সময়টা কি ১৯৮৮ নাকি ৮৯? ঠিক মনে আসছে না। তবে এই দুটো বছরের যে কোন একটা বছরে চট্টগ্রামে 'বিজয় মেলা' নামক একটা ব্যাপার চালু হয় সার্কিট হাউসের সামনের খোলা মাঠে। ওই মাঠটি তখন শিশুপার্ক হয়নি। সার্কিট হাউস তখনো জিয়া স্মৃতি যাদুঘর হয়নি। খোলা ময়দানটিতে আমার কোন কোন বিকেলে আড্ডা দিতাম। স্টেডিয়ামের উল্টোদিকের এই মাঠে কিছু কাঠের চেয়ার টেবিল বসানো থাকতো দারুল কাবাবের পক্ষ থেকে। স্টেডিয়াম মার্কেটে চট্টগ্রামের একমাত্র কাবাবের দোকান। সেখান থেকে ট্রেতে করে ধোঁয়া ওঠা কাবাব পরোটা নিয়ে আসা হতো সার্কিট হাউসের সামনের ঢালু ময়দানে। আমাদের পকেটে সেই সময়ে কাবাব খাওয়ার পয়সা হয়নি। তাই আড্ডা দিতে দিতে কেবল গন্ধ শুঁকেই অর্ধভোজন সেরে মনে মনে বলতাম, দেখিস একদিন আমরাও।
এই গল্প মুক্তিযুদ্ধের সময়কার গল্প নিয়ে লিখা না; এটা ২ জন মুক্তিযোদ্ধার ব্যক্তিজীবন নিয়ে লিখা, যার একজন আমার বাবা, আরেকজন আমার মামা। আমি সবসময় নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে করি; জন্মের পরপরই যে ২ জন মানুষ সবার প্রথম রোল মডেল হিসাবে সামনে এসেছেন, তাদের ২ জনই মুক্তিযোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে উনারা দেশের জন্যে কতো বড় সাফল্য বয়ে এনেছেন, সেটা নিয়েতো আর আলাদা করে বলার কিছু নাই। আমি বরং বলতে চাই উনারা ব্যক্ত
নির্বাচন জমছে না বলে ফেসবুকের অলিগলিতে হাহাকার শোনা যাচ্ছে। একতরফা এই নির্বাচন হওয়ার জন্য দায়ী করা হচ্ছে ত্রয়োদশ সংশোধনী নামক জাদুর কাঠিটি ভেঙে ফেলাকে। বলা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করে এই কাজটি করিয়েছেন। আদালতও নাকি বলেছে ত্রয়োদশ সংশোধনীর অধীনে আরো অন্তত: দুইবার নির্বাচন করা যেতে পারে।
জামাত শিবির মারছে মানুষ--
বললে তোমার জ্বলে কেন?
"দুর্বৃত্ত" বসাও তুমি "জামাত"
কথার স্থলে কেন?
বিএনপি যে সঙ্গে আছে--
বলতে তোমার ক্লান্তি লাগে?
মারছে পুলিশ নিরীহ লোক--
বললে তবে শান্তি লাগে?
পিটলে হেফাজতকে ওয়েব
দাও ফাটিয়ে প্রতিক্রিয়ায়...
মনির যেদিন পুড়ল সে রাত
ব্যস্ত ছিলে রতিক্রিয়ায়!
সারা বছর ঘুমিয়ে থেকে
উঠলে হঠাৎ জ্বলে কেন?
বোবা ছিলে, তোবা বলে
জোরসে জবান চলে কেন?
পুরো একাত্তর জুড়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালী জাতিকে মেধাশূণ্য করার জন্য বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করে। এই অপকর্মে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে সরাসরি সাহায্য করে রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস বাহিনী।
আজ প্রায় দশ বছর হতে চলছে আমার প্রবাস জীবনের। এই দীর্ঘ সময়ে জীবিকার দায়ে অনেক কিছু করেছি। স্বপ্নের দেশ আমেরিকায় অনেকের জীবন আয়েসে শুরু হয়, আমার হয়েছে একদম ঘুঁটেকুড়ানি অবস্থায়। আক্ষরিক অর্থেই তাই।
গতকাল রাতে উত্তেজনায় ছটফট করছিলাম। উত্তেজনার বিষয় 'বিজয় দিবস।' মহান বিজয় দিবস এসে গিয়েছে অথচ এখনও আমার ফেইসবুকের প্রোফাইল পিক্ অথবা কভার পিক্ এ জাতীয় পতাকা লাগানো হয়নি। আহা!
বিগত কয়েকদিন ধরে কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর এবং অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহে আবারও একদল মানুষের ব্যপক গাত্রদাহ আশা করি সবাই লক্ষ্য করেছেন। আমাদের তথাকথিত জাতীয়তাবাদী শক্তির ধারক বাহকেরা এখন ঝলসানো নরমাংস দিয়ে নৈশভোজ করে ক্ষান্ত নন, তারা নানা ভাবে ও নানা আঙ্গিকে কাদের মোল্লা তথা যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির ব্যপারটি হালকা করে কর্পূরের মত উড়িয়ে দেয়ার কিংবা ক্ষেত্রবিশেষে নিজেদের জামায়াত তোষণের দীর্ঘ ইতিহাসকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অন্যের ঘাড়ে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। যে কাজটি স্বাধীনতার পর শুরু হয়েছিলো কিন্তু বিশিষ্ট সামরিক শাসকদের ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার ফাঁদে পড়ে ব্যহত হল তা আজ ৪০ বছর পর করতে দোষ কোথায়? যে জিয়াউর রহমান ইন্ডেমনিটি আইন দিয়ে আটক যুদ্ধাপরাধীদেরকে নির্বিচারে ছেড়ে দিলেন, যার কল্যাণে গোলাম আজম দেশে ফিরে এসে আবার রাজনীতি করার সুযোগ পেল, যার নিপুণ হাতে এই দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির বৈধতা এল তাকে বাদ দিয়ে ১৯৭১-১৯৭৫ সময়ে কেন সকল যুদ্ধাপরাধীদেরকে ফাঁসিতে ঝুলানো হল না এই মায়াকান্নার কি আসলেই কোন অর্থ আছে?
অনেকক্ষণ কোনও সাড়াশব্দ নেই। বন্ধ দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কিছুটা দ্বিধা নিয়ে টোকা দিলাম। ছেলে ভেতর থেকে চেঁচিয়ে জিজ্ঞেস করল, ‘কী চাও?’
আমি কণ্ঠে যতদূর সম্ভব মমতা আর শ্রদ্ধা মিশিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, ‘হ্যা রে, উনি এসেছেন?’
ছেলে খানিক চুপ থেকে গম্ভীর গলায় জবাব দিল, ‘হুঁ।’