আবারো বুয়েটে পরীক্ষা পেছানো দেখে অনেক বছর আগের একটা ঘটনা মনে পরল। একটা কোচিং এর মালিককে আমি দেখেছিলাম বুয়েটের ছাত্রনেতাদের প্রভাবিত করে পরীক্ষা পেছানোর আন্দোলন শুরু করাতে। এই প্রভাবিত করার আড়ালে টাকা-পয়সারও লেনদেন হয়েছিল কিনা সেটা অবশ্য আমি জানি না।
এককালে এসএসসি, এইচএসসি দিয়েছিলাম। গোল্ডেন কোনটাতেই পাইনি, দুক্ষেত্রেই দুটো করে মিস গিয়েছিলো। ইন্টারে আবার ইংরেজিতে এ-প্লাস তো অনেকদূর, এ মাইনাস পেয়েছিলাম। এখনকার কথা ভাবলে গা শিউরে ওঠে! পরে কিন্তু জিআরই ভার্বাল আর আইএলটিএসে খারাপ করিনি (আর আমার এ-প্লাস পাওয়া বন্ধুগণ কি করেছে, সে নাহয় নাই বললাম)
কোনমতে বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পেরেছিলাম, ১৮ দরকার ছিল, পরীক্ষা দিতে বসতে, আমার ছিলো সাড়ে আঠারো। আজকাল ভাবলেই মনে হয়, বিরাট বাঁচা বেচে গেছি! এখন যে পরিমাণ এ-প্লাসের ছড়াছড়ি, তাও আবার গোল্ডেন!
আমার সময়ের গোল্ডেন-ওয়ালারা কোথায়? আমি বলতে পারি, ৫০% বুয়েট-মেডিকেলে পড়ে, খেয়ে-পরে ভালই আছে। আর বাকি ৫০%? আমার কোন ধারণা নেই, তারা কই গেছে কে জানে। সেই ১০-১২ বছর আগের সেই নাক-উঁচু গোল্ডেন এ-প্লাসরাই যদি হারিয়ে যেতে পারে, তাহলে আজকের কাঁচকি মাছের ঝাঁকে ঝাঁকে মত এ-প্লাসেরা কই যাবে?
[justify] ঘটনা ১
চোখেমুখে উত্তেজনা চেপে রাখার নিস্ফল চেষ্টা করে, বড় ভাই আমাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, “ঐ যে, আরেকটা মেয়ে আছে না? ওর নাম যেন কী? আসলে পড়ে কোথায়?”
আমরা যে ওনার উত্তেজনা বুঝতে পারছি, সেটা ওনাকে বুঝতে না দিয়ে আমরা কথাবার্তা চালাচ্ছিলাম, “কোন মেয়েটা?”
বুয়েটের আন্দোলন হোক সকল শিক্ষার্থীদের জন্য অনুকরণীয়
বুয়েটে পড়ার স্বপ্ন টা মাথাচাড়া দিয়েছিল খুব সম্ভবত ক্লাস নাইনে থাকতে , না ইঞ্জিনিয়ার হবার বিশেষ কোন ইচ্ছা ছিল না, তবে বুয়েটিয়ান হবার ইচ্ছা ষোল আনাই ছিল তখন থেকে । কলেজ লাইফের কথা মনে আছে বুয়েট তখন আমাদের কাছে একটা স্বপ্নের জায়গা , আশেপাশে যাকেই দেখি সেই বুয়েটে ভর্তি হতে চায় । ওমা!
ক্লাসের জন্য ঘুম থেকে উঠার কথা চিন্তা করলেই মনের ভিতর একটা অনুভূতিই কাজ করে আর সেটা হল উফফফফ! কি যন্ত্রণাটাই না দিয়েছে পুরা ছাত্রজীবন জুড়ে। আর এই কষ্টটা প্রকটাকার ধারণ করে বুয়েটে আসার পরেই। প্রতিদিন ক্লাসে যাওয়ার জন্য একবার করে সুইসাইড করা-এটাই হচ্ছে মূলনীতি। শুনেছি ঘুম আর মৃত্যুর মাঝে নাকি পার্থক্য অনেক কম। নিজের মৃত্যু থেকে নিজেই নিজেকে জাগিয়ে তুলে ক্লাসে যাওয়া- এতো আর যা তা ব্যাপার নয়। নাকি?
বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছাত্রলীগ। বুয়েট, কুয়েট হয়ে সর্বশেষ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস উত্তপ্ত হয়েছে তাদের ধ্বংসলীলার আগুনে। বিগত রাজনৈতিক সরকারের আমলে শিবিরের রগকাটা রাজনীতি আর ছাত্রদলের নৃশংসতাকে ছাপিয়ে চারদিকে এখন কেবলই ছাত্রলীগের বর্বরতার সাতকাহন। কিন্তু কেন?
গত ১ জানুয়ারি ফেইসবুকে বুয়েটের আপডেট পাচ্ছিলাম বিভিন্ন বন্ধুর স্ট্যাটাস, ব্লগ ও ফেইসবুক পেইজের মাধ্যমে। দেখলাম, সবাইকে বুয়েটে যেতে বলা হয়েছে বিকাল চারটা থেকে পাঁচটার মধ্যে। যাবো কিনা যখন ভাবছিলাম, তখনই ফেইসবুকে ইশানের এক্সরে রিপোর্টের ছবি দেখলাম। এটা দেখে আর থাকতে পারি নাই। ছুটে গেলাম বুয়েটে। ’০৬ ব্যাচের অনেকেই তখন হলে গেছে সারা রাত ক্লান্তির পর হয়তো একটু জিরিয়ে নেবার আশায়। সন্ধ্যার পর থেকে আবারো যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে কিনা! যাই হোক, সন্ধ্যার দিকে আমাদের ’০৪ ব্যাচের বেশ কিছু বন্ধু আসলো, অন্যান্য ব্যাচের স্টুডেন্টরাও আসতে শুরু করলো একে একে। আমরা ’০৬ এর ভাইদের বললাম যে আমরা তাদের সাথে আছি। তারা আমাদের বলল তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে। তখন তাদের যে কথাগুলো বলেছিলাম, সেগুলোই আজ এখানে লিখে দিচ্ছি।
শুরুতেই বলে রাখি এই পোস্টটি একেবারেই খটমটে কাজেই যারা পড়বেন সম্পূর্ণ দায়িত্বে পড়বেন এবং যারা শেয়ার করবেন তারাও অবশ্যই নিজ দায়িত্ব শেয়ার করবেন ।