মদও খাইছে নারীও পাইছে; আয়েশে গড়ায়া ভরতের সৈন্যরা কয়- মোরা চিত্রকূটও যাব না; অযোধ্যাও ফিরব না। যে যেইখানে আছে সেইখানেই সুখে থাউক; রাম থাউক বনে; ভরত সিংহাসনে। আমরা এইখানেই থাকতে চাই বাকি জীবন…
কানতে কানতে মইরাই গেলেন রাজা দশরথ। রাম যাবার পর মাত্র চাইর দিন টিকলেন তিনি। সুমন্ত্র রামরে ফালাইয়া আসছে দুই দিনের পথ দূরে; ফিরতেও লাগছে দুইদিন। রাম ঘরছাড়ার কালে পথে পড়া রাজারে কুড়ায়া সেই যে বিছানায় শোয়ানো হইছিল; সেই বিছানা তিনি আর ছাড়তে পারেন নাই। থাইকা থাইকা কানছেন আর এরে তারে জিগাইছেন- সুমন্ত্র ফিরছেনি আমারে কও…
আমি রাবণের বাড়ি গেছিলাম রামের বার্তা নিয়া। সে কথা শোনে নাই; মরছে। তার আগে আমি বালির বিষয়ে সুগ্রীবের দূতিয়ালি করছি রামের কাছে; বালিও মরছে। এইবার রামের দূত হইয়া আমি আপনেরে এই কথা বলতে আসছি যে; রাম তার পিতৃসিংহাসনে রাজা হইতে চান; যদিও এইখানে মারামারির কোনো কথা নাই; কারণ ভাইয়ে-ভাইয়ে রক্তারক্তি বড়োই ঘিন্না করেন রাম…
সার্কাসের সাপের মতো একবার ফোঁস কইরা তিনবার মাটিতে থুতনি ঘষেন রাজা দশরথ। তাড়াহুড়া করতে গিয়া ভুল করছেন হিসাবে আর চুরি লুকাইতে গিয়া হারাইছেন সহায়। সব থিকা বড়ো কথা জীবনে পয়লাবারের মতো একলা একলা রাজাগিরি করতে গিয়া খেয়ালই করেন নাই রাজকীয় কলকব্জার কোন চাকা কোনদিকে ঘোরে আর কোন ছিদ্র দিয়া কোন কব্জায় কে ঢালে তেল…
সবকিছুতে সকলের অপমান হয় না। অপমানিত হইবার জন্য যে সামান্য পূর্বমান থাকা লাগে সেইটা দশরথের নাই; থাকলে বিশ্বামিত্র যা ঘটাইলেন তাতে রাজা দশরথের আগুন হইয়া উঠবার কথা…
দশরথের দুই পোলার বিবাহ আয়োজন কইরা দশরথরেই সেই বিবাহ খাইতে খবর দিলেন বিশ্বামিত্র- আপনের দুই পোলার বিবাহে আপনার নিমন্ত্রণ…
ভারতীয় পুরাণ ঘাঁইটা ইতিহাস খুঁজতে যাওয়ার সব থিকা বড়ো ঝামেলাটা হইল এইসব পুরাণের রচয়িতা ঋষি কিংবা কবিদের অন্য কোন বিষয়ে কোন জ্ঞান আছিল আর কোন বিষয়ে আছিল না সেইটা নিশ্চিত না হইলেও একটা বিষয় পরিষ্কার যে তাগো মধ্যে বিন্দুমাত্র সময়-সংখ্যা কিংবা ইতিহাস জ্ঞানের কোনো অস্তিত্ব আছিল না; অথবা অদরকারি মনে কইরা তারা এই তিনটা জিনিসের লগে বাচ্চাপোলাপানের মতো খেলানেলা কইরা গেছেন। সময় মাপতে গিয়া তারা ষাইট বচ্ছর আর
জনপ্রিয় ধারণায় রাম-রামায়ণ-বাল্মিকীরে কৃষ্ণ-মহাভারত-দ্বৈপায়ন থাইকা প্রাচীন ভাবা হইলেও ঘটনা কিন্তু ঠিক উল্টা। এর পক্ষে পয়লা জোরালো যুক্তিটা হইল দক্ষিণ দিকে আর্যগো ভারত-বিস্তারের কালক্রমের লগে দখলি-মানচিত্রের হিসাব। মহাভারতের ঘটনাস্থল থাইকা রামায়ণ ঘটনাস্থল আরো বহুত পূর্ব দিকে। আর্যগো দক্ষিণ দিকে পা বাড়াইবার ঐতিহাসিক সময়কাল মাথায় রাইখা রমিলা থাপারও মন্তব্য করেন যে রামায়ণ তৈরি হইছে ৮০০খিপূর অন্তত পঞ্চা
পৌলস্ত্য বধ কাব্য নামে বাল্মিকীর হাতে যখন রামায়ণের আদি পুস্তকটা রচিত হয় তখন এর শত্রু-মিত্র-নায়ক সকলেই আছিল রক্ত মাংসের মানুষ। কালে কালে এর নায়ক রাম যতই অবতার হইতে থাকেন ততই তার মিত্ররা হইতে থাকে নখ-ল্যাঞ্জা-লোমওয়ালা জন্তু জানোয়ার আর শত্রুপক্ষ পরিণত হয় রাক্ষস খোক্কস কিংবা ভূতুমের রূপকথায়। আর পৌলস্ত্য বধ থাইকা পুস্তকখান রামায়ণ হইবার পথে রাম-রাবণ-বামুন-বান্দর সকলেই হইয়া উঠেন বেসুমার অলৌকিক ক্ষমতার অধ
রামবিহীন অযোধ্যায় থাকনে বুকের পাটা নাই লক্ষ্মণের; পিটাইয়া তক্তা বানাইয়া ফালাইব ভরত। তাই সেও বিশ্বামিত্রের লগে রামের পিছু লয়। আর অবধারিতভাবেই রাজপুত্রগো পিছে যায় তাগো দেহরক্ষক আর রাজকীয় সেনার সশস্ত্র একটা দল...
যথেষ্ট পরিমাণ পোলা-শালা-ভাই-ভাতিজা-শ্বশুর-সম্বন্ধি না থাকলে রাজাগো পক্ষে বড়ো রাজা হওয়া তো দূরের কথা নিজের রাজ্যে নেংটি সামলাইয়া টিকা থাকাই কঠিন। রাজা দশরথ এক বাপের এক পোলা। মা ইন্দুমতি যেমন না দিছেন আর কোনো সন্তানের জন্ম তেমনি বাপ অজ না করছেন আর কোনো বিবাহ। রাজত্বের লাইগা দরকারি আত্মীয়-স্বজনের অভাব পুরনের লাইগা তাই অজ-ইন্দুমতীর পোলা দশরথ সাড়ে তিনশোখান বিবাহ কইরা বহুত শালা-সম্বন্ধি-শ্বশুর সংগ্রহ কর