তোমার হাসির রুপালি বিদ্যুৎ,
যেন কোনো বৃক্ষকে তড়িৎ-স্পৃষ্ট করে আধাআধি ভাগ করে দেয়,
যেন এক রিনরিনে সূক্ষ্ম তরবারি, আকাশ থেকে নেমে
ভেদ করে বৃক্ষের আমূল হৃদয়।
এ হাসি শুধু জন্মাতে পারে বনভূমি,
আর তুষারঝরা পাহাড়ের দারুণ উচ্চতায়, বাতাসের
অনাবিল আনন্দ যেখানে পত্পৎ ওড়ে। এ হাসি
তুমি গান গাও, যেন আকাশে সূর্য ওঠে
যেন সবুজ জিভে রিনরিনে সুর ভাঁজে সরল পাইন
যেন শীতের বুক চেরে পাখির সুরেলা শিস
তোমার কন্ঠস্বর মুহূর্ত থেকে গমের তুষ ছাড়িয়ে নেয়।
সাগর তার গভীর শস্যভাণ্ডারে জমিয়ে তোলে ঘন্টাধ্বনি,
পায়ের খসখস, শেকলের ঢং আর গুঙিয়ে ওঠা কান্না,
জমিয়ে তোলে সুরহীন ধাতুর আওয়াজ, ভবঘুরে
তোমার আলোময় চুল কী ধীর অনুভব করি,
এক একটির পরখ করি নিবিড় সুন্দরতা
অন্য প্রেমিক অন্য চোখে দেখে নেয় ভালবাসার মুখ,
তোমার চুলের বিন্যাসে আমি পাই আমার মুগ্ধতা।
ইতালিতে তোমার নাম ওরা রেখেছে মেডুসা,
নাগিনীর মত আউলানো চূর্ণকুন্তল
আমি বলি তরঙ্গময়ী; আমার হৃদয়
আমার মৃত্যুর পর, হাত রেখো আমার চোখে,
প্রিয় আঙুলের আভা আর গমের সতেজ ঘ্রাণ
বয়ে যাক আমার ওপর। আমার ভাগ্যরেখা
পাল্টে দেওয়া তোমার কোমলতা ঘিরুক আমায়।
প্রেম, আমি তামাম পৃথিবী ঘুরে, ছুঁয়ে এসে দুঃখের স্বাদ,
তোমার কণ্ঠস্বর, তোমার গীটারে স্পন্দিত রিনরিনে হাত,
হেমন্তকে চুমু দেওয়া আগুনের আঁচ, আর আকাশে ফিরে আসা
রাতের কাছে সমর্পিত হই।
আমি সবার জন্য চেয়েছি রুটি, স্বাধীন অধিকার;
যে শ্রমিকের কোনো আগামী নেই, তার জন্য বেঁচে থাকার মাটি।
কেউ যেন আশা না করে -- আমার রক্ত, আমার বেদনার গান বোবা হয়ে যাবে,
এমন মূহূর্ত আসবে একদিন, যেদিন বৃক্ষের, নক্ষত্রের
নীরবতা বুঝবে মানুষ, পাবে স্বচ্ছতার নিখাদ আওয়াজ,
আর বেহালার রিনরিনে স্বর ভরে উঠবে
অফুরান জ্যোত্স্নার সৌরভে!
হয়ত সেদিন এক অখণ্ড রুটি,
ধারণ করবে তোমার সফেদ ময়ান, তোমার কণ্ঠস্বর
আর হেমন্তের নিখোঁজ ঘোড়াগুলি
তোমার ধ্বনিময়তায় কথা ক'বে।
হয়ত তুমি এমনটাই হুবহু চাওনি কখনো,
তবু, ভালবাসা প্রাচীন রাখালী মধুর মত
ছলকে তুলবে মৃত্পাত্র আমার ।
সেদিন আনন্দ দিদির পোস্টে মন্তব্য করতে গিয়ে মনে হলো, ঠিক আছে, সচলায়তনে পোস্ট দিয়েই রাখি, কেউ পড়লে পড়বে, না পড়লেও ক্ষতি নাই।
আপাতত আমি ধুমায়ে মার্ডার-মিস্ট্রি-খুন-জখম পড়ছি। নেরুদার মতো বিখ্যাত কারও, প্রেমের মতো জটিল বিষয়ের কবিতা আনাড়ি হাতে অনুবাদ করার ফলে সচলেরা আমাকে প্যাদানি দেয়ার আগেই আশাকরি কয়েকদিনের মাঝেই ফর্মে চলে আসবো একটা খুন-জখম অনুবাদ নিয়ে!
আজ নতুন এক সূর্যোদয়, গতদিনের লেবাস ঝরে গেছে সব
আলোময় আঙুল আর ঘুম জড়ানো চোখের সাথে সাথে।
আগামী আসবে তার সবুজ পা ফেলে
আর ভোরের জলস্রোত কেউ রুখতে পারবে না
নদীর মত তোমার হাতের গতিময়তা
রোধ করতে পারে কি কেউ, প্রিয়তমা?
তুমি মুহূর্ত-স্পন্দন; আমৃত্তিকালম্বিত আলো
আর ঘন হওয়া আঁধারের মধ্যবর্তিনী
তোমার ওপর অসীম ডানা ছড়িয়ে দিয়ে আকাশ
তোমায় দুই হাতে সযত্নে তুলে সঁপেছে আমায়
দুই সুখী প্রেমিক মিলে তৈরী হয় অখন্ড রুটি
ঘাসের ওপর এক ফোঁটা টলমলে চাঁদের শিশির।
হেঁটে যেতে দুই ছায়া ঢেউ খেয়ে মেশে। বিছানায়
তারা হয়ত এক চিলতে সূর্য ফেলে যায়।
সত্য থেকে ছেনে আনে তারা একটি দিবস;
তাকে বাঁধে দড়ি নয়, সৌরভের টানে; শান্তির পাঁপড়ি ধরে রেখে
তাদের শব্দ কাঁচের মত হয় না চুরমার
তাদের সুখ, উঁচুতে বাঁধা কোনো স্বচ্ছ মিনার।
বাতাস আর সুগন্ধী মদ বন্ধু হয়ে তাদের সাথে যেতে চায়,
তোমার চোখে যদি চাঁদের রঙ থাকত না লেগে,
কাদা-মাখা দিন, শ্রমের ঝলক, লালচে আগুন,
এই সব আঁচ, আভা থাকত না যদি, যদি এতটা জড়ানো থেকেও
না হতে তুমি বাতাসের মত ফুরফুরে, শিল্পময়,
যদি না হতে হলুদাভ বাদামী পাথর, হরিত লহমার মতন
যে লহমায় হেমন্ত আঙুরের লতা বেয়ে ওঠে
না হতে যদি সুগন্ধী চাঁদের আঙুলে ময়ান দেওয়া সেই অখন্ড রুটি
তোমার সাদা সুরভিত গুঁড়ো না ছড়াতে আকাশের গায়