দৃশ্যপট আছদগঞ্জ চট্টগ্রামঃ ৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
কানে মোবাইল গুঁজে চোখ সজাগ রেখে এদিক ওদিক তাকাচ্ছে এক দাড়িয়াল। এখনো কেউ আসেনি। আগে এসে বোকামী করলো কিনা আক্ষেপ করছে। আজকে আন্দরকিল্লার দিকে যাবার সাহস হচ্ছে না। পিঠের চামড়া রাখবে না মিছিল দেখলে। তাই জেলখানার পাশের রাস্তাটাকে নিরাপদ ভেবে বেছে নেয়া। ঐ তো আসছে দুজন। খানিক পার পাশের গলি থেকে আর পাঁচজন। মোটামুটি বিশ পঁচিশজন হবার পর শ্লোগান শুরু -নারায়ে তকবীর। কিন্তু গলায় আজকে জোর নেই। গতরাতে প্রেসক্লাবের জাগরণ মঞ্চ থেকে দেয়া ঘোষণাটা ঘুরপাক খাচ্ছে মাথায়। মিনিট দশেক শ্লোগান দিয়ে লালদীঘির কাছে এসে ডানে বামে তাকিয়ে মিছিলের হঠাৎ সমাপ্তি ঘোষণা করলো নেতা। তিন মিনিটের মধ্যে দলটা রাস্তা থেকে নাই হয়ে গেল।
তুমি হেঁটে গেছো রক্ত চাদরে মোড়া
রাজপথ ধরে। আর বেশি নেই যেতে।
টগবগ করে ছুটেছে কালের ঘোড়া,
অবিরাম ছোটা, কিসের হদিস পেতে?
ক
[justify]১.
এখন আর অপেক্ষা নয়, সময় এসেছে নিজেদের অবস্থান সারাবিশ্বকে উচ্চ কণ্ঠে জানিয়ে দেবার। সেই লক্ষ্যেই তরুণ প্রজন্ম জেগে উঠেছে, একত্রিত হয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের যথোপযুক্ত শাস্তির দাবীতে শাহবাগ তথা প্রজন্ম চত্বরে। একজন নয়, দুইজন নয়, হাজারে হাজারে, লাখে লাখে মানুষ মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচারের দাবীতে সোচ্চার। এই আন্দোলন যে কেবল শাহবাগে সীমাবদ্ধ নেই, ছড়িয়ে পড়েছে দেশের আনাচে কানাচে, তেমনি ছড়িয়ে পড়েছে দেশে-বিদেশেও
শাহবাগ বাসস্ট্যান্ডের একটু সামনের দিকেই যেই পেট্রোল পাম্পটা, আনিস প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে সেইখানে দাঁড়ানো। চেহারায় বিরক্তি এবং উদ্বেগের ছাপ স্পষ্ট। এমনিতেই বাসা থেকে বের হতে দেরি হয়ে গেছে, তারউপর একটাও ক্যাব পাওয়া যাচ্ছেনা।
(ব্যক্তিগত বমি-বিষয়ক আলোচনা এবং সাইদীর ছেলেকে পুলিশে ধরার আলোচনার পর থেকে)
একাত্তরের খুনী-ধর্ষক জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে শাহবাগে ফুঁসে ওঠা বিক্ষুব্ধ জনতার শপথ ছিলো, জামাতি পণ্য ও প্রতিষ্ঠান বর্জন।
আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আজ ইসলামী ব্যাঙ্কে নিজেদের হিসাব বন্ধ করেছেন বাগেরহাটের ইলিয়াস ভাই ও পিয়ারা আপা।
বেতারায়তন এই দুই সাহসী পথপ্রদর্শকের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছে, তাঁরা কী ভাবছেন এ ব্যাপারে।
আসুন শ্রোতাবৃন্দ, শুনে দেখি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে একাত্তরে ভয়াবহ নির্যাতন চলে, অসংখ্য তাজা প্রান ঝরে যায়, জোহা হলকে বানানো হয় টর্চার সেল, অনেক নারী সম্ভ্রম হারান, এতই নির্যাতন চলে যে অনেকের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি কিংবা লাশ পেলেও চিনে নেয়া সম্ভব হয়নি, জোহা হলের পেছনে পাওয়া গেছে দেশের অন্যতম সর্ববৃহৎ বধ্যভূমি। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক পিশাচ শিক্ষক এই নির্যাতনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। অনেক স্বাধীনতাকামী, প্রগতি
ভুলে গিয়ে ভয় যত পরাজয় জীবনের ঢালা ছাঁচে,
বাঙালির দিন বদলে গিয়েছে ফেব্রুয়ারির পাঁচে!
ক্রুদ্ধ মানুষে ক্ষুব্ধ স্লোগানে শাহবাগ জুড়ে ঝড়...
আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে প্রজন্ম চত্বর!
বাঁধতে পারে নি সাধের চাকরি, ঘরে বিছানার সুখ,
আমাকে টেনেছে অচেনা অদেখা রোদে পোড়া কিছু মুখ!
বিদ্রোহী আমি, ছিলাম কদিন আগেও স্বার্থপর...
আমাকে নতুন জন্ম দিয়েছে প্রজন্ম চত্বর!
শিল্পী ফেলেছে রঙতুলি আর গায়ক ভুলেছে গান,