জীবনের কাছে আমাদের প্রত্যাশা কি? ওয়েল, এটাই মনে হয় জগতের সবচেয়ে বেশিবার জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন। উত্তর পাওয়া সহজ নয়, যারা পেয়ে যান তাঁরা মহামানব। নিজেকে দিয়ে বলতে পারি, মানুষের চাওয়ার শেষ নেই। খুব ছোটবেলায় ভাবতাম, বড় হয়ে খালি চা খাব। আরেকটু বড় হলে ভাবতাম, কেউ যদি ভুল করে একব্যাগ টাকা ফেলে যেত আর আমি কুড়িয়ে পেতাম, তাহলে অনেক সুতো কিনে মাঞ্জা দিতাম, বারবার ঘুড়ি কেটে গেলেও সুতোয় টান পড়ত না।
আমার বন্ধুভাগ্য নিয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত। যাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলে দাবী করি, তারা যে শুধু খুব চমৎকার মানুষ তাই নয়, অসম্ভব নিঃস্বার্থ এবং উদারমনা, আমার সুখ দুঃখের সঙ্গী । আমার শত বিপদেও তারা বিন্দুমাত্র দূরে সরে যায় নি, প্রবল সুখেও তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি নি।
বাংলাদেশ ছেড়ে বাইরে থাকা যুগপৎ সুখের এবং বেদনার ব্যাপার। সুখ এইজন্য যে, আয় এবং ব্যয় সঙ্গতিপূর্ণ। সুখ এইজন্য, কারণ লোডশেডিং নেই। সুখ এইজন্য, সরকারী অফিসগুলো ঘুষ ছাড়াই কাজ করে দেয়। সুখ এইজন্য, কথায় কথায় স্থানীয় প্রভাবশালী মাস্তানেরা ধমক দিয়ে যায় না। এতসব সুখের ভীড় ছাপিয়ে কেবল দুঃখটাই প্রবল হয়ে ওঠে, নিঃসঙ্গতা। চেনা মানুষগুলো কেউই যে পাশে নেই!
ইংল্যান্ডের উত্তরের গ্রামগুলোতে গবাদি পশু চরে বেড়ানোর জন্য নির্দিষ্ট স্থান থাকত - যা ছিল সবার জন্য উন্মুক্ত - অর্থাৎ কমন প্রপার্টি। নিজের স্বার্থের কথা ভেবে সব মালিকই চাইত আরও বেশী করে গবাদি পশু চারণ করে বেশী লাভের টাকা ঘরে তুলতে, স্বভাবতই নিজেদের জমি ব্যবহার না করে ওই কমন-প্রপার্টিই ব্যবহৃত হত চারণের জন্য। কিন্তু একসময় দেখা দিল বিপর্যয়, ঘাস গজানোর তুলনায় গবাদি পশুর খেয়ে ফেলার হার বেড়ে গেল, ফলে গবাদি পশুর খাওয়ার জায়গা ফুরোলো। এই থট-এক্সারসাইজ থেকেই একটা সুন্দর তত্ত্বের উদ্ভব। ট্র্যাজেডি অব কমনস শেক্সপিয়ারের লেখা আরেকটি উপন্যাস নয়, বরং একটি তত্ত্ব যার প্রভাব বর্তমান পৃথিবীতে হরহামেশাই চোখে পড়ে।
(ডিসক্লেইমারঃ গত পর্বে লিখছিলাম ভিনদেশে আমার প্রতিবেশীদের ধারাবাহিক অত্যাচারের গল্প। অস্বস্তির সাথে জানাচ্ছি সেটা এ পর্বেও চলবে। বিরক্তবোধ করলে লেখাটি এড়িয়ে যেতে পারেন অথবা বিস্তারিত জানতে আগেরটি পড়ে আসতে পারেন)
