বাংলাদেশে স্বাধীনতার পরপর প্রতিষ্ঠানের নামকরণে সদ্যস্বাধীন গর্বিত মানুষের উদ্যোগের ছাপটা দেখা গিয়েছিলো। জাতীয় বিমান পরিষেবার নাম "বিমান বাংলাদেশ", বেতার পরিষেবার নাম "বাংলাদেশ বেতার", ...। এ ধারা খুব বেশিদিন থাকেনি। বাংলাদেশের শিক্ষিত মানুষ প্রাণপণে বাকিদের জানাতে চান যে তারা ইংরেজিতে দক্ষ, প্রশাসনিক স্তরে এটা আরেক দাগ চড়ে। তারপরও হঠাৎ-পাহাড়ি-পথে-মোড়-ঘুরে-দেখা-পাওয়া ঝর্ণার মতো বাংলা নাম মেলে। আন্তনগর ট্রেনগুলোর নাম যেমন, পাহাড়িকা, জয়ন্তিকা, পারাবত, তূর্ণা নিশীথা...। কোন আমলা সহকর্মীদের ভ্রুকুঞ্চন সয়ে এ নামগুলো রেখেছেন, জানি না, ধন্যবাদ জানাতে চাই তাকে। কিন্তু নিরীহ ট্রেন পর্যন্তই হয়তো আমাদের সামষ্টিক দৌড়। যেখানেই একটু ভারি যন্ত্রপাতি থাকে, কিংবা উর্দি থাকে, সেখানে কেন যেন আমরা হন্যে হয়ে ইংরেজি খুঁজি। আমাদের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি কিংবা বিশেষায়িত জনপাল বাহিনী র্যাব, সংক্ষিপ্ত সুন্দর কোনো বাংলা খোঁজার প্রয়োজনই সংশ্লিষ্ট হর্তাকর্তারা কেউ বোধ করেননি। সুদূরবিগত ইংরেজ সাম্রাজ্য এখানে তার পাখনাটা আলগোছে মেলে রেখেছে। বাঙালি হয়তো এখনও বাংলানামধারী কোনো সত্তার চোখরাঙানি সইতে রাজি না; ইংরেজিতে ধমক-লাথি-গুলি খেতে তার খুব একটা আপত্তি নেই।
এমন ঘোর ইঙ্গরৈতিক (anglonormative) আবহাওয়ায় সন্তর্পণে একটি নতুন বিশেষায়িত পরিষেবার আবদার জানাতে চাই।