শুরুটা হয়েছিল তখন, যখন রতনের নিজের সাথে ঘটনাটা ঘটল।
ভূমিকম্প ও ঈশ্বর
ভূমিকম্পের সাথে ঈশ্বরের কোন সম্পর্ক নেই, পৃথিবীর ভেতরে যেই ফল্ট লাইন গুলা আছে তার সম্পর্ক আছে। এটা আমার বিশ্বাস না, সামান্য লেখাপড়া করে প্রাপ্ত জ্ঞান। আপনি বিশ্বাসী হলে সেই জ্ঞানের সাথে ঈশ্বরকেও যোগ করতে পারেন, সমস্যার কিছু নেই তাতে। কিন্তু জ্ঞানটুকু বাদ দিয়ে শুধু ঈশ্বরকে যোগ করলেই সমস্যা। 'মানুষের পাপ বেড়ে গেলে ভূমিকম্প হয়' এই কথা সম্পূর্ণ যুক্তিহীন, প্রমাণ বিহীন। তবে বিশ্বাসহীন নয়, বিশ্বাস করতেই পারেন। বিশ্বাস করার জন্য কোন যুক্তি প্রমাণের প্রয়োজন নেই। পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের তালিকায় যেমন নেপালের মতো কারো সাতে পাঁচে না থাকা নিরীহ মানুষেরা আছে, ধর্মের খুব একটা ধার না ধারা জাপানীরাও আছে। তেমনি মডারেট তুর্কীরা আছে, ধর্মপ্রাণ ইরানী এবং ইন্দোনেশিয়ানরাও আছে। যদি পাপের কারণে ভূমিকম্প হতো তবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের তালিকার এক নম্বরে চিলি থাকার কথা ছিলোনা। অনেক ভেবে চিন্তেও ফুটবল পাগল চিলিকে ঠিক পৃথিবীর সবচেয়ে পাপিষ্ঠ জাতি হিসেবে মেনে নেয়া যায়না। ইন্দোনেশিয়াকেও না। তালিকায় এর পরে থাকে উত্তর আমেরিকা, জাপান বা রাশিয়া। এদেরকে না হয় পাপিষ্ঠ হিসেবে ধরা যায়। কিন্তু তার পরেই আছে আমাদের বাংলাদেশ! সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পই হোক বা সবচেয়ে ক্ষয়ক্ষতি করা ভূমিকম্পই হোক তালিকাটা পুরোই র্যান্ডম। তাই পাপের সাথে বা ঈশ্বরের সাথে এর কোন সম্পর্ক আছে বলে সহজ যুক্তি বা প্রমাণে মনে হয় না ।
- দেখা হয়েছে ছেলেটার সাথে?
- না। ওয়েদার দেখছো না? রেনকোটটা বাইকে ছিল জন্য ফিরতে পারলাম। ফোন কোরেছিল দুপুর নাগাদ। কাল আসতে বলেছে। বেলা থাকতে থাকতে।
- ইস, আরো একদিন লেট। ও, শিলিগুড়িতে শুনেছো অবস্থা? লীনা হোয়াটস অ্যাপে কী লিখেছে জানো?
- কে লীনা?
- আরে, সৌগতদার বৌ, সেন্ট জর্জ পাবলিক স্কুলে পড়ায় না? আরে আমাদের বিয়ের পরে পরেই বিয়ে হল, মনে নেই?
- ও হ্যাঁ।
ঢাকায় বসে ছোট ভাই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে এখন নাকি ভূমিকম্পের দোলাতে আর ভয় লাগেনা, গত কয়েকদিন ধরে এত বেশি দোলা খাচ্ছে ঢাকা শহর ভয় যেন কেটে গেছে। তার এই স্ট্যাটাসে কোন লাইক দিতে বা কমেন্ট করতে পারিনি। খুবই ভয় লাগে যদি ভাবি ঢাকা শহরে ভূমিকম্পের কথা। আমার ধারনা যে কোন মাঝারি মানের ভূমিকম্পের জন্য ঢাকার চেয়ে অন্য কোন ঝুঁকিপূর্ন শহর পৃথিবীর অন্য একটি নেই। এখন সেই ঢাকাই হচ্ছে অন্যতম একটি ভূমিকম্পপ্রবণ
১
"বাবু! বাবু! ওঠো! ভূমিকম্প, বাবু! ওঠো!"
