Warning: Creating default object from empty value in i18ntaxonomy_term_page() (line 34 of /var/www/sachalayatan/s6/sites/all/modules/i18n/i18ntaxonomy/i18ntaxonomy.pages.inc).

টেকেরঘাট সাব-সেক্টর

দাসপার্টির খোঁজে # খসড়া পর্ব-৫

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: সোম, ০৩/০৮/২০১৫ - ১২:৪৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]
১৯জুন। পহেলা রমজান। সকাল বেলা।
কাকৈলছেও, আজমিরীগঞ্জ, হবিগঞ্জ।
সেহরীর পর সামান্য কিছু সময় আমরা ঘুমিয়েছি। আটটার দিকে বের হই। আমি, নজরুল, তানিম ও ইলিয়াস। সামান্য পায়ে হেঁটেই নদীর পাড়ে আসি। কাল রাতে এসে পৌঁছে ছিলাম অন্ধকারে। এখন সকালের নরম আলোয় নদী দেখি, নদীবর্তী জনপদ দেখি। শেরপুর থেকে কুশিয়ারা নদী আজমিরীগঞ্জ হয়ে এদিকে এসেছে ভেড়ামোহনা নামে। ভেড়ামোহনা নেমে গেছে আরো ভাটিতে। পেছন দিকে সুনামগঞ্জ, দিরাই হয়ে কালনী এসে মিশেছে। ভেড়ামোহনা ও কালনী মিশেছে আরেকটু ভাটিতে, সেখান থেকে মেঘনার মোহনা। ঐ মোহনা ধরে এগুলেই ভৈরব। আমর দাঁড়িয়ে আছি কাকেলছৈও লঞ্চঘাটের কাছে। একসময় কাঠের ব্যবসার জন্য বিখ্যাত ছিলো এইঘাট।
নদী এখানে বিশাল। ইলিয়াস তার পরিচিত এক ইঞ্জিন নৌকা নেন। ছোট্ট একটা নৌকা। মাঝি ও ইলিয়াস হালের কাছে বসেন, আমি তাদের সামনে দাঁড়াই। নজরুল ও তানিম সামনের দিকে। নৌকা ভাসে ভাটিতে, আমরা পশ্চিমে নামতে থাকি- যতো ভাটিতে যাই ততো নদী আরো প্রশস্ত হতে থাকে। কিছুক্ষন যাওয়ার পর নদীর বুকেই বিদ্যুতের খুঁটির লম্বা সারি দেখি উত্তর-পুর্ব কোনে। ইলিয়াসকে জিজ্ঞেস করি- কোন এলাকা? বলেন- জয়সিদ্ধি। ইটনা থানার জয়সিদ্ধি। বাংলার প্রথম র্যাং লার আনন্দমোহন বসুর বাড়ি, ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজ তার অবদান।


দাসপার্টির খোঁজে # খসড়া পর্ব-৪

হাসান মোরশেদ এর ছবি
লিখেছেন হাসান মোরশেদ (তারিখ: রবি, ২৮/০৬/২০১৫ - ১:৪৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

[justify]
দাসপার্টি নিয়ে কাজ শুরু করার প্রথম থেকেই একটা মানুষকে খুঁজছি।
দাসপার্টি সংক্রান্ত প্রকাশনা ও আলাপচারীতা থেকে জেনেছি- জগতজ্যোতি দাসের সবচেয়ে আস্থাভাজন ও ঘনিষ্ঠ সহযোদ্ধা ছিলেন আঠারো/ উনিশ বছরের এক তরুন। নাম তার ইলিয়াস চৌধুরী। জ্যোতির সাথেই যুদ্ধের প্রশিক্ষন নিয়েছেন এবং প্রতিটি যুদ্ধে তার সাথে ছিলেন। শেষ যুদ্ধে ও শেষ পর্যন্ত ইলিয়াসই ছিলেন একমাত্র তার সাথে। ইলিয়াস নিজে ও গুলীবিদ্ধ হয়েছিলেন বুকে কিন্তু জ্যোতিকে একা ফেলে যাননি। তার কমাণ্ডার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলে পর, বিলের পানিতে কমাণ্ডারের মৃত শরীর ডুবিয়ে গুলী করতে করতে পিছিয়ে এসেছিলেন- তখনো তার নিজের বুক থেকে ও রক্ত ঝরছে।
সালেহ চৌধুরী বলছিলেন- ১৬ নভেম্বর জ্যোতির মৃত্যুর পর ইলিয়াসরা যখন কুঁড়ি-বলনপুরের ক্যাম্পে ফিরে আসেন তখন তার বুকের ক্ষত দেখতে পান। বাম পাশে গুলী লেগে বের হয়ে গেছে আর এক ইঞ্চি দূরে হলেই হৃদপিন্ড ছেদ করতো। সালেহ চৌধুরী তাকে টেকেরঘাট পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, সেখানে তখন অস্থায়ী হাসপাতাল গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া প্রয়োজনে শিলং ও পাঠানো যেতো।
কিন্তু ইলিয়াস যেতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চান, দাদার খুনের প্রতিশোধ নিতে চান। চিকিৎসার জন্য আর কোথাও না গিয়ে স্থানীয়ভাবে ব্যান্ডেজ করেই ইলিয়াস যোগ দেন দাসপার্টির পরবর্তী একশনে এবং দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত পরবর্তী একমাস যুদ্ধ করতে থাকেন।