সেদিন কি হল বলি তবে। প্রথমে ত সকাল হল। আর তারপর, মিতুল - ও হো, বলাই ত হয়নি মিতুল কে। ঠিক ধরেছ। মিতুল একটা ছোট্ট মেয়ে। তুমি ত অনেক বড় হয়ে গেছ। কত কি জানো, কত কথা বল। মিতুল তোমার মত বড় নয়, কিন্তু মাঝে মাঝে এমন কথা বলে যে সবাই বলে,
- বাব্বাঃ, মিতুল দেখি অনেক বড় হয়ে গেছে!
মিতুল এখনো অনেক কিছুই জানে না। কিন্তু জানতে চায় অনেক।
পিপুল বাড়ি ফিরে হাত না লাগিয়ে লাথি দিয়ে পাক মারে স্কুলের জুতোজোড়া। ওর ইচ্ছা হয় জুতো ছুটে চলে যাক যেদিকে খুশি, কিন্তু ঠকাস করে গিয়ে দরজায় বাড়ি খেতেই ভয় পায় একটু। একা একা রাগ দেখিয়ে জুতো ছোঁড়া সহজ, কিন্তু সেটা বাড়ির মূল দরজায় জুতোর র্যাকের কাছ থেকে ছুটে গিয়ে ডাইনিং রুমে ঢুকে পড়লে সমস্যা! মা দেখলেই ক্ষেপে যাবে, ধমকা ধমকি শুরু হবে আবার। তাছাড়া এখন বাজে বিকাল সাড়ে চারটা, বাবা নিশ্চয়ই অফিস থেকে বাড়ি চলে এসেছে, বিশ্রাম নিচ্ছে ডাইনিং রুম লাগোয়া বসবার ঘরে, টিভি ছাড়া আছে নিশ্চয়ই আর খবরের কাগজটাও থাকার কথা তার সামনে।
[justify]
ঘুম থেকে উঠে পিপলু চোখ পিটপিট করে কিছুক্ষণ ছাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর হাত বাড়িয়ে তার কোলবালিশটাকে খোঁজে। কিছুক্ষণ কোলবালিশটাকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে সে সকালের শব্দগুলো শোনে। তরকারিঅলা, মুরগিঅলা, ফেরিঅলা এসে ডাকাডাকি করে, রিকশা চলে যায় পাশের গলি দিয়ে টুংটাং করে, বারান্দায় চড়াই আর নারকেল গাছের ওপরে বসে কাক ডাকে।
পিপলু ঘুমমাখা চোখে বিছানায় শুয়েই আস্তে করে ডাক দেয়, "মা!"
আস্তে ক...
[justify]
গুড্ডুর বন্ধু বাবু মস্ত একটা সাইকেল চালিয়ে স্কুলে আসে।
গুড্ডুরা স্কুল ছুটির পর অনেকক্ষণ খেলে। স্কুলের মাঠে মর্নিং শিফটের ছেলেরা খুব একটা খেলাধূলার সুযোগ পায় না, হেডমাস্টার তাদের মেরেবকে খেদিয়ে দ্যান। বাসায় গিয়ে আবার খেয়েদেয়ে পড়তে বসতে বলেন। অ্যাসেম্বলি মাঠের সবুজ ঘাসগুলি গুড্ডুদের দিকে তাকিয়ে মুখ ভেংচায়।
অ্যাসেম্বলি মাঠে না হোক, জিমনেশিয়ামের সামনে ছোট্ট মাঠটুকুত...
[justify]
টুটুলের বড়বু টুটুলদের সাথে থাকে না। সে থাকে দূরের ঢাকা শহরে, মেডিক্যাল কলেজের হোস্টেলে। ছুটিতে সে ফেরে বাড়িতে। তাই বাকিটা সময় টুটুলকে চিঠি লিখতে হয় বড়বুকে।
টুটুলের চিঠি লিখতে যে খুব ভালো লাগে, এমনটা নয়। কিন্তু বাসার লোকজন এক এক সময় যা করে, তা চিঠি লিখে না জানিয়ে চুপ করে বসে থাকা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। টুটুল প্রতিবাদী আত্মা। তবে যেসব জায়গায় প্রতিবাদ করলে একটু সমস্যা হয়, কিংব...
[justify]
১.
কুড়ানকে তার বাবা কেন কুড়ান বলে ডাকতেন, কে জানে?
কিন্তু মা-ও কুড়ানকে কুড়ান বলেই ডাকতে শুরু করলেন। সেই থেকে কুড়ানের বয়স যখন মোটে কয়েক ঘন্টা, তার নাম হয়ে গেলো কুড়ান। তার দুই খালা, দুই মামা তাকে কুড়ান বলে ডাকেন। দুই কাকা, এক ফুপি ডাকেন কুড়ান বলে। কাজের বুয়া দিলুর মা, যে কি না কুড়ানের বাবা যখন কুড়ানের বয়সী ছিলো, সেই তখন থেকে কুড়ানদের বাড়িতে কাজ করে, সে-ও তাকে কুড়ান বলে ডাকে।
নিজের ...
[justify]বাবুনের দাদিভাইয়ের খুব বাগানের শখ। কিন্তু বাবুনরা থাকে চারতালার ওপরে। ছাদে উঠতে গেলে আরো দু'তলা টপকাতে হবে দাদিভাইকে, আর নিচে তো কোন জায়গাই নেই, গোটাটাই বাড়ি। ঢাকায় একটা শুষ্কংকাষ্ঠং বাড়িভরা গিজগিজে এলাকায় থাকে বাবুনরা। বাবুনের ঘরের জানালা দিয়ে পাশের বাড়ির ফ্ল্যাটের ড্রয়িংরূম আর আধখানা ডাইনিং রূম দেখা যায়, আর অনেক কষ্ট করে ঘাড় বাঁকা করলে কার্নিশ এড়িয়ে এক চিলতে আকাশ চোখে ...
[justify]ছোট্ট মানু রাতে ঘুমোবার সময় খুব ছটফট করে। তাকে রোজ রোজ গল্প শোনাতে হয়। মানু ছোট্ট হলেও বোকা নয়, পুরনো গল্প তাকে শোনালে সে ভারি রাগ করে। সব গল্পই তার মনে থাকে, কোন পুরনো গল্প একটু শুরু করলেই সে ক্ষেপে ওঠে।
মানুর মা যেমন সেদিন বলছিলেন, "এক দেশে ছিলো একটা রাজা ...।"
মানু চুপ করে শোনে। অনেক গল্পই রাজার গল্প, অনেক গল্পই রাজা দিয়ে শুরু হয়।
মানুর মা বলেন, "রাজার ছিলো দুইটা রাণী। একটা সুয়ো...
[justify]মিতুন খুব খুঁতখুঁতে মেয়ে। সে সব কিছুতে শুধু ভুল ধরে।
মিতুন বড় জেদি। কোনকিছুতে জেদ চেপে গেলে সে আর হাল ছাড়ে না।
মিতুনদের বাড়িতে কাজ করতে এসেছে দুলি। দুলি আগে কখনো শহরে আসেনি। এই প্রথম সে গ্রাম থেকে এসেছে। তার কথায়, চেহারায়, শরীরে তার ফেলে আসা গ্রাম কুসুমপুরের ছবি এখনো দেখা যায়।
দুলির বয়স মিতুনের চেয়ে সামান্য বেশি। কিন্তু দুলি রান্না করতে পারে। মিতুন পারে না।
মিতুন কিন্ত...