বাবাকে মনে হয় বাঁচানো যাবে না। সফেদ দাড়ির প্রৌঢ় ডাক্তার যখন বাবার পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করছিলেন, আমার তেমন কোনো অনুভূতি হচ্ছিল না। ভেতরে কেমন একটা শূন্যতা দানা বাঁধছিল শুধু। মনে হচ্ছিল নীরবতার একটা চাদর যেন চারপাশ দিয়ে ঘিরে ধরছে। মা পাশেই ছিলেন। যতটা ভেঙে পড়বেন ভেবেছিলাম, আমাকে অবাক করে দিয়ে খুব শক্তভাবেই গ্রহণ করলেন তিনি ব্যাপারটা। "তুমি কথা বলো, আমি তোমার বাবার কাছে গিয়ে একটু বসি," মা ধীর পায়ে কেবিনের দিকে চলে গেলেন। তার গমনপথের দিকে আমি ফাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম কিছুক্ষণ। ওদিকে ডাক্তার আমাকে রোগের গতিপ্রকৃতি, পরবর্তী করণীয়, কার্যত তেমন কিছুই যে আর করার নেই, সেসব আরও ভেঙে বলতে থাকলেন। চুপচাপ কেবল শুনলাম আমি। এরপর যখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন আমার কোনো প্রশ্ন আছে কি না, আমি তখনও কিছু বলতে পারলাম না। মাথা নাড়লাম শুধু। তিনি আমার বাহুতে আলতো চাপ দিয়ে সাহস রাখতে বললেন, পরিবারের পাশে দাঁড়াতে বললেন। সঙ্গে এটাও জানালেন যেকোনো দরকারে তাকে যেন নির্দ্বিধায় জানাই। তার দিকে তাকিয়ে ছোট্ট করে শুকনো হাসি হেসে আমি সরে এলাম ওখান থেকে।