তারা দুই বন্ধু।
দুইজনেরই জীবনে অনেক কিছু করার শখ ছিলো, শেষমেশ সেসব শখের কিছুই করতে না পেরে তারা ছকে বাঁধা জীবনে অভ্যস্ত হয়ার চেষ্টা করে। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত অফিস করে, বাসায় ফেরে তারপর ঘুমায়। আবার পরের দিন যায় অফিসে। তাই প্রতি সপ্তাহ শেষে দুই বন্ধু এই নিরামিষ জীবনের হতাশা দূর করতে বার-এ যায় চিবিয়ে একদম ছিবড়ে করে ফেলা জীবনটায় সাময়িক উত্তেজনা আনতে।
ঘরের দেয়াল চারটাকে মাঝে মাঝেই বড় অদ্ভুত লাগে। মনে হয় নিরেট শক্ত দেয়াল চেপে বসেছে চারপাশ ঘিরে। কোনও দরজা নেই, জানালা নেই। অথচ, কী অদ্ভুত, বাইরের সব শব্দ আমি ঠিকই শুনতে পাই। শুধু আমিই বের হতে পারিনা।
ঘরময় অগোছালো জিনিশপত্রের ভিড়ে হঠাৎ চোখ আটকে যায় এক খোলা ডায়রির মলাটে। হাতে নিয়ে পাতা উল্টোতে শুরু করি। কয়েক পাতা পড়ার পর দেখি আমার জানালা সেই পাতা গুলোয়। এই জানালার বাইরে নীল আকাশ, না ...
বাসা থেকে খেলার মাঠটা বেশি দূরে না। শুধু মাঝে কিছু ঘিঞ্জি গলি পেরুতে হয়। সন্ধ্যা হলেই গলির মুখে কুপি জ্বালিয়ে পসরা সাজিয়ে বসে নানা কিসিমের দোকানদার। গাড়ি ঢুকবেনা, তাই রিকশাই ভরসা এই গলিতে। প্রতি সন্ধ্যায় রিকশার নিচে হারিকেন জ্বালিয়ে টুংটাং শব্দ তোলে কোনো এক বাড়ি থেকে ভেসে আসা বাচ্চার কান্নার সাথে পাল্লা দিয়ে।
গলির মোড়ে গত কদিন ধরে নষ্ট হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা জীর্ণ ল্যাম্প পোস্ট আ ...
এক দেশে ছিলো এক রাজা... মস্ত সে রাজা। একদিন তিনি পাইক বরকন্দাজ নিয়ে গেলেন শিকারে। কচি কচি হরিণ মেরে মেরে আহ্লাদে খেতে খেতে দেখেন চারপাশে অনেক বুনো ফুল, দারুণ সুন্দর কিছু ফুল, রাজবাগানেও নেই এমন সুন্দর ফুল। কিন্তু ফুলগুলোর দোষ একটাই, বড্ড ভুলভাবে বেড়ে উঠেছে ওগুলো। পাতাগুলো কেউ ছাঁটে না, গোড়ায় গলদের মতো বিস্তর ঘাস... বুনোফুল যে! তাই দেখে রাজার মন তা তা থৈ থৈ মম চিত্ত।
রাজা বললেন এই বা ...
খুদা তা'য়ালার অসীম করুণা যে এই দ্যাশে জন্মাইছি। নাইলে এতো বিনুদন আর কই পাইতাম? যেদিকেই তাকাই খালি বস্তা ভর্তি বিনুদন আর বিনুদন। মাইনষে মুখ খিচ্চা, চক্ষু গুল গুল কইরা, হাতে সুঁই, বাঁশ, লাডি লয়া সারাক্ষণ কি জানি খুঁজে! আরেব্বাই ঘটনা কি? বুজেন নাই ... হে হে হে ... আমি কই হুনেন - এইসব দিয়া আরেকজনরে পোঙ্গাইবো। যে যেমনে পারতাছে আরেকজনরে কেইন্নাইতাছে, পিডাইতাছে, লৌড়াইতাছে, হুতাইতাছে ... কুনু থামা-থামি নাই। আর আমরা আশে-পাশে থাইকা এইসব কিচ্ছা দেইখা বিয়াপক বিনুদন লাভ করতাছি।
কলে টিপ দিলে আসে না রে পানি
ওপরে ঘোরে না ফ্যান
তবু তোরা শুধু বিচারের ত্যানা
প্যাঁচায়ে চলিছো ক্যান?
কৃষকের মাঠে পচে গোল আলু
দেশে নাই হিমাগার
ইন্ডাস্ট্রিতে গ্যাস নাই, নাই
স্টোরে ইউরিয়া সার।
পদ্মায় নাই পানি, আছে বালু,
সুরমায় নাই জল
দেশের এমন হালত, বিচার
করে লাভটা কী, বল?
ছিনতাই খুন চুরি রাহাজানি
জনতা হারায় দিশে
এসবের কোনো সুরাহা না করে
বিচারে সুবিধা কীসে?
বিশ্ব ব্যাপিয়া পচে জল...
কফির মগে ঠোট ছুঁইয়েছি, তোমার কথা মনে পড়লো
সকাল সকাল
মনে পড়লো মানে ভাবতে শুরু করলাম।
তুমি যখন আমার কাছে ছিলে, ঘাসের গায়ে শিশিরের মতো
কাছে, তবু না থাকার দূরত্বে
তুমি একদিন বলেছিলে, তোমার চোখে আমি সকালের রোদ।
আমি তাই শিশির বিন্দু হয়ে শুয়ে থাকি ঘাসের উপর,
চোখে আলসেমি নিয়ে তোমার কথা ভাবি
টলটল টলমল!
‘বললাম তো যাবো না, তবু এত গুঁতানোর কী হল?’ বয়সভারে ন্যুব্জ বিছরুখের গরম জবাব। বিছনাজ তাই বলে ছেড়ে দেওয়ার পাত্রী না। এই লেজভোঁতা সঙ্গীটার আস্ফালন দেখছে বহু বছর ধরে। বছরে কিছুদিন থাকে এমন। এই দিনগুলোয় বুড়োকে একা ছেড়ে দেওয়া যায় না। আকাজ করে বসে কিছু না কিছু একটা।
গেলবার এই দিনে রাগের মাথায় জামার বুকের কাছটা খেয়ে ফেলেছিল বিছরুখ। পাশের বাড়ির বিচ্ছুকে বিশেষ ভাবে খুশি করে সে-কেলেংকা...
আমার দিনকাল মনে হয় ভালোই যাচ্ছে। প্রতিদিনই কারো না কারো সাথে আলাপ পরিচয় হচ্ছে। এই যেমন গত পরশু পরিচয় হলো এক রিসার্চারের সাথে। সংখ্যা, উপাত্ত নিয়ে তার কাজ-কারবার। পরিচয়ে সংখ্যা নিয়ে বিরাট একখানা লেকচার দিলো।
সংখ্যা আমি ভয় পাই। গণিত কোনোদিনই আমার মাথায় খেলেনি। বাংলায় লেটারমার্ক পেয়েছিলাম মাধ্যমিকে। আর অংকে কানের কাছ দিয়ে পাশ। তো যাই হোক, আমার পরীক্ষায় পাশ ফেলে কারো কিচ্ছু যায়...