বেশ ব্যস্ত কিছু সময় পার করলাম গত এক মাসে। এই কয়েকদিনের অভিজ্ঞতা আমার ধারাবাহিক স্মৃতিচারণকে অন্ততঃ এক পর্ব বাড়িয়ে দেবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। সন্দেহ যেখানে সেটা হলো, পাঠক ধৈর্য ধরে আরো পড়বেন কি না। প্রথম দুই পর্বে কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলাম। অপ্রিয় বিষয় নিয়ে কথা বললে তিক্ততাই বাড়ে শুধু, তাই ঠিক করেছি ফাঁকে ফাঁকে অন্য বিষয় জুড়ে দেব, যাতে পাঠক একঘেয়েমিতে না ভোগেন।
সুইজারল্যান্ড বেশ ছোট দেশ, আয়তন মাত্র ১৫,৯৪০ বর্গমাইল। জনসংখ্যা এখনো কোটি ছাড়ায়নি (৭৯ লক্ষ, উইকিপিডিয়া)। বড়লোকের দেশ বলে আর জমির স্বল্পতার কারণে জায়গার দাম আকাশচুম্বী। তার ওপর সুইস সরকার জমি হাতবদলের ব্যাপারে অ্যালার্জিক, তারা জমির বিক্রয়মুল্যের লাভের অংশের উপরে উচ্চহারে করারোপ করে রেখেছে, ফলে সাধারন জনগন প্রপার্টি কেনাবেচায় খুব একটা উৎসাহী নয়। এত টাকা দিয়ে জমি/বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট না কি
জায়গাটা প্রথম থেকেই একদম পছন্দ হয়নি আমার। সারাজীবন শুনে এসেছি, সুইজারল্যান্ড হচ্ছে পৃথিবীর বুকে স্বর্গের নমুনাবিশেষ। আশা ছিল, না জানি কি দেখব। মোটামুটি হতাশই হলাম। দীর্ঘ বিমানযাত্রা অবশ্য একটা কারন হতে পারে। জোহানেসবার্গ থেকে জুরিখ পর্যন্ত সাড়ে এগারো ঘন্টা, তারপর একঘন্টার বিরতিতে জেনেভার দিকে উলটোপথে আরেকটা ফ্লাইট, জেনেভা থেকে পৌণে একঘন্টার ট্রেন জার্নি, সবমিলিয়ে ক্লান্তির চূড়ান্ত সীমায় প
ধর্মতলার ব্যস্ত ফুটপাত দিয়ে বছর পনের আগে জনতার স্রোত ঠেলে মা হাঁটছিল আমায় একহাতে ধরে রেখে। অন্য হাতে ঝুলছিল পাটের একটা ব্যাগ, ওতে“ ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়” থেকে এক আত্মীয়ার বিয়ের জন্য সদ্য কেনা শাড়ী। ধর্মতলার ধর্ম বজায় রেখে লোকজন হন্যে হয়ে ছুটছে; কারো প্রতি কারো ভ্রুক্ষেপ নেই। এমন সময় হঠাৎ কোথা থেকে যেন ভেসে এল ক্ল্যারিনেটের অমোঘ একটা সুর। ধর্মতলার সবগুলো কর্কশ শব্দ তাতে ম্লান হয়ে গেল, কোলকাতার দুপুরক
(উপরের ছবি: প্যারিসের বাইরে উমাইয়াদ সেনাবাহিনীর অধিনায়কগণ)
[=14](এটি আমার 'দ্য রাইজ এ্যান্ড ফল অফ দ্য গ্রেট পাওয়ারস' সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব (আগের পর্বে আমি নাম থেকে 'দ্য' বাদ দিয়েছি, সরি)। নামের সাইজ বেঢপ হওয়ায় টাইটেল থেকে এ অংশটি বাদ দেয়া হয়েছে। পুরোটা পড়লে এমন হবে: 'দ্য রাইজ এ্যান্ড ফল অফ দ্য গ্রেট পাওয়ারস ২: পশ্চিমা বিশ্বের উল্থান,...