উঠবে- মস্ত একটা ফুলের বাগান। সাধুর কথা মনে নিলে, গোটা মানব জীবন হয়ে ওঠে একটা রসের আধার।