১ ...
ছোটবেলা থেকেই শুনে আসছি ঢাকা শহরে এতো মানুষ, এতো মানুষ। একদিন এই শহরটা বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। হ্যান ত্যান নানা কথা। বেশিদিন লাগলো না কথাটা শতভাগ সত্যি হতে। অন্তত আমার মতে, ঢাকা শহর ধ্বংস হয়ে গেছে। রাস্তা ঘাটে মারাত্মক জ্যাম, বাসায় পানি থাকেনা, শান্তি মতো প্রিমিয়ার লীগের একটা ম্যাচ পুরোটা দেখে শেষ করা যায় না, বিদ্যুতের ছিনিমিনি খেলায়। সপ্তাহান্তে ঢাকা যাই গাজিপুর থেকে। অব...
১ ...
খুব ভালো বই পড়লে কিংবা সিনেমা দেখে ফেললে আমার একটু মন খারাপ লাগে। মনে হয় জীবনে মুগ্ধ হবো, এমন একটা জিনিস বাদ পড়ে গেলো। ঠিক এই কারণে আমি কিছু ভালো ভালো জিনিস জমিয়ে রাখি। শীর্ষেন্দুর অনেক অনেক জটিল বই এখনও পড়ি নাই, সুনীলের "সেই সময়" পড়ি নাই। এগুলো জমে থাক। পরে পড়বো।
শিন্ডলার'স লিস্ট সিনেমা দেখে অনেক অনেকদিন পর বিশাল মুগ্ধ হলাম। সিনেমা দেখে আমি যে অত্যন্ত আবেগঘন হয়েছি সেটা নিজের ...
১.১ ...
তখন ক্লাস নাইনে। হাউসে নতুন সিডি প্লেয়ার এসেছে। জুমা শেষে আমি আর রুমমেট সাজ্জাদ কিছুক্ষণ মোজার বল দিয়ে রুম ক্রিকেটে শাকুরকে উপুর্যুপরি চার ছয় মেরে চলে আসলাম কমন রুমে। সেখানে এক ভাইয়া ক্যাসেট প্লেয়ারের সামনে কাগজ কলম নিয়ে বসে আছেন। জোরে জোরে বাজছে "" [[অনেক কষ্ট কইরাও গানের নামটা মনে করতে পারলাম না, খালি মনে আছে ভিডুওতে ঝন হাব্রাহাম হাত পা ছুড়াছুড়ি করতো]]। হিন্দি গানের লিরিক ...
পরীক্ষা শেষ হবোনা, হবোনা বলেও একদিন ঠিকই শেষ হয়ে গেলো। মাইক্রোওয়েভ ইঞ্জিনিয়ারিং এ "ব্যাম্বো ইজ দি খাড়া খাড়া" খাবার পরও আমার দুঃখের বদলে বেশ সুখ সুখ লাগতে থাকলো। একবার যখন খেয়েছি তখন আর চেষ্টা করে লাভ কী, ভেবে এক ঘন্টার আগেই হল থেকে বের হয়ে, তপুর গানের সেই "ছেলেটাও পরে ফুলহাতা শার্ট" এর ছেলেটার মতো আমার একমাত্র ঝাক্কাস ফুলহাতা শার্টটা পরে উত্তরার বাসে উঠে বসলাম।
প্রতি পরীক্ষার পর...
১.১...
একদম পিচ্চিকাল। এক টাকা দামের "লাল আইস্ক্রীম" কিংবা নায়িকাদের ছবি আঁকা "টিকটিকির ডিমের" জন্য জান কোরবান দেবার সময়। এমন এক সময়ে ছোট চাচা একদিন আমাকে আর এক বছরের বড় কাজিনকে বললেন, আমাদের খেলা দেখতে নিয়ে যাবেন ঢাকা স্টেডিয়ামে। সেটা খুব সম্ভবত তখন পর্যন্ত আমার জীবনে শোনা সবচেয়ে বড় সুখবর। খেলা হবে প্রিমিয়ার লীগে ক্রিকেটে "মোহামেডান" আর "অগ্রণীব্যাংক" এর মধ্যে। সাথে আরও বললেন আমর...
