রাজনীতি এবং প্রশাসন একদম বিপরীতধর্মী দুইটি আর্ট।
একটির মূলে আছে গণসংযোগ, আরেকটির জননিয়ন্ত্রণ। একটিতে ক্ষমতাহীন অনেক মানুষ মিলে, অনেক শ্রমের বিনিময়ে, সমাজকে অনেক জোরে নাড়া দিয়ে ছোট্ট একটু পরিবর্তন ঘটায়। অন্যটিতে খুব সীমিত কিছু মানুষের সিদ্ধান্তে, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে, স্বল্পতম প্রয়াসে অনেক বড় পরিবর্তন ঘটানো হয়। একটি মেঘের মতো বিশাল ও গম্ভীর, অন্যটি বজ্রপাতের মতো তীব্র ও ধারালো।
বঙ্গদেশের ইবনে বতুতা আমাদের সবার প্রিয় তারেক অনু ভাই কাজকাম ফেলে রেখে ঘুরে বেড়ায় দেশ-বিদেশ। মজার মজার আইটেম খায় আর তার বর্ণনা লিখে লাখো বাঙালির হৃদয়ে হিংসার আগুন জ্বালিয়ে দেয়। গরুর মাংস নিয়ে তো হালে শুরু করেছেন এক নতুন সিরিজ, ব্রাজিলে গিয়ে খেলেন চুরাস্কো, আর্জেন্টিনার চাপকে তো দিয়েই দিলেন নাম্বার ওয়ান সার্টিফিকেট! কথা সত্য হতেও পারে, তবে আমার কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে যা বলার জন্যই এই পোষ্ট।
[justify]
একটা বিশেষ দিনের ঘটনা দিয়ে শুরু করি-
৭ই জুন, ২০১২
কুরেন্ত আর ক্রানিয়াৎস ঘুরে ঘুরে দেখছিল মহাপ্লাবনের (এইখানে প্রথম অংশ) পরের দুনিয়াটাকে। ডাঙা জেগে উঠেছে বটে কিন্তু কোনোখানে কেউ নেই। প্রাণশূন্য এক বিবর্ণ দুনিয়া। কেজানে কতদিন লাগবে আস্তে আস্তে গাছপালা পশুপাখিতে দুনিয়া ভরে যেতে। মানুষ জাতির মধ্যে আছে কেবল ক্রানিয়াৎস। সে এই বদলে যাওয়া দুনিয়া দেখে কেমন হতভম্ব হয়ে গেছে, মুখে কথা নেই। হাজার হোক, মানুষ ত
লিখতে আমার একটুও ভাল্লাগে না। তবে এইবার লিখতে হবে।
নানার কলম আছে একটা, খুব সুন্দর, পুরোটা কালো, ক্যাপটাও, গায়ে তিনটে পাতার একটা ছবি খোদাই করা, আঙ্গুলে ছুঁয়ে দিলে কেমন আরাম লাগে, নামটাও সুন্দর, নানা বলে বুঝিয়ে দিয়েছে- ‘রেড লীফ’ মানে হল ‘লাল পাতা’। ‘লাল পাতা’ যে কলমের নাম সেটা কাল কেন কে জানে!
নানার অবশ্য ‘লাল পাতা’র লাল কলমও আছে, সেটা পুরোপুরি লাল। কলমতো লাল হবেই, ক্যাপটাও লাল, খোদাই করা ছবিটা লাল, এমনকি কালিও লাল! দুপুর বেলায় টেবিলের পাশটা এতগুলো লেখা খাতা বের করে নানা, এরপর চশমাটা চোখে দিয়ে লেখাগুলার দিকে তাকিয়ে থাকে আর বড় বড় করে একপাশটায় এক দুই পাঁচ সাত লেখে, লাল রং দিয়ে। এর নাম নাকি খাতা দেখা।
খাতা দেখার সময় নানার কাছে থাকা যায় তবে কিছু বলা যায় না, কলমটা হাত থেকে নেয়া যায় না, চশমাটা কেমন করে কানের দুইপাশে ঠিক ঠিক লেগে থাকল সেটা দেখা যায় না, এমনকি নানার মত করে এক দুই তিন লিখতেও মানা- আম্মু আর নানু আর খালামনি সব কিছুতেই “না না” বলে, নানা অবশ্য বলে না কিছু। কেবল পাঞ্জাবীর পকেট থেকে “ওভালটিন চকলেট” দেয় একটা। আবার একটা। তার মানে দুইটা। মাঝে মাঝে বিস্কুটও দেয়, হরলিক্স বিস্কুট। এই জন্যই থাকতে হয়, নয়ত বসে থাকতে আমার ভাল লাগে না একটুও। নানার মত খাতা দেখতে মন চায়।
খাতা আমারও আছে, তবে লেখা খাতা নাই, এটাও সমস্যা। এক দুই তিন চার আমি লিখতে পারি, তবে সব কয়টা সমান হয় না, এটা আরেকটা সমস্যা। আর আমার লাল কলম নাই, সেটা সবচেয়ে বড় সমস্যা।
পালাজ্জো রেজ্জোর ভেতরে। অসংখ্য ফ্রেস্কো সমৃদ্ধ এই বিশালাকার ঘরে একটি দানবাকৃতির ঘোড়া অতীতকে জানান দিয়ে যাচ্ছে যেন।
"দ্যাখেন আম্মু, এই লোকটার সাথে আমার অনেক মিল"... শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর লেখা পার্থিব পড়তে পড়তে, বইটার একটা চরিত্র কৃষ্ণজীবনের ব্যাপারে আম্মুকে বললাম।
আম্মুর তেমন কোন আগ্রহ নেই বই-টইয়ের দিকে, তাও জিজ্ঞেস করলেন, "কেমন মিল?"
সে অনেকদিন আগের কথা, সেই সময় মানুষ পৃথিবীতে খুব আনন্দে থাকতো, পরম সুখে জীবনযাপন করতো। সে এক চমৎকার অবস্থা। কারুর কোনো কাজ করতে হতো না, যার যা দরকার সব হাতের কাছে এসে হাজির হতো। একথালা পোলাও চাই, এসে গেল ফার্স্ট ক্লাস পোলাও। এক প্লেট বিরিয়ানি চাই, এসে গেল দারুণ চমৎকার বেহেশতী বিরিয়ানি। এক বাটি পায়েস চাই, এসে গেল মনোরম স্বর্গীয় স্বাদের পায়েস। মখমলের তাকিয়া চাই, এসে গেল তাকিয়া। হীরার দুল চাই, এসে গেল