হ্যাঁচকা টানে ঘুম ভেঙে যায়। ঘুটঘুটে অন্ধকার। সে কোথায়, কী করছে মনে করতে পারে না। ঘুম ছুটতে ছুটতে ভাবতে থাকে। রাতে বাবা খেলা দেখছিলো। বাবু আর মা আগে আগে শুয়ে পড়েছিলো। তারপর?
আগের পর্বগুলো:
চতুর্থ পর্বে আমরা জেনেছি পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় কয়েক মিলিয়ন ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। আমরা জেনেছি যে উৎসস্থলের গভীরতার ভিত্তিতে টেকটোনিক কারণে সৃষ্ট ভূমিকম্পগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। চতুর্থ পর্বে আমরা ভূমিকম্প সনাক্তকরণে ব্যবহৃত সাইজমোগ্রাফ বা ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্রের মূলনীতি এবং ভূকম্পলেখ (সাইজমোগ্রাম) থেকে P ও S তরঙ্গের আগমনী সময়ের পার্থক্য থেকে কীভাবে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের অবস্থান নির্ণয় করা হয় সে সম্পর্কে জেনেছি।
এ পর্বে আমার ভূমিকম্পের মাত্রা নির্ণয়ের পদ্ধতি ও ভূমিকম্প পরিমাপক স্কেলগুলো সম্পর্কে জানবো।
আগের পর্বগুলো:
তৃতীয় পর্বে আমরা জেনেছি ভূমিকম্পের ফলে ভূগর্ভে শিলাস্তরে বিচ্যুতি সৃষ্টির মাধ্যমে শক্তি নিঃসৃত হয়। সেই শক্তি তরঙ্গাকারে প্রবাহিত হওয়ার সময় শিলাস্তরের কণাগুলোকে বিভিন্নভাবে আন্দোলিত করে। শিলাস্তরের আন্দোলনের প্রকৃতি অনুসারে ভূ–অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহিত তরঙ্গগুলোকে P ও S ওয়েভ নামে ডাকা হয়; ভূপৃষ্ঠ দিয়ে প্রবাহিত তরঙ্গ দুটোর নাম Rayleigh ও Love ওয়েভ।
আগের পর্বগুলো:
গত দুই পর্বে আমরা টেকটোনিক প্লেটগুলোর সৃষ্টি প্রক্রিয়া ও সরণের কারণ, সীমানার ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে জেনেছি। আমরা আরও জেনেছি টেকটোনিক প্লেটের সরণের কারণে ভূপৃষ্ঠে ভূমিকম্প হয়। দ্বিতীয় পর্বে আমরা জেনেছি দুটো টেকটোনিক প্লেট যখন পরস্পরের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন তাকে অভিসারী সংঘর্ষ বলে। দুটো প্লেটের মধ্যে অভিসারী সংঘর্ষের ফলে স্থানভেদে সুউচ্চ পর্বতশ্রেণী ও আগ্নেয়গিরির সারি সৃষ্টি হয়। দুটো মহাসাগরীয় প্লেটের অপসারী সীমান্তে ম্যান্টল থেকে ম্যাগমা উঠে এসে শীতল হয়ে জমে সমুদ্র–মধ্য পর্বতশ্রেণী বা মিড–ওশান রিজ তৈরি করে।
[justify][=grey]বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখা বড় কঠিন ব্যাপার। ভূতত্ত্ব বিষয়টি পদার্থ, রসায়ন, জীববিদ্যার মত অতোটা জনপ্রিয় না হওয়ার কারণে ভূতত্ত্বে ব্যবহৃত খটমটে শব্দগুলোর কোন সুন্দর বাংলা প্রতিশব্দ তৈরি হয়নি। যেগুলো আছে সেগুলো এমনই দাঁতভাঙ্গা যে শব্দগুলো বাক্যে ব্যবহার করলে বাক্যের অর্থোদ্ধার করা কঠিন হয়ে পড়ে। সঙ্গত কারণে এ সিরিজটিতে প্রচুর বিদেশি শব্দ বেড়ার ফাঁক গলে লেখায় ঢুকে পড়ছে। তাই পাঠক
বিজ্ঞানের বিষয় নিয়ে ব্লগ লেখার হ্যাপা অনেক। সমীকরণ এড়িয়ে জটিল কারিগরি বিষয় সহজবোধ্য করে লেখা খুব কঠিন কাজ। অনেক সময় লেখার আকার সীমিত রাখতে গিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে আলোচনার বাইরে রাখতে হয়। ফলে কোনো জটিল বিষয়কে অতিসরলীকরণ করে বোঝাতে গিয়ে ব্যর্থ হলে বরং বিভ্রান্তি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।