সার্কাসের সাপের মতো একবার ফোঁস কইরা তিনবার মাটিতে থুতনি ঘষেন রাজা দশরথ। তাড়াহুড়া করতে গিয়া ভুল করছেন হিসাবে আর চুরি লুকাইতে গিয়া হারাইছেন সহায়। সব থিকা বড়ো কথা জীবনে পয়লাবারের মতো একলা একলা রাজাগিরি করতে গিয়া খেয়ালই করেন নাই রাজকীয় কলকব্জার কোন চাকা কোনদিকে ঘোরে আর কোন ছিদ্র দিয়া কোন কব্জায় কে ঢালে তেল…
সবকিছুতে সকলের অপমান হয় না। অপমানিত হইবার জন্য যে সামান্য পূর্বমান থাকা লাগে সেইটা দশরথের নাই; থাকলে বিশ্বামিত্র যা ঘটাইলেন তাতে রাজা দশরথের আগুন হইয়া উঠবার কথা…
দশরথের দুই পোলার বিবাহ আয়োজন কইরা দশরথরেই সেই বিবাহ খাইতে খবর দিলেন বিশ্বামিত্র- আপনের দুই পোলার বিবাহে আপনার নিমন্ত্রণ…
রাজা দশরথ মইরাই গেলেন। পোলার লাইগা কানতে কানতে মাত্র চাইর দিন টিকলেন তিনি। সুমন্ত্র রামরে ফালাইয়া আসছে দুই দিনের পথ দূরে। ফিরতেও লাগছে দুইদিন। রাম যাইবার কালে পথে পড়া রাজারে কুড়াইয়া আইনা যে বিছানায় শোয়ানো হইছিল; সেই বিছানা তিনি আর ছাড়তে পারেন নাই। থাইকা থাইকা কানছেন আর এরে তারে জিগাইছেন- সুমন্ত্র ফিরছেনি?
দশরথ অস্থির। ভরত অযোধ্যার বাইরে থাকতেই রামের অভিষেক করে ফেলতে হবে। রামরে ডাইকা সেই সংবাদও তিনি জানাইয়া দিছেন। সচিবগো আয়োজন বুঝাইয়া দিয়া এইটাও কইয়া দিছেন যেন কোনোভাবেই ভরতের নানাবাড়ি আর পোলাপানগো শ্বশুরবাড়ি এই সংবাদ না যায়...
রামবিহীন অযোধ্যায় থাকনে বুকের পাটা নাই লক্ষ্মণের; পিটাইয়া তক্তা বানাইয়া ফালাইব ভরত। তাই সেও বিশ্বামিত্রের লগে রামের পিছু লয়। আর অবধারিতভাবেই রাজপুত্রগো পিছে যায় তাগো দেহরক্ষক আর রাজকীয় সেনার সশস্ত্র একটা দল...
যথেষ্ট পরিমাণ পোলা-শালা-ভাই-ভাতিজা-শ্বশুর-সম্বন্ধি না থাকলে রাজাগো পক্ষে বড়ো রাজা হওয়া তো দূরের কথা নিজের রাজ্যে নেংটি সামলাইয়া টিকা থাকাই কঠিন। রাজা দশরথ এক বাপের এক পোলা। মা ইন্দুমতি যেমন না দিছেন আর কোনো সন্তানের জন্ম তেমনি বাপ অজ না করছেন আর কোনো বিবাহ। রাজত্বের লাইগা দরকারি আত্মীয়-স্বজনের অভাব পুরনের লাইগা তাই অজ-ইন্দুমতীর পোলা দশরথ সাড়ে তিনশোখান বিবাহ কইরা বহুত শালা-সম্বন্ধি-শ্বশুর সংগ্রহ কর