[justify]আমার প্রবাস জীবন মোটামুটি আনন্দময়। আর এই আনন্দময় জীবনের বেশীরভাগই আমার স্ত্রীর অবদান। সে একেবারে খাঁটি বাঙালী বধু, গৃহকর্মে অতি নিপুণা। বিদেশে এসে বেশীরভাগ অবলা বাঙালী নারীরাই বেশ সবলা হয়ে উঠে। আমার স্ত্রীটি এখনও সেরকমটি হয়ে উঠতে পারেনি। ঘরের বাইরে একা বের হওয়া তার সাধ্যের বাইরে। রাস্তা পার হতে গেলে আমার হাত চেপে ধরে পার হয়। আমাদের বাসার পাশের গ্রোসারি শপ। সেখানেও সে একা যাওয়ার সাহস করে উ
আমাদের দেশে আমরা কিভাবে কিভাবে যেন কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্যে বা মনের ব্যাকুলতা প্রকাশ করার জন্যে কিছু নির্দিষ্ট সময় বা মেয়াদকাল ঠিক করে ফেলেছি। সর্বজনবিদিত গ্রহণযোগ্য সময়সীমার আগে পিছে হয়ে মেয়াদত্তীর্ন হয়ে গেলেই আমাদের ভ্রূ কুঁচকে যায় আর মনে মনে ভাবতে থাকি- এই সময়ে এটা একটু কি অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গেল নয় কি?
[justify]
একটু খামখেয়ালী বেপরোয়া স্বভাবটা কবে থেকে গড়ে উঠেছে মনে করতে পারিনা। আসলে সামাজিকীকরণ বা সোশ্যালাইজেশন নামে যে একটা টার্ম আছে, দুখঃজনকভাবে সেটা আমার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবে হয়নি, তাই জানিনা, কি পরোয়া করতে হবে, আর কি হবে না, কোনদিন যা শিখিনি, তা করবো কি করে! সেই আমি আমার মনের একটা ইচ্ছা দীর্ঘদিন ধরে চেপে রেখেছিলাম... খুব ইচ্ছে ছিল ঢাকা শহরের রাস্তায় রাস্তায় সারারাত রিক্সায় করে ঘুরে বেড়াবো। সহপাঠী বন্ধুদের কাছে শুনতাম, সারারাত ফুলার রোডে শুয়ে বসে আড্ডা দিয়েছে... কিংবা রাত্রি তিনটে চারটায় মানিকের চা, ডিম পরোটা ইত্যাদি তো রোজকার রুটিন। খুব হিংসে হত তখন... আমাকে কেন তবে রাত্তির দশটায় হলের গন্ডিতে ঢুকতে হবে, আমিও যাবো তোমাদের সাথে পায়ে হেটে নৈশ কালের অ্যাডভেঞ্চারে... এসব কেবল মুখেই বলা, যাওয়া আর হয়না... যেতে পারিনা। সমাজ কিংবা আমাদের আইনশৃংখলা রক্ষাকারীরা... কেউই ঢাকার রাস্তায় মধ্যরাতে হেঁটে বেড়াবার নিরাপত্তা এবং স্বাধীনতা দিতে পারেনা। তাই বাঁধনের বাৎসরিক সাধারণ সভার জন্যে সারাবছরের রিপোর্ট একত্রিত করে সুভ্যেনির আকারে ছাপাতে প্রেসের ঘরে সারারাত বসে বসে কাজ করা সম্ভব হলেও এইসব শখের অ্যাডভেঞ্চার আমার আর করা হয়ে ওঠেনি। কারণ একটাই বাংলাদেশের সীমারেখায় ঘরের বাইরে মেয়েদের নিরাপত্তার অভাব, রাত হলে তো কথায় নেই! এসব ভাবতে ভালোলাগে না। একদম না।
বিদেশে আসার পর কিছু কিছু দিন আসে যখন কোন কিছুতে মন বসাতে পারি না। চোখের সামনে উজ্জ্বল মনিটরে খুলে রাখা গবেষনা নিবন্ধ মস্তিষ্কে কোন আলোড়ন সৃষ্টি করে না। শরীর জুড়ে একটু পর পর একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি। ফেসবুক খুলে পুরনো ছবিগুলো দেখতে থাকি বারবার। মনের পর্দায় হাজার মাইল দূরের প্রিয় ঢাকা শহর। পহেলা বৈশাখ সেরকমই একটা দিন।
কানে বাজছে- আমি একদিনও না দেখিলাম তারে… বাইরে বৃষ্টি।
যাচ্ছি বাসে, শহরের দিকে ঘুরতে। আমরা গ্রামেই থাকি, কোরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বিশ্ববিদ্যালয় টি গড়ে তোলা হয়েছে নিতান্তই গ্রামে। যদিও এখানকার গ্রাম আর শহরের পার্থক্যে এটুকুই যে, শুধুমাত্র বিল্ডিং এর ঘনত্ব আর উচ্চতা একটু কম আর বেশি। যা হলে স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, ইন্টারনেট ‘স্পীড’, ২৪ ঘন্টার দোকান, বার, পাব কোনো কিছুতেই কোনো পার ...