এ জার্নি বাই হোন্ডাঃ-
কুইড়ার একশেষ হচ্ছি দিনে দিনে। ফার্স্ট ইয়ার, সেকেন্ড ইয়ারে দিনে দুইবার আইইউটি যাওয়া আসা করতাম দুলদুল পরিবহনে করে। দুই, দুই চার ঘন্টা। এখন ভাবলেই ভয় লাগে। বাসায় আসার টাইম হলেই পার্কিং লটে অবস্থান নেওয়া গাড়িগুলোর দিকে তাকাই। পরিচিত কারও গাড়ি দেখা যায় কিনা, এই আশায়। তাহলে আরাম করে আধাঘণ্টায় বাসায় পৌঁছানো যাবে।
গত বুধবারও বেলা এগারোটায় ঘুম থেকে উঠে গাড়ির খো...
১…
কনুইটা শুধু বের করা জানালা দিয়ে। হালকা শীতের স্পর্শ। কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে গানটাকে মস্তিষ্কের ঠিক মাঝখানে বসানোর চেষ্টা। তারপর সেখানে বেজে ওঠা- “আমি স্বচ্ছল তাই একেঁছি দু’চোখে স্বচ্ছলতার স্বপন … ” কিংবা আমার রুমমেট ফাহিম আর সাব্বিরের মতে এ যাবত কালে ব্ল্যাকের করা সবচে জঘন্য গান “এই নিঝুম রাতে একা আমি জানালার পাশে দাঁড়িয়ে …" পাশ দিয়ে বিপরীত দিকে ছুটে চলছে গ্রাম, রাস্তা। ত...
১...
নবাগত সপ্তম শ্রেনীর ট্যালেন্ট শো' অনুষ্ঠান। নবাগত যেহেতু, পোলাপান কেউই কোন কিছু সম্পর্কে জানে না। সবাই গান গাইতে চায়, কবিতা আবৃত্তি করতে চায়। বলাই বাহুল্য বেশীরভাগেরই কিছু হয় না। তাই মানসম্মত একটা অনুষ্ঠান করার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন বাংলার আবুল হোসেন স্যার। তার পরিচালিত অনুষ্ঠান মালার জন্য তিনি একটা সমবেত সংগীত লিখে ফেললেন। গানটার সব কথা মনে নেই, খালি মনে আছে- কোরা...
১...
১৮ই জানুয়ারী, ২০০৬। রাতঃ- এগারো/বারো।
হলে আমাদের ব্যাচের প্রথম কম্পিউটার আনি আমি। চল্লিশ গিগা শক্তচাকতির ভেতর উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সামাজিক ছবি। পরদিন ভার্সিটি জীবনের প্রথম কুইজ। পড়ালেখা করতে আমার কোন কালেই ভালো লাগেনি- সেদিনও লাগলো না। রুমে শুয়ে আছি। হঠাৎ করে মহিবের নের্তৃতে একদংগল পোলাপানের প্রবেশ। তাদেরও পড়তে ভালো লাগছে না। তারা সামাজিক ছবি দেখতে চায়। তাদের মধ্যে কয়ে...
১...
রাত প্রায় এগারোটা। শুনশান নীরবতা। আমি লেপের নীচে গুটিসুটি মেরে শুয়ে আছি। হঠাৎ মাথার পেছনের জানালায় টোকা পড়ল। আমি লেপের নীচ থেকে বের হলাম। কাঠের দরজায় পাল্লা লাগানো। সেই পাল্লা খুললাম- খুব ধীরে, যেন শব্দ না হয় একদম। পাশের রুমে বাবা- মা শুয়ে আছেন।
আমি দরজা খুলে বের হলাম। আমার সামনে পাঁচ জন নারী, পুরুষ। কেউ সম্পর্কে আমার চাচা, কেউ ফুফু। তবে সবাই আমার সমবয়সী। আমি তাদের সাথে যোগ দ...