ঋক ছিল একটা আধা আচ্ছন্নতার ভিতরে। কড়া সিডেটিভ দেওয়া হয়েছিল ওকে। তাই এখনও চোখ মেললে চারিদিক কুয়াশাকুয়াশা। একবার মাত্র চোখ মেলে আবার বুজে ফেলেছিল ঋক। এলিয়ে পড়ে থাকতেই ভালো লাগছে ওর।
২।বাগানে এসে আক্ষরিক অর্থে মুগ্ধ হয়ে গেলো নীলা। নদীটা এত সুন্দর! বাগানটাও দারুণ! আহ, তাহলে এত কষ্টের পরে স্বর্গের দেখা মিললো! এখানেই সারাজীবন থাকতে হলে ক্ষতিটা কিসের? বরং অনেক শান্তি, অনেক সুখ!
১।
ট্রেনটা আস্তে আস্তে গতি কমিয়ে আনছে, দরজার কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলো নীলা। কাঁধের ব্যাগটা কাঁধেই ঝোলানো আর পাশেই চাকা লাগানো ট্রাভেল ব্যাগ। এখানে ট্রেন বেশীক্ষণ থামে না, নীলা জেনেছে আসার আগেই। এখন ট্রেনটা থামতেই লাফ দিয়ে নেমে ককিয়ে উঠলো নীলা। পেটের সেই ব্যথাটা। ধুত্তেরি ছাই, মনেও থাকে না।
।এক।
‘কী জুঙ্গা?!’
‘কিয়াজুঙ্গা!’
‘ঠিক জানিস তো? এই নাম? কিজুঙ্গা?
‘আরে কতবার বলি, কিজুঙ্গা না তো, কিয়াজুঙ্গা!’
‘কী আজিব নাম রে বাবা! শুনলেই কেমন আফ্রিকা আফ্রিকা গন্ধ লাগে নাকে!’
‘লাগুক না বাবা! তাতে কি? তুমি দেখ আগে কী করতে পার। জানায়ো কিন্তু।‘
ঋদ্ধ’র চিন্তার আসলেই শেষ নেই। বিশ্বকাপ চলে আসতে আর ক’দিন মাত্র বাকি, অথচ টিকিটের টিকিটি এখনো দেখা যায়নি। খোঁজ-খবর কম নেয়া হয়নি এর মধ্যে, আশা করার মত তেমন কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না।
বোলিঙ ক্লাবের ঘুঁটির মতো বারান্দার রেলিং ঘেঁষে বীয়ারের সারি। শেষ দুটো বীয়ার নামিয়ে রেখে খালি বোতলগুলি তুলতে গেলে সোহাগ বলে,
- থাক ওগুলি সকাল পর্যন্ত। ভালো একটা ডেকোরেশান লাগতাছে।
- হ...এই দুইটা খালি হইলে ছবি তুইলা রাখতে হইবো।
কেইসের শেষ দুই বোতলের ঢাকনা খুলে সোজা চোখের দিকে তাকিয়ে "প্রৌস্ট" (চিয়ার্স!) করলো দুই বন্ধু।
দশটা বাজতে তিন মিনিট বাকি। এতক্ষণ...
মুহির শান্তিময় ঘুমের মধ্যেই পৃথিবী থেকে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের চুলচেরা বিশ্লেষন চলতে থাকে। দেখা গেল যে পৃথিবী থেকে উৎসারিত নানা রঙ ও ঢঙের অনুভূতি গুলোই ওজন স্তরকে ফুটো করে ঝাঝরা করে দিয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিকর হচ্ছে নীরব দীর্ঘশ্বাসগুলো, এমন ভাবে ঘাঁই মেরে যায় যে বিশ্ব চরাচর কেঁপে ওঠে। আর এর প্রবাহ দিনকে দিন বাড়ছে। তবে এগুলো ওজন স্তরকে ফুটো করেই বিল...
- নয়টা সাতাইশ।
মোবাইলের ঘড়ি দেখে মাকসুদ জানালো।
- আমার মনে হয়...
আরেকটা বীয়ার খুলতে খুলতে সোহাগ বলে,
- আমরা আপাতত সময় গোনা বাদ দেই। বীয়ার আছে আর ছয়টা। ওগুলা শেষ হওয়া পর্যন্ত যেই কয় পর্ব বানাইতে পারি বানাই। তারপর বাইরে গিয়ে ড্যোনারফোনার কিনা আনুমনে .... নাইলে ঘরে ডিমডুম দিয়া কিছু এক্টা করা যাইবো।
- ওকিডোকি। তবে আমি ভাবতেছিলাম অন্যকথা। একটা জার্মান গান যেইটা...
আরো একটা বীয়ার খুলে মাকসুদ বেশ মুন্সীয়ানার সাথে গ্লাসে ঢালে। বারে কাজ করতে গেলে প্রথমেই যে কয়েকটা জিনিস শিখতে হয় তার মধ্যে ফেনা সামলে গ্লাসে বীয়ার ঢালা একটি। সোহাগ বিড়ি ধরিয়ে ভক্ করে কিছু ধোঁয়া ছাড়ে। রিং বানাবার আরো একটা ব্যর্থ চেষ্টা। ঘড়িতে বাজে রাত সোয়া নয়টা। আরো এক ঢোঁক বীয়ার আর তারসাথে আরো এক খাবলা ধোঁয়া ছেড়ে সোহাগ বললো,
- প্রথম পর্বটা বানাইতে তো...
- প্রথম পর্বটা কেমনে শুরু করি....
- এইখানে আটকাইলে জীবনেও আর আগে বাড়া হৈবো না। প্যাটভর্তি আইডিয়া লইয়া ভুদাই হইয়া মরতে হৈবো।
- তাইলে এইবার সামনে আসুক প্রথম দৃশ্য....
- টাইটেল সঙটঙ দিবি না?
- পরে দিমু। আগে কয়েকপর্ব হোক।
- ও.কে. পাগলা মুভ! ......
প্রথম পর্ব
(প্রথম দৃশ্য)
প্রথম বলটা লেগস্ট্যাম্পের উপর আসতে আসতে মাঝপথে আউটসুইঙ করে অফস্ট্যাম্পের বেশ খানিকটা বাইরে গিয়...
-ডেইলী সোপ। হুম.....সমস্যা কী জানোস?
- কী?
- সমস্যা হৈলো ডেইলী সোপ বানাইতে গেলে কম্পক্ষে বিশ-পঁচিশটা পর্ব আর আরো চল্লিশটা পর্বের প্ল্যান রেডি রাইখা মাঠে নামা লাগে।
- এইখানে তো আর আমাগো মাঠে নামার কোন ব্যাপার নাই। আমরা এখন নয় তলার বারান্দায়, রেলিঙ পার হৈলে সোজা দোজখ। শুরু করলেই করা হয়।
- উহু...আমি ভাবতাছিলাম অন্য কথা। এই প্লটটা ঠিক কোথা থিকা শুরু হৈয়া কোন দিকে ...