মুক্ত বিহঙ্গ
৬ষ্ঠ পর্বঃ
[justify] আজ আমার শৈশবের কথা বলতে খুব ইচ্ছে করছে। জন্মের ঘটনা দিয়েই শুরু করি।
ঘটনাগুলো আমার মা এবং প্রয়াত নানী-র কাছ থেকে শোনা। আমার জন্ম বগুড়া জেলার মিশন হাসপাতালে। সময়টা ছিল রাতের শেষে এবং সূর্যোদয়ের আগ-মুহুর্তে। [আমার দেখা অধিকাংশ শিশুর জন্ম হয়েছে রাতে অথবা খুব ভোরে। শিশুরা ঠিক এই সময় কেন পৃথিবীতে আসে -এই কারণটা আজো আমার কাছে বড় অদ্ভুত লাগে!] অস্বা...
মুক্ত বিহঙ্গ
৫ম পর্বঃ
[justify] অবশেষে বরফের শহর এই এডমন্টনে বসন্ত এসেছে। এখন আর যেখানে সেখানে বরফ জমে নেই। চারিদিক শুধু সবুজ আর সবুজ। গাছে-গাছে রঙ-বেরঙের ফুল। যেই মাঠগুলো গত কয়েক মাস বরফে ঢেকে ছিলো, সেখানে এখন সুন্দর নতুন ঘাস। দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়। সারাদিন সুন্দর রোদেলা আবহাওয়া। সেই হাড় কাঁপানো শীত আর নেই।
গত দুই দিন আমার বাসার আশে-পাশে এবং ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে ঘুরে...
মুক্ত বিহঙ্গ
৪র্থ পর্বঃ
[justify] কানাডা সম্পর্কে মনে মনে যেমন ধারণা ছিল, প্রথম দিন ক্লাসে গিয়ে সেই ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীত দেখে বিরাট একটা ধাক্কা খেলাম! ক্লাস ভর্তি চাইনিজ, একজন কানাডিয়ান-ও নেই!! [এখানে আগেই বলে রাখি, আমি কোন জাতি বা দেশ নিয়ে সমালোচনা বা মন্তব্য করছি না; সেই রকম কোন উদ্দেশ্য আমার নেই।] ক্লাসের শতকরা পঁচাত্তর ভাগ চাইনিজ স্টুডেন্ট (যাদের অধিকাংশ মেয়ে)। আর আমরা বা...
[justify]
মুক্ত বিহঙ্গ
৩য় পর্বঃ
আমি প্রকৃতি প্রেমিক মানুষ। ভালো লাগে বৈশাখের তোলপাড় করা কালবৈশাখি ঝড়, শ্রাবণের বৃষ্টি, শরতের আকাশে সাদা মেঘ, হেমন্তের পাকা ধানের মাঠ, শীতের সকালের শিশির, আর ভালো লাগে বসন্তের ফোটা ফুল, সাথে পাখির কলরব। আমি বাংলাদেশে জন্মেছি বলে নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করি। এই কানাডায় জন্মালে বোধহয় প্রকৃ্তির সাথে ভালোভাবে পরিচয়-ই হতোনা কখনো।
বাংলাদে...
[justify]
মুক্ত বিহঙ্গ
[২য় পর্বের শুরুতে কিছু কথাঃ ১ম পর্ব লেখা শুরু করবার আগে ভেবেছিলাম, সিরিজটা হয়তো এগোবে না। কিন্তু ‘সচলায়তন’-এ এই প্রথম ‘গুঁতুগুতির শীর্ষে’ এবং ‘পাঠকের ৭ পছন্দ ৪৮ ঘন্টায়’-এর তালিকায় আমার লেখা দেখে অধিক আনন্দের চোটে বিষম খেলাম! এই আনন্দের ঘোরে আর কিছুই লিখতে পারলাম না বেশ কিছু সময়! ঘোর কাটতে চব্বিশ ঘন্টা সময় লাগলো।
১ম পর্ব লিখবার সময় যতটা নিশ্চিন্ত ছি...